বাইনারি সংখ্যার যোগ বিয়োগ
দশমিক বা ডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ , বিয়োগ , গুণ , ভাগ সম্পর্কে আমরা সবাই পরিচিত । দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির ডিজিট হচ্ছে দশটি । কিন্তু আজ আমরা এমন একটি সংখ্যা পদ্ধতির যোগ বিয়োগ সম্পর্কে জানব যেটির ডিজিট সংখ্যা মাত্র দুটি যথাঃ ০ এবং ১ । এই দুটি মাত্র ডিজিট দিয়েই দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির মতো সকল প্রকার যোগ , বিয়োগ , গুণ , ভাগ তথা গাণিতিক হিসাব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় । এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন আজ আমরা কি আলোচনা করতে যাচ্ছি । হ্যা আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে বাইনারি সংখ্যার যোগ বিয়োগ । পরবর্তী কোন টিউটরিয়ালে হয়তো গুণ , ভাগ নিয়ে আলোচনা করব । চলুন তাহলে শুরু করা যাক ।
বাইনারি সংখ্যার যোগ
বাইনারি যোগ দশমিক সংখ্যার যোগের মত বাইনারি সংখ্যায় বিটগুলো যোগের পর হাতে যে সংখ্যা থাকে, তা বামের বিটের সাথে যোগ হয়। দুটি বাইনারি অঙ্ক বা বিটের যোগের সময় চারটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা দেখা যায়। যেমন: 0+0=0 , 0+1=1 , 1+0=1 , 1 + 1 = 0 এবং হাতে থাকে 1, এই হাতে থাকাকে ক্যারি বলে যা দশমিক সংখ্যার যোগের মতই বাম দিকের সারিতে যোগ করতে হয়। বাইনারি সংখ্যা যোগের সময় নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়।
ধাপ-১ : দশমিক সংখ্যার মতই ডানদিক থেকে যোগ শুরু করতে হয়।
ধাপ-২ : উপরে এবং নিচে যোগ করে যোগফল কলামের নিচে লিখতে হয়। যদি ক্যারি উৎপন্ন হয় অর্থাৎ হাতে থাকে তবে তা পরের কলামে বসাতে হয়।
ধাপ-৩ : দ্বিতীয় ধাপে ক্যারি উৎপন্ন হলে তা পরের কলামে লিখতে হবে বা পরের কলামে কোনো ডিজিট থাকলে তার সাথে যোগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত বাম দিকে কোনো কলাম না থাকে।
উদাহরণ ১: 1101001 এর সাথে 1010101 যোগ কর ।
1101001
1010101
___________
10111110
উদাহরণ ২ : 11101001 এর সাথে 10101110 যোগ কর ।
11101001
10101110
___________
101010111
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির যোগ হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক প্রক্রিয়া। কম্পিউটারসহ প্রায় সব ইলেকট্রনিক যন্ত্রেই যোগের সাহায্যে বিয়োগ, গুণ ও ভাগ করা হয়। যেমন-পর্যায়ক্রমে যোগের মাধ্যমে গুণ করা যায়। আবার ২-এর পরিপূরক পদ্ধতিতে যোগের মাধ্যমে বিয়োগ করা হয়। আর ভাগ হলো বিয়োগেরই সংক্ষিপ্ত রূপ। কাজেই শুধুমাত্র যোগের সার্কিট ব্যবহার করে অন্যান্য গাণিতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
বাইনারি সংখ্যার বিয়োগ
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে বিয়োগ করার ক্ষেত্রেও দশমিকের নিয়ম অনুসরণ করা হয়। দুটি বাইনারি অঙ্ক বিয়োগের ক্ষেত্রে চারটি নিয়ম ব্যবহার করা হয়। যথা- 0-0 = 0 , 1-0 = 1 , 1-1
= 0 , 0-1 = 1 (এটার জন্য পরবর্তী কলাম থেকে 1 ধার নেওয়া হয়)
উদাহরণ ১: 111 থেকে 101 বিয়োগ কর ।
111
101
________
010
উদাহরণ ২ : 10101 থেকে 1101 বিয়োগ কর ।
10101
1101
___________
01000
সংখ্যা পদ্ধতির রুপান্তর : বাইনারি,অক্টাল,ডেসিমাল,হেক্সাডেসিমাল
সাধারণত আমরা যে সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি তাকে বলা হয় ডেসিমাল বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি। এরকম আরো অনেক সংখ্যা পদ্ধতি আছে যেমন- বাইনারি , অক্টাল , ডেসিমাল , হেক্সাডেসিমাল ইত্যাদি । ইচ্ছে করলে আমরা এক সংখ্যা পদ্ধতি থেকে অন্য সংখ্যা পদ্ধতিতে রুপান্তর করতে পারি যেমন- বাইনারি থেকে দশমিক , দশমিক থেকে বাইনারি , অক্টাল থেকে দশমিক , দশমিক থেকে অক্টাল , হেক্সাডেসিমাল থেকে দশমিক , দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমাল । আজকের এই টিউটরিয়ালে সংখ্যা পদ্ধতির রুপান্তর নিয়ে এ টু জেড আলোচনা করা হবে যা বিসিএস সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
সংখ্যা পদ্ধতির রুপান্তর
বাইনারি, অক্টাল, ডেসিমেল ও হেক্সাডেসিমেল মোট চার ধরনের সংখ্যা পদ্ধতির মধ্যে এক সংখ্যা পদ্ধতির সংখ্যাকে অন্য আর এক সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তর করা যায়। নিচে সবিস্তারে সংখ্যা পদ্ধতির রুপান্তর তুলে ধরা হল :
বাইনারি সংখ্যা থেকে দশমিকে রুপান্তর
বাইনারি সংখ্যার ভিত্তি দুই তাই এর ঘাত বা শক্তি ২ দিয়ে হিসাব করতে হবে। যেমন- প্রথম ঘর ২০( = ১), দ্বিতীয় ঘর ২১( = ২), তৃতীয় ঘর ২২ ( = ৪), চতুর্থ ঘর ২৩ (= ৮) পঞ্চম ঘর ২৪( = ১৬) ইত্যাদি
(১১০১১)২ হল একটি বাইনারি সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই বাইনারি সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু পাঁচটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে বাইনারি সংখ্যার মোট পাঁচ ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ২০ থেকে ২৪ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(১১০১১)২ = ( ১ × ২৪ ) + ( ১ × ২৩ ) + (০ × ২২ ) + ( ১ × ২১ ) + ( ১ × ২০ )
(১১০১১)২ = ( ১ × ১৬ ) + ( ১ × ৮ ) + (০ × ৪ ) + ( ১ × ২ ) + ( ১ × ১ )
(১১০১১)২ = ১৬ + ৮ + ০ + ২ + ১
(১১০১১)২ = ২৭
(১১০১১)২ = (২৭)১০
(১১০)২ হল একটি বাইনারি সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই বাইনারি সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু তিনটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে বাইনারি সংখ্যার মোট তিন ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ২০ থেকে ২২ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(১১০)২ = ( ১ × ২২ ) + ( ১ × ২১ ) + (০ × ২০ )
(১১০)২ = ( ১ × ৪ ) + ( ১ × ২ ) + (০ × ১ )
(১১০)২ = ৪ + ২ + ০
(১১০)২ = ৬
(১১০)২ = (৬)১০
(১১০১০১১)২ হল একটি বাইনারি সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই বাইনারি সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু সাতটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে বাইনারি সংখ্যার মোট সাত ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ২০ থেকে ২৬ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(১১০১০১১)২ = ( ১ × ২৬ ) + ( ১ × ২৫ ) + (০ × ২৪ ) + (১ × ২৩ ) + (০ × ২২ ) + (১ × ২১ ) + (১ × ২০ )
(১১০১০১১)২ = ( ১ × ৬৪ ) + ( ১ × ৩২ ) + (০ × ১৬ ) + (১ × ৮ ) + (০ × ৪ ) + (১ × ২ ) + (১ × ১ )
(১১০১০১১)২ = ৬৪ + ৩২ + ০ + ৮ + ০ + ২ + ১
(১১০১০১১)২ = ১০৭
(১১০১০১১)২ = (১০৭)১০
দশমিক সংখ্যা থেকে বাইনারিতে রূপান্তর
দশমিক সংখ্যার পূর্ণ সংখ্যাকে বাইনারিতে রুপান্তর করতে হলে নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে ।
পূর্ণ দশমিক সংখ্যাকে ২ দিয়ে ভাগ দিয়ে ভাগশেষ নিতে হবে।
ভাগফলকে পুনরায় ২ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষ নিতে হবে, ভাগফল শূন্য না হওয়া পর্যন্ত এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
ভাগশেষ গুলোকে শেষ থেকে প্রথম দিকে সাজিয়ে লিখলে ১ ও ০ এর সমন্বয়ে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে তাই দশমিক সংখ্যার সমান বাইনারি সংখ্যা।
(২৭)১০ একটি ডেসিমেল সংখ্যা। সংখ্যাটির বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর প্রক্রিয়া নিম্নরূপ :
২৭ ÷ ২ = ১৩ , ভাগশেষ ১ → ১
১৩ ÷ ২ = ৬ , ভাগশেষ ১ → ১
৬ ÷ ২ = ৩ , ভাগশেষ ০ → ০
৩ ÷ ২ = ১ , ভাগশেষ ১ → ১
১ ÷ ২ = ০ , ভাগশেষ ১ → ১
সুতরাং (২৭)১০ = (১১০১১)২
(৫৯)১০ একটি ডেসিমেল সংখ্যা। সংখ্যাটির বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর প্রক্রিয়া নিম্নরূপ :
৫৯ ÷ ২ = ২৯ , ভাগশেষ ১ → ১
২৯ ÷ ২ = ১৪ , ভাগশেষ ১ → ১
১৪ ÷ ২ = ৭ , ভাগশেষ ০ → ০
৭ ÷ ২ = ৩ , ভাগশেষ ১ → ১
৩ ÷ ২ = ১ , ভাগশেষ ১ → ১
১ ÷ ২ = ০ , ভাগশেষ ০ → ০
সুতরাং (৫৯)১০ = (০১১০১১)২ বা (১১০১১)২
ভগ্নাংশযুক্ত দশমিক সংখ্যা থেকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর
দশমিক ভগ্নাংশকে বাইনারি ভগ্নাংশে রূপান্তরের জন্য দশমিক ভগ্নাংশকে শুন্য না হওয়া পর্যন্ত ভগ্নাংশকে তিনি ২ দিয়ে বার বার গুণ করে যেতে হয় । তবে সবক্ষেত্রে ভগ্নাংশে শুন্য হয় না । এরুপ ক্ষেত্রে কাছাকাছি একটি সংখ্যা পর্যন্ত গুন করে যেতে হয় এবং গুণফলের পূর্ণ অংশটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বাঁ থেকে ডানে লিখে যেতে হয় ।
(.৩৭৫)১০ একটি দশমিক ভগ্নাংশ, একে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর প্রক্রিয়া নিম্নরূপ-
০.৩৭৫ × ২ = ০.৭৫০ । দশমিকের পর শুন্য হয় নাই । তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের শুন্যকে বাইনারির জন্য রেখে দিতে হবে ।
০.৭৫০ × ২ = ১.৫০০ । দশমিকের পর শুন্য হয় নাই । তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ১ কে বাইনারির জন্য রেখে দিতে হবে ।
.৫০০ × ২ = ১.০০০ । সবসময় শুধু দশমিকের পরবর্তী সংখ্যাকে গুণ করতে হবে । এখন দশমিকের পর শুন্য হয়েছে। তাই আবার গুণ করতে হবে না । তবে এখানের দশমিকের আগের ১ কে বাইনারির জন্য রেখে দিতে হবে ।
এবার প্রথম থেকে সাজিয়ে লিখলে যে বাইনারি ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা হল : .০১১ । অর্থাৎ (.৩৭৫)১০ = (.০১১)২
দশমিক সংখ্যা থেকে অক্টালে রূপান্তর
এখানে আমরা আগে দেখানো ডেসিমেল থেকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরের পদ্ধতিটি ব্যবহার করব, তবে অক্টাল সংখ্যার বেজ যেহেতু ৮ তাই ২ দিয়ে ক্রমান্বয়ে ভাগ করার পরিবর্তে ৮ দিয়ে ক্রমান্বয়ে ভাগ করা হবে। যেমন- ৭১০ কে অক্টালে রূপান্তর করার জন্য লিখব :
৭১০ ÷ ৮ = ৮৮ , ভাগশেষ ৬ → ৬
৮৮ ÷ ৮ = ১১ , ভাগশেষ ০ → ০
১১ ÷ ৮ = ১ , ভাগশেষ ৩ → ৩
১ ÷ ৮ = ০ , ভাগশেষ ১ → ১
সুতরাং (৭১০)১০ = (১৩০৬)৮
আরো একটি দশমিক সংখ্যা ৫৭০ কে আমরা ঠিক একইভাবে অক্টালে রুপান্তর করব ।
৫৭০ ÷ ৮ = ৭১ , ভাগশেষ ২ → ২
৭১ ÷ ৮ = ৬৪ , ভাগশেষ ৭ → ৭
৭ ÷ ৮ = ০ , ভাগশেষ ৭ → ৭
সুতরাং (৫৭০)১০ = (৭৭২)৮
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে দশমিক হতে অক্টালে রূপান্তর
এখানে আমরা আগে দেখানো দশমিক ভগ্নাংশ থেকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরের পদ্ধতিটি ব্যবহার করব । তবে দশমিক ভগ্নাংশকে ৮ দ্বারা গুণ করতে হবে এবং প্রাপ্ত গুণফলের পূর্ণ অংশটি সংরক্ষিত রেখে গুণফলের ভগ্নাংশকে পুনরায় ৮ দ্বারা গুণ করতে হবে এরপর পূর্ণ অংক হিসেবে প্রাপ্ত অংকগুলো প্রাপ্তির ক্রমানুসারে পাশাপাশি লিখে দশমিক সংখ্যাটির সমকক্ষ অক্টাল সংখ্যা পাওয়া যায়।
উদাহরণ: (১২৩.৪৫)১০ কে অক্টালে রুপান্তর করব
পূর্ণ অংশ :
১২৩ ÷ ৮ = ১৫ , ভাগশেষ ৩ → ৩
১৫ ÷ ৮ = ১ , ভাগশেষ ৭ → ৭
১ ÷ ৮ = ০ , ভাগশেষ ১ → ১
সুতরাং (১২৩)১০ = (১৭৩)৮
ভগ্নাংশ :
০.৪৫ × ৮ = ৩.৬০ । দশমিকের পর শুন্য হয় নাই । তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ৩ কে অক্টালের জন্য রেখে দিতে হবে ।
.৬০ × ৮ = ৪.৮০ । সবসময় শুধু দশমিকের পরবর্তী সংখ্যাকে গুণ করতে হবে । দশমিকের পর শুন্য হয় নাই । তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ৪ কে অক্টালের জন্য রেখে দিতে হবে ।
.৮০ × ৮ = ৬.৪০ । সবসময় শুধু দশমিকের পরবর্তী সংখ্যাকে গুণ করতে হবে । এখন দশমিকের পর শুন্য হয় নাই। তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ৬ কে অক্টালের জন্য রেখে দিতে হবে ।
.৪০ × ৮ = ৩.২০ । সবসময় শুধু দশমিকের পরবর্তী সংখ্যাকে গুণ করতে হবে । এখন দশমিকের পর শুন্য হয় নাই। তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ৩ কে অক্টালের জন্য রেখে দিতে হবে ।
.২০ × ৮ = ১.৬০ । সবসময় শুধু দশমিকের পরবর্তী সংখ্যাকে গুণ করতে হবে । এখন দশমিকের পর শুন্য হয় নাই। তাই আবার গুণ করতে হবে । তবে এখানের দশমিকের আগের ১ কে অক্টালের জন্য রেখে দিতে হবে ।
তবে যেহেতু শুন্য আসে না । তাই আমরা অসীম ধরে নিব । এবার প্রথম থেকে সাজিয়ে লিখলে যে অক্টাল ভগ্নাংশ পাওয়া যায় তা হল : .৩৪৬৩১....... । অর্থাৎ (.৪৫)১০ = (.৩৪৬৩১....... )৮
সুতরাং সম্পুর্ণ সংখ্যাটি (১২৩.৪৫)১০ = (১৭৩.৩৪৬৩১.......)৮
অক্টাল সংখ্যা থেকে দশমিকে রূপান্তর
অক্টাল সংখ্যার ভিত্তি আট তাই এর ঘাত বা শক্তি ৮ দিয়ে হিসাব করতে হবে। যেমন- প্রথম ঘর ৮০( = ১), দ্বিতীয় ঘর ৮১( = ৮), তৃতীয় ঘর ৮২ ( = ৬৪), চতুর্থ ঘর ৮৩ (= ৫১২) পঞ্চম ঘর ৮৪( = ৪০৯৬) ইত্যাদি
(৭১)৮ হল একটি অক্টাল সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই অক্টাল সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু দুটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে অক্টাল সংখ্যার মোট দুই ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ৮০ থেকে ৮১ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(৭১)৮ = ( ৭ × ৮১ ) + ( ১ × ৮০ )
(৭১)৮ = (৭ × ৮ ) + ( ১ × ১ )
(৭১)৮ = ৫৬ + ১
(৭১)৮ = ৫৭
(৭১)৮ = (৫৭)১৬
(৬৩৭)৮ হল একটি অক্টাল সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই অক্টাল সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু তিনটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে অক্টাল সংখ্যার মোট তিন ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ৮০ থেকে ৮২ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(৬৩৭)৮ = ( ৬ × ৮২ ) + ( ৩ × ৮১ ) + (৭ × ৮০ )
(৬৩৭)৮ = ( ৬ × ৬৪ ) + ( ৩ × ৮ ) + (৭ × ১ )
(৬৩৭)৮ = ৩৮৪ + ২৪ + ৭
(৬৩৭)৮ = ৪১৫
(৬৩৭)৮ = (৪১৫)১৬
দশমিক সংখ্যা থেকে হেক্সাডেসিমালে রূপান্তর
এখানেও আমরা আগে দেখানো ডেসিমেল থেকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তরের পদ্ধতিটি ব্যবহার করব, তবে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার বেজ যেহেতু ১৬ তাই ২ দিয়ে ক্রমান্বয়ে ভাগ করার পরিবর্তে ১৬ দিয়ে ক্রমান্বয়ে ভাগ করা হবে। তবে ভাগশেষ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যদি ভাগশেষ ১০ থেকে ১৫ হয় তবে যথাক্রমে ১০ → A , ১১ → B , ১২ → C , ১৩ → D , ১৪ → E , ১৫ → F ডিজিট লিখতে হবে । যেমন- ৯২০ কে হেক্সাডেসিমালে রূপান্তর করার জন্য লিখব :
পূর্ণ অংশ :
৯২০ ÷ ১৬ = ৫৭ , ভাগশেষ ৮ → ৮
৫৭ ÷ ১৬ = ৩ , ভাগশেষ ৯ → ৯
৩ ÷ ১৬ = ০ , ভাগশেষ ৩ → ৩
সুতরাং (৯২০)১০ = (৩৯৮)১৬
ভগ্নাংশ ও আগের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই করতে হবে শুধুমাত্র ২ এর পরিবর্তে ১৬ দিয়ে ক্রমান্বয়ে গুণ করে কাজ করতে হবে ।
হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা থেকে দশমিকে রূপান্তর
হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার ভিত্তি ষোল তাই এর ঘাত বা শক্তি ১৬ দিয়ে হিসাব করতে হবে। যেমন- প্রথম ঘর ১৬০( = ১), দ্বিতীয় ঘর ১৬১( = ১৬ ), তৃতীয় ঘর ১৬২ ( = ২৫৬ ), চতুর্থ ঘর ১৬৩ (= ৪০৯৬) ইত্যাদি
তবে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাটির কোনো অঙ্ক A,B,C,D,E ও F হয়; তাহলে তাদের পরিবর্তে যথাক্রমে 10 , 11 , 12 , 13 , 14 ও 15 বসাতে হবে ।
(৫২)১৬ হল একটি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু দুটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার মোট দুই ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ১৬০ থেকে ১৬১ ঘর পর্যন্ত ।
সমাধান :
(৫২)১৬ = ( ৫ × ১৬১ ) + ( ২ × ১৬০ )
(৫২)১৬ = ( ৫ × ১৬ ) + ( ২ × ১ )
(৫২)১৬ = ৮০ + ২
(৫২)১৬ = ৮২
(৫২)১৬ = (৮২)১০
অর্থাৎ হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা ৫২ এর সমমানের ডেসিমাল সংখ্যা ৮২ ।
(৪D)১৬ হল একটি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা। এটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর:
এই হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাটির মধ্যে যেহেতু দুটি অংক বিদ্যমান । তাই একে দশমিক সংখ্যায় রুপান্তর করতে হলে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার মোট দুই ঘর পর্যন্ত হিসাব করতে হবে । অর্থাৎ ১৬০ থেকে ১৬১ ঘর পর্যন্ত । তবে এখানে D এর পরিবর্তে ১৩ বসাতে হবে যা পূর্বেই বলা হয়েছে ।
সমাধান :
(৪D)১৬ = ( ৪ × ১৬১ ) + (১৩ × ১৬০ )
(৪D)১৬ = ( ৪ × ১৬ ) + (১৩ × ১ )
(৪D)১৬ = ৬৪ + ১৩
(৪D)১৬ = ৭৭
(৪D)১৬ = (৭৭)১০
অর্থাৎ হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা ৪D এর সমমানের ডেসিমাল সংখ্যা ৭৭ ।
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে হেক্সাডেসিমেল হতে দশমিকে রূপান্তর
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে হেক্সাডেসিমেল বিন্দুর পর হতে – 1, - 2, - 3 ইত্যাদি দ্বারা অবস্থান চিহ্নিত করে নিতে হয়। এরপর প্রতিটি ডিজিটকে 16n দ্বারা গুণ করে গুণফলকে যোগ করলে দশমিক সংখ্যা পাওয়া যায়। যেখানে n হচ্ছে -1, -2, -3 ইত্যাদি।
উদাহরণ: (48.CD)16 কে দশমিকে রূপান্তর কর ।
(48.CD)16 = ( 4 × 161 ) + ( 8 × 160 ) + (12 × 16-1 ) + (13 × 16-2 )
(48.CD)16 = ( 4 ×
16) + ( 8 × 1) + (12/16 ) + (13/256
(48.CD)16 = 64 + 8 +
(12/16 ) + (13/256
(48.CD)16 = 72 +
(12/16 ) + 13/256
(48.CD)16 = 72 +
0.75 + 0.0507
(48.CD)16 = 72.8007
(48.CD)16 = (72.8007)10
অর্থাৎ হেক্সাডেসিমেল 48.CD এর সমমান হচ্ছে 72.8007 .
অক্টাল সংখ্যা থেকে বাইনারিতে রূপান্তর
অক্টাল সংখ্যার একটি বড় সুবিধা হচ্ছে যে, যেকোনো সংখ্যাকে খুব সহজে বাইনারিতে রূপান্তর করা যায়। অক্টাল সংখ্যার অঙ্কগুলো হচ্ছে 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6 এবং 7 এবং এই প্রত্যেকটি সংখ্যাকে তিন বিট বাইনারি সংখ্যা হিসেবে প্রকাশ করা যায়।
উপরোক্ত সারণি ব্যবহার করে অক্টালের জন্য নির্ধারণ করা বাইনারি ডিজিট স্থাপন করলেই বাইনারি সংখ্যা পাওয়া যাবে ।
উদাহরণ: (524)8 একটি অক্টাল সংখ্যা । এর বাইনারি সংখ্যা বের করতে হলে উপরোক্ত সারণি ব্যবহার করে মান বসালেই বাইনারি সংখ্যা বের হয়ে যাবে । এখানে 5 এর পরিবর্তে বসাতে হবে 101 , 2 এর পরিবর্তে বসাতে হবে 010 , 4 এর পরিবর্তে বসাতে হবে 100 । তাহলে যা পাওয়া গেল তা হল (524)8 = (101010100)2
দশমিক অক্টাল সংখ্যার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য ।যেমন- (425.25)8 = (100010101.010101)2
আরো একটি উদাহরণ: (14.53)8 = (001100.101011)2 । কিন্তু এখানে বাইনারি সংখ্যার শুরুতে দুটি 0 রয়েছে যা রাখার কোন প্রয়োজন নেই । তাই (14.53)8 এর বাইনারি সংখ্যা হবে (1100.101011)2 ।
বাইনারি সংখ্যা থেকে অক্টালে রূপান্তর
একই পদ্ধতির বিপরীত প্রক্রিয়া করে আমরা খুব সহজে যে কোনো বাইনারি সংখ্যাকে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর করতে পারব। প্রথমে বাইনারি সংখ্যার অঙ্কগুলো বর্গমূলের মত ডানদিক থেকে তিনটি তিনটি করে ভাগ করে নিতে হবে। সর্ববামে যদি তিনটির কম অঙ্ক থাকে তাহলে এক বা দুইটি শূন্য বসিয়ে তিন অঙ্ক করে নিতে হবে। তারপর প্রতি তিনটি বাইনারি অঙ্কের জন্য নির্ধারিত অক্টাল সংখ্যাগুলো বসিয়ে নিতে হবে। যেমন :
(10100101011)2 = 10 100
101 011 . এখানে সর্ববামে তিনটি অঙ্ক পুর্ণ না হওয়ায় তার সাথে একটা শুন্য জুড়ে দিতে হবে । তখন এমন হবে 010 100 101 011 । এর জন্য নির্ধারিত অক্টাল সংখ্যা হলো : (2453)8
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা থেকে বাইনারিতে রূপান্তর
অক্টাল সংখ্যার বেলায় আমরা প্রত্যেকটি অক্টাল অঙ্কের জন্য তিন বিট বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করেছিলাম। হেক্সাডেসিমেলের জন্য প্রতিটি হেক্সাডেসিমেল অঙ্কের জন্য চার বিট বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করা হবে। তবে সর্ববামে ০ থাকলে সেগুলোকে রাখার প্রয়োজন নেই।
উদাহরণ: (9F23)16 = 1001(9) + 1111(F) + 0010(2) + 0011(3) =
(100111100100011)2
বাইনারি সংখ্যা থেকে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর
এখানেও আগের মতো বাইনারি সংখ্যাগুলোকে চারটির সমন্বয় করে ভাগ করে নিতে হবে। সর্ববামে যদি চারটির কম বাইনারি অঙ্ক থাকে তাহলে সেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক 0 বসিয়ে চারটির গ্রুপ করে নিতে হবে। তারপর প্রতি চারটি বাইনারি সংখ্যার জন্য নির্ধারিত হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাটি বসিয়ে দিতে হবে। যেরকম :
(10110111000011)2 = 0010(2)
1101(D) 1100(C) 0011(3) = (2DC3)16
হেক্সাডেসিমেলে যেহেতু চারটি বাইনারি অঙ্ক একটি হেক্সাডেসিমেল অঙ্ক দিয়ে প্রতিস্থাপন হয় তাই অনেক বড় বাইনারি সংখ্যা লেখার জন্য হেক্সা অথবা অক্টাল সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। হেক্সাডেসিমেল থেকে অক্টাল কিংবা অক্টাল থেকে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর করার সবচেয়ে সহজ নিয়ম হচ্ছে, প্রথমে বাইনারিতে রূপান্তর করে নেয়া। তারপর হেক্সাডেসিমেলের জন্য চারটি করে এবং অক্টালের জন্য তিনটি করে বাইনারি অঙ্ক নিয়ে তাদের জন্য নির্ধারিত হেক্সাডেসিমেল অথবা অক্টাল সংখ্যাগুলো বেছে নেয়া
অনুশীলন অধ্যায়
১. (১০১১)২+(০১০১)২ = ? [৩৬তম বিসিএস ]
·
(১১০০)২
·
(১১০০০)২
·
(০১১০০)২
·
কোনোটিই নয়
২. দ্বিমিক সংখ্যা 1011 এবং 110 এর যোগফল কত ? [চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়
(H ইউনিট):
০৭-০৮ ]
·
10001
·
11001
·
10110
·
10011
৩. 1100 ও 1010 বাইনারী সংখ্যা দুটির যোগফল হবে- [ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (A ইউনিট): ০৭-০৮]
·
1011
·
1101
·
1110
·
10110
8. দ্বিমিক যোগ কর: 1101+ 110 ? [ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (ক ইউনিট):
০৯-১০ ]
·
10011
·
11001
·
10011
·
11001
৫. দ্বিমিক সংখ্যা 110111 এবং 101001 এর যোগফল হচ্ছে- [চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
(F ইউনিট):
১৫-১৬ ]
·
1010000
·
1001000
·
1000000
·
1100000
৬. বাইনারী সংখ্যা 110011 এবং 101101 এর যোগফল - [ঢাকা বিশ্ববিদালয় (ক ইউনিট): ১৫-১৬ ]
·
1100000
·
1010101
·
1000010
·
1111111
৭. দ্বিমিক যোগফল নির্ণয় কর- 101011, 110011 ? [খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (ক ইউনিট): ১১-১২ ]
·
011000
·
1100111
·
1101011
·
1011110
৮. Binary পদ্ধতিতে 10001111 এবং 11101010 সংখ্যা দুটির যোগফলের মান কত ? [খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
(L ইউনিট):
১৪-১৫ ]
·
100111001
·
101111001
·
110011001
·
কোনোটিই নয়
৯. দ্বিমিক আকারে (1110.01 + 11010.11) এর মান কত ? [ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (A-ইউনিট): ১১-১২]
·
101001.00
·
010101.01
·
111000.00
·
001111.11
১০. (11101)2-(1011)2 = ? [বেরোবি (গ-ইউনিট): ১৭-১৮ ]
·
10010
·
11010
·
11110
·
কোনোটিই নয়