বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax)
বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) হল ভাষাবিজ্ঞানের একটি শাখা যা বাক্যের গঠন নিয়ে আলোচনা করে। এটি মূলত একাধিক শব্দ কিভাবে একটি বৃহত্তর বাক্যের গঠন করে এবং সেই বৃহত্তর অংশের বৈশিষ্ট্যগুলো কী, তা নিয়ে আলোচনা করে।
সংক্ষেপে, বাক্যতত্ত্বের মূল বিষয়গুলো হল:
·
বাক্যের গঠন:
শব্দগুলো কিভাবে মিলিত হয়ে বাক্য তৈরি করে তার নিয়মকানুন।
·
পদক্রম:
বাক্যের মধ্যে পদগুলোর সঠিক স্থান বা ক্রম।
·
শব্দের বিন্যাস:
শব্দগুলোকে বাক্যে সাজানোর নিয়ম যা একটি সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে।
·
অর্থের প্রকাশ:
শব্দ এবং বাক্যের গঠন কিভাবে একটি সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে।
উদাহরণস্বরূপ, "আমি ভাত খাই" এই বাক্যটিতে "আমি" (কর্তা), "ভাত" (কর্ম) এবং "খাই" (ক্রিয়া) পদগুলো একটি নির্দিষ্ট ক্রমে বসে একটি সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করছে। বাক্যতত্ত্ব এই পদগুলোর ক্রম এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে।
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
·
আকাঙ্ক্ষা:
একটি পদের পর কোন পদ বসবে তার আকাঙ্ক্ষা।
·
আসত্তি:
পদগুলোর পারস্পরিক নৈকট্য যা একটি বাক্যের গঠনকে স্পষ্ট করে।
·
যোগ্যতা:
বাক্যের পদগুলোর পারস্পরিক সঙ্গতি যা একটি সঠিক অর্থ প্রকাশ করে।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
"ক্ষমার যোগ্য" এর বাক্য সংকোচন নিচের কোনটি?
ক্ষমার্হ
ক্ষমাপ্রার্থী
ক্ষমা
ক্ষমাপ্রদ
#.জটিল কিংবা যৌগিক বাক্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়-
কমা
সেমিকোলন
কোলন
হাইফেন
#.'আজ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার খেলা' এই বাক্যটিতে কোন ধরনের অনুসর্গের ব্যবহার করা হয়েছে?
সংস্কৃত অনুসর্গ
বিবর্তিত অনুসর্গ
ফারসি অনুসর্গ
ক্রিয়াজাত অনুসর্গ
#.বাক্যের অর্থসঙ্গতি ঠিক রাখার জন্য কোনটি দরকার?
আকাঙ্খা
আসত্তি
যোগ্যতা
কোনোটিই নয়।
গঠন অনুযায়ী বাক্যের প্রকারভেদ
১/ সরল বাক্য(কর্তা+কর্ম+ক্রিয়া)
একটি সরল বাক্যের মূল গঠন হল কর্তা (Subject), কর্ম (Object), এবং ক্রিয়া (Verb)। অর্থাৎ, যে বাক্যে কর্তা প্রথমে, কর্ম মাঝে এবং ক্রিয়া শেষে থাকে, তাকে সরল বাক্য (কর্তা+কর্ম+ক্রিয়া) বলে।
উদাহরণস্বরূপ:
·
"ছেলেটি বই পড়ছে।"
o ছেলেটি (কর্তা)
o বই (কর্ম)
o পড়ছে (ক্রিয়া)
এই বাক্যে, "ছেলেটি" কাজটি করছে (কর্তা), "বই" তার কর্ম এবং "পড়ছে" হল কাজটি (ক্রিয়া)। এটি একটি সরল বাক্য কারণ এখানে কর্তা, কর্ম এবং ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট ক্রমে বিন্যস্ত আছে।
অন্যান্য উদাহরণ:
·
"মা রান্না করছেন।"
o মা (কর্তা)
o রান্না (কর্ম)
o করছেন (ক্রিয়া)
·
"পিতা (কর্তা) খবরের কাগজ (কর্ম) পড়ছেন (ক্রিয়া)।"
·
"আমি (কর্তা) ভাত (কর্ম) খাচ্ছি (ক্রিয়া)।"
এই প্রতিটি উদাহরণেই কর্তা, কর্ম এবং ক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট ক্রমে আছে এবং এটি একটি সরল বাক্য।
২/ জটিল বাক্য (....+অব্যয়+....)
একটি জটিল বাক্য (complex sentence) গঠিত হয় একটি স্বাধীন খন্ডবাক্য (independent clause) এবং এক বা একাধিক অধীন খন্ডবাক্য (dependent clause) দিয়ে, যা একটি সংযোজক অব্যয় (subordinating conjunction) দ্বারা যুক্ত থাকে।
একটি জটিল বাক্যের উদাহরণ: "যদি বৃষ্টি হয়, তবে আমরা যাব না।" এখানে, "যদি বৃষ্টি হয়" একটি অধীন খন্ডবাক্য এবং "তবে আমরা যাব না" একটি স্বাধীন খন্ডবাক্য। "যদি" একটি সংযোজক অব্যয় যা এই দুটি খন্ডবাক্যকে যুক্ত করেছে।
জটিল বাক্যের বৈশিষ্ট্য:
·
একটি প্রধান বা স্বাধীন খন্ডবাক্য থাকে যা একা অর্থ প্রকাশ করতে পারে।
·
এক বা একাধিক অধীন বা অপ্রধান খন্ডবাক্য থাকে যা প্রধান খন্ডবাক্যের উপর নির্ভরশীল।
·
সংযোজক অব্যয় (যেমন: যদি, যেহেতু, যখন, যদিও, যাতে, ইত্যাদি) এই দুটি খন্ডবাক্যকে যুক্ত করে।
·
অধীন খন্ডবাক্যটি একা ব্যবহার হলে তার অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না।
উদাহরণ:
·
যে পরিশ্রম করে, সেই সুখ লাভ করে।
·
যতক্ষণ না সূর্য ওঠে, ততক্ষণ আমরা অপেক্ষা করব।
·
যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে, তাই আমরা বের হচ্ছি না।
·
যদি তুমি আস, তবে আমি যাব।
·
যে ছেলেটি গতকাল এসেছিল, সে আমার ভাই।
৩/ যৌগিক বাক্য (সাপেক্ষ সর্বনাম+বাক্য+সাপেক্ষ সর্বনাম+বাক্য)
যৌগিক বাক্য (সাপেক্ষ সর্বনাম + বাক্য + সাপেক্ষ সর্বনাম + বাক্য) বলতে বোঝায়, যে বাক্যে দুটি স্বাধীন খণ্ডবাক্য সাপেক্ষ সর্বনাম দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি যৌগিক বাক্য তৈরি করে। এখানে, একটি সাপেক্ষ সর্বনাম প্রথম খণ্ডবাক্যের সাথে যুক্ত থাকে এবং আরেকটি সাপেক্ষ সর্বনাম দ্বিতীয় খণ্ডবাক্যের সাথে যুক্ত হয়ে বাক্যটিকে সম্পূর্ণ করে।
উদাহরণস্বরূপ:
·
"যদি বৃষ্টি হয়, তবে মাঠে যাবো না।" - এখানে "যদি" এবং "তবে" সাপেক্ষ সর্বনাম, যা দুটি খণ্ডবাক্যকে (বৃষ্টি হলে এবং মাঠে না যাওয়া) যুক্ত করেছে।
·
"যে পরিশ্রম করে, সেই-ই ভালো ফল পায়।" - এখানে "যে" এবং "সেই" সাপেক্ষ সর্বনাম, যা দুটি খণ্ডবাক্যকে (পরিশ্রম করা এবং ভালো ফল পাওয়া) যুক্ত করেছে।
·
"যিনি ভালো ছাত্র, তিনি সবসময় মনোযোগ দিয়ে পড়েন।" - এখানে "যিনি" এবং "তিনি" সাপেক্ষ সর্বনাম, যা দুটি খণ্ডবাক্যকে (ভালো ছাত্র হওয়া এবং মনোযোগ দিয়ে পড়া) যুক্ত করেছে।
এই উদাহরণগুলোতে, প্রতিটি সাপেক্ষ সর্বনাম একটি করে খণ্ডবাক্যের সাথে যুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ যৌগিক বাক্য তৈরি করেছে।
বাক্যের অন্যান্য প্রকারভেদ
নির্দেশক বাক্য
নির্দেশক বাক্য হল সেই বাক্য যা কোনো ঘটনা, তথ্য, বা বিবৃতি প্রকাশ করে। সহজ ভাষায়, যে বাক্যে কোনো কিছু সম্পর্কে সাধারণভাবে কিছু বলা হয়, তাকে নির্দেশক বাক্য বলা হয়। যেমন, "আজ বৃষ্টি হচ্ছে", "আমি ভাত খাচ্ছি" ইত্যাদি।
এখানে নির্দেশক বাক্যের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো:
·
এগুলো সাধারণভাবে কোনো কিছু বর্ণনা করে।
·
এগুলোতে কোনো কিছু ঘটার তথ্য বা বিবৃতি দেওয়া থাকে।
·
এগুলো হ্যাঁ বাচক (affirmative) অথবা না বাচক (negative) উভয়ই হতে পারে।
·
এগুলো প্রশ্ন বা আবেগ প্রকাশ করে না।
উদাহরণস্বরূপ:
·
"সূর্য পূর্ব দিকে উঠে।"
·
"কলকাতা একটি সুন্দর শহর।"
·
"আমি আজ স্কুলে যাব না।" (নেতিবাচক নির্দেশক বাক্য)
·
"আজ খুব গরম পড়েছে।"
প্রশ্নবোধক বাক্য
একটি প্রশ্নবোধক বাক্য হল সেই বাক্য যা কিছু জিজ্ঞাসা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের বাক্যের শেষে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) থাকে। প্রশ্নবোধক বাক্য তৈরি করতে সাধারণত "কে", "কী", "কখন", "কোথায়", "কেন" ইত্যাদি প্রশ্নবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ: তুমি কি খাচ্ছ, আজ কি বার, তুমি কখন আসবে, সে কোথায় যাচ্ছে, তুমি কি চাও.
এই বাক্যগুলোতে "কি", "কখন", "কোথায়" ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।
একটি প্রশ্নবোধক বাক্য সাধারণত নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি ধারণ করে:
·
একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়।
·
বাক্যের শেষে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকে।
·
কিছু ক্ষেত্রে, প্রশ্ন করার জন্য "কে", "কী", "কখন", "কোথায়", "কেন" ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।
·
কিছু ক্ষেত্রে, বাক্যের শুরুতে একটি সাহায্যকারী ক্রিয়া (যেমন, "করতে" বা "হতে") ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, "তুমি কি চাও?" এই বাক্যে "কি" শব্দটি ব্যবহার করে প্রশ্ন করা হয়েছে এবং শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) রয়েছে।
অন্যদিকে, "তুমি কি আমাকে পছন্দ কর?" এই বাক্যে "কর" শব্দটি সাহায্যকারী ক্রিয়া হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন (?) রয়েছে।
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য (Imperative Sentence) হল সেই বাক্য যা আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, বা নিষেধ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। সহজ ভাষায়, যে বাক্যের মাধ্যমে কাউকে কোনো কাজ করতে বলা হয় বা না করতে নিষেধ করা হয়, তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে।
উদাহরণস্বরূপ:
·
দয়া করে বসুন। (অনুরোধ)
·
আজই কাজটি শেষ করুন। (আদেশ)
·
ধূমপান করবেন না। (নিষেধ)
·
সতর্ক থাকুন। (উপদেশ)
·
এখানে আসবেন না। (নিষেধ)
·
দয়া করে ভেতরে আসুন। (অনুরোধ)
·
সময় মতো খাবেন। (উপদেশ)
অনুজ্ঞাসূচক বাক্যের বৈশিষ্ট্য হলো:
·
এগুলো সাধারণত কর্তা (subject) উজ্জ্ব| থাকে, অর্থাৎ "তুমি" বা "আপনি" ইত্যাদি শব্দ উহ্য থাকে।
·
এগুলোতে ক্রিয়া (verb) প্রধানত ক্রিয়ার ধাতু (root form) দিয়ে শুরু হয়।
·
এগুলো বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, যেমন- আদেশ, অনুরোধ, উপদেশ, নিষেধ ইত্যাদি
বিস্ময়সূচক বাক্য
বিস্ময়সূচক বাক্য (Exclamatory sentence) হল সেই বাক্য যা বক্তার মনের আকস্মিক আবেগ, যেমন আনন্দ, দুঃখ, বিস্ময়, রাগ ইত্যাদি প্রকাশ করে। এই ধরনের বাক্যের শেষে একটি বিস্ময়বোধক চিহ্ন (!) বসে।
উদাহরণস্বরূপ:
·
"কি সুন্দর একটি দৃশ্য!"
·
"আহ! কি শান্তি!"
·
"ওহ! কি গরম!"
·
"সাবধান!"
·
"বাহ, কি দারুণ!"
বিস্ময়সূচক বাক্য সাধারণত "কী", "কি", "আহা", "ওহ", "বাহ" ইত্যাদি শব্দ দিয়ে শুরু হয় এবং এগুলোতে বক্তার আবেগ বা অনুভূতি প্রকাশ পায়।
ইচ্ছাসূচক বাক্য
ইচ্ছাসূচক বাক্য (Optative Sentence) হল সেই বাক্য যা বক্তার ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, বা প্রার্থনা প্রকাশ করে। এই ধরনের বাক্যে সাধারণত শুভকামনা, আশীর্বাদ, বা কোনো কিছুর প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করা হয়।
উদাহরণ: "ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।, "আমি যদি পাখি হতাম!, "আপনার যাত্রা শুভ হোক।, "সে যেন পরীক্ষায় ভালো ফল করে।, "কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা।.
এই বাক্যগুলোতে বক্তার মনের ভেতরের ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পাচ্ছে, যা ইচ্ছাসূচক বাক্যের মূল বৈশিষ্ট্য।
বাচ্য (ব্যাংলা ব্যাকরণ)
অভিধান অনুসারে বাচ্য কথাটির অর্থ হল ‘বাক্যে ক্রিয়ার সহিত প্রধানভাবে অন্বিত কর্তৃ প্রভৃতি পদ’। ক্রিয়ার যে রূপভেদের মাধ্যমে বোঝা যায় যে বাক্যের ক্রিয়াপদটি কর্তা, কর্ম নাকি ক্রিয়ার ভাবের অনুসারী তাকেই বাচ্য বলা হয়। অন্যভাবে বললে, ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের কর্তা, কর্ম অথবা ক্রিয়ার ভাবের প্রাধান্য সূচিত হওয়াকেই বলে বাচ্য।
বাচ্যের প্রকারভেদে
সংস্কৃত ব্যাকরণে বাচ্য আট প্রকার। যথা- কর্তৃবাচ্য, কর্মবাচ্য, করণবাচ্য, সম্প্রদানবাচ্য, অপাদানবাচ্য, অধিকরণবাচ্য, ভাববাচ্য এবং কর্মকর্তৃবাচ্য।
কিন্তু বাংলায় বাচ্য চার প্রকার-
১. কর্তৃবাচ্য [Active Voice]
২. কর্মবাচ্য [Passive Voice]
৩. ভাববাচ্য [Neuter Voice]
৪. কর্মকর্তৃবাচ্য[Quasi-Passive Voice]
কর্তার প্রকারভেদ
মূখ্য কর্তা
একটি বাক্যে যে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ নিজে নিজেই ক্রিয়াটি সম্পন্ন করে, তাকে মুখ্য কর্তা বলে।
উদাহরণস্বরূপ, "ছেলেটি বই পড়ছে" এই বাক্যে "ছেলেটি" শব্দটি নিজেই পড়া কাজটি করছে, তাই এটি মুখ্য কর্তা।
সংক্ষেপে, মুখ্য কর্তা হল সেই কর্তা যে কোনো কাজ নিজে করে, অন্যের দ্বারা করানো হয় না।
গৌণ কর্তা
"গৌণ কর্তা" (Pron. "gaun karta") বলতে বাংলা ব্যাকরণে সাধারণত "পরোক্ষ কর্তা" বা "অপ্রধান কর্তা" বোঝায়। বাক্যে যখন একটি কর্ম (object) সরাসরি ক্রিয়া (verb) দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে, অন্য কোনো কর্মের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়, তখন সেই দ্বিতীয় কর্মটিকে গৌণ কর্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সংক্ষেপে, গৌণ কর্তা হল:
·
একটি বাক্যের অপ্রধান কর্ম বা পরোক্ষ কর্ম।
·
যে কর্মটি সরাসরি ক্রিয়া দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে, অন্য কোনো কর্মের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়।
·
উদাহরণস্বরূপ, "বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন" এই বাক্যে, "আমাকে" শব্দটি গৌণ কর্তা, কারণ এটি সরাসরি "কিনে দিয়েছেন" ক্রিয়া দ্বারা প্রভাবিত নয়, বরং "কলম" নামক মুখ্য কর্মের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছে
.
প্রযোজক কর্তা (Producer Agent) হলেন সেই কর্তা, যিনি নিজে কাজ না করে অন্যকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নেন। অন্যভাবে বললে, প্রযোজক কর্তা হলেন সেই ব্যক্তি যিনি কোনো কাজ করার জন্য অন্য কাউকে নিযুক্ত করেন। উদাহরণস্বরূপ,
"শিক্ষক ছাত্রদের বাংলা পড়াচ্ছেন।" এখানে শিক্ষক হলেন প্রযোজক কর্তা এবং ছাত্ররা হল প্রযোজ্য কর্তা।
প্রযোজক কর্তা এবং প্রযোজ্য কর্তা:
·
প্রযোজক কর্তা:
যিনি কাজটি করার জন্য অন্যকে নির্দেশ দেন বা নিযুক্ত করেন। যেমন, উপরের উদাহরণে শিক্ষক।
·
প্রযোজ্য কর্তা:
যিনি প্রযোজক কর্তার নির্দেশ বা নিযুক্তিতে কাজটি করেন। যেমন, উপরের উদাহরণে ছাত্ররা।
উদাহরণ:
·
মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। (এখানে মা প্রযোজক কর্তা এবং শিশু প্রযোজ্য কর্তা।)
·
সাপুড়ে সাপ খেলাচ্ছে। (এখানে সাপুড়ে প্রযোজক কর্তা এবং সাপ প্রযোজ্য কর্তা।)
সুতরাং, প্রযোজক কর্তা হলেন সেই ব্যক্তি যিনি কোনো কাজ অন্যকে দিয়ে করিয়ে নেন।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
#.'মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন'-এখানে 'মা' কোন কর্তা?
মূখ্য কর্তা
গৌণ কর্তা
প্রযোজক কর্তা
প্রযোজ্য কর্তা
#.মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন’-এখানে ‘মা’ কোন কর্তা?
মূখ্য কর্তা
গৌণ কর্তা
প্রযোজক কর্তা
প্রযোজ্য কর্তা
#.মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন?। এখানে মা কোন কর্তা?
মূখ্য কর্তা
গৌণ কর্তা
প্রযোজক কর্তা
প্রযোজ্য কর্তা
কর্তাবাচ্য বা কর্তৃবাচ্য
কর্তাবাচ্য বা কর্তৃবাচ্য হল বাংলা ব্যাকরণের একটি বাচ্য, যেখানে বাক্যের কর্তা (অর্থাৎ কাজটি যে করে) প্রধান ভূমিকা পালন করে। এই বাচ্যে ক্রিয়া (verb) সব সময় কর্তা (subject) অনুসারে পরিবর্তিত হয়। অন্যভাবে বললে, বাক্যের কর্তা যা, ক্রিয়াও তার লিঙ্গ, বচন ও পুরুষ অনুসারে গঠিত হয়।
কর্তাবাচ্য বা কর্তৃবাচ্য:
·
কর্তা প্রধান: বাক্যে কর্তা বা যে কাজটি করে, তার প্রাধান্য থাকে।
·
ক্রিয়া কর্তা অনুসারে: ক্রিয়াটি (verb) সব সময় কর্তা পদের লিঙ্গ, বচন ও পুরুষের ওপর নির্ভর করে গঠিত হয়।
·
উদাহরণ: "ছেলেটি বই পড়ছে।" - এখানে "ছেলেটি" কর্তা, এবং "পড়ছে" ক্রিয়াটি "ছেলেটি" অনুসারে গঠিত হয়েছে। যদি কর্তা "মেয়েটি" হত, তাহলে ক্রিয়া "পড়ছে" না হয়ে "পড়ছে" হত।
·
অন্যান্য বাচ্য: কর্তৃবাচ্যের বাইরে কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যও বাংলা ব্যাকরণে ব্যবহৃত হয়। কর্মবাচ্যে কর্ম প্রধান এবং ভাববাচ্যে ক্রিয়া বা ভাব প্রধান হয়।
সংক্ষেপে, কর্তৃবাচ্য হল সেই বাচ্য যেখানে কর্তা প্রধান এবং ক্রিয়াটি কর্তার লিঙ্গ, বচন ও পুরুষ অনুসারে পরিবর্তিত হয়।
কর্মবাচ্য
কর্মবাচ্য হলো বাংলা ব্যাকরণের একটি বাচ্য বা ভয়েস, যেখানে বাক্যের কর্মপদটি (object) প্রধান থাকে এবং ক্রিয়াপদ কর্মপদকে অনুসরণ করে। সহজভাবে, কর্মবাচ্যে কর্মটি কর্তার মতো কাজ করে এবং ক্রিয়াপদ কর্মের লিঙ্গ, বচন ও পুরুষের সাথে সঙ্গতি রেখে পরিবর্তিত হয়।
উদাহরণস্বরূপ: কর্তৃবাচ্য: "ছেলেটি বই পড়ছে।, কর্মবাচ্য: "ছেলেটি কর্তৃক বইটি পড়া হচ্ছে।.
এই উদাহরণে, কর্তৃবাচ্যের
"ছেলেটি" কর্মবাচ্যে "ছেলেটি কর্তৃক" রূপে পরিবর্তিত হয়েছে এবং "বই" কর্মটি প্রধান হয়ে উঠেছে। "পড়া হচ্ছে" ক্রিয়াটি "বই" এর সাথে সঙ্গতি রেখে পরিবর্তিত হয়েছে।
কর্মবাচ্যের বৈশিষ্ট্য:
·
বাক্যে কর্মপদটি প্রধান থাকে।
·
ক্রিয়া কর্মপদকে অনুসরণ করে।
·
কর্তৃপদে সাধারণত "দ্বারা", "কর্তৃক", "দিয়ে" ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়।
·
কর্মবাচ্য কর্তৃবাচ্যের মতই ক্রিয়া ও কর্মের সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
ভাববাচ্য
ভাববাচ্য হল বাংলা ব্যাকরণের একটি বাচ্য (voice) যেখানে বাক্যের ক্রিয়ার (verb) অর্থ বা ভাবটি প্রধানভাবে প্রকাশিত হয়। এখানে, কর্তা বা কর্মের চেয়ে ক্রিয়ার কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অন্যভাবে বললে, বাক্যের কর্ম বা কর্তা গৌণ হয়ে যায় এবং ক্রিয়ার নিজস্ব অর্থ বা ভাবটিই প্রধান হয়ে প্রকাশ পায়।
ভাববাচ্যের কিছু বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
·
ক্রিয়ার অর্থ বা ভাব প্রধান: ভাববাচ্যে বাক্যের মূল বিষয় হল ক্রিয়াটি কী বোঝাচ্ছে।
·
কর্তৃকারকে 'র', 'এ', 'এর', 'কে' বিভক্তি যুক্ত হয়: যেমন, "রামের যাওয়া হলো", "ছেলেটির খেলা হলো" ইত্যাদি।
·
কর্মপদ নাও থাকতে পারে: অনেক সময় ভাববাচ্যে কর্মপদ থাকে না।
·
ক্রিয়া সাধারণত যৌগিক হয়: যেমন, "যাওয়া হলো", "খাওয়া হলো" ইত্যাদি।
·
সমাপিকা ক্রিয়া সাধারণত 'হ' ধাতু দিয়ে গঠিত হয়: যেমন, "হওয়া", "যাওয়া" ইত্যাদি।
উদাহরণ:
·
"আজ যাওয়া হবে।" (এখানে যাওয়া ক্রিয়াটি প্রধান)
·
"বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে।" (এখানে "ভালো লাগা" ক্রিয়াটি প্রধান)
·
"ছেলেটির খেলতে যাওয়া হলো।" (এখানে "খেলা" ক্রিয়াটি প্রধান)
বাচ্যান্তর এর নিয়ম
"বাচ্যান্তর"
(Bachchantor) এর অর্থ হলো একটি বাক্যের প্রকাশভঙ্গি পরিবর্তন করা, যেখানে বাক্যের মূল অর্থ একই থাকে। এটিকে "বাচ্য পরিবর্তন" বা "ভয়েস চেঞ্জ" ও বলা যেতে পারে।
বাংলা ব্যাকরণে, বাচ্য প্রধানত তিন প্রকার: কর্তৃবাচ্য (Active Voice), কর্মবাচ্য (Passive Voice), এবং ভাববাচ্য (Impersonal Voice)।
·
কর্তৃবাচ্য: যেখানে কর্তা (যে কাজটি করে) প্রধান ভূমিকা পালন করে।
যেমন: "ছেলেটি বই পড়ছে।" এখানে "ছেলেটি" কর্তা এবং তার কাজটি হলো "পড়া"।
·
কর্মবাচ্য: যেখানে কর্ম (যা করা হচ্ছে) প্রধান ভূমিকা পালন করে।
যেমন: "বইটি ছেলের দ্বারা পড়া হচ্ছে।" এখানে "বইটি" কর্ম এবং তার উপর ক্রিয়াটি সম্পন্ন হচ্ছে।
·
ভাববাচ্য: যেখানে কর্তা ও কর্মের প্রাধান্য না থেকে ক্রিয়াটি (verb) নিজে প্রধান হয়ে ওঠে।
যেমন: "আজ যাওয়া যাক।" এখানে "যাওয়া" ক্রিয়াটি প্রধান, এবং এটি একটি ভাববাচ্যের উদাহরণ।
বাচ্য পরিবর্তনের সময়, বাক্যের অর্থ অপরিবর্তিত রেখে শুধু প্রকাশভঙ্গি পরিবর্তন করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, "আমি ভাত খাই" (কর্তৃবাচ্য) এই বাক্যটিকে কর্মবাচ্যে পরিবর্তন করলে হবে "আমার দ্বারা ভাত খাওয়া হয়"।
অকর্মক ক্রিয়ার (যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে না) বাচ্য পরিবর্তন করা যায় না।
উক্তি (ব্যাংলা ব্যাকরণ)
বাংলা ব্যাকরণে "উক্তি" (ukti) বলতে বক্তার বক্তব্যকে বোঝায়। উক্তি দুই প্রকার: প্রত্যক্ষ উক্তি এবং পরোক্ষ উক্তি।
প্রত্যক্ষ উক্তি: যখন বক্তার কথা হুবহু বা অবিকলভাবে প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে প্রত্যক্ষ উক্তি বলে।
উদাহরণ: "আমি কাল যাব," -_ এটি একটি প্রত্যক্ষ উক্তি।
পরোক্ষ উক্তি: যখন বক্তার কথা অন্যের দ্বারা প্রকাশিত হয়, তখন তাকে পরোক্ষ উক্তি বলে। এই ক্ষেত্রে, বক্তার বক্তব্যটি কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে বা নিজের ভাষায় প্রকাশিত হয়।
উদাহরণ: "সে কাল যাবে বলেছে।" - এটি একটি পরোক্ষ উক্তি।
উক্তি পরিবর্তন: প্রত্যক্ষ উক্তিকে পরোক্ষ উক্তিতে বা পরোক্ষ উক্তিকে প্রত্যক্ষ উক্তিতে পরিবর্তন করার প্রক্রিয়াকে উক্তি পরিবর্তন বলে।
উক্তি (বাংলা ব্যাকরণ) পরিবর্তনের নিয়ম: বাংলা ব্যাকরণে উক্তি পরিবর্তন বলতে প্রত্যক্ষ উক্তিকে পরোক্ষ উক্তিতে এবং পরোক্ষ উক্তিকে প্রত্যক্ষ উক্তিতে পরিবর্তন করাকে বোঝায়।
প্রত্যক্ষ উক্তি থেকে পরোক্ষ উক্তিতে পরিবর্তন করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হয়, যেমন-
১. উদ্ধৃতি চিহ্ন ( " " ) লোপ পায়।
২. "যে" অথবা "ও" সংযোজক অব্যয় যুক্ত হয়।
৩. বক্তা, শ্রোতা ও বিষয়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে সর্বনাম, ক্রিয়া পদের পরিবর্তন হয়।
৪. কালসূচক শব্দ ও স্থান-কাল বিষয়ক শব্দের পরিবর্তন হতে পারে।
৫. পরোক্ষ উক্তিতে সাধারণ কথার ক্ষেত্রে 'ল' এবং 'ব' স্থানে 'ন' এবং 'ব' স্থানে 'ম' হয়।
উদাহরণস্বরূপ,
প্রত্যক্ষ উক্তি: "আমি কাল যাব," সে বলল।
পরোক্ষ উক্তি: সে বলল যে, সে পরশু যাবে।
প্রত্যক্ষ উক্তি থেকে পরোক্ষ উক্তিতে পরিবর্তনের সময় এই নিয়মগুলো অনুসরণ করা হয়।
বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন
বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন হল সেইসব সাংকেতিক চিহ্ন যা লেখার সময় বাক্যের অর্থ স্পষ্ট করতে এবং আবেগ প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলোর মাধ্যমে বাক্য পাঠকালে পাঠক কোথায় থামবে, কীভাবে থামবে এবং কোন আবেগ প্রকাশ করবে, তা বোঝা যায়।
উদাহরণস্বরূপ:
·
কমা (,):
বাক্যের মধ্যে অল্প বিরতির জন্য ব্যবহৃত হয়।
·
দাঁড়ি (।) বা পূর্ণচ্ছেদ:
একটি সম্পূর্ণ বাক্য শেষ হয়েছে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
·
প্রশ্নচিহ্ন (?):
যখন কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন এই চিহ্ন ব্যবহৃত হয়।
·
বিস্ময়চিহ্ন (!):
আবেগ, বিস্ময় বা আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়।
·
সেমিকোলন (;):
কমা থেকে একটু বেশি এবং দাঁড়ি থেকে কম বিরতির জন্য ব্যবহৃত হয়।
·
উদ্ধরণ চিহ্ন
(“ ” বা ' '):
কারো কথা হুবহু উদ্ধৃত করতে বা কারো বক্তব্য নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়।
·
ড্যাশ (—):
একটি স্বাধীন ধারা বা বন্ধনীমূলক মন্তব্য যুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
·
হাইফেন (-):
শব্দকে যুক্ত করতে বা একটি শব্দাংশকে আলাদা করতে ব্যবহৃত হয়।
·
Colons
(:), ellipsis (...)
ইত্যাদি আরও অনেক বিরাম চিহ্ন রয়েছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
বিভিন্ন বিরাম চিহ্নের জন্য বিরতির সময়কাল:
এই চিহ্নগুলো ভাষার মাধুর্য বৃদ্ধি করে এবং লেখার মান উন্নত করে। দাঁড়ি/পূর্ণচ্ছেদ (.):
একটি পূর্ণচ্ছেদ (।) ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
·
কমা (,):
কমা ব্যবহারের ক্ষেত্রে অল্প সময় থামতে হয়, যা একটি দাঁড়ি ("।") ব্যবহারের সময়ের চেয়ে কম।
·
সেমিকোলন (;):
সেমিকোলন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কমার চেয়ে বেশি সময় এবং দাঁড়ির চেয়ে কম সময় থামতে হয়।
·
প্রশ্নবোধক চিহ্ন
(?):
প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক সেকেন্ড থামতে হয়।
·
বিস্ময়সূচক চিহ্ন
(!):
বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এক সেকেন্ড থামতে হয়।
·
ড্যাশ (—):
ড্যাশ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এক সেকেন্ড থামতে হয়।
এছাড়াও, ইলেক চিহ্ন, বন্ধনী চিহ্ন এবং উদ্ধৃতি চিহ্নের ক্ষেত্রে সাধারণত তেমন কোনো বিরতির প্রয়োজন হয় না।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
#.কোনটিকে ছেদচিহ্ন বলা যায় না?
কোলন ড্যাশ
বিস্ময়চিহ্ন
হাইফেন
উদ্ধৃতিচিহ্ন
#.কোনটি প্রান্তিক বিরামচিহ্ন?
দাঁড়ি
কমা
কোলন
ড্যাস
#.কোনটি বিরাম চিহ্ন নয় ?
কমা (,)
হাইফেন (-)
কোলন(;)
ড্যাশ (--)
#.বাংলা সাহিত্যে দাঁড়ি, কমা, কোলন ইত্যাদি বিরাম চিহ্ন কে প্রথম ব্যবহার করেন?
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
প্যারীচাঁদ মিত্র
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
#.বাংলা সাহিত্যে দাড়ি, কমা, কোলন প্রভৃতি বিরাম চিহ্ন কে প্রথম ব্যবহার করেন?
বঙ্কিম চন্দ্র
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
প্যারীচাঁদ মিত্র
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
বানান শুদ্ধিকরণ
মধ্যাহ্ন **
সায়াহ্ন **
অন্বেষণ
পূর্বাহ্ণ **
অপরাহ্ণ **
অভ্যন্তরীণ
নিরীক্ষণ
প্রণয়ন
প্রণিপাত
প্রবণ
কল্যাণ
নিক্কণ
মূর্ধন্য
বিপণি
বণ্টন
মনোহারিণী
রূপায়ণ
গণনা
সম্পূর্ণ
ব্যাকরণ
বক্ষমাণ
পরিবহণ
পূণ্য
অরণ্য
স্থাণু
চাণক্য
বাণী
লবণ
ধরন
শূন্য
পুরস্কার ***
পরিষ্কার ***
আবিষ্কার ***
কৃপণ
প্রেরণ
গ্রহণ
ধারণা
তৃণ
লক্ষণ
নিরূপণ
নির্নিমেষ
ক্রন্দন
সূদন
পুরনো
মাণিক্য
গণ
বণিক
গভর্নর
কর্নেল
প্রণয়
রোপণ
পরিমাণ **
ঘণ্টা
লণ্ঠন
প্রতিযোগী **
প্রতিযোগিতা **
সহযোগী
সহযোগিতা
দুর্দিন
দুর্নাম
দুরবস্থা
দুর্নীতি
দুর্ভোগ
দুর্যোগ
দূরীকরণ
অদূর
দূরত্ব
দূরবীক্ষণ
দূর
দূরবর্তী
দুর্বল
দুর্জয়
দুরারোগ্য
দুরাকাঙ্ক্ষা
দুরন্ত
কার্যাবলি
শর্তাবলি
ব্যাখ্যাবলি
নিয়মাবলি
তথ্যাবলি
রচনাবলি
তিরস্কার
তেজস্ক্রিয়
নমস্কার **
পুরস্কৃত
আইসক্রিম
স্টিমার
জানুয়ারি
ফেব্রুয়ারি
প্রাইমারি
মার্কশিট
গ্রেডশিট
আয়ুষ্কাল
আবিষ্কার ***
আয়ুষ্কর
শুষ্ক
বাধাগ্রস্ত
বিপদগ্রস্ত
ক্ষতিগ্রস্ত
হতাশাগ্রস্ত
অঞ্জলি *
গীতাঞ্জলি **
শ্রদ্ধাঞ্জলি **
সোনালি
রূপালি
বর্ণালি
হেঁয়ালি
খেয়ালি
মিতালি
জীবিত
জীবিকা
সজীব
নির্জীব
রাজীব
চাকরিজীবী **
পেশাজীবী **
আইনজীবী **
ক্ষীণজীবী **
অদ্ভুত
ভুতুড়ে
উদ্ভূত
ভূত
ভূতপূর্ব ***
বহির্ভূত ***
ভস্মীভূত
অভিভূত
দূরীভূত***
ব্যাকুল
নিরহংকার
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
#.কোন বানানটি সঠিক?
মূর্ধন্য
মূর্ধন্য
মূর্ধণ
মূর্ধণ্য
#.কোন বানানটি শুদ্ধ?
ভূমিষ্ট
ভুমিষ্ট
ভূমীষ্ট
ভূমিষ্ঠ
#.কোনটি শুদ্ধ বানান?
ইন্দ্রজালিক
ঈন্দ্রজালীক
ঐন্দ্রজালীক
ঐন্দ্রজালিক
#.নিচের কোন বানানটি শুদ্ধ?
ঐক্যজন
ঐকতান
ঐক্যতাণ
ঐকতাণ
#.কোন বানানটি শুদ্ধ?
আদ্যোক্ষর
আদ্যেক্ষর
আদ্যক্ষর
অদ্যক্ষর
বাক্য শুদ্ধিকরণঃ
আমরা যখন বাক্য লিখি তখন বাক্যের মধ্যে নানা রকমের ভুল হতে পারে। ভুল বাক্য মনের ভাব প্রকাশে সমর্থ হয় না। বাক্য লিখার সময় কিছু বিষয় সতর্ক থাকলে বাক্য শুদ্ধভাবে লিখা যায়।
যেসব বিষয়ে ভুল হতে পারেঃ
১. বাক্যে ব্যবহৃত পদের বানান ভুল হতে পারে।
২. বিশেষ উক্তি ব্যবহারে ভুল হতে পারে।
৩. যতি চিহ্নের ব্যবহার করায় ভুল হতে পারে।
৪. বাগধারার বিকৃত প্রয়োগে বাক্য ভুল হতে পারে।
৫. সাধু রীতি ও চলিত রীতির মিশ্রণে বাক্য ভুল হতে পারে।
৬. বাক্যে বহুবচন একাধিকবার ব্যবহার করায় ভুল জতে পারে।
৭. লিঙ্গ ঘটিত ভউল হতে পারে।
৮. পুরুষ বিন্যাস সঠিক না হওয়ায় ভুল হয়।
৯. ক্রিয়াপদ পুরুষ ও কাল অনুসারে না হলে।
১০. বিভক্তির সঠিক ব্যবহার না করায় বাক্য ভুল হতে পারে।
১১. অনুসর্গের সঠিক ব্যবহার না হলে।
১২. অব্যয় পদের যথার্থ প্রয়োগ ভুল হলে।
১৩. অসমাপিকা ক্রিয়ার অপপ্রয়োগে ভুল হয়।
১৪. পদ বিন্যাস সঠিক না হলে ভুল হয়।
১৫. পদের বাহুল্য প্রয়োগে ভুল হয়।
১৬. একই বাক্যে একাধিক বিষয়ের ভুল থাকতে পারে।
বাক্যশুদ্ধি-
১. অশুদ্ধ: অতিশয় দুঃখিত হলাম।
শুদ্ধ: অত্যন্ত/খুব দুঃখ পেলাম।
২. অশুদ্ধ: অল্পদিনের মধ্যে তিনি আরোগ্য হলেন।
শুদ্ধ: অল্পদিনের মধ্যে তিনি আরোগ্য লাভ করলেন।
৩. অশুদ্ধ: অন্যায়ের প্রতিফল দুর্নিবার্য।
শুদ্ধ: অন্যায়ের প্রতিফল অনিবার্য।
৪.অশুদ্ধ: অপরাহ্ন লিখতে সবাই ভুল করে।
শুদ্ধ: অপরাহ্ন লিখতে সবাই ভুল করে।
৫. অশুদ্ধ: অধ্যাপনাই ছাত্রদের তপস্যা।
শুদ্ধ: অধ্যয়নই ছাত্রদের তপস্যা।
৬. অশুদ্ধ: অপমান হবার ভয় নেই।
শুদ্ধ: অপমানিত হবার ভয় নেই।
৭.অশুদ্ধ: অভাগা মেয়েটিকে নিয়ে বড় বিপদে পড়েছি।
শুদ্ধ:অভাগী মেয়েকে নিয়ে বড় বিপদে পড়েছি।
৮. অশুদ্ধ: অপব্যয় একটি মারাত্মক ব্যাধি।
শুদ্ধ:অপচয় একটি মারাত্মক অভ্যা
৯. অশুদ্ধ: অল্প জ্ঞান লোক বিপদজনক।
শুদ্ধ: অল্প জ্ঞান লোক বিপজ্জনক।
১০. অশুদ্ধ: অন্যান্য বিষয়গুলোর আলোচনা পরে হবে।
শুদ্ধ: অন্যান্য বিষয়ের আলোচনা পরে হবে।
১১. অশুদ্ধ: অত্র স্থানের সকলে ভালো আছে।
শুদ্ধ: এই স্থানের সকলে ভালো আছে।
১২. অশুদ্ধ: অদ্য একটি সভায় মহতী অধিবেশন হবে।
শুদ্ধ: অদ্য একটি মহতী সভার অধিবেশন হবে।
১৩. অশুদ্ধ: অশ্রুজলে বুক ভেসে গেল।
শুদ্ধ: অশুতে/চোখের জলে বুক ভেসে গেল।
১৪. অশুদ্ধ: অন্যাভাবে প্রতি ঘরে ঘরে হাহাকার।
শুদ্ধ: অন্নাভাবে প্রতি ঘরে/ ঘরে ঘরে হাহাকার।
১৫. অশুদ্ধ: আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ অনুচিত।
শুদ্ধ: অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ অনুচিত।
১৬. অশুদ্ধ: অতি লোভে তাঁতী নষ্ট।
শুদ্ধ: অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।
১৭. অশুদ্ধ: অধ্যক্ষ সাহেব স্বপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে গেছেন।
শুদ্ধ: অধ্যক্ষ সাহেব সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে গেছেন।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
#.আমি তার উদ্ধতপূর্ণ আচরণে ব্যাথিত হইয়াছি' সাধু ভাষার এ বাক্যে মোট কয়টি ভুল আছে ?
৩ টি
২টি
৪ টি
৫ টি