পৌষ্টিকতন্ত্রের রোগ
পৌষ্টিকতন্ত্র হলো আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গব্যবস্থা যা খাদ্যকে হজম করে পুষ্টি শোষণ করে এবং বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। পৌষ্টিকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশের কার্যকারিতা ব্যাহত হলে পৌষ্টিকতন্ত্রের রোগ দেখা দেয়।
পৌষ্টিকতন্ত্রের রোগ
·
অম্ল বা অ্যাসিডিটি
(Acidity) : অম্ল বা অ্যাসিডিটি এক প্রকার অজীর্ণ রোগ। পাকস্থলি থেকে অধিকমাত্রায় পাকরস বের হওয়ার ফলে এই রোগ হয়। এই রোগের লক্ষণ হল বুক জ্বালা, মাথা ধরা, পিপাসা, পেটফুলে উঠা, মুখ দিয়ে অম্ল ঢেঁকুর, খাবারের আগে বা পরে গলা জ্বালা প্রভৃতি এই রোগের লক্ষণ। দীর্ঘদিন যাবৎ এই রোগে ভুগলে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
·
আলসার কেন হয় : আলসার এক ধরনের ঘা। পাকস্থলীর অভ্যন্তরস্থ ঝিল্লিতে এ ধরনের ঘা হলে তাকে গ্যাসট্রিক আলসার এবং ক্ষুদ্রান্তের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিতে এ ধরনের ঘা হলে তাকে ডিউডেনাল আলসার বলে। এ দুই ধরনের আলসারকে একত্রে পেপটিক আলসার বলে। অতিরিক্ত এসিড ক্ষরণ এবং মানসিক আবেগের জন্য এটা হতে পারে।
·
রক্তবমি
(Haematemesis): কালাজ্বর, পাকস্থলির শিরা ছিড়ে যাওয়া, পাকস্থলিতে ক্যান্সার, যকৃতে রক্তাধিক্যের জন্য রক্ত বমি হয়। তাছাড়া উপরোক্ত কারণে অনেক সময় নাক, চোখ, কান, যোনি এবং গুহ্যদ্বার দিয়েও কখনও কখনও রক্ত বের হতে থাকে। রক্তবমির পূর্ব লক্ষণ হল পেটব্যাথা, ভারবোধ, বদহজম, অবসাদ, মুখে নোনতা ভাব, মাথা ঝিমঝিম, দূর্বল নাড়ী, দীর্ঘশ্বাস প্রভৃতি। বমিসহ রক্তস্রাব হলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগী হিমাঙ্গ হয়ে মারা যায়।
·
সরলান্ত্র নির্গমণ বা হারিস নির্গমণ কি : মলত্যাগের সময় কোঁথানি, অর্শ, উদরাময়, আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতির কারণে সরলান্ত্রের কিছু অংশ বাইরে বেরিয়ে আসে। মলত্যাগের সময় সরল যন্ত্রটা বাইরে বেরিয়ে আসলেও পুনরায় ভিতরে প্রবেশ করে। কোন ঘা, ব্যাথা প্রভৃতি না থাকলে ভয়ের কিছু থাকে না তবে অনেক সময় রক্তস্রাব, ব্যাথা, জ্বালা প্রভৃতি হতে দেখা যায়। অন্ত্র বের হয়ে থাকলে Ice bag -এর সাহায্যে ধীরে ধীরে অন্ত্রকে যথাস্থানে ঢুকিয়ে তুলো গোল করে পাকিয়ে মলদ্বারে দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিতে হয়। এক্ষেত্রে জিয়লমাছের ঝোল, পুরোনো চালের ভাত, কলায়ের ডাল, মানকচু প্রভৃতি খাদ্য উপকার দেয়।
·
অ্যাপেন্ডিসাইটিস : মানুষের পরিপাকতন্ত্রে অবস্থিত বৃহদান্ত্র ও ক্ষুদ্রান্ত্রের মাঝে অ্যাপেন্ডিক্স নামে একটি সরু নালী রয়েছে। কোনো কারণে এটি ক্ষতিগ্রস্ত অথবা পঁচে দৈহিক বৈকল্য দেখা দিলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগ বলে।
·
এপেন্ডিক্স এবং এপেন্ডিসাইটিস : এপেন্ডিসাইটিস ভার্মিফর্ম এর প্রদাহ। সাধারণত ভাইরাল কিংবা আন্ত্রিক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে প্রদাহ হয়। পরিপাকতন্ত্রের বৃহদান্ত্রের শুরুতে সিকামের সাথে এপেন্ডিক্স থাকে। কোনো কারণে এটি পঁচে গেলে তীব্র ব্যাথাসহ দৈহিক বৈকল্য দেখা দেয়। এপেন্ডিসাইটিস হল রোগ বিশেষ। এপেন্ডিক্সের তীব্র ব্যাথাসম্বলিত রোগই এপেন্ডিসাইটিস। মল, কৃমি প্রভৃতি দ্বারা এপেন্ডিক্সের নালী বন্ধ হলে এতে পচন ধরে তীব্র ব্যাথা হয়। আবার ভাইরাস বা আন্ত্রিক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট প্রদাহের কারণে এপেন্ডিক্স গাত্র ফুলে ওঠে এবং রক্ত প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে। ফলে এপেন্ডিক্সে পচন ধরে তীব্র ব্যাথা হয়। প্রদাহজনিত এ ব্যাথা প্রথম নাভির গোড়ায় অনুভূত হয় এবং পরে তলপেটের ডানদিকে সরে যায়। এপেন্ডিসাইটিস হলে জরুরি শল্য চিকিৎসা করাই সর্বোত্তম।
·
অন্ত্রবৃদ্ধি
(Hernia) : অধিক পরিশ্রম, মলমূত্র ত্যাগে জোরে কোঁথ দেওয়া, আঘাত লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, জোরে চিৎকার করা, পেটে চাপ পড়া ইত্যাদি কারণে অন্ত্রবৃদ্ধি হতে পারে। এই রোগে পেটের ভিতরের নাড়ীর অংশ বিশেষ অম্লাবরণসহ কুচকির রন্ধ্র পথে নাড়ী অন্ডকোষে চলে যায়। এই অন্ত্রকে উপযুক্ত স্থানে সরিয়ে না আনলে বমি, জ্বর, পেট ফোলা, হেঁচকী, পেটে তীব্র ব্যাথা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। এই রোগে অপারেশন ছাড়া সহজে সারে না। অনেক সময় রোগীকে চিৎকরে শুইয়ে পা দুটিকে উঁচু করে রাখলে অস্ত্র কখনও কখনও যথাস্থানে ফিরে আসে। ব্যাথার Ice bag অথবা হার্ণিয়ার ট্রাস ব্যবহারে সুফল পাওয়া যায়।
·
কোষ্ঠ-বদ্ধতা (Constipation): মলত্যাগের নিয়মিত অভ্যাসের ব্যত্যয় ঘটলে অথবা দীর্ঘ বিরতির পর মল ত্যাগ করলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য নামে চিহ্নিত করা হয়। দুশ্চিন্তা, শোক, দুঃখ, ভয়, স্নায়ুবিক দূর্বলতা, চা, কফি, মাদক দ্রব্য পান, ঠান্ডা লাগা, অধিক শ্রম, হস্তমৈথুন, লিভার রোগ, আন্ত্রিক রোগ, আঘাত লাগা, চর্ম রোগ প্রভৃতি হতে এই রোগ দেখা দেয়। এই রোগের প্রধান প্রধান লক্ষণ হল মাথা ধরা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধা লোপ, অস্বাচ্ছন্দ বোধ, মলের রং কাদা মাটি বা ছাইয়ের মতো হওয়া। তাছাড়া অনেক সময় জন্ডিসের লক্ষণও প্রকাশ পায়।
·
অর্শ
(Piles) : মলদ্বারের বাইরে অথবা ভিতরে বা কখনও কখনও উভয় স্থানেই শিরা ফুলে উঠে মটর দানার মতো বলি উৎপন্ন করে তাকে অর্শ বলে। কখনও একটি বা কখনও একাধিক বলি আঙ্গুরের থলির আকারে দেখা যায়। বাহিরের বলিকে বলা হয় বহিঃবলি এবং ভিতরের বলিকে বলা হয় অন্তর্বলি। কোষ্ঠকাঠিন্য, পাথরী, গর্ভকালীন, পায়ুতে চাপ বেড়ে, প্রোস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি হয়ে অথবা লিভারের পুরাতন রোগ থেকে অর্শ হতে পারে। নালী ঘা, চুলকানী, ব্যাথা, জ্বালা, কুটকুট করে কামড়ানী প্রভৃতি এই রোগের লক্ষণ। দীর্ঘ রোগ ভোগে ভগন্দর, স্ফোটক, রক্ত শূন্যতা, হৃদপিন্ডের দূর্বলতা প্রভৃতি দেখা যায়।
শ্বাসতন্ত্রের রোগ
শ্বাসতন্ত্রের রোগ হলো এমন রোগ যা শ্বাস-প্রশ্বাসের অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে। শ্বাসতন্ত্রের মূল অঙ্গগুলি হলো ফুসফুস, ব্রঙ্কি, ট্র্যাকিয়া এবং নাক। শ্বাসতন্ত্রের রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে সংক্রমণ, অ্যালার্জি, দূষণ এবং ধূমপান। শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো হলো ব্রঙ্কাইটিস , হাঁপানি , নিউমোনিয়া ও ডিপথেরিয়াসহ অন্যান্য রোগ ।
·
হাঁপানি
ব্রঙ্কাইটিস
ব্রঙ্কাইটিস হলো শ্বাসনালীর ভিতরে আবৃত ঝিল্লিতে প্রদাহ বা সংক্রমণ । শ্বাসনালী হলো ফুসফুসের সাথে বাইরের বাতাসের সংযোগকারী নল। ব্রঙ্কাইটিস তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ধূলিকণা মিশ্রিত আবহাওয়া, ঠান্ডা লাগা এবং ধূমপান থেকে এ রোগ হতে পারে।
⮚ লক্ষণ:
1.
কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।
2.
কাশির সাথে কফ থাকে।
3.
জ্বর হয়।
4.
শরীর ক্রমান্বয়ে দূর্বল হয়।
⮚ প্রতিকার:
1.
ধূমপান বন্ধ করতে হবে।
2.
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে ।
হাঁপানি
হাঁপানি হলো দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। এটি শ্বাসনালীর প্রদাহ ও সংকোচনের কারণে হয়, ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা, বুকে চাপ অনুভূত হয় এবং শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মা জমা হয়। এতে মাঝে মাঝে কাশি ও শ্বাসকষ্ট রোগীকে অত্যন্ত যন্ত্রণা দেয়। হাঁপানি যেকোনো বয়সে হতে পারে, তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
⮚ কারণ: এলার্জি আছে এমন কোনো জিনিস খেলে, বাতাসে উপস্থিত ধোঁয়া ও ধূলা প্রশ্বাসের সাথে ফুসফুসে প্রবেশ করলে হাঁপানী হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণ সর্দি থেকে হাঁপানি হতে পারে।
⮚ লক্ষণ:
1.
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
2.
শ্বাসকষ্টে দম বন্ধ হওয়ার মতো হয়।
3.
জোরে জোরে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করে।
4.
ফুসফুসের বায়ুথলিতে ঠিকমতো অক্সিজেন সবরাহ হয় না বলে বেশি কষ্ট হয়।
5.
শ্বাস নেওয়ার সময় রোগীর পাঁজরের মাঝের চামড়া ভেতর দিয়ে ঢুকে যায়।
6.
কাশির সাথে কখনও সাদা কফ বের হয়।
7.
জ্বর থাকে না।
⮚ প্রতিকার:
1.
পরিষ্কার মুক্ত বাতাসে থাকার চেষ্টা করা।
2.
যে জিনিসের সংস্পর্শে আসলে বা খেলে হাঁপানি বাড়ে তা থেকে বিরত থাকা।
3.
ডাক্তারের পরামর্শ মতো চলা।
4.
ধোঁয়া, ধূলা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা।
5.
ধূমপান ছেড়ে দেয়া।
তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় তাৎক্ষণিক রোগীকে এমনভাবে শোয়াতে হয় যাতে শ্বাস গ্রহণ বা বর্জনের সময় বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণভাবে কোনো বাধা না থাকে। এ সময় রোগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়। রেসপিরেটরী অর্গানসমূহকে যেকোনো চাপ থেকে মুক্ত করে রোগীকে মাথা সামান্য উঁচুতে রেখে চিৎ করে ভূমির সমান্তরালে শুইয়ে দেয়াই Supine position.
নিউমোনিয়া
নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের একটি রোগ, যা কক্কাস ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস কর্তৃক সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ রোগে ফুসফুস আক্রান্ত হয় এবং ফুসফুসের থলিতে অস্বস্তিকর যন্ত্রণা হয়। যে কোন বয়সের মানুষের নিউমোনিয়া রোগ হতে পারে। তবে শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সের মানুষ যাদের ফুসফুস, হার্ট, কিডনির রোগ, ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর লক্ষণগুলো হচ্ছে জ্বর হওয়া, বুকে ব্যথা, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট অনুভূত হওয়া ইত্যাদি।
ডিপথেরিয়া
জীবাণুঘটিত একটি অতি পরিচিত সংক্রামক ব্যাধি হলো ডিপথেরিয়া। এ রোগের জীবাণু সাধারণত শ্লেষ্মা ঝিল্লির উপর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তবে ত্বকের উপরে বৃদ্ধি ঘটতে পারে। এটি শ্লেষ্মা ঝিল্লির উপর আপাত পর্দার মতো প্রসারণশীল জাতীয় পর্দা তৈরি করে যা কণ্ঠনালী ও শ্বাসনালী বন্ধ করতে পারে। আগে এ রোগের বিস্তার ছিল সারা পৃথিবী জুড়ে, কিন্তু ডিপথেরিয়া টক্সয়েড দ্বারা সার্বজনীন টিকাদান কর্মসূচির ফলে আজকাল এ রোগের প্রকোপ অনেক কমে এসেছে। ডিপথেরিয়ার বাহক হিসেবে যেসব প্রাণীকে দায়ী বলে গণ্য করা হয় তাদের মধ্যে বিড়াল, ঘোড়া ও শুকর উল্লেখযোগ্য। ডিপথেরিয়া রোগের আবিষ্কারক সিজাচিক।
মশা বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহন করে, যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। মশার কামড়ের মাধ্যমে এই জীবাণুগুলি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এসব রোগসমূহকে একত্রে মশা বাহিত রোগ বলা হয় । মশার দ্বারা মানুষের ডেঙ্গুজ্বর, ফাইলেরিয়া ও ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে। ডেঙ্গুজ্বর হয় এডিস মশকীর দ্বারা, ফাইলেরিয়া কিউলেক্স মশকী আর ম্যালেরিয়া জ্বর হয় অ্যানোফিলিস মশকীর দ্বারা।
·
ডেঙ্গুজ্বরের বাহক মশার নাম: এডিস
(Aedes aegypti) নামক মশকী হচেছ ডেঙ্গুজ্বরের বাহক।
·
ডেঙ্গু রোগে রক্তের কোন কণিকা ভেঙে যায়: ডেঙ্গু রোগে রক্তের অণুচক্রিকা
(Platelets) ভেঙে যায়।
·
এ রোগ যেভাবে বাহিত হয়: ডেঙ্গু ফিভার বা জ্বর এক ধরনের ভাইরাস দ্বারা হয়ে থাকে। শারীরিক দূর্বলতা, ফুসকুড়ি ও লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া এ রোগের উপসর্গ। এডিস ইজিপটি নামক এক জাতীয় মশকী এ ভাইরাসের বাহক। এ মশকীর একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এরা সাধারণত দিনের বেলায় মানুষকে কামড়ায়, গরম কালে শহর এলাকায় জলাবদ্ধ স্থানে এরা বংশবিস্তার করে থাকে। বিশেষ করে গরমকালেই এদের বংশবিস্তার বেশি হয়ে থাকে। এই ভাইরাসকে ডেঙ্গু ভাইরাসও বলা হয়। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশা যাদেরকে কামড়ায় তারাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবে। তাছাড়াও এ মশা কোনো আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ানোর পরে কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তিটিও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবে। তাই বলা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিটিও এ রোগ ছড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ডেঙ্গুজ্বরের প্রধান লক্ষণ:
শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত
প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যায়
পেটফুলে যায় (লিভার বড় হয়ে যায়) কিংবা পানি জমে যায়
পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা হয়
·
কি দিয়ে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায়: ডেঙ্গু ভাইরাস এডিস মশার
(Aedes aegypti ও Aedes albopictuus) মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এডিস মশা সাধারণত কোন ডেঙ্গু রোগীকে কামড়ানোর ৮-১১ দিনের মধ্যে সংক্রমণে পরিণত হয় এবং কোন সুস্থ রোগীকে দংশন করলে তার এ রোগ হয়। এডিস মশা একবার সংক্রামক হলে সারাজীবন রোগ সংক্রমণ করে যেতে পারে এবং ঐ সংক্রামক মশার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই রোগের সংক্রামক হয়েই জন্মাবে। সংক্রমিত মশার কামড়ের পর এই ভাইরাস প্রথম লসিকা গ্রন্থিতে চলে যায়। সেখানে থেকে লসিকা তন্ত্রে গিয়ে বিস্তার লাভ করে এবং রক্তে ছড়িয়ে পড়ে।
·
ডেঙ্গুর লক্ষণসমূহ: হঠাৎ উচ্চ তাপমাত্রার (৪০০ সে.) দ্বিস্তরের
(Biphsic) জ্বর হয়ে থাকে। মাংসপেশীতে মারাত্মক ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে, এ জন্য ডেঙ্গুকে ব্রেকবোন ফিভারও বলা হয়ে থাকে। এতে খুব মাথা ব্যথা হয়। আপার রেসপিরেটরি সিস্টেম তথা হাঁচি, কাশি ইত্যাদি হতে পারে। জ্বর কয়েকদিন পর স্বল্প সময়ের বিরতিতে আবার দেখা দেয়। এই সময়ে ৩য় থেকে ৫ম দিনের মধ্যে এক ধরনের লালচে রেশ (Maculopapular) প্রথমে শরীরে, পরে হাতে- পা ও মুখে ছুড়িয়ে পড়ে। রেশ দেখা দেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে জ্বর পড়তে শুরু করে এবং রোগী ক্রমে আরোগ্য লাভ করে। এ জ্বরে রক্ত ক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। রোগীর দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ গহ্বরের প্রাচীর দিয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়। এ কারণে সাধারণত রক্তের প্লাটেলেট কমে যায়।
·
ডেঙ্গু ভাইরাস: ডেঙ্গু ভাইরাস ফ্লেভিভাইরাস গ্রুপের সদস্য এক ধরনের আর.এন.এ. ভাইরাস। এ ভাইরাস চার ধরনের-
Den-1, Den-2, Den-3, Den-4.
⮚ ম্যালেরিয়া জীবাণু: ম্যালেরিয়ার জীবাণু আবিষ্কার করেন রোনাল্ড রস এবং কুইনাইন আবিষ্কার করেন রেডি। ম্যালেরিয়া জীবাণু হলো প্লাজমোডিডা
(Plasmodida) পরিবারের স্পোরোজোয়া (Sporozoa) শ্রেণীভুক্ত হোমোপেডিয়া
(Hemopurodia) প্রণপের একটি ক্ষুদ্র প্রোটজোয়া (Protozoa)। ম্যালেরিয়া জীবাণু ৪ ধরনের (ক) প্লাজমোডিয়াম ভাইভাক্স, (খ) প্লাজমোডিয়াম ফালসিপেরাম, (গ) প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরাই ও (ঘ) ওভালি। ভাইভাক্স গ্রুপের জীবাণু মানুষের দেহের লাল রক্তকণিকায় একটি গোলাকার রিং হিসেবে প্রকাশ পায় এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিপক্ক হয়ে ১৬-২৪টি জীবাণুতে বিভক্ত হয়। এরপর রক্তকণিকা ভেঙ্গে যায় এবং প্রত্যেকটি জীবাণু দেহের অন্য রক্তকণিকাকে আক্রমণ করে। এ সময় রোগীর দেহে কম্পন অনুভূত হয়। মানবসমাজে ম্যালেরিয়া বিস্তারে এনোফিলিস মশকীই একমাত্র বাহক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ মশার ৩৫টি প্রজাতি রয়েছে। স্ত্রীজাতীয় এনোফিলিস মশা উর্বর ডিম প্রসব করার জন্য মানুষের রক্তের প্রয়োজন। তাই এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে মানুষের ম্যালেরিয়া রোগ হয়। অবশ্য পুরুষ মশা গাছের রস ও মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে।
⮚ ম্যালেরিয়া জীবাণুর আক্রমণে রোগী দেহে রক্তশূন্যতা দেখা যায় নিম্নলিখিত কারণে:
·
[ক] লোহিত রক্তকণিকার ভেতর থেকে মেরোজায়াইটগুলো যখন বের হয় তখন কণিকাগুলো ধ্বংস হয়।
·
[খ] আক্রান্ত লোহিত কণিকাগুলোর প্রাচীর ভেঙ্গে গিয়ে তারা নষ্ট হয়।
·
[গ] ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর প্লীহা ফুলে যায় ও তা লাইসোলেসিথিন নামক বস্তু নিঃসৃত করে, যা লোহিত কণিকাকে ধ্বংস করে থাকে ।
·
[ঘ] জীবাণুগুলো 'হিমোলাইসিন' নামক বস্তু উৎপন্ন করে যা লোহিত কণিকার 'হিমোলাইসিস' ঘটায়।
⮚ সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া: সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া হচ্ছে এক ধরনের ম্যালেরিয়া, যা প্লাজমোডিয়া ফ্যালসিপেরাস নামক এক ধরনের প্যারাসাইট জাতীয় জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে এবং এটি মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে। এ ম্যালেরিয়ায় মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয় বলেই একে সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া নামকরণ করা হয়েছে। কোনো স্ত্রী এলোফিলিস মশা যদি সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে কামড় দেয় তাহলে রোগীর রক্তে অবস্থিত সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ার প্যারাসাইট (পরজীবী বা জীবাণু) মশার শরীরে ঢুকে পড়ে। মশার শরীরে ম্যালেরিয়ার এ জীবাণু ৭ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পরিণত হয়ে সংক্রমণযোগ্য একটা পর্যায়ে পৌছে। এ পর্যায়ে সংক্রমিত মশাটি কোনো মানুষকে কামড় দিলে মশার লালাগ্রন্থির মাধ্যমে ম্যালেরিয়া জীবাণু সেই মানুষের শরীরে ঢুকে পড়ে অর্থাৎ মানুষটি ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। সব ধরনের ম্যালেরিয়া এভাবেই ছড়ায়।
নেমাটোড নামীয় সুতার মতো কীটের এক বা একাধিক প্রজাতির আক্রমণে ফাইলেরিয়া রোগ হয়। অনেকে মনে করেন এটা এক বিশেষ ধরনের মশা বা মাছি দ্বারা আক্রান্ত সংক্রমিত রোগ। এই রোগ হলে প্রচন্ড জ্বর ও শরীরের অংশবিশেষ ফুলে যায় এবং প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৪০ F. শরীরের তাপ ৯৮.৪০ F (36.34 ০ C)
থেকে বেড়ে গেলে বুঝতে হবে জ্বর। তার মানে শরীরে পাইরোজেনস উৎপন্ন হয়েছে। পাইরোজেনকে বলা হয় thermostable bacterial toxin, এর মানে জীবাণুঘটিত বিষ। এই বিষ শরীরের যেসব কলকব্জাগুলো তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখে তাদেরকে বিকল করে দেয় আর তখনই জ্বর দেখা দেয়। তাই রোগ নিরূপিত না হওয়া পর্যন্ত ডাক্তারী ভাষায় জ্বরকে বলা হয় পাইরেকসিয়া।
⮚ হাইপার পাইরেক্সিয়া জ্বর: শরীরের তাপমাত্রা ১০৬০ F-এর বেশি হলে তাকে হাইপার পাইরেক্সিয়া জ্বর বলে। এটি একটি জরুরি অবস্থা যখন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দরকার।
গরমের সময় বেশি রোদে কেউ কেউ রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে কেন: তাপ সহ্য করার ক্ষমতা শেষ সীমায় পৌঁছলেই একজন লোক অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে। একে বলে হিটস্ট্রোক
(Heatstroke)। ঘাম প্রচন্ড গরম থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে রাখে। কিন্তু একটানা বেশিক্ষণ গরম থাকলে ঘামার হার কমতে থাকে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে সে হার আরও কমে। আবার কোনো মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই ঘামার হার খুব কমে আসে বা একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় একেবারেই ঘাম হয় না। এ অবস্থায় হিটস্ট্রোক হতে পারে। মোটা মানুষ বা বয়স্কদের এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
পানিবাহিত রোগ | Water borne diseases
দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে অথবা সেই পানি রান্নাসহ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করার ফলে যে ধরনের রোগ সংক্রমিত হয় তাকেই পানিবাহিত রোগ বা জলবাহিত রোগ বলা হয় । দূষিত পানিতে জীবাণু, ভাইরাস, পরজীবী এবং রাসায়নিক পদার্থ থাকতে পারে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পানিবাহিত রোগ বিশ্বব্যাপী একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। অতি পরিচিত পাঁচটি পানিবাহিত রোগ হল ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা, জন্ডিস ও টাইফয়েড। বন্যার পর ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায় । যে সব অনুজীব রোগ সৃষ্টি করে তাদেরকে প্যাথজেনিক বলে ।
ডায়রিয়ার প্রতিকার
⮚ ডায়রিয়া চিকিৎসার মূল নীতি:
1.
পানি স্বল্পতা প্রতিরোধ করা ;
2.
পানি স্বল্পতার সৃষ্টি হলে তা পূরণ করা ;
3.
ডায়রিয়া চলাকালে ও পরবর্তীকালে শরীরের উপযুক্ত পুষ্টির ব্যবস্থা করা ;
⮚ পানি স্বল্পতা প্রতিরোধ করার জন্য :
·
ক. রোগীকে অতিরিক্ত পানীয় (যেমন- ভাতের মাড়, লবণ গুড়ের শরবত, মুখে খাওয়ার স্যালাইন ইত্যাদি) পান করাতে হবে;
·
খ. রোগীকে যথেষ্ট খাবার দিতে হবে;
⮚ পানি স্বল্পতা সৃষ্টি হলে :
·
ক. শরীর থেকে যে পানি ও লবণ বের হয়ে গিয়েছে তা পূরণ করতে হবে। পানি স্বল্পতার মাত্রানুসারে মুখে খাবার স্যালাইন কিংবা শিরায় স্যালাইন দিয়ে পানি স্বল্পতা পূরণ করা যায়।
·
খ. ডায়রিয়া চলতে থাকলে মুখে খাওয়ার স্যালাইন খাইয়ে পানি স্বল্পতা রোধ করতে হবে।
⮚ ডায়রিয়া রোগীকে স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কেন:
ডায়রিয়ার মূল সমস্যা হল দেহ হতে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এতে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এ জন্য ডায়রিয়া রোগীকে ওর-স্যালাইন (ORS) খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
⮚ ওর স্যালাইনের (ORS) উপাদান:
১.৩০ মিঃ গ্রাম - সোডিয়াম ক্লোরাইড
০.৭৫ মিঃ গ্রাম - পটাশিয়াম ক্লোরাইড
১.৪৫ মিঃ গ্রাম - ট্রাই সোডিয়াম সাইট্রেট
৬.৭৫ গ্রাম - গ্লুকোজ
⮚ ডায়রিয়ায় ডাবের পানি উত্তম কেন:
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ঘনঘন পাতলা পায়খানা ও বমির ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় পানি ও অত্যাবশ্যকীয় খনিজ লবণের অভাব দেখা দেয়। ডাবের পানিতে পটশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কিছুটা গ্লকোজও থাকে। এসব রাসায়নিক পদার্থের সাথে কিছুটা সোডিয়ামও বিদ্যমান। অন্য কোনো পানীয়তে এত সব নেই। এজন্য ডায়রিয়া হলে ডাবের পানি অত্যন্ত উপকারী।
⮚ নরমান স্যালাইন: সোডিয়াম ক্লোরোইডের ০.৯% জলীয় দ্রবণ।
⮚ খাবার স্যালাইন: icddr'b (International
Centre for Diarrhoreal Disease Research, Bangladesh) ১৯৬০ সালে ওরস্যালাইন বা খাবার স্যালাইন আবিষ্কার করেন ।
⮚ খাবার স্যালাইন বানানোর পর কতক্ষণ পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে : ওআরএস প্যাকেট দিয়ে তৈরি স্যালাইন ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। যদি ১২ ঘন্টা পর স্যালাইন অবশিষ্ট থাকে তবে তা ফেলে দিতে হবে এবং পুনরায় নতুন স্যালাইন তৈরি করতে হবে।
আমাশয়ের কারণ এবং প্রতিকার
অ্যান্টি অ্যামিবা হিস্টোলাইটিকা নামক এক প্রকার প্রোটোজোয়া এবং সিগেলা নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এ রোগ হয়। আমাশয় দুই ধরনের- অ্যামেবিক আমাশয় ও ব্যাসিলারি আমাশয়। মবিকুইন এন্টারোভায়োফর্ম ও Metronidazole অ্যামেবিক আমাশয়ের জন্য এবং মালফাগুয়ানিডিন, স্ট্রেপটোমাইসিন প্রভৃতি ব্যাসিলারি আমাশয়ের প্রতিকারের জন্য ব্যবহৃত হয়।
আমাশয়ের উপসর্গ এবং প্রতিকার: Antamoeba histolytica নামক এক প্রকার প্রোটোজোয়া এবং Shigella নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এ রোগ হয়। তাই আমাশয় দু'ধরনের অ্যামেবিক আমাশয় ও ব্যাসিলারী আমাশয়। নাভির চারপাশে ব্যথা, ঘন ঘন মলত্যাগ, মলের সাথে পুঁজ, শ্লেষ্মা ও রক্তক্ষরণ এ রোগের লক্ষণ। অ্যামেবিক আমাশয়ের লক্ষণ হলো দুর্গন্ধযুক্ত তরল মল, বাদামী রঙের স্বল্প শ্লেষ্মাযুক্ত মল।
কলেরা রোগের কারণ ও প্রতিকার
সাধারণত দূষিত খাবার গ্রহণের সময় মানুষ কলেরার জীবাণু গ্রহণ করে। মাছি এ রোগ বেশি ছড়ায়। টেট্রা সাইক্লিন এবং ওরাল ফ্লুইড গ্রহণ করলে এ রোগ প্রতিকার করা যায়। এ রোগ প্রতিরোধ করতে হলে কলেরা প্রতিরোধক টিকা নেয়া প্রয়োজন। আক্রান্ত রোগীকে আলাদা করে রাখতে হবে। রোগীর মলমূত্র মাটিতে পুতে রাখতে হবে ও পানি ফুটিয়ে খেতে হবে।
·
কলেরা স্যালাইন কে আবিষ্কার করে : ICDDR,B
·
ICDDR,B এর পূর্ণরূপ : International
Center for Diarrhoeal Disease Research, Bangladesh
·
ICDDR,B কোথায় অবস্থিত : মহাখালী, ঢাকা।
·
টাইফয়েড : বেসিলাস টাইফাস নামক জীবাণু দ্বারা এ রোগের উৎপত্তি। এ ধরনের জীবাণু পানি, খাদ্য বা দুধের সাথে শরীরে প্রবেশ করে এবং রক্তে বিষ ছড়ায়। টাইফয়েড প্রতিরোধক টিকা নিলে ও পানি ফুটিয়ে খেলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
অনুশীলন
অধ্যায়
১. পানিবাহিত রোগ কোনটি ? [ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২०20/ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সিনিয়র স্টাফ নার্স ২০১৮/ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সাধারণ) ২০১৮ ]
·
টাইফয়েড
·
ডেঙ্গুজ্বর
·
ম্যালেরিয়া
·
যক্ষা
২. পানি বাহিত রোগ কোনটি ? [প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মচারী-১৩ ]
·
কলেরা
·
যক্ষ্মা
·
ডেঙ্গু
·
ফ্লু
৩. কোনটি পানিবাহিত রোগ ? [সমাজসেবা অফিসার (সমাজকল্যঅণ মন্ত্রণালয়-১০ ]
·
বসন্ত
·
ইনফ্লুয়েঞ্জা
·
সর্দি-কাশি
·
জন্ডিস
৪. কোনটি রক্ত আমাশয়ের জীবাণু ? [মেডিকেল অফিসার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-০৩ ]
·
সিগেলা
·
জিয়াডিয়া
·
সালমোনেলা
·
কেমপাইলোবেকটর
৫. বন্যার পর কোন অসুখের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায় ? [শ্রম অধিদপ্তরের ২য় শ্রেণীভূক্ত শ্রম কর্মকর্তাঃ ০৪ ]
·
ডায়রিয়া
·
ডেঙ্গু
·
জ্বর
·
চুলকানি
৬. কলেরা বা ডায়রিয়ার রোগী স্যালাইন খেতে দেওয়া হয় কেন ? [প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক (রাজশাহী বিভাগ): ০৭ ]
·
বমি বন্ধ হওয়ার জন্য
·
দেহে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণের জন্য
·
পায়খানা বন্ধ হওয়ার জন্য
·
দেহ বর্ধনের জন্য
৭. নরমাল স্যালাইন হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড এর- [ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ১২টি পদঃ ০১/ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মেডিকেল অফিসার ৯৪]
·
০.৫% জলীয় দ্রবণ
·
১% জলীয় দ্রবণ
·
০.৯% জলীয় দ্রবণ
·
১৯% জলীয় দ্রবণ
৮. Normal Saline এ কি আছে ? [স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র স্টাফ নার্স (বার্তিলকৃত) ২০১৭ ]
·
0.9% Sodium chloride
·
0.5% Sodium chloride
·
0.75% Sodium Chloride
·
3% Sodium chloride
৯. A normal solution
contains 1 equivalent weight of solute in- [ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সহকারী ভূরসায়নবিদঃ ৯৮ ]
·
1000ml
·
10ml
·
100ml
·
5ml
১০. খাবার স্যালাইন আবিষ্কারে মূল অবদান রাখে- [স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নার্সিং সেবা অধিদপ্তরের মিডওয়াইফ ২০১৭ ]
·
WHO
·
UNESCO
·
ICDDRB
·
UNICEF