INFORMATION AND COMMUNICATION TECNOLOGY (LEC-13)

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি (BCS) Preliminary Preparation 200 Marks কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি


কম্পিউটারের প্রকারভেদ কার্যাবলী


 

কম্পিউটার বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রযুক্তি যা মানব সমাজকে সহজ করেছে এবং নতুন সময়ের সাথে সাথে নতুন উন্নতির মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কম্পিউটার একটি সরঞ্জামিক উপকরণ যা ডেটা প্রসেস করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের সামনে উপস্থাপন করে এর মৌলিক গঠনতত্ত্ব এক হলেও আকৃতি, কার্যসম্পাদনের গতি প্রক্রিয়া এবং অভ্যন্তরীণ সংগঠনের ভিন্নতার কারণে কম্পিউটারের প্রকারভেদ রয়েছে যেমন-সুপার কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, মাইক্রো কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার প্রভৃতি। অবস্থান, ব্যবহার পরিবেশ বুঝে বিভিন্ন কম্পিউটার বিভিন্ন কাজে লাগানো যেতে পারে। কম্পিউটারের প্রকারভেদ মূলত তার ব্যবহৃত প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে।

 

 

·          কম্পিউটারের মৌলিক গঠন/কাঠামো

·          কম্পিউটারের প্রকারভেদ

·          ডিজিটাল কম্পিউটারের প্রকারভেদ

·          এম্বেডেড কম্পিউটার

 

কম্পিউটারের মৌলিক গঠন/কাঠামো

'কম্পিউটার' আমাদের কাছে একটি নতুন আবিষ্কার। কিন্তু এর পেছনে বহুকালের বহুজনের অবদান রয়েছে। যোগ বিয়োগ করতে সক্ষম প্রথম গণনা যন্ত্রের আবিষ্কারক ক্লেইলি পাসকেল ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে। ১৫৭১ খ্রিস্টাব্দে গণ ফ্রাইড গুণ ভাগ করতে পারে এমন যন্ত্র তৈরি করেন। কিন্তু ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ চার্লস ব্যাবেজই হলেন আধুনিক কম্পিউটারের জনক। তিনিই সর্বপ্রথম পাঁচটি অংশে সম্পূর্ণ আধুনিক কম্পিউটারের গঠনতত্ত্বের আবিষ্কারক। ব্যাবেজ কম্পিউটার তৈরি করেছিলেন ধাতব যন্ত্রাংশ দিয়ে। তখনো সূক্ষ্ম নানা যন্ত্রাংশ তৈরি না হওয়ায় তিনি আধুনিক কম্পিউটারের পরিপূর্ণ রূপ দিতে পারেননি। তবে আমরা আজ যে কম্পিউটার ব্যবহার করছি তাতে কিন্তু মূলত চার্লস ব্যাবেজেরই গঠনতত্ত্ব অনুসরণ করা হয়। চার্লস ব্যাবেজের কম্পিউটারের গঠনতত্ত্বে রয়েছে পাঁচটি অংশ - . স্টোর, . মিল, . কন্ট্রোল, . ইনপুট, . আউটপুট। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং আই. বি. এম কোম্পানির যৌথ প্রয়াসে প্রথম ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি হয় ১৯৪৪ সালে। তবে প্রথম পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার 'ইয়ানিক' তৈরি হয় ১৯৪৬ সালে। একটি কম্পিউটারের অনেক যন্ত্রাংশ থাকলেও এর গঠনরীতির প্রধান দুটি দিক লক্ষ করা যায়। একটি হলো যান্ত্রিক সরঞ্জাম বা হার্ডওয়্যার অন্যটি প্রোগ্রাম সম্পর্কিত বা সফটওয়্যার। হার্ডওয়্যারের মধ্যে পড়ে তথ্য সংরক্ষণের স্মৃতি, অভ্যন্তরীণ কার্যের জন্য ব্যবহৃত তাত্ত্বিক দিক, তথ্য সংগ্রহের জন্য ইনপুট অংশ, ফলাফল প্রদর্শনের জন্য আউটপুট অংশ এবং সকল বৈদ্যুতিক বর্তনী। এসব যান্ত্রিক সরঞ্জামের কাজ হলো প্রোগ্রামের সাহায্যে কম্পিউটারকে কর্মক্ষম করে তোলা। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নির্দেশ করার জন্য কম্পিউটারের স্মৃতিতে যে কার্যবিধি সন্নিবেশিত হয় তাকে প্রোগ্রাম বলা হয়।

কম্পিউটারের প্রকারভেদ

কম্পিউটারের গঠন ক্রিয়া নীতির ভিত্তিতে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ

1.     অ্যানালগ কম্পিউটার

2.     ডিজিটাল কম্পিউটার

3.     হাইব্রিড কম্পিউটার


 

. অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer) : অ্যানালগ শব্দ এসেছে Analogus শব্দ থেকে যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে সদৃশ অ্যানালগ কম্পিউটারে বর্ণ এবং সংখ্যার বদলে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল সংকেত বা আনালগ সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক তরঙ্গকে অ্যানালগ কম্পিউটারের ইনপুট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অ্যানালগ সংকেতের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পর্যায়ক্রমিকভাবে উঠানামা করা এনালগ কম্পিউটারের ডাটা প্রক্রিয়াকরণের জন অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার (Operational Amplifier-OP-AMP) নামক বিশেষ বর্তনী ব্যবহৃত হয়। ধরনের বর্তনী সাধারণ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ছাড়াও লগারিদম, অন্তরকলন (Differentiation). সমাকলন (Integration) ইত্যাদি কাজ সরাসরি করতে পারে। অ্যানালগ কম্পিউটার সময়ের বা এনালগ বৈদ্যুতিক সংকেতের উপর নির্ভর করে নির্মিত কম্পিউটার। এক কথায় যে সকল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সংকেতের ওপর নির্ভর করে ইনপুট গ্রহণ করে প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পাদিত করে, সেসব কম্পিউটারকে অ্যানালগ কম্পিউটার বলা হয়। মোটরগাড়ির স্পিডোমিটার, স্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি অ্যানালগ কম্পিউটারের উদাহরণ। সাধারণত চাপ, তাপ, তরল পদার্থের প্রবাহ ইত্যাদির উঠা-নামা বা হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া গাড়ি, উড়োজাহাজ, মহাকাশ যান ইত্যাদির গতিবেগ, বায়ু, তরল কঠিন পদার্থের চাপ এবং কোনো বিশেষ স্থানের বা কক্ষের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। অ্যানালগ কম্পিউটারের ফলাফলের সুক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম।

 

. ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer) : ডিজিটাল কম্পিউটারের ডিজিটাল কথাটি Digit শব্দ হতে উৎপত্তি, যার অর্থ অংক ডিজিটাল কম্পিউটারে ডিজিটাল সংকেত বা বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু বা বন্ধ করে হিসাব কার্য করা হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু হলে 1; এবং বন্ধ হলে 0 প্রক্রিয়ায় কার্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। দুটি সংখ্যার সাহায্যে বর্ণ, সংখ্যা, লেখা, ছবি নির্মাণ, স্থাপত্য নির্মাণ কাজের নক্সা সবকিছুই করা হয় অর্থাৎ যাবতীয় গাণিতিক যুক্তিমূলক কাজসমূহ বাইনারী ডিজিট অর্থাৎ 0 এবং 1 এর ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়। যে সকল কম্পিউটার বাইনারি পদ্ধতিতে অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রিয়া সম্পন্ন করে, সেসব কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সিগন্যালের পরিবর্তে ডিজিট (0/1) ব্যবহার করে। ডিজিটাল কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মনিটরে প্রদর্শিত হয়। ডিজিটাল কম্পিউটারের গতি কার্যকারিতা অ্যানালগ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো। আবার ডিজিটাল কম্পিউটারের ফলাফলের সুক্ষ্মতা অ্যানালগ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটর ABC (Atanasoff Berry Computer) বর্তমান বাজারে প্রচলিত প্রায় সকল কম্পিউটারই ডিজিটাল পদ্ধতির কম্পিউটার। ডিজিটাল কম্পিউটারকে আবার চারভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ মাইক্রোকম্পিউটার , মিনিফ্রেম কম্পিউটার , মেইনফ্রেম কম্পিউটার , সুপার কম্পিউটার যা পরবর্তী ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে

 

. হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer ) : যে কম্পিউটার অ্যানালগ ডিজিটাল উভয় কম্পিউটারের নীতির সমন্বয়ে গঠিত তাকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে এই কম্পিউটারে সাধারণত উপাত্ত সংগৃহীত হয় অ্যানালগ প্রক্রিয়ায় এবং সংগৃহীত উপাত্ত সংখ্যায় রূপান্তরিত করে ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করা হয়। একে সংকর কম্পিউটারও বলা হয়। হাইব্রিড কম্পিউটার অত্যন্ত দামি। তাই কেবলমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়; যেমন- মিসাইল, সমরাস্ত্র, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নভোযান, রাসায়নিক দ্রব্যের গুণাগুণ নির্ণয়, পরমাণুর গঠন-প্রকৃতি নির্ণয়, পরীক্ষাগারে ঔষধের মান নির্ণয় ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া হাসপাতালে ব্যবহৃত হাইব্রিড কম্পিউটারের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। রোগীর রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, শরীরের তাপমাত্রা ইত্যাদির উপাত্ত অ্যানালগ অংশের সাহায্যে গ্রহণ করার পর উপাত্তগুলো ডিজিটাল কম্পিউার ব্যবহারযোগ্য সংখ্যা সংকেতে রূপান্তরিত হয়ে ডিজিটাল অংশে স্থানান্তরিত হয়। ডিজিটাল অংশ উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ করে রোগীর বর্তমান অবস্থা ফলাফল যা আউটপুট আকারে তুলে ধরে।

 

ডিজিটাল কম্পিউটারের প্রকারভেদ

আকার-আয়তন, কাজ করার ক্ষমতা, স্মৃতি সুযোগ ইত্যাদির ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে প্রধানত চারভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, সুপার কম্পিউটার, মেইন ফ্রেম কম্পিউটার, মিনি ফ্রেম কম্পিউটার এবং মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার (Micro or Personal Computer)

 



সুপার কম্পিউটার (Super Computer) : ক্ষমতা আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার সুপার কম্পিউটারের অনানুষ্ঠানিক নাম "Number crunchier' কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। কম্পিউটারটি প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন হিসাব করতে সক্ষম। সারা বিশ্বে সুপার কম্পিউটারের সংখ্যা খুব বেশি নয়। সুক্ষ্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ, নভোযান, জঙ্গী বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরক্ষা গবেষণা, পারমাণবিক চুল্লি সুপারসনিক বিমানের ডানার ডিজাইন তৈরি, সিমুলেশন মডেলিং করতে এবং মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে (জুন, ২০২২) বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার যথাক্রমে Fugaku (জাপান), Summit (যুক্তরাষ্ট্র), Sierra (যুক্তরাষ্ট্র), Sunway Taihul.ight (চীন), ভারত 'পরম' নামে সুপার কম্পিউটার তৈরি করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে

 

মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer) : সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কিন্তু পার্সোনাল বা মাইক্রোকম্পিউটার নয়, সেসব কম্পিউটারকে বলা মেইনফ্রেম কম্পিউটার। মেইনফ্রেম কম্পিউটার হচ্ছে এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সঙ্গে অনেকগুলো কম্পিউটার বা ডাম্ব টার্মিনাল (Dumb terminal) যুক্ত করে এক সঙ্গে অনেক মানুষ কাজ করতে পারে- সুপার কম্পিউটারে যে রকমটি করা যায়। ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক কর্ম তৎপরতা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: IBM 4143, UNIVAC 1100, NCRN 8370

 

মিনি কম্পিউটার (Mini Computer) : মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট আকারের কিন্তু পার্সোনাল কম্পিউটারের চেয়ে বড় আকারের কম্পিউটারকে মিনি কম্পিউটার বা মধ্যম সারির কম্পিউটার (Midrange Computer) বলা হয়। মেইন ফ্রেম এবং মিনি কম্পিউটারে একই ধরনের কাজ করা যায়। মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট এবং কাজের ক্ষমতাও কম। যদিও কিছু মিনি কম্পিউটার একজন ব্যবহারকারীর ব্যবহারের উপযুক্ত কিন্তু বেশির ভাগ মিনি কম্পিউটারেই একই সাথে অনেকগুলো টার্মিনালে কাজ করা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, হাসপাতাল, বড় বড় কারখানা, বহুজাতিক কোম্পানি, প্রযুক্তিগত গবেষণায় বিশ্লেষণ কাজে মিনি কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। PDP-II, IBM S/34, IBM S/36, NCR S/9290, NOVA3 ইত্যাদি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ।

 

মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) : মেইনফ্রেম বা মিনি কম্পিউটারের তুলনায় মাইক্রোকম্পিউটারের আকার অনেকগুণ ছোট। সাধারণত একজন ব্যবহারকারী একা একটি মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন। এজন্য মাইক্রোকম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা সংক্ষেপে শুধু পিসি (PC) বলা হয়। মাইক্রোকম্পিউটার হচ্ছে কারিগরি নাম, আর পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি হচ্ছে চলতি নাম। ১৯৭৫ সালে তড়িৎ প্রকৌশলী হেনরি এডওয়ার্ড রবার্ট কর্তৃক ডিজাইনকৃত Altair-৮৮০ কে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসরভিত্তিক কম্পিউটার (মাইক্রোকম্পিউটার) হিসেবে গণ্য করা হয়। এজন্য হেনরি এডওয়ার্ড রবার্টকে মাইক্রোকম্পিউটারের জনক বলা হয়। আকারে ছোট এবং দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় মাইক্রোকম্পিউটার আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। মাইক্রোকম্পিউটারকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যেমন-



 

·         ডেস্কটপ (Desktop):  জাতীয় কম্পিউটার ডেস্কে বা টেবিলে স্থাপন করে ব্যবহার করা যায় বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।

·         ল্যাপটপ বা নোটবুক (Laptop): ১৯৮১ সালে এপসম কোম্পানি প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রবর্তন করে। ল্যাপ (Lap) অর্থাৎ কোলের উপর স্থাপন করে কাজ করা যায়, এমন ছোট আকারের কম্পিউটারকে ল্যাপটপ বলা হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার দেখতে অনেকটা ছোট ব্রিফকেসের মতো যার ওপরের অংশে থাকে একটি সমতল এলসিডি বা এলইডি স্ক্রিন এবং নিচের অংশে থাকে কি-বোর্ড, পাওয়ার বাটন এবং টাচপ্যাড। এতে মাউসের পরিবর্তে টাচপ্যাড ব্যবহার করা হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার পাওয়ার বুক ইত্যাদি নামেও পরিচিত। দেখতে স্মার্ট, ওজনে হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ায় দিন দিন ল্যাপটপের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রিচার্জেবল ব্যাটারি বা এসি অ্যাডাপ্টার ল্যাপটপে থাকার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলে এটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালানো যায়।

·         নোটবুক (Notebook): নোটবুক কম্পিউটার সাধারণত ল্যাপটপ কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট এবং ওজন কম হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য। এটি দেখতে অনেকটা নোটবুকের ন্যায় বিধায় এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। ধরনের কম্পিউটারগুলোতে কি-বোর্ড, পাওয়ার বাটন, টাচপ্যাড এবং ডিসপ্লে হিসেবে এলসিডি বা এলইডি যুক্ত থাকে। কিন্তু কোনো প্রকার অপটিক্যাল ডিস্ক ড্রাইভ থাকে না।

·         হেন্ডহেল্ড বা পামপিসি বা পামটপ (Handheld or Palm PC or Palmtop): PDA- এর পুরোনাম হলো Personal Digital Assistants, ১৯৯৩ সালে ইলেকট্রনিক নির্মাতারা পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিটেন্ট তৈরি করেন। পিডিএ এর প্রাথমিক ভার্সন ছিল অ্যাপলের 'নিউটন' ধরনের কম্পিউটার ক্ষুদ্রাকৃতির এবং দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের ন্যায়, যা হাতের তালুর মধ্যে রেখে ব্যবহার করা যায়, এমনকি পকেটে রেখে সহজে বহন করা যায়। এটি পকেট কম্পিউটার নামেও পরিচিত। ধরনের কম্পিউটারগুলোতে কোনো প্রকার ডিস্ক ড্রাইভ থাকে না। সাধারণত টাচ স্ক্রিন ডিজিটাল পেনের সাহায্যে জাতীয় কম্পিউটারগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।

·         ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব (Tablet PC or Tab): ট্যাবলেট পিসি লেটার সাইজের প্লেটের অনুরূপ এক ধরনের কম্পিউটার যার স্ক্রীনে হাতের আঙ্গুল স্পর্শ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ বা ডেটা প্রদান করা অথবা ডিজিটাল কলম দিয়ে লেখা বা ড্রয়িং করা যায়। ট্যাবলেট পিসিতে ভয়েস ইনপুট ব্যবস্থা থাকে যার সাহায্যে ব্যবহারকারী কথা বলার মাধ্যমে কম্পিউটারে নির্দেশ বা ডেটা ইনপুট করতে পারেন। অ্যাপল কর্তৃক বাজারজাতকৃত ট্যাবলেট পিসি i Pad

·         ফ্যাবলেট (Phablet) : ফ্যাবলেট একটু বড় ধরণের মোবাইল ফোন। এটার স্ক্রিন সাইজ সাধারন মোবাইল ফোন থেকে বড় করে দেয়া হয়েছে যেন লোকজন এটাতে সহজভাবে বই পড়তে পারে আর ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারে. ফ্যাবলেটে যা করতে পারবে, একটা স্মার্ট মোবাইল ফোনেও তাই করতে পারবে, শুধু ফ্যাবলেটের স্ক্রিন সাইজ একটু বড় বলে কাজ করতে সুবিধা হয়। সাধারণত পাঁচ ইঞ্চি মাপের স্মার্টফোনের চেয়ে আকারে একটু বড় আবার সাত ইঞ্চি মাপের ট্যাবলেটের চেয়ে আকারে ছোট পণ্যগুলোকে ফ্যাবলেট বলেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। যদি অন্যভাবে বলি তাহলে এরকম হবে, অ্যান্ড্রয়েড ফোন+ট্যাবলেট=ফ্যাবলেট।

·         স্মার্টফোন (Smartphone): স্মার্টফোন হলো বিশেষ ধরনের মোবাইল ফোন যা মোবাইল কম্পিউটিং প্লাটফর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আইবিএম সাইমন ছিল বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন। অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড দ্বারা নির্মিত একটি আধুনিক ইন্টারনেট মাল্টিমিডিয়া সংযুক্ত স্মার্টফোন হলো আইফোন। অ্যাপলের সাবেক সিইও স্টিভ জবস ২০০৭ সালে প্রথম আইফোন অবমুক্ত করেন।

 

এম্বেডেড কম্পিউটার (Embedded Computer)

এম্বেডেড কম্পিউটার হলো একটি বিশেষায়িত কম্পিউটার সিস্টেম যা একটি বৃহৎ সিস্টেম বা মেশিনের অংশবিশেষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি কোনো প্রচলিত কম্পিউটার নয়। এম্বেডেড সিস্টেমে সাধারণত একটি মাইক্রোপ্রসেসর বোর্ড এবং সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রোগ্রামিং সম্বলিত একটি রম থাকে। আধুনিক এম্বেডেড সিস্টেমে মাইক্রোকন্ট্রোলার এর ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। এম্বেডেড কম্পিউটারের উৎপাদন খরচ অনেক কম এবং এটি আকারে মাইক্রোকম্পিউটারের চেয়ে অনেক ছোট। এম্বেডেড সিস্টেমে অনেক বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয়। যেমন; একটি এয়ার কন্ডিশনারে ঘরের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নির্দেশ করে কমান্ড দেয়া হলো। ঘরের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছামাত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে এয়ার কন্ডিশনার বন্ধ হয়ে যাবে। আর এয়ার কন্ডিশনার এই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কাজটি করবে যন্ত্রটির ভিতর বিদ্যমান এম্বেডেড কম্পিউটার। সুনির্দিষ্ট এই বিশেষ কাজটি করার জন্য কোনো আলাদা মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। ডিজিটাল ইন্টারফেস সম্বলিত ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ (যেমন-ঘড়ি, মাইক্রোওয়েভ, ভিসিআর, কার প্রভৃতি) তে এম্বেডেড সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। সেল ফোন, এয়ার কন্ডিশনার (AC), প্রিন্টার, থার্মোস্ট্যাট, ভিডিও গেম, ব্যাংকিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত ATM প্রভৃতিতে এম্বেডেড সিস্টেমের ব্যাপক ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলেছে।

 

কম্পিউটারের ইতিহাস , বিবর্তন প্রজন্ম

 

 

Computer শব্দটি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। কম্পিউট (Compute) শব্দ থেকে Computer কথাটির উৎপত্তি। কম্পিউটার (Computer) শব্দের অর্থ গণনাকারী। অর্থাৎ কম্পিউটার শব্দের আভিধানিক অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। শুরুতে কম্পিউটারের পরিচয় ছিল গণনা যন্ত্রের। কিন্তু এখন আর কম্পিউটারকে গণনা যন্ত্র বলা যায় না। কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপন করে। কম্পিউটারের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আধুনিক কম্পিউটারের জনক হলেন চার্লস ব্যাবেজ। তিনি যুক্তরাজ্যের অধিবাসী। তিনি প্রথম আধুনিক কম্পিউটারের ধারণা প্রদান করেন। চার্লস ব্যাবেজ ১৮১২ সালে বেল ল্যাবরেটরিতে লগারিদম হিসাবসহ গাণিতিক হিসাবের জন্য 'ডিফারেন্স ইঞ্জিন' এবং ১৮৩৩ সালে 'অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন' উদ্ভাবন করেন। পরবর্তীতে ব্যাবেজের চিন্তাভাবনার বাস্তবায়ন ঘটান হাওয়ার্ড আইকেন। হাওয়ার্ড আইকেন প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটারের আবিষ্কারক। হাওয়ার্ড আইকেন, কনরাড জুস, ভন নিউম্যান প্রভৃতি ব্যক্তিগণ কম্পিউটার আধুনিকায়নে অবদান রাখেন।

·          ধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

·          কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস

·          কম্পিউটারের বিবর্তন প্রজন্ম

 

 

 

আধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

1.     দ্রুত গতি (High Speed): কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে কাজ করে। কম্পিউটারের এই দ্রুতগতিসম্পন্ন হিসাবের কাজকে মিলিসেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড এবং পিকোসেকেন্ড ইত্যাদি সময়ের একক হিসেবে ভাগ করা যায়।
মিলি সেকেন্ড = সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ ( ১০- সেকেন্ড )
মাইক্রো সেকেন্ড = সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ ( ১০- সেকেন্ড )
ন্যানো সেকেন্ড = সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ ( ১০- সেকেন্ড )

2.     পিকো সেকেন্ড = সেকেন্ডের একলক্ষ কোটি ভাগের এক ভাগ ( ১০-১২ সেকেন্ড )
কোন কম্পিউটারের একটি সাধারণ যোগ করতে যদি ৫০ ন্যানো সেকেন্ড সময় লাগে, তাহলে সেকেন্ডে এরূপ কোটি যোগ করতে পারবে

3.     নির্ভুলতা (Correctness)

4.     সূক্ষ্মতা (Accuracy)

5.     বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability)

6.     ক্লান্তিহীনতা (Dilligence): পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে কম্পিউটারের উৎসাহ, মনোযোগ এবং সহিষ্ণুতার একটুও ঘাটতি হয় না। কম্পিউটার প্রোগ্রামে, একই নির্দেশনা বার বার সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে লুপিং (Looping) বলে।

7.     স্মৃতিশক্তি (Memory)

8.     স্বয়ংক্রিয়তা (Automation)

9.     বহুমুখিতা (Versatility)

10.                        যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত (Logical Decision)

11.                        অসীম জীবনীশক্তি (Endless Life)

12.                        নির্বোধ কিন্তু বিশ্বস্থ যন্ত্র : কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে অনেক বড় এবং জটিল হিসাব-নিকাশের কাজ নির্ভুলভাবে করতে পারলেও কম্পিউটারের নিজের কোন বুদ্ধি নেই। কম্পিউটার নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে কোন কাজ করতে পারে না। মানুষের তৈরি করে দেওয়া নির্দেশমালা অনুসরণ করেই কম্পিউটার সব রকমের কাজ সম্পন্ন করে।

কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস

গণনার কাজে সহায়তার জন্য প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন প্রকার যান্ত্রিক কৌশল প্রচলিত থাকলেও অ্যাবাকাস নামক একটি প্রাচীন গণনার যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়।

অ্যাবাকাস (Abacus) : অ্যাবাকাস প্রাচীনতম গণনা যন্ত্র, যা একটি ফ্রেমে সাজানো গুটির স্থান পরিবর্তন করে গণনা করার কাজ পরিচালিত করে। খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে অ্যাবাকাসের প্রথম ব্যবহার শুরু হয়েছিল চীনে বলে জানা যায়। গুটিগুলো সঞ্চালন করে অ্যাবাকাসের সাহায্যে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ প্রভৃতি কাজ করা যেত চীনে অ্যাবাকাসকে বলা হয় সুয়ানপান। (Suanpan), জাপানে সরোবান (Soroban) এবং রাশিয়াতে বলা হয় স্কেটিয়া (Sketia)


 

নেপিয়ারের অস্থি বা দন্ড (Napier's bones or rods) : স্কটল্যান্ডের গণিতবিদ জন নেপিয়ার (John Napier) ১৬১৪ সালে লগারিদম (Logarithm) এর সারণি আবিষ্কার করেন। এর তিন বছর পর তিনিই দাগকাটা এবং সংখ্যা বসানো দন্ড ব্যবহার করে সংখ্যাভিত্তিক গণনাযন্ত্র আবিষ্কার করেন। এসব দণ্ড নেপিয়ারের অস্থি নামে পরিচিত। এই আবিষ্কার গুণ, ভাগ, বর্গ, বর্গমূল নিরূপণের কাজ অনেক সহজ করে দেয়।


 

স্লাইড রুল : নেপিয়ারের লগারিদমের সারণী ব্যবহার করে উইলিয়াম অটরেড ১৬৩০ সালে প্রথম বৃত্তাকার স্লাইড রুল আবিষ্কার করেন।


 

প্যাস্কালেন (Pascalene) : ১৬৪২ সালে ফরাসি ব্রেইজ প্যাস্কেল (Blaise Pascal) একটি গণনা যন্ত্র তৈরি করেন। তিনি যন্ত্রে গিয়ারের সাহায্যে চাকা চালানোর পদ্ধতি ব্যবহার করে নতুন যুগের সূচনা করেন।

 


যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর (Calculator) : ১৬৭১ সালে জার্মান গণিতবিদ গটফ্রাইড ভন লিবনিজ (Gottfried Von Leibnitz) সিলিন্ডার আকৃতিবিশিষ্ট গিয়ার ব্যবহার করে একটি যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর তৈরি করেন। এটি বিশ্বের প্রথম যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর। 'Stepped Reckoner' নামে পরিচিত এই হিসাবযন্ত্রটির সাহায্যে পৌনঃপুনিক যোগ, গুণ এবং ভাগ করা যেত। ১৮২০ সালে ফ্রান্সের টমাস দ্য কলমার লিবনিজের যন্ত্রের অনুরূপ 'টমাস এরিথোমিটার' নামক যন্ত্র তৈরি করেন। এটি ছিল সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক হস্তচালিত ক্যালকুলেটর

 

ডিফারেন্স ইঞ্জিন (Difference Engine) : ১৭৮৬ সালে জার্মানির মুলার 'ডিফারেন্স ইঞ্জিন' নামে পরিচিত একটি ক্যালকুলেটর বা গণনা যন্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেন। এর প্রায় দুই যুগ পর ১৮১২ সালে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ (Charls Babbage) আরো উন্নত ডিফারেন্স ইঞ্জিন (Differenc Engine) বা বিয়োগ ফলভিত্তিক গণনার যন্ত্র উদ্ভাবনের পরিকল্পনা করেন চার্লস ব্যাবেজ ছিলেন একাধারে গণিতবিদ, দার্শনিক, আবিষ্কারক এবং যন্ত্র প্রকৌশলী। ১৮১৩ সালে তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিনকে উন্নত করার জন্য রয়েল সোসাইটি থেকে অনুদান পান। কিন্তু সেই সময়ে প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে মেশিনটি তৈরিতে বিঘ্ন ঘটে এবং রয়েল সোসাইটি অনুদান বন্ধ করে দেন। ১৮৩৩ সালে ব্যাবেজ 'অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন' নামে অপর একটি যন্ত্র তৈরি করার পরিকল্পনা করেন এবং নকশা তৈরি করেন। ব্যাবেজের এ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিনের পরিকল্পনায় আধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য ছিল ব্যাবেজ আধুনিক কম্পিউটারের মতোই তাঁর মেশিনে গাণিতিক ইউনিট (Arithmetic Unit), স্মৃতি (Memory), নিয়ন্ত্রণ ইউনিট, ইনপুট/আউটপুট (Input/Output) চিহ্নিত করেন। প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর উদ্ভাবিত যন্ত্র সেই সময় সাফল্যের সাথে কাজ করতে পারেনি। তবে ১৯৯১ সালে তাঁর ডিজাইন থেকেই সফলভাবে কর্মক্ষম একটি যন্ত্র তৈরি করা হয়। ব্যাবেজকে অনেকে 'কম্পিউটারের জনক' আবার অনেকে 'আধুনিক কম্পিউটারের জনক' বলে থাকেন।

এ্যানালাইটিক ইঞ্জিনে সাধারণ এসেম্বলি ভাষায় (Assembly Language) প্রোগ্রাম করার ব্যবস্থা ছিল এবং সফটওয়্যার দরকার হতো। সফটওয়্যার তৈরির জন্য ব্যাবেজ বিখ্যাত ব্রিটিশ কবি লর্ড বায়রনের কন্যা এ্যাডা অগাস্টা ল্যাভলেসকে নিয়োগ দেন। অ্যাডা লাভলেসকে "প্রোগ্রামিং ধারণার প্রবর্তক হিসেবে সম্মানিত করা হয়। ১৮৪২ সালে তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাবেজ তাঁর ইঞ্জিন সম্পর্কে বক্তব্য দেন। অ্যাডা সে সময় ব্যাবেজের সহায়তায় পুরো বক্তব্যে ইঞ্জিনের কাজের ধারাটি বর্ণনা করেন। কাজের ধারা বর্ণনার সময় তিনি এটি ধাপ অনুসারে ক্রমাঙ্কিত করেন। অ্যাডার মৃত্যুর ১০০ বছর পর ১৯৫৩ সালে সেই নোট আবারো প্রকাশিত হলে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, অ্যাডা আসলে অ্যালগরিদম প্রোগ্রামিংয়ের ধারণাটাই প্রকাশ করেছিলেন। প্রোগ্রামিং ভাষা 'এ্যাডা' তাঁরই নামানুসারে নামকরণ করা হয়।

পাঞ্চকার্ড (Punched Card) : পাঞ্চকার্ড হলো এক প্রকারের শক্ত কাগজের তৈরি কার্ড, যা এর উপরের ছিদ্রের উপস্থিতি অনুপস্থিতির ভিত্তিতে ডিজিটাল তথ্য প্রকাশ করে। ইউনিট রেকর্ড যন্ত্রে তথ্য ইনপুট, প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হতো এই কার্ড। হারম্যান হলিরিথ প্রথম এই কার্ডে ডেটা সংরক্ষণ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। হারম্যান হলিরিথ কর্তৃক এই কার্ড প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছে বলে একে হলিরিথ কার্ডও বলে। ১৮০১ সালে বস্তুশিল্পে নকশা নিয়ন্ত্রণের জন্য পাঞ্চকার্ডের ব্যবহার শুরু হয়। ফ্রান্সের জোসেফ মেরি জেকার্ড (Joseph Marie Jacquard) বস্ত্রশিল্পে পাঞ্চকার্ড ব্যবহার শুরু করেন।

 

টেবুলেটিং মেশিন (Tabulating Machine) : ১৮৮০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের . হারম্যান হলিরিথ (Dr. Herman Hollerith) নামের একজন পরিসংখ্যানবিদ সেন্সাস মেশিন বা টেবুলেটিং মেশিন নামে একটি গণনা যন্ত্র আবিষ্কার করেন। তাঁর উদ্ভাবিত যন্ত্রে তিনি পাঞ্চ কার্ড ব্যবহার করে ১৮৯০ সালের শুমারি মাত্র তিন বছরে শেষ করেন

 

টুরিং মেশিন (Turing Machine) : ইংরেজ গণিতবিদ অ্যালান মাথিসন টুরিং ১৯৩৬ সালে টুরিং মেশিন এর মাধ্যমে গণনা এবং অ্যালগোরিদম এর ধারণার প্রবর্তন করেন। টুরিংকে তাত্ত্বিক কম্পিউটার প্রকৌশল (Theoretical computer science) এর জনক বলা হয়।

 

ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কম্পিউটার (Electro-Mechanical Computer) : যান্ত্রিক ইলেকট্রনিক উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ে গঠিত কম্পিউটারকে ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কম্পিউটার বলা হয়। ১৯৩৭ সালে আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক . হাওয়ার্ড এইচ আইকেন (Dr. Howard Aeiken) ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল টেকনিক ব্যবহার করে চার্লস ব্যাবেজের অ্যানালাইটিক ইঞ্জিনের মতো একটি যন্ত্র তৈরি করার পরিকল্পনা করেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। ১৯৪৪ সালে হাওয়ার্ড আইকেন পৃথিবীর প্রথম ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি করেন। কম্পিউটারটিতে কোনো ভ্যাকুয়াম ভালভ ব্যবহার করেন নি। কম্পিউটারটি সম্পূর্ণভাবে তড়িৎযান্ত্রিক রিলের উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করেছিলেন। এটাই ছিল পৃথিবীর প্রথম স্বয়ংক্রিয় গণনাযন্ত্র। আইবিএম Automatic Sequence Controlled Calculator (ASCC) যন্ত্রটির নামকরণ করেন মার্ক-১। মূলত Mark-I ছিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আইবিএম কোম্পানির যৌথ উদ্যোগের একটি ফসল।

 

ইলেকট্রনিক কম্পিউটার (Electro Computer) : ১৯৩৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া স্টেইট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জন এটানাসফ (John Atanasoff) এবং তাঁর ছাত্র ক্লিফোর্ড বেরি (Clifford Berry) ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করে একটি ইলেকট্রনিক কম্পিউটার নির্মাণ করেন। উদ্ভাবকের নামানুসারে কম্পিউটারটিকে এবিসি বলা হয়। এতে তথ্য সংরক্ষণের জন্য মেমরি হিসেবে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়।

১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক . জন মাউসলি এবং তাঁর এক ছাত্র প্রেসপার একটি যৌথভাবে ENIAC নামক একটি গণনা যন্ত্র তৈরি করেন। এটি পৃথিবীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ বা সফল ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার। এর ওজন ছিল ৩০ টন ১৯৪৫ সালে হাঙ্গেরীয় গণিতবিদ জন ভন নিউম্যান (John Van Neuman) কম্পিউটার যন্ত্রের জন্য বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার এবং যন্ত্রের অভ্যন্তরেই উপাত্ত নির্বাহ সংকেত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন। তাঁর ধারণা সংরক্ষিত প্রোগ্রাম (Stored Program) নামে খ্যাত। ভন নিউম্যানের তত্ত্বকে ব্যবহার করে ১৯৪৬ সালের মধ্যে . জন মউসলি এবং তার ছাত্র প্রেসপার একার্ট EDVAC (Electronic Descrete Variable Automatic Computer) নামে অপর একটি কম্পিউটার তৈরি করেন। এই কম্পিউটারে প্রোগ্রাম সংরক্ষণ এবং রক্ষিত প্রোগ্রাম পুনর্বার নির্বাহের ব্যবস্থা ছিল।

১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মরিস উইলকিস (Prof. Moaurice Wilkes) এর নেতৃত্বাধীন একদল বিজ্ঞানী নিউম্যানের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে EDSAC তৈরি করেন। এতে ডেটা সংরক্ষণের জন্য প্রথম Mercury Delay Lines মেমোরি ব্যবহৃত হয়। প্রকৃতপক্ষে এডস্যাক (EDSAC) প্রথম সংরক্ষিত প্রোগ্রামবিশিষ্ট ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার। জন মাউসলি প্রেসপার একার্ট ১৯৫১ সালে UNIVAC তৈরি করেন। ইউনিভ্যাক ছিল বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার এবং যন্ত্রেই সর্বপ্রথম চুম্বক-ফিতা ব্যবহার করা হয়েছিল।

কম্পিউটার জাদুঘর : যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত Computer History Museum বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার জাদুঘর। ১৯৯৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

কম্পিউটারের বিবর্তন প্রজন্ম

কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের ক্রমবিবর্তন বলতে মূলত কম্পিউটারের প্রজন্ম বা জেনারেশনকেই বোঝায়। কম্পিউটার জেনারেশন বা প্রজন্ম বলতে এর প্রযুক্তিগত বিবর্তনকেই বোঝানো হয়ে থাকে।

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার / First Generation Computer (১৯৪২-১৯৫৯ খ্রি.) : প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের সার্কিটে বায়ুশূন্য টিউব বা ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হতো। কম্পিউটারগুলো আকৃতিতে বড় থাকার কারণে সহজে বহনযোগ্য ছিল না। কম্পিউটারে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হতো এবং প্রচুর তাপ উৎপন্ন হতো। পাঞ্চ কার্ডের মাধ্যমে ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এসব কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল খুবই সীমিত। প্রজন্মের কম্পিউটারে প্রোগ্রামের জন্য মেশিন অ্যাসেম্বলি ভাষা ব্যবহার করা হতো। উদাহরণ: Mark I, UNIVAC, ENIAC, EDSAC, IBM 650, IBM 704 ইত্যাদি।

 

দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার / Second Generation Computer (১৯৬০-১৯৬৪ খ্রি.) : দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলোতে ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বেল ল্যাবরেটরিতে জন বারডিন (John Bardeen), উইলিয়াম শকলে (William Shockley) এবং ওয়াল্টার ব্রাটেইন (Walter Brattain) ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন করেন। দুটি অর্ধপরিবাহী ডায়োডকে পাশাপাশি যুক্ত করে একটি অর্ধপরিবাহী ট্রায়োড তৈরি করা হয়। একে ট্রানজিস্টর বলে। ট্রানজিস্টর তৈরিতে অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) হিসেবে সিলিকন বা জার্মেনিয়াম ব্যবহৃত হয়। ট্রানজিস্টর মূলত এমপ্লিফায়ার (বিবর্ধক) হিসেবে কাজ হয়। ট্রানজিস্টর আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রনিক্সে বিপ্লব শুরু হয়। টিউবের তুলনায় ট্রানজিস্টর আকারে ছোট, বিদ্যুৎ খরচ কম, দামে সস্তা এবং দ্রুত গতিসম্পন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো আকৃতিতে ছোট, দ্রুতগতি অধিক নির্ভরযোগ্য ছিল। দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে সর্বপ্রথম উচ্চস্তরের ভাষা (যেমন- COBOL, FORTRAN) এর ব্যবহার শুরু হয়। আবার ম্যাগনেটিক কোর মেমরি এবং উচ্চগতিসম্পন্ন ইনপুট আউটপুট ব্যবস্থাও প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: IBM 1401, ট্রানজিস্টর CDC 1604, RCA 301, RCA 501, BCR 300, GE 200, Honey well 200, IBM 1620 ইত্যাদি।

 

তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার / Third Generation Computer (১৯৬৫-৭০ খ্রি.) : ১৯৫৮ সালে রবার্ট নইসি (Robert Noyce) এবং জ্যাক কিলবি (Jack Kilby) সমন্বিত বর্তনী (Integrated Circuit) সংক্ষেপে IC আবিষ্কার করে ইলেকট্রনিক জগতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। মাইক্রোইলেকট্রনিক্সের অগ্রযাত্রা মূলত তখন থেকে শুরু হয়। একটি মাত্র IC- তে অনেকগুলো ট্রানজিস্টর, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর এবং অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে একটি ক্ষুদ্র সিলিকন পাতের ওপর স্থাপন করা থাকে। ফলে কম্পিউটারের আকার আরো ছোট হয়ে আসে, দাম কমে যায়, বিদ্যুৎ খরচ কমে যায়, কাজের গতি নির্ভরশীলতা বহুগুণে বেড়ে যায়। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে SSI (Small-Scale Integration), MSI (Medium-Scale Integration) ধরনের ব্যবহৃত হতো। IC চিপ দিয়ে তৈরি প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার IBM system 360 তৃতীয় প্রজন্ম থেকেই অর্ধপরিবাহী স্মৃতির ব্যবহার, কম্পিউটারের সাথে ভিডিও ডিসপ্লে ইউনিট (যেমন-মনিটর), উচ্চগতির লাইন প্রিন্টারসহ অন্যান্য পেরিফেরাস ডিভাইসের ব্যবহার শুরু হয়। উদাহরণ: IBM-360, PDP-8, PDP II

 

চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার / Fourth Generation Computer (১৯৭১ খ্রি. - বর্তমান) : চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করে তৈরি করা হতো। ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে IC (Integrated Circuit)-এর দ্রুত উন্নয়নের ফলে LSI (Large Scale Integration) এবং VLSI (Very Large Scale Integration) চিপের আবির্ভাব ঘটে। ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট প্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নতির সঙ্গে কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশ বা প্রসেসরের সকল উপাদানকে একটি মাত্র সিলিকন চিপের মধ্যে একীভূত করা সম্ভব হয়। এই চিপকে মাইক্রোপ্রসেসর বলা হয়। মূলত মাইক্রোপ্রসেসর হলো সিলিকনের তৈরি এক ধরনের VLSI চিপ। যুক্তরাষ্ট্রের ইনটেল কর্পোরেশন . টেড হফ (Dr. Ted Hoff) এর তত্ত্বাবধানে ১৯৭১ সালে প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করে যার নাম ইনটেল - ৪০০৪। ইনটেল ৪০০৪ ছিল বাণিজ্যিকভাবে প্রাপ্ত বিশ্বের প্রথম মাইক্রোপ্রসেসর। মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহারের ফলে কম্পিউটারের আকার আরো ছোট হয়ে যায়, দাম কমে যায় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে যায়। কম্পিউটারে উন্নত মেমরির তথা ম্যাগনেটিক বাবল মেমরির ব্যবহার শুরু হয়। Windows, DOS অপারেটিং সিস্টেম দুটির ব্যবহার প্রজন্ম থেকেই শুরু হয়েছিল। ১৯৮১ সালে IBM কোম্পানি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রথম মাইক্রোকম্পিউটার তৈরি করা শুরু করে। ডেটা স্টোরেজ (সিডি, ডিভিভি প্রভৃতি) এবং সহযোগী যন্ত্রের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। IBM-3033, IBM -4341, TRS -40, Pentium Series পিসি ইত্যাদি প্রজন্মের কম্পিউটার।

 

পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার / Fifth Generation Computer (ভবিষ্যৎ) : সাধারণত ২০০১ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের কম্পিউটারগুলোকে পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার বিবেচনা করা হয়। মূলত পঞ্চম প্রজন্ম বলতে প্রকৃত অর্থে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই বোঝায়। প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো মানুষের ভাষায় কথা বলা মানুষের কথা বুঝতে পারার ক্ষমতাও থাকবে। অর্থাৎ এগুলো হবে বুদ্ধিমান কম্পিউটার। পঞ্চম প্রজন্ম VLSI প্রযুক্তিকে অতিক্রম করে UVLSI (Ultra Very Large Scale Integration) প্রযুক্তিতে অবস্থান করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) এবং রোবোটিক প্রযুক্তির চরম বিকাশ ঘটবে। কণ্ঠস্বর সনাক্তকরণ এবং বিশ্বের সকল ভাষায় কম্পিউটিং এর সম্প্রসারণ ঘটবে।

 

 

অনুশীলন অধ্যায়

 

 

. Older computers were....... / সেকেলে কম্পিউটার হলো...... [City Bank Ltd. Probationary Officer : 11 ]

·         Analog

·         Digital

·         Pipelined

·         Parallel

·         None of these

. কোন কম্পিউটার পরিমাপের ভিত্তিতে কাজ করে ? [ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর: ২১]

·         এনালগ

·         ডিজিটাল

·         হাইব্রিড

·         কোনটিই নয়

. Digital data is a combination of - [ জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (NSI)-এর সাঁটমুদ্রাক্ষরিক : ১৭ ]

·         Current

·         Voltage

·         1 and 2

·         None of the above

. ডিজিট্যাল টেলিফোনের প্রধান বৈশিষ্ট্য- [ ১৬তম বিসিএস / কর্মসংস্থান ব্যাংক আসিটেন্ট অফিসার (জেনারেল ক্যাশ) : ২১]

·         ডিজিটাল সিগন্যালে বার্তা প্রেরণ

·         বোতাম টিপিয়া ডায়াল করা

·         অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার

·         নতুন ধরনের মাইক্রোফোন

. The first digital computer was invented by-/ প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটারের আবিষ্কারক- [ Sadharan Bima Corporation Assistant Manager : 09]

·         William Otrerd

·         Abacus

·         Blais Pascal

·         Haward likin

·         None of these

. এনালগ ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে গঠিত হয়- / Signals can be analog or digital and a computer that processes the both type of signals is known as- [ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সহকারী: ০৬ / Bangladesh Bank (Cash) Officer : 16]

·         সুপার কম্পিউটার

·         হাইব্রিড কম্পিউটার

·         মাইক্রো কম্পিউটার

·         মিনি কম্পিউটার

. Which is not a computer classification ? [ Bangladesh Bank (Cash) Officer : 16]

·         Mainframe

·         Maxframe

·         Mini

·         Notebook

. Which is the fastest computer ?/ সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটার কোনটি ? [ Sonali, Janata and Agrani Bank Ltd. Officers (Cash) : 08]

·         Super Computer

·         Mainframe

·         Notebook Computer

·         Minicomputer

·         Personal Computer

. Number crunchier is the informal name for- [Biman Bangladesh Airlines Ltd: 16 ]

·         Mini computer

·         Super computer

·         Microcomputer

·         Mainframe computer

১০. Supercomputer Mainframe এর চেয়ে- [ তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী, টেলিডিশন: ০১]

·         কম শক্তিশালী

·         বেশি শক্তিশালী

·         সমান শক্তিসম্পন্ন

·         কোনোটিই সত্য নয়