যা যা থাকছে
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক জোট
জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক জোট | International
political alliances
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক জোট হলো একাধিক দেশের মধ্যে গঠিত একটি জোট যারা সাধারণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক বা সাংস্কৃতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করে। এই জোটগুলি বিভিন্ন আকারের হতে পারে এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তৈরি হতে পারে । এসব জোট সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কমনওয়েলথ অব নেশনস , ওআইসি , জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন ইত্যাদি ।
Table of
Content
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ও আই সি)
কমনওয়েলথ অব নেশনস
প্রতিষ্ঠাকাল |
২৮ এপ্রিল, ১৯৪৯ |
প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট |
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য → ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনস । |
সদস্য দেশ |
● ইংরেজ শাসন থেকে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশসমূহ কমনওয়েলথের সদস্য। মোজাম্বিক ও রুয়ান্ডা ব্রিটিশ শাসনাধীন ছিলনা কিন্তু কমনওয়েলথের সদস্য। |
সদর দপ্তর |
মার্লবোরো হাউস, লন্ডন, যুক্তরাজ্য |
Note |
● ব্রিটেনের রানী হলেন কমনওয়েলথ এর প্রধান। |
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ও আই সি)
OIC এর পূর্ণরুপ |
Organisation of
Islamic Co-operation |
প্রতিষ্ঠাকাল |
Organisation Of
Islamic Conference (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স) নামে মরক্কোর রাজধানী রাবাতে ২৫টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে ১৯৬৯ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে ওআইসি। ২০১১ সালে ২৮ জুন 'ও আই সি' এর পূর্ণ রূপ পরিবর্তন হয়ে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো- অপারেশন (Organisation of Islamic cooperation) হয়। |
প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট |
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল জয়ী হয়ে বিস্তীর্ণ আরব ভূখণ্ড দখল করে নেয়। ইসরাইল ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র একটি স্থান জেরুজালেমের 'বায়তুল মোকাদ্দেস' মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে ১৯৬৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাজধানী রাবাতে মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের এক শীর্ষ সম্মেলনে মুসলিম উম্মাহর স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য 'ইসলামি সম্মেলন সংস্থা' গঠিত হয়। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টেংকু আব্দুর রহমান এর প্রথম সেক্রেটারি জেনারেল (মহাসচিব) নিযুক্ত হন। |
সদস্য দেশ |
● বর্তমানে সদস্য দেশ ৫৭। এ সংস্থার সর্বশেষ সদস্য রাষ্ট্র আইভরি কোস্ট। সাধারণত বিশ্বের মুসলিম শাসিত রাষ্ট্র বা মুসলিম রাষ্ট্র এ সংস্থার সদস্য। |
সদর দপ্তর |
জেদ্দা, সৌদিআরব |
অঙ্গ সংস্থা |
চারটি। যথা - |
দাপ্তরিক ভাষা |
৩টি: ইংরেজী, আরবী ও ফ্রেঞ্চ |
প্রথম মহাসচিব |
টেংকু আবদুল রহমান (ডিসেম্বর ১৯৭০ - ৩১ ডিসেম্বর ১৯৭৩) |
বর্তমান মহাসচিব |
হুসেইন ইব্রাহিম তাহা । মেয়াদকাল: ৫ বছর |
সম্মেলন |
প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়- রাবাত, মরক্কো (২২-২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯)। |
'ও আই সি' পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয় |
১. ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (IUT), গাজীপুর বাংলাদেশ |
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন
NAM এর পূর্ণরুপ |
Non-Aligned Movement |
প্রতিষ্ঠাকাল |
১৯৬১ সালে |
প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট |
স্নায়ু যুদ্ধকালীন সময়ে বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে নিজেদের শিবিরে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালায়। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশ এই দুই শিবিরে যোগদান না করে উভয়ের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্য নির্জোট আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৫৫ সালে ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং-এ অনুষ্ঠিত 'বান্দুং সম্মেলন' ন্যাম গঠনের একটি মাইল স্টোন। নির্জোট আন্দোলনের উদ্যোক্তা ছিলেন মিশরের জামাল আবদাল নাসের, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ন, ভারতের জওহর লাল নেহেরু, যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো এবং ঘানার নক্রুমা। ১৯৬১ সালে যুগোশ্লাভিয়ার বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে ন্যামের জন্ম হয় এবং যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো ন্যামের প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। |
সদস্য দেশ |
১২০টি দেশ। সর্বশেষ সদস্য- আজারবাইজান ও ফিজি। |
সদর দপ্তর |
নেই |
জাতিসংঘ | United Nations
জাতিসংঘ
(United Nations) স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা যার প্রধান উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, জাতিসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অর্জন করা এবং জাতিসমূহের কর্মকাণ্ডকে সমন্বয় করার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করা। এটি বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা।
Table of Content
·
জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা
·
জাতিসংঘের সহস্রাব্দ ঘোষণাপত্র ও এসডিজি
·
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC)
জাতিপুঞ্জ
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস |
● ১৯১৯ সালের ২৮ জুন স্বাক্ষরিত 'ভার্সাই চুক্তি' মাধ্যমে জতিপুঞ্জের জন্ম হয়। চুক্তিটি কার্যকর হয় ১০ জানুয়ারি ১৯২০। |
প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য |
● প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা। |
প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য |
● ৪২ টি দেশ |
মূল অঙ্গসংস্থা |
● ৩টি। পরিষদ, কাউন্সিল এবং সচিবালয় |
সদর দপ্তর |
● জেনেভা, সুইজারল্যান্ড |
১ম সেক্রেটারী জেনারেল |
● স্যার এরিক ড্রামন্ড |
বিলুপ্তি |
● ২০ এপ্রিল, ১৯৪৬ খ্রি: |
জাতিসংঘ গঠনের ইতিহাস
1.
লন্ডন ঘোষণাঃ জার্মানির ক্রমবর্ধমান আক্রমণে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ভূখন্ড হারিয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করে। ১২ জুন ১৯৪১ জার্মানি ব্রিটেন আক্রমণ করে। জুন, ১৯৪১ লন্ডনে ইউরোপীয় নয়টি প্রবাসী সরকার (ফ্রান্স, যুগোশ্লাভিয়া, চেকোশ্লাভিয়া, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, গ্রীস, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ ও নেদারল্যান্ড), নিউজিল্যান্ড, ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকা এবং যুক্তরাজ্য যুদ্ধ বন্ধ এবং যুদ্ধোত্তর বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লন্ডনের জেমস প্রাসাদ হতে যে ঘোষণা দেন, তাই লন্ডন ঘোষণা । এটি জাতিসংঘ গঠনের প্রথম পদক্ষেপ।
2.
আটলান্টিক সনদঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্ট এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ১৪ আগস্ট ১৯৪১ আটলান্টিক মহাসাগরে ব্রিটিশ রণতরী 'প্রিন্সেস অব ওয়েলস' এ এক বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠক শেষে এই দুই নেতা যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে ঘোষণা দেন তাকে আটলান্টিক সনদ নামে অভিহিত করা হয়। এটি UNO গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
3.
ওয়াশিংটন ঘোষণাঃ ১ জানুয়ারি '১৯৪২, মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল, সোভিয়েত প্রতিনিধি ম্যাকসিস লিটভিনভ এবং চীনের প্রতিনিধি টি.ভি. শুঙ ওয়াশিংটনে বৈঠকে মিলিত হন এবং একটি দলিলে স্বাক্ষর করেন। ২ জানুয়ারি মিত্রপক্ষের আরো ২২টি দেশ এ দলিলে স্বাক্ষর করে একে 'জাতিসংঘ ঘোষণা' হিসেবে অভিহিত করেন। এরপর মিত্রপক্ষের আরো ২১টি দেশ এ ঘোষণার প্রতি সমর্থন জানায়।
4.
কাসাব্লাঙ্কা সম্মেলনঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্লুজভেল্ট, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ও ফ্রান্সের সরকারি প্রতিনিধি মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহরে এক বৈঠকে মিলিত হন। যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং UNO গঠনের শর্তাদি নিয়ে তারা আলোচনা করেন।
5.
ভার্জিনিয়া সম্মেলনঃ জুন ১৯৪৩ যুদ্ধোত্তর পৃথিবীর উদ্বাস্তুদের খাদ্য সহায়তার সক্ষ্যে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ভার্জিনিয়া শহরে। বিশ্বের ১৪১টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্মেলনে খাদ্য ও কৃষি নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফলস্বরূপ ১৯৪৫ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা FAO প্রতিষ্ঠিত হয়।
6.
মস্কো সম্মেলনঃ ১৯-৩০ অক্টোবর '৪৩ USA, UK, USSR এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মস্কোয় বৈঠকে মিলিত হয় এবং ৭ দফা চুক্তি প্রণয়ন করে। এর মধ্যে ৪ নং ও ৭ নং দফা ছিল আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত এবং প্রস্তাবিত সংগঠনের উদ্দেশ্য। এ দফা দুটোতে 'জাতিসংঘ' নামটি ব্যবহার করা হয়।
7.
তেহরান সম্মেলনঃ এটি যুদ্ধকালীন মিত্র বাহিনীর প্রথম শীর্ষ সম্মেলন নভেম্বর '৪৩ তেহরানে US প্রেসিডেন্ট রুজভেন্ট, USSR প্রেসিডেন্ট স্ট্যালিন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল তেহরানে শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হন। সম্মেলন শেষে তিন নেতা আন্তর্জাতিক সংগঠন গঠনের ঘোষণা দেন এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
8.
ব্রিটন উডস্ সম্মেলনঃ জুলাই '৪৪ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের ব্রিটন উডস্ শহরে ৪৪টি রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনীতির অস্থির অবস্থার অবসানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল এবং পুনর্গঠন ও উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
9.
ডাম্বারটন ওকস সম্মেলনঃ ২১ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ ওয়াশিংটনের ডাম্বারটন ওকস ভবনে জাতিসংঘ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের প্রতিনিধিসহ মিত্রশক্তি বৈঠকে মিলিত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর। এ আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও চীনের প্রতিনিধি। এই সম্মেলনে নিম্নোক্ত কার্যাবলী সম্পন্ন করা হয়-
ক। সংগঠনের রূপরেখা গ্রহণ।
খ। নিরাপত্তা পরিষদ গঠন এবং ৫টি স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র নির্ধারণ।
গ। কাঙ্ক্ষিত সংগঠনের নামকরণ।
এ সম্মেলনে জাতিসংঘের চারটি অঙ্গসংগঠন গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়।
10.
ইয়াল্টা সম্মেলনঃ বর্তমান ইউক্রেনের ইয়াল্টায় ৪- ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৫ শীর্ষ তিন নেতা রুজভেল্ট , চার্চিল এবং স্ট্যালিন দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হন। এ সম্মেলনে ৫টি স্থায়ী সদস্যকে 'ভেটো ক্ষমতা' প্রদান করা হয় এবং এপ্রিল ১৯৪৫ মিত্রশক্তি সানফ্রান্সিসকোতে বৈঠকে মিলিত হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই সম্মেলন ‘ক্রিমিয়া সম্মেলন’ নামেও পরিচিত ।
11.
সানফ্রান্সিসকো সম্মেলনঃ ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন '১৯৪৫ সানফ্রান্সিসকোতে মিত্রশক্তির দেশসমূহ এক বৈঠকে মিলিত হয়। দীর্ঘ আলোচনা শেষে জাতিসংঘ সনদ গৃহীত হয় এবং ২৬ জুন ১৯৪৫ উপস্থিত ৫০টি দেশ/জাতি সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের জন্ম হয়। ১৫ অক্টোবর পোল্যান্ড ৫১তম দেশ হিসেবে সনদে স্বাক্ষর করে এবং ২৪ অক্টোবর '১৯৪৫ জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হওয়ার পূর্বেই পোল্যান্ড সনদে স্বাক্ষর করে বলে পোল্যান্ডকেও জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা দেশ হিসাবে গণ্য করা হয়। ১১১টি ধারা এবং ১৯টি অধ্যায় এর সমন্বয়ে জাতিসংঘ সনদ তৈরি করা হয়েছে। জাতিসংঘ সনদের রচয়িতা হলেন Archibald Macleish.
·
উদ্দেশ্য: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ গঠিত হয়।
·
নামকরণ: মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট সর্বপ্রথম 'জাতিসংঘ' নামটি ব্যবহার করেন। আটলান্টিক সনদে 'জাতিসংঘ' নামটি সর্বপ্রথম অফিসিয়ালভাবে ব্যবহৃত হয়।
·
২৪ অক্টোবর, ১৯৪৫ জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হয় । এজন্য প্রতিবছর ২৪ অক্টোবর 'জাতিসংঘ দিবস' হিসেবে পালিত হয়।
·
২৩, ২৭, ৬১, ১০৯ এই চারটি অনুচ্ছেদ- এ সংশোধনী হয়েছে। সর্বশেষ ১০৯ নং ১৯৬৮ সালে।
·
জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালে মানবাধিকার সংক্রান্ত বৈশ্বিক ঘোষণার ঐতিহাসিক নথিটি গ্রহণ করে।
জাতিসংঘের বিবিধ
☞ পতাকা (Flag): হালকা নীলের উপর সাদা রঙের জাতিসংঘের প্রতীক। জাতিসংঘের প্রতীকের বর্ণনা- মাঝখানে পৃথিবীর মানচিত্র, দুইপাশে দুইটি জলপাই গাছের শাখা। জলপাই গাছ শান্তির প্রতীক। ১৯৪৭ সালে অনুমোদিত হয়।
☞ সদস্য (Members):
·
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য : ৫১
·
বর্তমান সদস্য সংখ্যা: ১৯৩।
·
সর্বশেষ সদস্য : দক্ষিন সুদান (১৪ জুলাই, ২০১১)
·
সদস্য নয় : ভ্যাটিকান সিটি, ফিলিস্তিন, কসোভা এবং তাইওয়ান।
·
প্রাক্তন সদস্য : তাইওয়ান । [ ২৫ অক্টোবর, ১৯৭১ চীন জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্ত হয়। এবং তাইওয়ানকে জাতিসংঘ হতে বহিষ্কার করা হয়। ]
২০ জানুয়ারি, ১৯৬৫ ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘ হতে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৬ ইন্দোনেশিয়া পুনবায় জাতিসংঘে যোগদান করে।
·
স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র : ভ্যাটিকান সিটি এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন ( PLO )
·
আয়তনে জাতিসংঘের বৃহত্তম সদস্য দেশ : রাশিয়া
·
জনসংখ্যায় জাতিসংঘের বৃহত্তম সদস্য দেশ: চীন
·
আয়তনে জাতিসংঘের ক্ষুদ্রতম সদস্য দেশ : মোনাকো (২ বর্গ কি.মি.)
·
জনসংখ্যায় জাতিসংঘের ক্ষুদ্রতম সদস্য দেশ : টুভ্যালু
☞ সদর দপ্তর (Headquarters): ম্যানহাটন,
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র
স্থপতি : W. Harison
জমি দান করেন : জন ডি রকফেলার জুনিয়র।
এর ইউরোপের সদর দপ্তর: সুইজারল্যান্ড (East River নদীর তীরে)।
☞ অফিসিয়াল ভাষা (Official languages):
● ৬ টি । ইংরেজি, ফরাসি, চীনা, রুশ, স্প্যানিশ ও আরবি।
● ১৯৮৪ সাল থেকে জাতিসংঘের কার্যপ্রণালীতে বাংলা ভাষার ব্যবহার শুরু হয়।
● জাতিসংঘ রেডিও: ১৯৪৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এটি ইংরেজি, আরবি, ফ্রেঞ্চ, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, রুশ, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় তাদের অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে।
● জাতিসংঘ লাইব্রেরি: দ্যাগ হ্যামারশোল্ড লাইব্রেরি
● শান্তি-ঘন্টা: সদর দপ্তরে স্থাপিত একটি ঘন্টা যাতে জাপানি ভাষায় লেখা 'নিরঙ্কুশ বিশ্ব শান্তি দীর্ঘজীবি হোক'।
জাতিসংঘের মূল সংস্থা
জাতিসংঘের ছয়টি প্রধান শাখা রয়েছে যথা:
1.
সাধারণ পরিষদ: এই পরিষদে বিভিন্ন সদস্য শাখায় নির্বাচন, বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন কাজ হয়। প্রতিবছরে একবার অধিবেশন হয় এবং একজন সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
2.
নিরাপত্তা পরিষদ: বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করে এই পরিষদ। এর পাঁচটি সদস্য রাষ্ট্র হলো যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স ও গণচীন। বাংলাদেশ দুইবার নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশের সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষার কাজে নিয়োজিত আছে।
3.
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ: এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যা যেমন-দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, বেকারত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে থাকে।
4.
সচিবালয়: এটি সকল প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করে। জাতিসংঘের বর্তমান ও নবম মহাসচিব পর্তুগালের নাগরিক আন্তোনিও গুতেরেস ।
5.
আন্তর্জাতিক আদালত: সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সীমানাসহ দেশের অন্য যেকোন বিরোধ মীমাংসা করা এর কাজ। ২০১২ সালে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসীমা নিয়ে মায়ানমারের সাথে একটি বিরোধে বাংলাদেশ নিজের পক্ষে রায় পায়।
6.
অছি পরিষদ: এর কাজ অছিভুক্ত, এলাকাসমূহের তত্ত্বাবধান করা। উপনিবেশিক আমলে এই পরিষদের কাজ বেশি ছিল। বর্তমানে অছি পরিষদের কাজ নেই বললেই চলে।
সাধারণ পরিষদ
উপাদান |
তথ্য |
সদস্য |
● জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র সাধারণ পরিষদের সদস্য। |
অধিবেশন |
● সাধারণত বছরে একবার এ পরিষদের অধিবেশন বসে। এ পরিষদের বাৎসরিক নিয়মিত অধিবেশন শুরু হয় প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার। |
কাজ |
● মহাসচিব নিয়োগ |
১ম সভাপতি |
● পল হেনরি স্মাক (বেলজিয়াম) |
নিরাপত্তা পরিষদ
উপাদান |
তথ্য |
সদস্য |
● প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য রাষ্ট্র: ১১ টি (৫টি স্থায়ী, ৬ টি অস্থায়ী) |
স্থায়ী সদস্য |
● যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চীন। |
অস্থায়ী সদস্য |
● অস্থায়ী সদস্যরা ২ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। |
দপ্তর |
● জাতিসংঘের কনফারেন্স বিল্ডিং, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র |
কাজ |
● এ পরিষদ আলাপ আলোচনা, আপোষ, মধ্যস্থতা ও সালিশীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধের নিষ্পত্তির চেষ্টা চালায়। এ চেষ্টা ব্যর্থ হলে নিরাপত্তা পরিষদ সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে পারে। বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রধান দায়িত্ব এ পরিষদের উপর ন্যস্ত। নিরাপত্তা পরিষদে কোন প্রস্তাব পাশ হতে হলে স্থায়ী পাঁচ সদস্যদের সহ মোট ৯টি ভোট প্রয়োজন হয়। |
Uniting for peace
resolution |
● কোরীয় যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ১৯৫০ সালের ৩ নভেম্বর এ প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবে বলা হয় 'জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মতবিরোধের কারণে যদি নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তবে তা অতি সত্বর সাধারণ পরিষদকে অবহিত করতে হবে।' |
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
একে United
Nations Family নামে অভিহিত করা হয়
উপাদান |
তথ্য |
সদস্য |
● অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ ৫৪ সদস্য নিয়ে গঠিত। |
অধিবেশন |
● বছরে কমপক্ষে দুবার নিউইয়র্ক অথবা জেনেভায় এর অধিবেশন বসে। প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ভোটের অধিকার আছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে যে কোন প্রস্তাব গৃহীত হয়ে থাকে। |
দপ্তর |
● জাতিসংঘের কনফারেন্স বিল্ডিং, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র। |
কাজ |
● এ পরিষদের কাজ হলো মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, শিক্ষা প্রসার ও মানবাধিকার কার্যকর করা। বিভিন্ন কল্যাণমূলক বিষয়ে সাধারণ পরিষদে সুপারিশ প্রেরণ করাও এ পরিষদের অন্যতম দায়িত্ব। |
আঞ্চলিক কমিশন |
১) United Nations Economic Commission for
Europe (ECE) সদর দপ্তর- জেনেভা, সুইজারল্যান্ড। (সদস্য ৫৬) |
জাতিসংঘ সচিবালয়
·
এটি জাতিসংঘের মুখ্য কার্যনির্বাহী সংস্থা এবং প্রধান প্রশাসনিক বিভাগ।
·
একজন মহাসচিব, একজন উপসচিব, ১২ জন অধস্তন সচিব, ১২ জনের অধিক সহকারি সচিব রয়েছে।
·
জাতিসংঘ সচিবালয়ের প্রধান কর্মকর্তা হচ্ছেন মহাসচিব। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে সাধারণ পরিষদ কর্তৃক পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত হন।
·
মহাসচিব নিয়োগ হয়: সাধারণ পরিষদে উন্মুক্ত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে [ পূর্বে হতো স্থায়ী ৫ সদস্যের- ক্লোসডোর প্রক্রিয়া ]
·
মহাসচিব নিয়োগ দেয় - সাধারণ পরিষদ
·
নিয়োগ অনুমোদন / সুপারিশ দেয় - নিরাপত্তা পরিষদ
জাতিসংঘের মহাসচিববৃন্দ (UN Secretary Generals)
নাম |
দেশ ও কার্যকাল |
Note |
১. ট্রাইগভেলাই |
নরওয়ে (১৯৪৬-৫২) |
● তিনি পদত্যাগ করেছিলেন (কোরিয়া যুদ্ধের সময়)। |
২. দ্যাগ হ্যামারশোল্ড |
সুইডেন (১৯৫৩-৬১) |
● ১৯৬১ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। |
৩. উ থান্ট |
মায়ানমার (১৯৬১-৭১) |
● এশিয়া মহাদেশ থেকে নির্বাচিত জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। |
৪. কুট ওয়ার্ল্ডহেইম |
অস্ট্রিয়া (১৯৭২-৮১) |
● ১৯৮৬ সালে অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। |
৫. জ্যাভিয়ার পেরেজ দ্য কুয়েলার |
পেরু (১৯৮২-৯১) |
● দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নির্বাচিত জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। |
৬. ডঃ বুট্রোস ঘালি |
মিশর (১৯৯২-৯৬) |
● আফ্রিকা মহাদেশ থেকে নির্বাচিত জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব। |
৭. কফি আনান |
ঘানা (১৯৯৭-০৬) |
● ২০০১ সালে জাতিসংঘের সাথে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। |
৮. বান কি মুন |
দক্ষিণ কোরিয়া (২০০৭-২০১৬) |
● তিনি জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব । দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১ জানুয়ারী ২০০৭ । |
৯ . অ্যান্টনিও গুতেরেস |
পর্তুগাল (২০১৭-বর্তমান) |
● তিনি ছিলেন পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও UNHCR-এর সাবেক প্রধান। |
অছি পরিষদ
অছি পরিষদের মাধ্যমে জাতিসংঘ কতিপয় অনুন্নত অঞ্চলের তত্ত্বাবধানের ভার নেয়। অছিভুক্ত অঞ্চলের উন্নতি এবং এলাকার অধিবাসীদের স্বাধীনতা তথা দেশ শাসনের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলাই হচ্ছে অছি পরিষদের দায়িত্ব । এটি গঠিত হয় ১৯৪৫ সালে। এর সদস্য নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র। ১৯৯৪ সাল হতে এ পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক আদালত
উপাদান |
তথ্য |
পরিচিতি |
● এটি স্থায়ী সালিশি আদালত নামে পরিচিত। |
বিচারক |
● ১৫ জন বিচারকের সমন্বয়ে এ আদালত গঠিত। |
সভাপতি |
● একজন সভাপতি। |
কাজ |
● আন্তর্জাতিক বিরোধের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের যে কোন সদস্য রাষ্ট্র অন্য সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারপ্রার্থী হতে পারে। এ আদালতে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না । আন্তর্জাতিক আদালতের রায় নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক কার্যকরী হয়। |
দুটি দেশ প্রথম মামলা করেছিল |
● যুক্তরাজ্য ও আলবেনিয়া। |
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা
1.
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ((FAO) [Food and
Agricultural Organization] FAO এর পূর্ণরূপ হলো Food and Agriculture
Organization. এটি ১৬ অক্টোবর ১৯৪৫ সালে গঠিত হয় এর সদর দপ্তর রোম, ইতালিতে অবস্থিত। এটি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা হিসাবে কাজ করে।
2.
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি এজেন্সি (IAEA) (International
Atomic Energy Agency) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা ২৯ জুলাই ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৪ নভেম্বর ১৯৫৭ সালে জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত হয়। এর সদর দপ্তর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়। এর সদস্য সংখ্যা ১৫৯টি। যদিও জাতিসংঘের অধীনে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে সংস্থটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নিরাপত্তা পরিষদ উভয় পরিষদেই এটি এর কার্যক্রম পেশ করে। বিশ্বে পরমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং সামরিক উদ্দেশ্য এর ব্যবহার রোধকল্পে কাজ করে থাকে।
3.
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO) [International
Civil Aviation Organization]
4.
আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (IFAD) . International
Fund for Agricultural Development
5.
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) [International
Labour Organization]
6.
আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা (IMO) [International Maritime
Organization]
7.
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) [international
Monetary Fund]
8.
আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (ITU) . International
Telecommunication Union
9.
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (UNESCO) . United
Nations Educational, Scientific and Cultural Organization
10.
জাতিসংঘ শিল্পোন্নয়ন সংস্থা (UNIDO). United Nations
Industrial Development Organization.
11.
বিশ্ব ডাক ইউনিয়ন (UPU) [Universal Postal
Union]
12.
বিশ্বব্যাংক (World
Bank)
13.
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (World Food Programme)-
WFP
14.
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health
Organization)-WHO
15.
বিশ্ব বুদ্ধিবৃত্তি সম্পদ সংস্থা (WIPO) World
Intellectual Property Organization সাধারণত জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা বিশ্ব বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সংস্থা বা WIPO ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য এর স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য তিনটি। যথাঃ জামদানি, ইলিশ ও ক্ষীরশাপাতি।
16.
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) [World
Meteorological Organization]
17.
বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (WTO) [World Tourism
Organization]
18.
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) (United Nations
Population Fund): প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৯ সালে। এ সংস্থাটি প্রধানত জনসংখ্যা, স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এ সংস্থার সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত ।
জাতিসংঘের বিবিধ সংস্থা
1.
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (United Nations
Development Programme) UNDP: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি সহায়ক সংস্থা । ১৯৬৭ সালে ২১ নভেম্বর সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিরত হয়। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন ব্যবহার এবং সম্পদ আরোহণে সাহায্য করা । এই সংস্থার উদ্দেশ্য জাতিসংঘের কারিগরি সহায়তা কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তহবিল ও Flag of UNDP সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালনকারী বিভাগ হচ্ছে UNDP । তাই UNDP কে জাতিসংঘের বহুমুখী কারিগরি ও প্রাক-বিনিয়োগ সহযোগিতা বাস্তবায়নের সর্ববৃহৎ মাধ্যম বলা হয়। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত । জাতিসংঘের বহুমুখী কারিগরি ও প্রাক-বিনিয়োগ সহযোগিতা বাস্তবায়নের সর্ববৃহৎ মাধ্যম। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন কাজে সমন্বয় করে ।
2.
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP) (United Nations
Environment Programme): ১৯৭২ সালের ৫ - ১৬ জুন স্টকহোম, সুইডেনে অনুষ্ঠিত হয় United Nations .
3.
Conference on the Human Environment (UNCHE): এই সম্মেলনের ফলস্রুতিতে পরবর্তীতে UNEP গঠিত হয়।
4.
জাতিসংঘ শিশু তহবিল (UNICEF) [United Nations
Children's Fund); এটি কাজ করে শিশুদের নিয়ে। এটি ১৬ ডিসেম্বর ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। এটি জাতিসংঘ শিশু তহবিল হিসাবে কাজ করে।
5.
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) (World Trade
Organization)
6.
জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (UNHCR)
7.
United Nations High Commisson for Refugees
8.
জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন (UNCTAD)
9.
United Nations Conference on Trade and Development
10.
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র (ITC) / International
Trade Centre
11.
জাতিসংঘ মাদক নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ নিরোধ দপ্তর (UNODC)
12.
United Nations Office on Drugs and Crime
13.
মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনের কার্যালয়/ Office of the High
Commissioner for Human Rights (OHCHR): UN UDHR- ১৯৪৮ এর আলোকে বিশ্বে মানবাধিকারের সুরক্ষা ও উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত রয়েছে UN Office of the High
Commissioner for Human Rights Human Rights-এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর ১৯৯৩ সালে UN General Assembly এটি প্রতিষ্ঠা করে।
14.
জাতিসংঘ স্বেচ্ছাসেবক দল (UNV)/ United Nations
Volunteers
15.
জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় (United Nations
University-UNU]: টোকিও, জাপানে অবস্থিত।
16.
জাতিসংঘ প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (UNITAR)
17.
United Nations Institute for Training and Research
18.
জাতিসংঘ সমাজ উন্নয়ন গবেষণা ইনস্টিটিউট (UNRISD)
19.
United Nations Research Institute for Social Development
20.
জাতিসংঘ মানব বসতি কেন্দ্র (UN-HABITAT)
21.
United Nations Human Settlement
22.
নারীর জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন তহবিল (UNIFEM)
23.
United Nations Development Fund for Women
24.
নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ কমিটি (CEDAW): CEDAW হলো নারী অধিকারের একটি দলিল। এর পূর্ণরূপ Convention on the
Elimination of All Forms of Discrimination Against Women। এ দলিলটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭৯ গৃহীত হয়। সিডও কার্যকর হয় ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৮১। এর মোট ধারার সংখ্যা ৩০।
25.
আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল (IPCC)
26.
Intergovernmental Panel on Climate Change
27.
জাতিসংঘ আবহাওয়া পরিবর্তন বিষয়ক কাঠামো সনদ (UNFCCC) [ United
Nations Framework Convention on Climate Change ]
☞ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম বাংলায় বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ । ১৯৭৪ সালের সম্মেলনটি ছিল জাতিসংঘের ২৯তম।
জাতিসংঘের বিবিধ কনভেনশন
পূর্ণরুপ |
● Convention on the
Elimination of All Forms of Discrimination Against Women |
Note |
● নারীর অধিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল । |
প্রতিষ্ঠাকাল |
● ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । |
ধারা |
● CEADAW সনদটি ৩০ ধারা সম্বলিত। এর প্রথম ১৬টি ধারা নারীর প্রতি কত প্রকার বৈষম্য তা উল্লেখ করে আর শেষ ১৪টি ধারার এ বৈষম্যগুলি বিলোপের উপায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। |
পূর্ণরুপ |
● United Nations
Convention on the Rights of the Child |
Note |
● শিশুর রাজনৈতিক, সামাজিক, অথনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক দলিল। |
প্রতিষ্ঠাকাল |
● জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হবার পর ২০ নভেম্বর, ১৯৮৯ ইহা স্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। |
পূর্ণরুপ |
● UN Convention on
the Law of the sea |
Note |
● সমুদ্রসীমা ব্যবহারে বিভিন্ন দেশের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কিত জাতিসংঘ প্রণীত আইন। সদর দপ্তর - ইতালি |
প্রতিষ্ঠাকাল |
● ১৯৮২ সালের ১০ ডিসেম্বর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। |
'Law of the Sea
Convention' |
● অনুযায়ী উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত 'Exclusive Economic Zone' হিসেবে ধরা হয়। |
১৪ মার্চ ২০১২ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে নিষ্পত্তি হয় সমুদ্রসীমা বিরোধ। উল্লেখ, এ বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্য মামলাটি করা হয়েছিল জার্মানের সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে।
জাতিসংঘ শান্তি মিশন
অন্য নাম |
Blue Beret [কারণ শান্তিরক্ষী বাহিনী হালকা নীল রঙের শিরোস্ত্রাণ (Beret) পরিধান করে।] |
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রথম গঠিত হয়- |
United Nations Truce
Supervision Organization (UNTSO), ১৯৪৮ সালে এই বাহিনী আরব-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষিতে গঠিত হয়। বর্তমানেও এ বাহিনী কর্মরত আছে। |
শান্তিরক্ষী মিশন |
এখন পর্যন্ত ৭১টি শান্তিরক্ষী মিশন গঠিত হয়েছে। তন্মধ্যে বর্তমানে ১৬টি শান্তিরক্ষী মিশন কর্মরত আছে। এছাড়া আফগানিস্তানে বিশেষ রাজনৈতিক মিশন চলছে। সর্বশেষ মিশন: MISCA |
জাতিসংঘ শান্তিবাহিনীর পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান |
Department of
Peacekeeping Operations (DPKO) |
শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশ |
এখন পর্যন্ত শান্তি মিশনে সৈন্য প্রেরণকারী শীর্ষ তিনটি দেশ- প্রথম: পাকিস্তান, দ্বিতীয়: বাংলাদেশ,তৃতীয়: ভারত |
স্বীকৃতি |
১৯৮৮ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায়। |
কাজ |
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা |
জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা
·
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান- দ্বিতীয় (১ম- ইথিওপিয়া)
·
শান্তিরক্ষী প্রেরণে বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত।
·
মিশনে মারা গেছেন ১৪৫ জনের বেশি
·
প্রথম মিশনে যায় - সেনাবাহিনী (১৯৮৮), পুলিশ (১৯৮৯) এবং নৌ ও বিমানবাহিনী (১৯৯৩)
·
বাংলাদেশ সর্ব প্রথম জাতিসংঘের যে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেন তার নাম - UNIIMOG (United
Nations Iran-Iraq Military Obseroer Group) (১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধ বিরতি তদারকীতে অংশগ্রহণের জন্য)।
·
নারী পুলিশ প্রথম যোগদান করে- ১৯৯৯ সালে, পূর্ব তিমুরে
·
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের এশীয় কার্যালয়- ঢাকায় অবস্থিত
·
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং প্রতিষ্ঠা- ১৯৯৯ সালে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে।
·
সিয়েরা লিওনে বাংলা ভাষা পেয়েছে সেই দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা।
·
আইভরিকোস্টে অন্যতম ব্যস্ত সড়কের নাম হয়েছে "বাংলাদেশ সড়ক।
জাতিসংঘের সহস্রাব্দ ঘোষণাপত্র ও এসডিজি
২০০০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে 'মিলেনিয়াম শীর্ষ সম্মেলন' অনুষ্ঠিত হয়। MDG এর পূর্ণরূপ Millennium Development
Goal.এতে ৮ টি লক্ষ্য স্থির করা হয় এবং লক্ষ্যসমূহের সময়সীমা ২০১৫ সাল নির্ধারণ করা হয়েছে।
SDG (Sustainable Development
Goal)/ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতি না করে বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা পূরণ করার মাধ্যমে যে উন্নয়ন, তা ই টেকসই উন্নয়ন। অর্থাৎ, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে উন্নয়নত টেকসই উন্নয়ন। ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২০৩০ এজেন্ডা গৃহীত হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রাগুলি পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে জাতিসংগভুক্ত, ১৯৩ টি দেশ The Sustainable
Development Goals (SDGs) এর এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অফিসিয়াল নাম হলো Transforming our world. জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যে (MDG)-এর সাফল্যের ধারাবাহিকতায় নির্ধারণ করা হয় নতুন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG). SDGs এর মেয়াদ ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। এতে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC)
ICC এর পূর্ণরূপ |
● The International
Criminal Court |
প্রতিষ্ঠাকাল |
● ১৭ জুলাই, ১৯৯৮ রোম চুক্তি (Rome Statute) এর মাধ্যমে The International Criminal Court প্রতিষ্ঠিত হয়। |
সদর দপ্তর |
● দি হেগ, নেদারল্যান্ড |
সদস্য |
● ১২৩টি। |
Note |
● ICC জাতিসংঘের কোন অঙ্গসংগঠন নয়-এটি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। |