অধ্যায় ১১ ঃ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা + বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি (BCS) Preliminary Preparation 200 Marks সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ)

  বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা

আধুনিক রাজনীতি বিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তে রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলতে বেশি আগ্রহী। রাষ্ট্রের সকল রাজনৈতিক কার্যকলাপ, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সরকারের সকল অঙ্গ সংগঠনের গঠন কার্যকলাপ নিয়ে যে একটি সামগ্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠে তাকে রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলে। রাষ্ট্র- কাঠামোর উপর রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি আচ্ছাদন। রাজনৈতিক ব্যবস্থাই রাষ্ট্রকে সচল করে রাষ্ট্রের কাজ সম্পাদন করে, রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা তেমনি ; রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক দলকে কেন্দ্র করেই রাষ্ট্রের আচরণ আবর্তিত হচ্ছে রাজনৈতিক দল হচ্ছে একটি রাষ্ট্রের দর্পণস্বরুপ রাজনৈতিক দলের আচরণের উপরই নির্ভর করে একটি রাষ্ট্র কতটা সফল বা ব্যর্থ

 

রাজনৈতিক দল

প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিই হলো রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দল হচ্ছে একটি দেশের জনগোষ্ঠীর সেই অংশ যারা একটি আদর্শ বা কিছু নীতি বা কর্মসূচির ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমাধানে সংগঠিত হয়। রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য হল ক্ষমতায় গিয়ে দলের নীতি আদর্শ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করা এবং নির্বাচনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। রাজনৈতিক দল সকল ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ, শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সকলের স্বার্থে কাজ করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আদর্শ কর্মসূচিভিত্তিক রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি। বিশ্বে এমন দেশ আছে যেখানে রাজণৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই। যেমন - সৌদি আরব। সেখানে রাজপরিবার এর পরিষদই সকল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। আবার কোথাও বা আইন করে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়, যেমন: ২০০৫ সাল পর্যন্ত আফ্রিকা মহাদেশের দেশ উগান্ডায় সরকার কর্তৃক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল

সুতরাং বলা যায়, রাজনৈতিক দল এমন এক জনসংগঠন যার সদস্যগণ রাষ্ট্রের সমস্যা সম্পর্কে ঐকমত্য পোষণ করে এবং নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট হয়।

রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য

·        সংঘবদ্ধ জনসমষ্টিরাজনৈতিক দল হচ্ছে কতগুলো নীতি আদর্শের ভিত্তিতে সংগঠিত একটি জনসমষ্টি।

·        ক্ষমতা লাভরাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রক্ষমতা লাভের মাধ্যমে সরকার গঠন করা

·        সুনির্দিষ্ট আদর্শ কর্মসূচিপ্রত্যেক রাজনৈতিক দলের একটি আদর্শ সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকে আদর্শের দিক থেকে কোনো দল ধর্মভিত্তিক আবার কোনো দল ধর্মনিরপেক্ষ হয়। অন্যদিকে অর্থনীতির রূপরেখা বিবেচনায়ও দল ভিন্ন হতে পারে যেমন - সমাজতান্ত্রিক দল।

·        প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেতৃত্বপ্রত্যেক রাজনৈতিক দলের একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো থাকে। কেন্দ্র থেকে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত দলের শাখা বিস্তৃত থাকে। এছাড়া প্রত্যেক দলের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি থাকে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্বারা দল পরিচালিত হয়।

·        নির্বাচনসংক্রান্ত কাজআধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তথা গণতান্ত্রিক অথবা একনায়কতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।। একনায়কতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার চেয়ে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচনের গুরুত্ব অধিকতর। সকল নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি, প্রার্থী মনোনয়ন, নির্বাচনে দলীয় কর্মসূচি প্রণয়ন, নির্বাচনি প্রচার ভোট সংগ্রহ দলের এবং দলীয় কর্মীদের দ্বারা সম্পাদিত হয়ে থাকে।

রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিভিন্ন রূপ

সংখ্যার ভিত্তিতে দলীয় ব্যবস্থাকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্তি করা হয়- একদলীয় ব্যবস্থা, দ্বিদলীয় ব্যবস্থা এবং বহুদলীয় ব্যবস্থা।

. একদলীয় ব্যবস্থা : কোনো দেশে যখন সাংবিধানিকভাবে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল থাকে, তখন তাকে 'একদলীয় ব্যবস্থা' বলে। একদলীয় ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল ব্যতীত অন্য সকল দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে জার্মানিতে হিটলারের 'নাৎসিদল', ইতালিতে মুসোলিনীর 'ফ্যাসিস্ট দল' এবং ১৯১৭ সালে সোভিয়েত রাশিয়ায় একদলীয় সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় ফ্যাসিবাদ নাৎসিবাদী একদলীয় ব্যবস্থায় ব্যক্তি পূজা এবং উগ্র ধনতান্ত্রিক শোষণ-নির্যাতন চলতে থাকে। কিন্তু সমাজতন্ত্রে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও এর লক্ষ্য হলো শ্রেণিহীন শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা নিচে একদলীয় ব্যবস্থার কিছু গুণ উল্লেখ করা হল:

1.   একদলীয় ব্যবস্থায় ঘন ঘন সরকার বদল হয় না। সরকার স্থিতিশীল হয়। এতে সরকারি নীতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকে এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

2.   একদলীয় ব্যবস্থায় দলীয় প্রধানই সর্বেসর্বা। কোনো প্রকার বিরোধিতা বা উপদলীয় কোন্দলকে সহ্য করা হয় না। এর ফলে দলীয় শৃঙ্খলা সুদৃঢ় হয়।

3.   কোনো ধরনের দলাদলি না থাকায় এবং একই আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বাষ্ট্রীয় ঐক্য সংহতি সুদৃঢ় হয়।

4.   একদলীয় ব্যবস্থায় কোনো প্রকার বিরোধিতা এবং জবাবদিহিতার প্রশ্ন না থাকায় সরকার জরুরি অবস্থায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে

5.   একদলীয় ব্যবস্থায় শিল্প জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতি হয়।

6.   একদলীয় ব্যবস্থায় অকারণে বিরোধিতা, হরতাল, আইনসভা বর্জন করা হয় না। এর ফলে দক্ষ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

. দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা : যখন কোনো দেশে নির্বাচনকালে প্রধানত দুটি রাজনৈতিক দল দেখতে পাওয়া যায়, তখন তাকে 'দ্বিদলীয় ব্যবস্থা বলে। দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণত রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রধান দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক পার্টি রিপাবলিকান পার্টি এবং গ্রেট ব্রিটেনে রক্ষণশীল দল শ্রমিক দল দ্বিদলীয় ব্যবস্থার উজ্জ্বল উদাহরণ।

. বহুদলীয় ব্যবস্থা : একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যখন দুটির বেশি দল রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে, তখন তাকে 'বহুদলীয় ব্যবস্থা' বলে। বহুদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণত নির্বাচনের কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে না। ফলে নির্বাচনে জয় লাভের জন্য অনেক সময় সমমনা দলগুলোর সমন্বয়ে 'সম্মিলিত সরকার' গঠিত হয়।

রাজনৈতিক দলের ভূমিকা

·        নেতৃত্ব তৈরিরাজনৈতিক দলের যিনি প্রধান নেতা তিনিই হলেন দলের নেতা। দলের নেতৃত্ব যেমন জাতীয় পর্যায়ে থাকে, তেমনি স্থানীয় পর্যায়েও থাকে। আবার আজকে যারা স্থানীয় পর্যায়ের নেতা, আগামীতে তারা জাতীয় পর্যায়ে নেতা হতে পারেন। বাংলাদেশে সরকারের প্রধানমন্ত্রী তার দলের নেতা। এই নেতা তৈরির কাজটি করে রাজনৈতিক দল জনগণ।

·        সরকার গঠনরাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ হচ্ছে সরকার গঠন করা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় সেই দলই সরকার গঠন করে।

·        জনমত গঠনরাজনৈতিক দলের অন্যতম কাজ হচ্ছে তার আদর্শ কর্মসূচির পক্ষে জনমত গঠন করা। এই জনমত গঠনে রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সভা, মিছিল গণযোগাযোগের কর্মসূচি গ্রহণ করে।

·        রাজনৈতিক শিক্ষাদানরাজনৈতিক দলের কাজ হচ্ছে জনগণকে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতন করা। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দলীয় কর্মসূচি ব্যাখ্যা করে এবং অন্যান্য দলের কাজের সমালোচনা করে। জনগণ বিভিন্ন দলের মতামত, আলোচনা-সমালোচনা ইত্যাদি থেকে রাষ্ট্রে পরিচালনার অনেক বিষয় জানতে পারে - এভাবে সাধারণ জনগণ রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে

·        গঠনমূলক বিরোধিতারাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনে বিজয়ী দল সরকার গঠন করে এবং দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আইনসভায় বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা পালন করে। সরকারের কোনো কার্যক্রম ভুল হলে বিরোধী দলের প্রধান কাজ হচ্ছে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া

·        সামাজিক ঐক্য প্রতিষ্ঠাএকটি সমাজে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ শ্রেণির মানুষ থাকে। তাদের স্বার্থ পরস্পর থেকে আলাদা এই আলাদা আলাদা স্বার্থ একত্রিত করে তা একটি কর্মসূচিতে পরিণত করা রাজনৈতিক দলের অন্যতম কাজ। রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনগণের সমর্থন চায়। যে কোন দল ক্ষমতায় গিয়ে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নীতি প্রণয়ন করে এই নীতি বাস্তবায়নের উপর সামাজিক ঐক্য নির্ভর করে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্বরুপ

রাজনৈতিক দলব্যবস্থা গণতান্ত্রিক শাসনপদ্ধতির প্রাণস্বরূপ। সেই অর্থে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দান এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ব্যবস্থা পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতিকে মূলত প্রধান দু'টি দলই নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করে। সংসদীয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ব্রিটেন যেখানে বহুদলের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকলেও তাদের ভূমিকা সক্রিয় নয়। মূলত দুটি প্রধান দল ব্রিটেনের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। উন্নত গণতন্ত্রের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান। সংসদীয় ব্যবস্থার রীতি অনুযায়ী বাংলাদেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল গড়ে উঠেছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলগুলোর কার্যক্রম তেমন দৃষ্টিগোচর না হলেও নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের কর্মতৎপরতা বেড়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন শাসনামল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, প্রধান দুটি দলের ভূমিকাই সক্রিয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আর্থ-সামাজিক ভিত্তিতে এবং অশান্ত রাজনীতির টানাপোড়েন বিচারে বাংলাদেশে দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা গড়ে উঠার প্রবণতাই বেশি। নিচে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হল :

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ। ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ) প্রতিষ্ঠিত হয়। রোজ গার্ডেনে কর্মী সম্মেলনে দল গঠিত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান (যুগ্ম-সম্পাদক) জেলে থাকাকালে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সম্পাদক করে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট উক্ত দলের কমিটি (প্রস্তুতি কমিটির পর) গঠন করা হয়। ১৯৪৯ সালে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ স্বাধীকার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দলটির জন্ম। দলটি আমাদের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। দলটির রয়েছে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং চর্চার ইতিহাস। ১৯৭১ সালে দলটির প্রধান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। দেশ স্বাধীন হলে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দলটি প্রথম সরকার পরিচালনা করে ১৯৭২-'৭৫ পর্যন্ত। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ঐতিহ্যের ধারক দলটি একদলীয় 'বাকশাল' প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যাপক নিন্দিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলে এবং দেশে সামরিক শাসন শুরু হলে বাকশাল পরিকল্পনা রহিত করা হয়। ১৯৯৬ সালে দলটি ক্ষমতায় এসে পররাষ্ট্র এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে আশানুরূপ সাফল্য দেখায়। তবে সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ সাফল্য দেখাতে পারেনি। দলটি ২০০১ এর সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়। ২০০৮ সনের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে রাজনীতিতে যে সংকট সৃষ্টি হয় সেই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। সামরিক বাহিনীর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তিনি এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন ( সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮) মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সহ সকল মতের মিলন ঘটান তার রাজনীতিতে। ১৯৯১ থেকে '৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ মেয়াদে দলটি ক্ষমতায় আসে। দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশ রক্ষা, নারী শিক্ষাসহ কতিপয় বিষয়ে সফলতা অর্জন করলেও সন্ত্রাস নির্মূল, দুর্নীতি দমন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সহ বেশি কিছু আশানুরূপ সফলতা দেখাতে পারেনি।

জাতীয় পার্টি

লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারীর মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ১৯৮২ সালে জাতীয় পার্টি গঠন করেন। দীর্ঘ বছর দলটি ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতায় থাকালীন রাজনৈতিক নির্যাতন, বিরোধী মতাদর্শে বিশ্বাসীদের দমন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটায়। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দলটির পতন ঘটলে রাজনৈতিক অঙ্গনে দলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বর্তমানে দলটি ত্রিধারায় বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। জোটবদ্ধ সরকার গঠনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে দলটির গুরুত্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বেড়ে গেছে। ২০০৮ সনের নির্বাচনে মহাজোটের শরীক দল হিসেবে এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে অংশ নেয়। বর্তমানে সরকারি দলের অংশ হিসেবে এবং সংসদে বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী দলটি দেশে ইসলামীক শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। দলটির তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠন কর্মী রয়েছে। এছাড়া দলের নীতিমালা শৃঙ্খলা অত্যন্ত কঠোর হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তবে ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সাথে দলটির সুসম্পর্ক না থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে দলটি দলীয় জোটের অংশ হিসেবে সরকারের অংশীদার হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে।

বাম সংগঠন

কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ, বাসদ, গণফোরাম, ন্যাপ ইত্যাদি দলগুলো বাম দল হিসেবে পরিচিত। ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দলগুলো সংগ্রাম করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে বাম দলগুলোর সমর্থন তেমন না থাকলেও আদর্শ ভিত্তিক সংগঠন হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ে এখনও সংগঠনের বিস্তৃতি রয়েছে। রাজনীতিতে এদের ভূমিকা অতি নগণ্য হলেও মানবাধিকার, শ্রমজীবী মানুষের দাবী, সম্পদের সুষম বণ্টন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠার জন্য দলগুলো রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ সোচ্চার। ২০০৮ সনের নির্বাচন অধিকাংশ বামদলগুলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট করে অংশগ্রহণ করে। এতে নিজেদের কিছুটা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কাছাকাছি আনার সুযোগ পায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে কিছু বাম দল অংশ নেয় এবং বর্তমানে সরকারি দলের অংশ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।

অন্যান্য রাজনৈতিক দল

ইসলামী জোট : কুরআন সুন্নাহর ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা, নারী শাসনের ঘোর বিরোধী, ইসলামী মতাদর্শে বিশ্বাসী এই জোট। বাংলাদেশে মাদ্রাসাকেন্দ্রিক কিংবা কতিপয় আলেম-ওলামা কেন্দ্রিক বেশ কয়েকটি ইসলামী দল রয়েছে এই জোটে। ধর্মভিত্তিক আদর্শ থাকার কারণে রাজনৈতিক মহলে ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সাথে এর দূরত্ব বজায় রয়েছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ : এটি মূলত ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল। দেশের সীমিত অঞ্চলে এর রাজনৈতিক কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুর বৃত্তির কারণে এর স্বতন্ত্র রাজনৈতিক আদর্শ সুস্পষ্ট নয়। এই সংগঠনগুলো ছাড়াও দেশে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে। তবে এদের বেশির ভাগই জাতীয় রাজনীতিতে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।

ক্ষমতাসীন বিরোধী দলের পারস্পরিক সম্পর্ক

সংসদীয় সরকার শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলকে ' বিকল্প সরকার' বলা হয়। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় বিরোধী দল ছাড়া গণতান্ত্রিক রীতিনীতি সফল হতে পারে না। কোন কোন দেশে বহুদলীয় আবার কোন কোন দেশে দ্বিদলীয় গণতন্ত্র চালু আছে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের রাজনীতিতে কেবলমাত্র দুটি দলের অস্তিত্বকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সরকারি দল এবং বিরোধীদল। অন্যদিকে বাংলাদেশ, ভারতের মত দেশগুলির রাজনীতিতে সরকারি দল এবং একাধিক বিরোধী দলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দেশের সংসদকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা গণতন্ত্রের কণ্ঠস্বর বলে উল্লেখ করেছেন। সুষ্ঠু সংসদীয় কাঠামোর দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাধীন, নিরপেক্ষ বক্তব্য তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। যোগ্য বিরোধী দল সংগঠিতভাবে সরকারের মিথ্যাচার, পাপাচারের বিরুদ্ধে কামান দাগাতে পারে। বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হলে দেশের সরকারকে যে কোন পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিতে পারে। ভুল-ভ্রান্তির জন্য ক্রমাগত ক্ষমাপ্রার্থনা এবং প্রায়শ্চিত্তের তাগাদা অনুভব করতে শেখায়, সক্ষম সংগঠিত বিরোধী দল। রাজনীতিতে নির্বাচনী লড়াইয়ে একদল জেতে একদল হারে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সদস্যরাই দেশের রাজনীতির প্রধান কারিগর হয়ে ওঠে। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধীরা ক্ষমতা আদায়ের জন্য দীর্ঘমেয়াদী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি বিরোধী দলের ভূমিকা নিম্নরূপ:

1.   সহিষ্ণুতাসংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত হচ্ছে সহিঞ্চুতা, আলাপ-আলোচনা, আপস এবং সমঝোতা। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দল এবং বিরোধী দলকে অবশ্যই পরস্পরের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বিরোধী দলের মতামত হবে যৌক্তিক এবং জনগণের কল্যানের উদ্দেশ্যে। অপরদিকে সরকারি দলের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী দলের সকল মতামতকে উপেক্ষা করা অনুচিত এবং গণতান্ত্রিক চেতনার বিরোধী।

2.   গঠনমূলক সমালোচনাসংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দলের কাজকর্মের গঠনমূলক সমালোচনা বিরোধী দলের অত্যাবশ্যকীয় কাজ। বিরোধী দলের কার্যকরী বিরোধিতা সরকারি দলের স্বেচ্ছাচারী ভূমিকার ক্ষেত্রে একটি নিয়ন্ত্রণ হিসেবে কাজ করে। তাই সংসদের ভিতর বাইরে বিরোধীদের দমন-পীড়নের পরিবর্তে ভাদের রাজনৈতিক ভূমিকা পালনের সুযোগ গান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকরী করার অন্যতম পূর্বশর্ত। অন্যদিকে বিরোধীদলের বিরোধিতা যখন কেবলই বিরোধিতার জন্য হয় তখন তা গণতন্ত্রকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করে।

3.   আলাপ-আলোচনাসংসদীয় গণতন্ত্রের আবেকটি মূলমন্ত্র হল পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা। এখানে সকল রাজনৈdk মতবিরোধকে সংসদে আলোচনা করে সমাধান করাই শোভন। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে পরস্পরের প্রতি সহনশীল যৌক্তিক আচরণ করতে হবে এবং সংসদে আলোচনার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।

4.   আপসকামী মনোভাবসংসদীয় গণতন্ত্রে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে আপসকামী মনোভাব থাকা জরুরি। প্রতিটি রাজনৈতিক দল যদি নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরাপরকে ছাড় দিতে রাজি না হয় তাহলে কোন সমস্যারই সমাধান সম্ভব হবে না।

5.   সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু করাসংসদীয় রাজনীতিতে সংসদই সকল কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। তাই সংসদকে শক্তিশালী করতে সরকারি বিরোধী দলের সদস্যদের সংসদে সক্রিয় উপস্থিতি প্রয়োজন। প্রয়োজনে বিরোধী দল থেকে স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন, স্পিকারের উপর সকল দলের আস্থা স্থাপন, স্পিকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, সদস্যদের জন্য কার্যপ্রণালী বিধি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানের ব্যবস্থা করা, পলিসি ইস্যু সংক্রান্ত বিষয়ে আলাদাভাবে আলোচনা ব্যবস্থা করা, সংসদীয় কার্যক্রমের সঙ্গে সিভিল সোসাইটিকে সংশ্লিষ্ট করা, জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে সংসদীয় কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যের অবাধ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সংসদের সময়ের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

6.   রাজনৈতিক শিষ্টাচার সততাসংসদীয় গণতন্ত্রের সফলতার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবর্গের শিষ্টাচার সততা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। টিআইবি' ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ এর মতে, বাংলাদেশের সংসদ এবং সাংসদরা ক্রমশ অশ্রদ্ধেয় হয়ে পড়ছেন। নির্বাচিত হয়ে অনেকেই দেশ জাতির প্রতি অঙ্গীকারের কথা ভুলে গেছেন। তাঁর মতে সংসদীয় গণতন্ত্রের স্বার্থেই সংসদ সদস্যদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার সম্পন্ন সৎ হতে হবে।

7.   নিয়মতান্ত্রিকতার প্রতিষ্ঠানিক রূপদাননিয়মতান্ত্রিক নির্বাচন, সংসদ সংবিধানের প্রতি আস্থা রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে এটাই সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দাবী। অথচ আমাদের দেশের রাজনীতির দিকে তাকালে দেখা যায় সংসদীয় গণতন্ত্রের দাবীগুলো পূরণ হয়নি। সরকারি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী দলকে হেয় করা, কথা বলতে না দেয়া এবং যে কোন যুক্তি বা দাবি কেবল সরকারি দলের বলে প্রতিপন্ন করার সংস্কৃতি আমাদের দেশে চালু আছে। এগুলো থেকে সরকারি বিরোধী দলকে বেরিয়ে আসতে না পারলে সংসদীয় গণতন্ত্রের স্বাদ অপূর্ণই রয়ে যাবে। এজন্য রাজনৈতিক দলসমূহকে আরো বেশি উদার মনোভাবাপন্ন হতে হবে।

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হচ্ছে এমন এক গোষ্ঠী যার সদস্যগণ সমজাতীয় মনোভাব এবং স্বার্থের ভিত্তিতেই পরস্পরে সাথে আবদ্ধ হন। এরা এমন এক সংগঠিত সামাজিক গোষ্ঠী, যা সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের আচরণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এরা তাদের পছন্দের দল বা ব্যক্তিকে অর্থ দিয়ে, যানবাহন দিয়ে প্রচার কাজে সাহায্য করে। তাদের পছন্দনীয় দল বা ব্যক্তি নির্বাচিত হয়ে আইনপ্রণয়ন শাসন কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করে থাকে। প্রয়োজনবোধে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী মিটিং, মিছিল, শোভাযাত্রার সাহায্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থাকে

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য

1.   চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সদস্যগণ বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের সমাষ্টিবিশেষ। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কোনো আনুষ্ঠানিক সরকারি স্বীকৃতিও সাধারণত থাকে না।

2.   চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী গঠিত হয় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অজন, স্বার্থ আদায় বা স্বার্থরক্ষার জন্য বহুমুখী, ব্যাপক সামাজিক বা জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী গঠিত হয় না। এমনকি জাতীয় কল্যাণের জন্য কোনো মহান উদ্দেশ্যও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর থাকে না।

3.   স্বার্থকামী গোষ্ঠী নিজেকে নির্দলীয় বা অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে মনে করে। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী অরাজনৈতিক চরিত্র নিয়েই বেচে থাকতে চায়।

4.   স্বার্থকামী গোষ্ঠী সংগঠিত সামাজিক গোষ্ঠী। তাঁরা সুসংগঠিত। তাঁদের লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট।

5.   স্বার্থকামী গোষ্ঠী আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গঠন বা সরকারের নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে চায় এর লক্ষ্য সরকারের নীতি অ্যচরণকে প্রভাবিত করা। চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী আইনসভার সদস্যগণকে প্রভাবিত করে নিজেদের অনুকূলে আইন প্রণয়ন করিয়ে নেয়, শাসন বিভাগকে প্রভাবিত করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায়, পছন্দের দল-ব্যক্তিকে নির্বাচনে সহযোগিতা প্রদান করে।

রাজনৈতিক দল চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য

রাজনৈতিক দল চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিল থাকলেও উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। উভয়ের মধ্যে উৎপত্তি, লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য এবং কর্মসূচির মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়

1.   রাজনৈতিক দলের সামনে বৃহৎ জাতীয় কল্যাণের লক্ষ্য থাকে, যা চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মধ্যে থাকে না।

2.   সাংগঠনিক দিক থেকে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী রাজনৈতিক দল অপেক্ষা দুর্বল।

3.   রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য হলো বাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা কিন্তু চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর লক্ষ্য হলো সরকারি সিদ্ধান্তকে নিজেদের অনুকুলে প্রভাবিত করা।

4.   রাজনৈতিক দলের কাজকর্ম প্রকাশ্য প্রত্যক্ষ। কিন্তু চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কাজকর্ম সাধারণত গোপন বা অপ্রকাশ্য

5.   রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু চাপসষ্টিকারী গোষ্ঠী তা করে না।

6.   রাজনৈতিক দল গঠিত হয় বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায় পেশার লোকজন নিয়ে। কিন্তু চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী গঠিত হয় সমস্বার্থ সমমনোভাবাপন্ন লোকদের নিয়ে

·        S. E. Finer এর মতে, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী Lobby Group.

·        Almond and Powel চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীকে বিভক্ত করেছেন ভাগে।

·        আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারকে চাপ দেয় - চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী।

·        সুশীল সমাজ কাজ করে - চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হিসেবে।

·        কোন বিশিষ্ট লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করার জন্য কাজ করে এমন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীকে বলা হয় - উন্নয়নমূলক চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী।

·        উন্নয়নমূলক চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ উন্নয়নের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে - ওয়াচডগ হিসেবে।

·        সরকারি কাঠামারে বাইরে থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চায় - চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী।

·        সরকার জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে - চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী।

·        বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ হলো - এক ধরনের চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী।

·        চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অন্য নাম Attitude Group, Interest Group, Non-Political and Organized Group.

সুশীল সমাজ

সুশীল সমাজের ধারণা প্রথম পাওয়া যায় দার্শনিক জন লক, রুশোসহ আধুনিক রাষ্ট্র চিন্তাবিদদের লেখনীতে, তবে বিষয় বেশি স্পষ্ট আলোচনা, পাওয়া যায় এন্টোনিও গ্রামসির লেখায়। কমিউনিস্টবিরোধী আন্দোলনের সময় এর তীব্রতা পরিলক্ষিত হয়। ঐক্যবদ্ধ চেতনায় উদ্বুদ্ধ জনগোষ্ঠীই সুশীল সমাজের আওতাভুক্ত। এরা সরকারেও থাকে না, আবার কর্পোরেট গ্রুপেও থাকে না। এরা সরকার প্রাইভেট সেক্টরের মাঝামাঝি একটি গ্রুপ, এদের ধর্ম হল সরকার প্রাইভেট সেক্টর উভয়ক্ষেত্রেই তাদের প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এরা সরকারকে সহযোগিতাও করতে পারে আবার সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়ে সরকারের ভিতও নাড়িয়ে দিতে পারে।

সুশীল সমাজের ইংরেজি প্রতিশব্দ Civil Society, বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক তাঁর Social Contract গ্রন্থে সর্বপ্রথম Civil Society প্রত্যয়টি ব্যবহার করেন। প্রাচীন গ্রীস রোমে রাষ্ট্র ছিল নগরকেন্দ্রিক। ফলে নগরের বাসিন্দারাই ছিল নাগরিক। যার অর্থ দাঁড়ায় সিভিটাস মানে রাষ্ট্র এবং সিভিল মানে রাষ্ট্রের নাগরিক। আর সোসাইটি মানে সমাজ। সুতরাং সিভিল সোসাইটি মানে হচ্ছে নাগরিক সমাজ বা নগর সমাজ।

গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সুশীল সমাজ ধারণাটি একটি উল্লেখযোগ্য প্রত্যয়। সুশীল সমাজ মূলত গণতান্ত্রিক চেতনাসমৃদ্ধ সমাজ। সুশীল সমাজ বলতে জনগণের যে অংশ সরাসরি রাষ্ট্র রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় কিংবা এসব থেকে সরাসরি সুবিধা লাভ করে না সে অংশকেই বুঝায়। কোন দেশের সুশিক্ষিত সচেতন নাগরিকদের চিন্তা-চেতনা কর্ম হয় অনেকটা নিরপেক্ষ, নির্দেশনামূলক উন্নয়নকামী। এরা সরকার বেসরকারি পুঁজিপতির চিন্তা কর্মের মাঝে একটা মধ্যবর্তী শ্রেণী হিসেবে অবস্থান করে। ফলে সরকারের বিপথগামীতা বা প্রাইভেট সেক্টরের অতিমাত্রায় আত্মকেন্দ্রিকতা বাজারমুখিতার মাঝমাঝি থেকে তারা উভয়কে চরম অবস্থানের ব্যাপারে সজাগ করে দেয় এবং অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করে। জাতীয় উন্নয়ন, অগ্রগতিও দুর্যোগ মোকাবিলায় তাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অবস্থান অতটা সুদৃঢ় না হলেও দেশের আর্থ- সামাজিক, রাজনৈতিক বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশেষ গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকরণে সুশীল সমাজ অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে।

 

বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা

বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থাস্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রথম বাংলাদেশের সরকার গঠিত হয়। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। প্রকৃতির দিক থেকে বাংলাদেশ একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র। এর কোন প্রদেশ নেই। আমাদের দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি। তবে দেশের প্রকৃত শাসন ক্ষমতা প্রধান মন্ত্রী তার মন্ত্রিপরিষদের উপর ন্যস্ত। মন্ত্রিপরিষদই এখানে প্রকৃত শাসন ক্ষমতার অধিকারী এবং প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান। তাঁর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ দেশের শাসনকার্য পরিচালনা করে। বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ তাদের কাজকর্মের জন্য জাতীয় সংসদের ( আইনসভা ) কাছে দায়ী আইনসভায় প্রণীত আইনের আলোকে মন্ত্রিসভা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের নীতি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে এবং সম্পাদিত কার্যাবলীর জন্য সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংসদের নিকট দায়বদ্ধ থাকে।

 

বাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চল

বাংলাদেশকে ৮টি বিভাগে এবং ৬৪টি জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে, যদিও জননীতিতে এগুলোর ভূমিকা সীমিত। স্থানীয় সরকার এর উদ্দেশ্যে দেশটিকে উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং ইউনিয়ন পরিষদ বিভক্ত করা হয়েছে।

বিভাগ

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ৪টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করলে বর্তমানে দেশে টি বিভাগ রয়েছে যথাঃ

1.   ঢাকা বিভাগবাংলাদেশের প্রথম বিভাগ এটি ১৮২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিভাগে জেলার সংখ্যা ১৩টি। যথাঃ ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর রাজবাড়ী।

2.   চট্টগ্রাম বিভাগ১৮২৯ সালে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বিভাগে জেলার সংখ্যা ১১ টি। যথা- চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান , খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা ব্রাহ্মনবাড়িয়া।

3.   রাজশাহী বিভাগপাক-ভারত বিভাজনের পর ১৯৪৭ সালে এই বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী বিভাগে জেলার সংখ্যা ৮টি। যথা- রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট।

4.   খুলনা বিভাগ১৯৬০ সালে খুলনা বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। এটি ১০ টি জেলা নিয়ে গঠিত যথাঃ খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, মাগুড়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা।

5.   বরিশাল বিভাগ১৯৯৩ সালে খুলনা বিভাগ থেকে আলাদা করে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলা যথাঃ বরিশাল জেলা , পটুয়াখালী জেলা , ভোলা জেলা , বরগুনা জেলা , ঝালকাঠি জেলা , পিরোজপুর জেলা নিয়ে এই বিভাগের যাত্রা শুরু হয়।

6.   সিলেট বিভাগ১৯৯৫ সালে সিলেটকে বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বিভাগ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এটি সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ মৌলভীবাজার এই চারটি জেলা নিয়ে গঠিত

7.   রংপুর বিভাগএটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ৮টি জেলা যথাঃ রংপুর , দিনাজপুর , পঞ্চগড় , ঠাকুরগাঁও , গাইবান্ধা , কুড়িগ্রাম , নীলফামারী , লালমনিরহাট নিয়ে গঠিত। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে ঘোষিত হয়।

8.   ময়মনসিংহ বিভাগবাংলাদেশের সর্বশেষ বিভাগ ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর নেত্রকোণা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ফরিদপুরকে সদর দপ্তর করে 'পদ্মা' নামে দেশের প্রস্তাবিত নবম বিভাগ হয় এবং প্রস্তাবিত ১৩ তম সিটি কর্পোরেশন। ঢাকা বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজবাড়ী শরীয়তপুর এই পাঁচটি জেলা নিয়ে পদ্মা বিভাগ নামে প্রতিষ্ঠিত হবে।

জেলা

স্বাধীনতা লগ্নে বাংলাদেশের জেলা ছিল ৩২টি বর্তমানে বাংলাদেশে জেলার সংখ্যা ৬৪ টি তবে ভৈরব ৬৫তম জেলা হিসেবে প্রস্তাবিত রয়েছে যা এখন প্রক্রিয়াধীন বাংলাদেশের বৃহত্তর জেলা ১৯ টি। প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে যশোর বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন জেলা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম উল্লেখযোগ্য জেলাটির সৃষ্টি হয়েছিল আজ থেকে প্রায় দুইশত বৎসর পূর্বে ১৭৮৬ সালে।

·        সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়

·        সর্বউত্তরের উপজেলা তেতুলিয়া

·        সর্বউত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা / জায়গীরজোত

·        সর্বপশ্চিমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ

·        সর্বপশ্চিমের উপজেলা শিবগঞ্জ

·        সর্বপশ্চিমের স্থান মনাকশা

·        সর্বপূর্বের জেলা বান্দরবান

·        সর্বপূর্বের উপজেলা থানচি

·        সর্বপূর্বের স্থান আখানইঠং

·        সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজার

·        সর্ব দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফ

·        সর্ব দক্ষিণের স্থান ছেঁড়াদ্বীপ / সেন্টমার্টিন

উপজেলা

উপজেলা ব্যবস্থা : স্থানীয় সরকার কাঠামোর অন্যতম একটি স্তর উপজেলা পরিষদ। বাংলাদেশের ভূখন্ডে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সূচনা ঘটে ১৮৭০ সালে। পাকিস্তান আমলে ১৯৫৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান 'মৌলিক গণতন্ত্র অধ্যাদেশ' জারির মাধ্যমে বিভাগীয় কাউন্সিল, থানা বা তহসিল কাউন্সিল এবং ইউনিয়ন কাউন্সিল নামে চার স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় সরকার কাঠামো প্রবর্তন করেন। ১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নং আদেশ দ্বারা উক্ত থানা কাউন্সিল-এর নাম পরিবর্তন করে থানা উন্নয়ন কমিটি করা হয়। ১৯৭৬ সালের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন অধ্যাদেশ অনুযায়ী এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় থানা। ২৮ এপ্রিল ১৯৮২ প্রশাসনিক সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে ১৯৮২ সালে স্থানীয় সরকার (থানা পরিষদ থানা প্রশাসন পুনর্গঠন) অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ১৯৮২ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকরী অধ্যাদেশ বলে প্রথমে উন্নীত থানা পরিষদ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে উন্নীত থানা পরিষদকে উপজেলা পরিষদে রূপান্তর করা হয়। ১৯৮৫ সালের মে মাসে সর্বপ্রথম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংসদে 'উপজেলা বাতিল' বিল পাস হয় ২৬ জানুয়ারি, ১৯৯২ জাতীয় সংসদে 'উপজেলা পরিষদ (রহিতকরণ) আইন পুনঃপ্রচলন সংশোধন বিল' পাস হয় এপ্রিল, ২০০৯ বাংলাদেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি সর্বশেষ গঠিত উপজেলাগুলি হল মাদারীপুরের ডাসার উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা ( ৪৯৫ তম ) 'তিতাস উপজেলা' কুমিল্লা জেলার অন্তর্ভুক্ত একটি উপজেলা। এই উপজেলাটি গঠন করা হয় ২০০৪ সালে। উপজেলা শব্দটি সংস্কৃত আরবি ভাষার সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে।

·        বাংলাদেশে বর্তমানে থানার সংখ্যা - ৬৪৮টি

·        বাংলাদেশে বর্তমানে নৌথানা - ১৭টি

·        বাংলাদেশে বর্তমানে রেলওয়ে থানা - ২৪টি

·        ঢাকা মহানগরীর বর্তমান থানার সংখ্যা - ৫০টি: সর্বশেষ হাতিরঝিল (ঢাকা)

·        হাইওয়ে পুলিশের থানা - ৩৬টি

ইউনিয়ন

·        বাংলাদেশে বর্তমানে ইউনিয়নের সংখ্যা :
৪৫৩৬ টি [ সূত্র: বাংলাদেশ প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি- নিকার ]
৪৫৫০ টি; [ জাতীয় তথ্য বাতায়ন ]
৪৫৫২ টি; [ ৫ম আদমশুমারি ]
৪৫৭১ টি; [ বাংলাদেশ পকেট পরিসংখ্যান ]

·        ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধির সংখ্যা : ১৩ জন: ১জন চেয়ারম্যান ১২ জন সদস্য (৯জন সাধারন আসনের সদস্য ৩জন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য)

·        বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রামের সংখ্যা : ৮৭,১৯১ টি

সিটি কর্পোরেশন

বাংলাদেশে সিটি কর্পোরেশনের সংখ্যা ১২টি। যথা- ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর এবং ময়মনসিংহ। বাংলাদেশের সর্বশেষ সিটি কর্পোরেশন ময়মনসিংহ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে উত্তর দক্ষিণ দুইভাগে ভাগ করা হয় ২৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে সিটি এলাকায় ক্ষুদ্রতম প্রশাসনিক একক ওয়ার্ড ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫টি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৩টি

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়রের নাম মোহাম্মদ হানিফ। তিনি জনগণের ভোটে ১৯৯৪ সালের ১২ মার্চ মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বছর ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের পিতা।

বৃহত্তম-ক্ষুদ্রতম

নাম

আয়তনে

বৃহত্তম

ক্ষুদ্রতম

বিভাগ

চট্টগ্রাম

ময়মনসিংহ

জেলা

রাঙামটি

নারায়ণগঞ্জ

উপজেলা

শ্যামনগর। (সাতক্ষীরা)

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ)

থানা

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)

ওয়ারী (ঢাকা)

সিটি কর্পোরেশন

গাজীপুর

সিলেট

পৌরসভা

বগুড়া সদর

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর)

ইউনিয়ন

সাজেক (বাঘাইছড়ি, রাঙামাটি)

হাজীপুর (দৌলতখান, জেলা )

আয়তনে বৃহত্তম-ক্ষুদ্রতম

 

নাম

জনসংখ্যায়

বৃহত্তম

ক্ষুদ্রতম

বিভাগ

ঢাকা

বরিশাল

জেলা

ঢাকা

বান্দরবান

উপজেলা

গাজীপুর সদর

থানচি (বান্দরবান)

থানা

গাজীপুর সদর

বিমানবন্দর (ঢাকা)

সিটি কর্পোরেশন

-

কুমিল্লা

পৌরসভা

বগুড়া সদর

-

ইউনিয়ন

থামসানি (সাভার, ঢাকা)

হাজীপুর (দৌলতখান, জেলা )

জনসংখ্যায় বৃহত্তম-ক্ষুদ্রতম

·        সিলেটসাইবার সিটি

·        ঢাকাক্লিন সিটি

·        চট্টগ্রামহেলদি সিটি

·        রাজশাহীসিল্ক সিটি বা গ্রিন সিটি

·        বরিশালইডিয়োপলিশ (সৃজনশীল আদর্শ শহর)

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো

বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর দুটি ধারা রয়েছে। প্রথমটি হল নাতি নির্ধারণী কেন্দ্র বা সচিবালয়, অপরটি হল স্থানীয় প্রশাসন বা মাঠ প্রশাসন বাংলাদেশের প্রশাসন হলো শাসন বিভাগ। বাংলাদেশের সকল প্রশাসন নির্বাহী বিভাগের অধীনে দুই ভাগে বিভক্ত যথাঃ কেন্দ্রীয় প্রশাসন মাঠ প্রশাসন

. কেন্দ্রীয় প্রশাসন

কেন্দ্রীয় প্রশাসনের চারটি শাখা যথাঃ

1.   সচিবালয়

2.   মন্ত্রণালয়

3.   অধিদপ্তর

4.   পরিদপ্তর

. সচিবালয় : সকল মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় অফিসকে বলে সচিবালয়। সচিবালয়ের অধীনস্ত মন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্য পৃথক যে Unit আছে তাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলা হয় এবং এর প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বাংলাদেশে ৫টি সচিবালয় রয়েছে -

1.   রাষ্ট্রপতি সচিবালয়

2.   কর্মকমিশন সচিবালয়

3.   নির্বাচন কমিশন সচিবালয়

4.   জাতীয় সংসদ সচিবালয়

5.   বাংলাদেশ সচিবালয়

. মন্ত্রণালয়: সচিবালয়ের অধীন একটি প্রশাসনিক ইউনিট হলো মন্ত্রণালয় যার নির্বাহী মন্ত্রী এবং প্রশাসনিক প্রধান সচিব। মন্ত্রীপরিষদের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সরকারের প্রধান। মন্ত্রীপরিষদ তাদের কাজকর্মের জন্য জাতীয় সংসদের নিকট দায়ী থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয় হলো খাদ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

. অধিদপ্তর : মন্ত্রণালয়ের অধীন এক বা একাধিক ইউনিট যার প্রধান মহাপরিচালক বা Director General. যে অফিসের প্রধানের পদবী মহাপরিচালক অর্থাৎ সরকারের যুগ্মসচিব মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সেই অফিসকে বলা হয় অধিদপ্তর।

. পরিদপ্তর: অধিদপ্তরের অধীন এক বা একাধিক ইউনিট যার প্রধান পরিচালক বা Director. যে অফিসের পদবী পরিচালক অর্থাৎ সরকারের উপসচিব মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সেই অফিসকে বলা হয় পরিদপ্তর।

কর্পোরেশন; যে অফিসের প্রধানের পদবী চেয়ারম্যান অর্থাৎ সরকারের অতিরিক্ত সচিব মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সেই অফিসকে বলা হয় কর্পোরেশন। কর্পোরেশনগুলো সাধারণত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

কেন্দ্রীয় প্রশাসনের কাজ:

1.   নীতিমালা তৈরি (Policy Making)

2.   আইন প্রণয়ন করা (Law Formation)

3.   তদারকি পর্যবেক্ষণ (Supervision & Monitoring)

. মাঠ প্রশাসন

বিভাগীয় প্রশাসন , জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসন এই তিনটি প্রশাসনিক স্তরকে মাঠ প্রশাসন বলে।

1.   বিভাগীয় প্রশাসনপ্রধান বিভাগীয় কমিশনার (যিনি Joint Secretary মর্যাদা সম্পন্ন ) কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বিভাগের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেলা প্রশাসকদের কাজের তত্ত্বাবধান করেন, জেলা প্রশাসকদের তিনি বদলী করতে পারেন।

2.   জেলা প্রশাসনপ্রধান জেলা প্রশাসক। তিনি জেলার প্রধান নির্বাহী। তাকে কেন্দ্র করে জেলার সকল কাজ পরিচালিত হয়। তিনি জেলার প্রশাসনিক কাজ, রাজস্বসংক্রান্ত আর্থিক কাজ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসংক্রান্ত কাজ, উন্নয়নমূলক কাজ স্থানীয় শাসনসংক্রান্ত কাজ করে থাকেন।

3.   উপজেলা প্রশাসনউপজেলা নির্বাহী অফিসার (UNO) উপজেলার সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তদারক এবং সরকারি অর্থের ব্যয় তত্ত্বাবধান করেন। তিনি উপজেলা কোষাগারের রক্ষক

মাঠ প্রশাসনের মূল কাজ দুই ধরনের-

1.   আইন নীতিমালার বাস্তবায়ন (Implementation of the law)

2.   পর্যবেক্ষণ তদারকি (Supervision & Monitering)

বাংলাদেশের শাসন বিভাগ

শাসন বিভাগকে নির্বাহী বিভাগও বলা হয়ে থাকে। এটি মূলত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে গঠিত।

রাষ্ট্রপতি : বাংলাদেশের শাসন বিভাগের সর্বোচ্চ ব্যক্তি হলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তবে রাষ্ট্রপ্রধান হলেও তিনি আসলে নামমাত্র প্রধান। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে তিনি বাষ্ট্রের সকল কাজ পরিচালনা করেন। রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে নির্বাচিত হন। তাঁর কার্যকাল বছর। রাষ্ট্রপতি পুননির্বাচিত হতে পারেন। তবে কোন ব্যক্তি দুই মেয়াদ অর্থাৎ ১০ বছরের বেশি রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন না। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন কালে তার বিরুদ্ধে আদালতে কোন অভিযোগ আনা যায় না। তবে সংবিধান লঙ্ঘন বা গুরুতর কোনো অভিযোগে জাতীয় সংসদ অভিশংসনের (অপসারণ পদ্ধতি) মাধ্যমে তাকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অপসারণ করতে পারে। রাষ্ট্রপতি হতে হলে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক এবং কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়স্ক হতে হবে। এছাড়া তাঁর জাতীয় সংসদ নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে। যদি কেউ রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অপসারিত হন তাহলে তিনি আর রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না।

প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদের কেন্দ্রবিন্দু সরকারপ্রধান। তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের শাসনকার্য পরিচালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভা দেশের প্রকৃত শাসক। জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের আস্থাভাজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিজের বিচার-বিবেচনা অনুযায়ী জাতীয় সংসদের যে কোন সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যকাল পাঁচ বছর। তবে তার আগে কোনো কারণে সংসদ তার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলে এবং তা সংসদে গৃহীত হলে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী স্বেছায়ও পদত্যাগ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে তার মন্ত্রিসভা ভেঙ্গে যায়। তাই প্রধানমন্ত্রীকে সরকারের স্তম্ভ বলা হয়। তিনি একসাথে সংসদের নেতা, মন্ত্রিসভার নেতা এবং সরকারপ্রধান।

মন্ত্রিপরিষদ : সরকার পরিচালনার জন্য দেশে একটি মন্ত্রিপরিষদ আছে। প্রধানমন্ত্রী এর নেতা। তিনি যেরূপ সংখ্যক প্রয়োজন মনে করেন সেরূপ সংখ্যক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী উপমন্ত্রীকে নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীগণ সাধারণত সংসদের সদস্যদের মধ্য থেকে নিযুক্ত হন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য কিন্তু সংসদ সদস্য নন এমন ব্যক্তিও মন্ত্রী হতে পারেন। তবে তার সংখ্যা মন্ত্রিপরিষদের মোট সদস্যসংখ্যার এক দশমাংশের বেশি হবে না।

বাংলাদেশের আইনসভা ( জাতীয় সংসদ )

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয় যে, আইনানুযায়ী বাংলাদেশের জন্য একটি আইন পরিষদ থাকবে যার নাম "জাতীয় সংসদ (House of the Nation), এটি এক কক্ষবিশিষ্ট। প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের উপর ন্যস্ত। রাজধানী ঢাকায় সংসদের স্থায়ী আসন রয়েছে। সংরক্ষিত ৫০টি মহিলা আসনসহ বর্তমানে জাতীয় সংসদ ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। ৫০টি মহিলা আসনের সদস্যগণ নির্বাচিত ৩০০ জান সদস্যের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হবেন। সংসদের কার্যকাল বছর। সংসদ সদস্য হতে হলে কোন ব্যক্তিকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক এবং কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়স্ক হতে হবে।

জাতীয় সংসদ ভবন : ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ২০৮ একর জমির উপর তলা বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ ভবন অবস্থিত। ১৯৫৯ সালে ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। মার্কিন স্থপতি লুই আই কান ১৯৬২ সালে এর মূল নকশা প্রস্তুত করেন। ১৯৬৪ সালে মূল নকশায় কিছুটা পরিবর্তন এনে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৭১ সালে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয় এবং ১৯৭৪ সালে কোন পরিবর্তন ছাড়াই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুস সাত্তার এর উদ্বোধন করেন। একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এখানে প্রথম সংসদ অধিবেশন বসে। সংসদ ভবনের উচ্চতা ১৫৫ ফুট ইঞ্চি ৪৬. মিটার। এটি তলা বিশিষ্ট।

জাতীয় সংসদের স্থপতি লুই আই কান : বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের সৃষ্টিশীল নিদর্শন। ১৯০১ সালে তিনি এস্তোনিয়ার এক ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতামাতার সাথে তিনি আমেরিকায় অভিবাসী হন। ১৯৬২ সালের মার্চে তিনি সংসদ ভবনের নকশা তৈরির দায়িত্ব পান এবং বছরই মূল নকশা প্রস্তুত করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৬৪ সালে তাঁর সহকারী হেনরী উইলকট কমপ্লেক্সটির পরিবর্তিত নকশা সম্পাদনা করেন। হেনরী এম প্যামব্যাম ভবনটির কাঠামো ডিজাইন করেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

·        নির্বাচনের তারিখ২০২৪ সালের জানুয়ারি

·        মোট প্রার্থী হাজার ৯৭০ জন

·        মোট ভোটার১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন।

·        অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল২৮ টি

·        নির্বাচনের ফলাফল :
আওয়ামী লীগ ২৬৩ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২২৪ টি আসনে জয়ী হয়
জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ২৮৬ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১১ টি আসনে জয়ী হয়
বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টি আসনে জয়ী হয়
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টি আসনে জয়ী হয়
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ২০ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টি আসনে জয়ী হয়
স্বতন্ত্র প্রার্থী মোট ৬২ টি আসনে জয়লাভ করে

·        এই নির্বাচনই প্রথম যেখানে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের মধ্য থেকে ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশ দেন। এছাড়া দলের ভেতর থেকে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে অনাপত্তি জানানো হয়। ফলে দেখা যায় , একই দলের প্রার্থীদের মধ্যে ভিন্ন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়

·        এই নির্বাচনে ৯৬ জন নারী প্রার্থীর মধ্যে ২০ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

·        সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টি

·        সংসদে সংরক্ষিত আসনসহ মোট নারী সদস্য ৭০ জন

সংসদ নির্বাচন

সময়কাল

Note

প্রথম

মার্চ, ১৯৭৩

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নির্বাচন।

দ্বিতীয়

১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৯

বহুদলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

তৃতীয়

মে, ১৯৮৬

-

চতুর্থ

মার্চ, ১৯৮৮

-

পঞ্চম

২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

ষষ্ঠ

১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬

-

সপ্তম

১২ জুন, ১৯৯৬

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বিতীয় নির্বাচন

অষ্টম

অক্টোবর, ২০০১

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তৃতীয় নির্বাচন

নবম

২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চতুর্থ নির্বাচন

দশম

জানুয়ারি, ২০১৪

একাদশ

৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮

১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়।

দ্বাদশ

জানুয়ারি , ২০২৪

একই দলের ডামি প্রার্থী রাখার প্রথম ইতিহাস

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আসন :

·        জাতীয় সংসদের নির্বাচিত আসন৩০০ টি

·        সংরক্ষিত মহিলা আসন৫০ টি

·        জাতীয় সংসদের সর্বমোট আসন৩৫০টি

·        সবচেয়ে বেশি সংসদীয় আসনঢাকা জেলায় - ২০টি

·        সবচেয়ে কম সংসদীয় আসনরাঙামাটি-১টি, খাগড়াছড়ি-১টি এবং বান্দরবান-১টি

·        মাত্র একটি সংসদীয় আসনরাঙামাটি জেলায়

·        জাতীয় সংসদের নং আসনপঞ্চগড় জেলায়

·        জাতীয় সংসদের ৩০০ নং আসনবান্দরবান জেলায়

·        সর্বাধিক ভোটারজাতীয় সংসদের ১৯২ নং আসন (ঢাকা-১৯ আসন)

·        সবনিম্ন ভোটারজাতীয় সংসদের ১২৫ নং আসন (ঝালকাঠি- আসন)

·        ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে সংসদীয় আসন১৫টি। (ঢাকা দক্ষিণ- টি এবং ঢাকা উত্তর- টি)

·        বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু হয়সপ্তম জাতীয় সংসদে

·        সংরক্ষিত মহিলা আসন :
১৯৭২ সালের১৫টি অতিরিক্ত আসন ছিল
১৯৭৯ সালে গৃহীত পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে৩০টি
চতুর্দশ সংশোধনী৪৫টি
২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনী৫০ টি
২০১৮ সালে সপ্তদশ সংশোধনী৫০ টি (বর্তমান) এটি ২৫ বছর মেয়াদে বৃদ্ধি

·        জাতীয় সংসদে সরকারি দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেনপ্রধানমন্ত্রী

সংসদ

প্রথম অধিবেশন শুরু হয়

সংসদ বিলুপ্ত হয়

মেয়াদ

প্রথম

এপ্রিল, ১৯৭৩

নভেম্বর, ১৯৭৫

বছর মাস

দ্বিতীয়

এপ্রিল, ১৯৭৯

২৪ মার্চ, ১৯৮২

বছর ১১ মাস

তৃতীয়

১০ এপ্রিল, ১৯৮৬

ডিসেম্বর, ১৯৮৭

বছর মাস

চতুর্থ

১৫ এপ্রিল, ১৯৮৮

ডিসেম্বর, ১৯৯০

বছর মাস

পঞ্চম

এপ্রিল, ১৯৯১

২৪ নভেম্বর, ১৯৯৫

বছর মাস

ষষ্ঠ

১৯ মার্চ, ১৯৯৬

৩০ মার্চ, ১৯৯৬

১২ দিন

সপ্তম

১৪ জুলাই, ১৯৯৬

১৩ জুলাই, ২০০১

বছর

অষ্টম

২৮ অক্টোবর, ২০০১

২৭ অক্টোবর, ২০০৬

বছর

নবম

২৫ জানুয়ারি, ২০০৯

২৪ জানুয়ারি, ২০১৪

বছর

দশম

২৯ জানুয়ারি, ২০১৪

২৯ জানুয়ারি, ২০১৯

বছর

একাদশ

৩০ জানুয়ারি, ২০১৯

২৯ জানুয়ারি , ২০২৪

বছর

দ্বাদশ

৩০ জানুয়ারি , ২০২৪

-

-

বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের কার্যকাল

বাংলাদেশের বিচার বিভাগ

বাংলাদেশে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল দন্ড প্রদান এবং সংবিধানের ব্যাখ্যা দান। রাষ্ট্র দোষী অপরাধীদের শাস্তি বিধানের জন্য বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ অন্যতম নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, অপরাধীর শাস্তিবিধান এবং দুর্বলকে সবলের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। বিচার বিভাগ আইনের অনুশাসন দেশের সংবিধানকে অক্ষুন্ন রাখে।

বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্ট, অধস্তন আদালত এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্ট। বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আদালতের নাম সুপ্রীম কোর্ট। এর রয়েছে দুটি বিভাগ আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগ। সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের পৃথক কার্যের এখতিয়ার আছে। দুটি কোর্টের ক্ষমতা কাজ নিয়েই সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রধান বিচারপতি রয়েছেন, যাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বলা হয়। রাষ্ট্রপতি তাকে নিযুক্ত করেন। প্রত্যেক বিভাগের জন্য যতজন বিচারক প্রয়োজন ততজন বিচারককে নিয়ে সুপ্রীম কোর্ট গঠিত সুপ্রিম কোটের আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ১১ (বর্তমানে জন বিচারক আছেন) আপিল বিভাগে বেঞ্চের সংখ্যা ৩। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ৭৮। প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারপতিদের নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতিও অন্যান্য বিচারকগণ বিচার পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে ১০ বছর এডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে অথবা বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় পদে ১০ বছর বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ ৬৭ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে কর্মরত থাকতে পারেন। সুপ্রীম কোর্টের স্থায়ী আসন রাজধানী ঢাকায়। হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বেঞ্চ ১টি (ঢাকায়)

অধস্তন আদালত সমূহ (Lower Courts) :

·        সংবিধানের ১১৪ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে অধস্তন আদালত সমূহ নিয়ে সুপ্রীম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। সুপ্রীম কোর্টের অধীনে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় অধস্তন বা নিম্ন আদালত আছে।

·        জেলা জজের আদালত (The Court of the District Judge): জেলা আদালতের প্রধান বিচারক জেলা জজ। তিনি জেলার দেওয়ানী ফৌজদারী মামলার সর্বোচ্চ বিচারক। জেলা জজ যখন ফৌজদারী মামলার বিচার করেন তখন তাঁকে সেশন জজ বা দায়রা জজ বলে।

·        অতিরিক্ত জেলা জজ, যুগ্ম জজ এবং সহকারী জজ আদালত (The Court of the Additional district Judge, Joint District Judge and Assistant district Judge): জেলা জজ আদালতের অধীনে প্রত্যেক জেলায় অতিরিক্ত জেলা জজ, যুগ্ম জজ এবং সহকারী জজ আদালত আছে। অতিরিক্ত জেলা জজ যখন ফৌজদারী মামলার বিচার করেন, তখন তাঁকে অতিরিক্ত দায়রা জজ বলে। যুগ্ম জেলা জজ যখন ফৌজদারী মামলার বিচার করেন, তখন তাঁকে সহকারী দায়রা জজ বলে। ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তির জন্য প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী এবং তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত আছে।

·        পারিবারিক আদালতঃ ১৯৮৫ সালে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে পারিবারিক আদালত সৃষ্টি হয়। পারিবারিক আদালতের অধিক্ষেত্রসমূহঃ
. বিবাহ বিচ্ছেদ
. দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার
. মোহরানা, ভরণ-পোষণ
. অভিভাবকত্ব শিশুদের তত্ত্বাবধান সংক্রান্ত মামলা ইত্যাদি।

প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল (Administrative Tribunal): বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন কোন ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। বর্তমানে কয়েকটি জেলায় প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আছে। ঢাকায় একটি প্রশাসনিক আপীল ট্রাইবুনাল আছে।

গ্রাম আদালত (Village Courts): বিচার বিভাগীয় কাঠামোর সর্বনিম্নে ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত আছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বিবাদমান দুইপক্ষের দুইজন করে মনোনীত সদস্য- মোট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। যেসব মামলা গ্রাম আদালতে বিচারের যোগ্য, তার বিচার অন্য আদালতে হয়না। দেওয়ানী ফৌজদারী দণ্ড সংক্রান্ত ছোট খাটো বিচারের নিষ্পত্তি গ্রাম আদালতে হয়। (গ্রাম আদালত আইন-২০০৬)

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল : ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ৬টি বিভাগীয় শহরে একটি করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি রোধ এবং অপরাধের দ্রুত শাস্তি বিধানের জন্য আদালত গঠিত হয়। ধরনের অপরাধের বিচার এখানে দ্রুত পরিচালিত হবে-হত্যা, ধর্ষণ, আগ্নেয়াস্ত্র , বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদক দ্রব্য এবং মজুদদারী।

সুপ্রীম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ঃ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২১ জুন, ২০০৯ বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে রায় দেয়।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রথম নারী বিচারপতি:

·        সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রথম নারী বিচারপতি হলেন নাজমুন আরা সুলতানা। একাধারে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেরও প্রথম নারী বিচারপতি। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ থেকে জুলাই ২০১৭ পর্যন্ত তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন।

·        দেশের ১ম নারী সলিসিটর - জেসমিন আরা বেগম।

·        বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা - জন।

·        আপিল বিভাগের ১ম নারী বিচারপতি - নাজমুন আরা সুলতানা।

·        আপিল বিভাগের ২য় নারী বিচারপতি - জিনাত আরা।

·        আসামীর হাজতবাস কারাদন্ড ভোগের সময় থেকে বাদ দেয়ার সাম্প্রতিক নির্দেশটি দিয়েছেন - আপিল বিভাগ।

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ : বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের জন্য মামলা করেন সাব জজ মোহাম্মদ মাজদার হোসেন ৪৪০ জন বিচারক , ১৯ নভেম্বর, ১৯৯৫। মামলাটির নাম মাজদার হোসেন বনাম বাংলাদেশ। নভেম্বর, ২০০৭ স্বাধীন বিচার বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। ২১৮ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে বিচার বিভাগ পৃথক হয় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ হতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব নেন নিম্ন ফৌজদারী আদালতের স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় হচ্ছে সুপ্রীম কোর্টের অধীনে নিম্ন আদালতে বিচারক নিয়োগের কার্যাবলী পরিচালিত হয় জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে

ধারা

ধারা বিবরণী

৫৪ ধারা

বিনা ওয়ারেন্টে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার করার ক্ষমতা

১৪৪ ধারা

মানুষের চলাচল, আচরণ এবং কর্মকাণ্ডের উপর বিধিনিষেধ বা নিয়ন্ত্রণ। যেমন- জনের বেশি একত্রে চলাচল নিষিদ্ধ, আগ্নেয়াস্ত্র বহন এবং এক জায়গায় একত্র হওয়া বা করা নিষিদ্ধ।

১৫৪ ধারা

এই ধারায় এজাহার রেকর্ড করা হয়।

১৬৪ ধারা

এই ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

১৭৩ ধারা

এই ধারায় চার্জশীট দাখিল করা হয়।

৪২০ ধারা

পেনাল কোডের একটি ধারা যেখানে প্রতারণার জন্য শাস্তির বিধান রাখা আছে।

FIR

First Information Report এটি একটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী যা এজাহার নামে পরিচিত। পেনাল কোডের ১৫৪ ১৫৫ ধারা অনুযায়ী কোন অপরাধের বিষয়ে থানায় রিপোর্ট করাকে FIR বলে।

চার্জশীট ( Charge Sheet )

চার্জশীট এক ধরনের অভিযোগপত্র। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন অপরাধীর অপরাধ তদন্ত করে যদি অপরাধ সংঘটনে আসামির সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রমাণ পান, তখন তদন্তকারী কর্মকর্তা যে অভিযোগপত্র তৈরি করেন, তাই চার্জশীট।

ওয়ারেন্ট ( Warrant )

ওয়ারেন্ট শব্দের অর্থ গ্রেপ্তারী পরোয়ানা। বিচারক কর্তৃক কাউকে গ্রেপ্তার করার উদ্দেশ্যে পুলিশের প্রতি লিখিত আদেশনামাই হলো ওয়ারেন্ট।

PP

Public Procecutor-যার মাধ্যমে সমস্ত ক্রিমিনাল মামলা কোর্টে যায়।

প্যারোল

নির্বাহী আদেশে মুক্তি

Amicus Curiae

আদালতের বন্ধু

আইন সম্পর্কিত কতিপয় শব্দ

 

আইন

পাসের সময়

সংশোধিত হয়

দণ্ডবিধি (The Penal Code)

১৮৬০ সালে

-

পুলিশ আইন (The Police Act)

১৮৬১ সালে

সাক্ষ্য আইন (The Evidence Act)

১৮৭২ সালে

-

চুক্তি আইন (The Contract Act)

১৮৭২ সালে

-

সাবালকত্ব আইন (The Majority Act)

১৮৭৫ সালে

-

অস্ত্র আইন (The Arms Act)

১৮৭৮ সালে

-

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন (The Transfer of Propery Act)

১৮৮২ সালে

-

ট্রাস্ট অ্যাক্ট (The Trusts Act)

১৮৮২ সালে

-

বিস্ফোরক আইন (The Explosives Act)

১৮৮৪ সালে

-

ফৌজদারী কার্যবিধি

১৮৯৮ সালে

-

তামাদি আইন

১৯০৮ সালে

-

সরকারি গোপনীয়তা আইন

১৯২৩ সালে

-

সাকসেশন অ্যাক্ট

১৯২৫ সালে

-

বাল্যবিবাহ আইন

১৯২৯ সালে

১৯৮৪ সালে

আরবিট্রেশন অ্যাক্ট

১৯৩৭ সালে

-

ট্রেড মার্কস অ্যাক্ট

১৯৪০ সালে

-

ভবঘুরে আইন

১৯৪৩ সালে

-

ট্রেজারি রুলস

১৯৪৪ সালে

-

আনসার আইন

১৯৪৮ সালে

-

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ

১৯৬১ সালে

১৯৮৬ সালে

স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা নিবন্ধীকরণ নিয়ন্ত্রণ আইন

১৯৬১ সালে

-

বিশেষ ক্ষমতা আইন

১৯৭৪ সালে

-

বিবাহ তালাক নিবন্ধীকরণ আইন

১৯৭৪ সালে

১৯৭৫ সালে

শিশু আইন (The Children Act)

১৯৭৪ সালে

-

স্থানীয় শাসন অধ্যাদেশ

১৯৭৬ সালে

-

যৌতুক নিরোধ আইন (The Dowry Prohibiion Act)

১৯৮০ সালে

১৯৮৬ সালে

ন্যায়পাল আইন

১৯৮০ সালে

-

বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা

১৯৮১ সালে

-

ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ

১৯৮৪ সালে

-

পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ

১৯৮৫ সালে

-

বাংলা ভাষা প্রচলন আইন

১৯৮৭ সালে

-

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন

১৯৯০ সালে

-

প্রাথমিক শিক্ষা (বাধ্যতামূলককরণ) আইন

১৯৯০ সালে

-

ব্যাংক কোম্পানি আইন

১৯৯১ সালে

-

কোম্পানি আইন

-

১৯৯৪ সালে

সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন (বিশেষ বিধান) আইন

১৯৯৪ সালে

-

নারী শিশু নির্যাতন আইন

২০০০ সালে

-

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন

২০০১ সালে

-

সালিস আইন

২০০১ সালে

-

আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী (দ্রুত বিচার) আইন

এপ্রিল, ২০০২

-

দ্রুতবিচার ট্রাইবুনাল আইন

ডিসেম্বর, ২০০২

-

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন

২০০৩ সালে

'যৌথ বাহিনীর দায়মুক্তির অধ্যাদেশ' জারি করা হয়

জানুয়ারি ২০০৩

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪

-

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন আইন

ডিসেম্বর, ২০০৪

জুন, ২০০৬

ধূমপান তামাকজাতপণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন

১৫ মার্চ, ২০০৫

-

ভূমি রেজিস্ট্রেশন আইন কার্যকর হয়

জুলাই, ২০০৫

-

কর ন্যায়পাল আইন

১০ জুলাই, ২০০৫

-

বাংলাদেশ শ্রম আইন

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৬

-

ভ্রাম্যমান আদালত অধ্যাদেশ

নভেম্বর, ২০০৭

-

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারি করা হয়

১৯ আগস্ট, ২০০৮

-

তথ্য অধিকার আইন

২৯ মার্চ, ২০০৯

-

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন

এপ্রিল, ২০০৯

-

গ্রাম সরকার (রহিতকরণ) বিল

এপ্রিল, ২০০৯

-

জাতির পিতার পরিবার সদস্যগণের নিরাপত্তা বিল

১৩ অক্টোবর, ২০০৯

-

জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন আইন

২০১০

-

কর ন্যায়পাল (রহিতকরণ) আইন

২০১১

-

সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন

২০১১

-

স্থানীয় সরকার আইন

২০১১

-

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল

২০১২

-

আদালত অবমাননা আইন

২০১৩

-

শিশু আইন

২০১৩

-

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন

২০১৩

-

পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন

২০১৩

-

নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন

২০১৩

-

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন

২০১৩

-

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন

২০১৪

-

সংবিধান (ষোড়শ সংশাধেন) আইন

২০১৪

-

বাংলাদেশ হোটেল রেস্তোরা আইন

২০১৪

-

মেট্রোরেল আইন

২০১৫

-

বাংলাদেশ জ্বালানি বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিল আইন

২০১৫

-

ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন

২০১৫

-

সরকারি যানবাহন (ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ)

২০১৫

-

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো আইন

২০১৫

-

ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন আইন

২০১৫

-

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আইন

২০১৫

-

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আইন

বাংলাদেশের আইন অনুযায়া ১৪ বছরের নিচে শিশুদের শ্রমে নিয়োগ করা যাবে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ জাতীয় সংসদে পাস হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল ২০১৮। বহুল আলোচিত বিলে অক্টোবর ২০১৮ স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর হয়। আইনে ডিজিটাল মাধ্যমে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক তথ্য উপাত্ত প্রকাশ; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ; ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তি তথ্য সংগ্রহ ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে অপরাধে জেল জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিভিন্ন পক্ষের আপত্তি, উদ্বেগ মতামত উপেক্ষা করে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ-

·        বাংলাদেশ বা বিশ্বের যে কোনো দেশে বসে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যদি আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনে বিচার করা যাবে।

·        ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। অভিযাগে গঠনের ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে এর মধ্যে করা সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ ৯০ কার্যদিবস পর্যন্ত তা বাড়ানো যাবে।

·        ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ শান্তি সংক্রান্ত প্রায় ২০টি ধারার মধ্যে ১৪টি জামিন অযোগ্য, ৫টি জামিন যোগ্য একটি সমঝোতা সাপেক্ষ।

·        ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ন্যূনতম শাস্তির মেয়াদ এক বছর কারাদন্ড সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাস্তির মেয়াদ - বছর কারাদন্ড।

বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০টি মন্ত্রণালয় বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৪৩টি এবং বিভাগ ২৭টি। ৪৩টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তিনটি মন্ত্রণালয় ভেঙ্গে গঠিত হচ্ছে নতুন করে ৭টি বিভাগ। প্রতিটি বিভাগে দায়িত্ব পালন করবেন একজন করে সচিব।

·        বাংলাদেশের মোট মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা৪৩টি (রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ)

·        বাংলাদেশের সর্বশেষ মন্ত্রণালয়( ডিসেম্বর, ২০১১ গঠিত হয়)
) রেলপথ মন্ত্রণালয়
) তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়

·        দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রণালয়বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

·        অধিদপ্তরের প্রধানমহাপরিচালক

·        খাদ্য অধিদপ্তরখাদ্য দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন

·        বাংলাদেশ পুলিশস্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন

·        বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রীদের দপ্তর বন্টন করেন প্রধানমন্ত্রী।

·        জেলা প্রশাসক পদমর্যাদাযুগ্মসচিব সমতুল্য

·        মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী

·        প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রধানমুখ্য সচিব

·        মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক প্রধান : সচিব বা জ্যেষ্ঠ সচিব

·        রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের প্রধানমুখ্য সচিব

·        মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোর সর্বনিম্নে আছেনসহকারী সচিব

মন্ত্রণালয়ের বর্তমান নাম

মন্ত্রণালয়ের পূর্বনাম

গঠিত হয়েছিল

তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়

তথ্য মন্ত্রণালয়

পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়

পরিবেশ বন মন্ত্রণালয়

২০ জুন, ২০১৮

মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

মৎস্য পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

২৩ অক্টোবর, ২০০১

প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

জানুয়ারি, ২০০৩

প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়

২০ ডিসেম্বর, ২০০১

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

১৫ জুলাই, ১৯৯৮

মহিলা শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়

১৯৯৪ সালে

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়

১৯৭২ সালে শ্রম সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নামে গঠিত হয় এবং ১৯৮৯ সালে একক মন্ত্রণালয় হিসেবে গঠন করা হয়।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরিচিতি

 

মন্ত্রণালয়ের নাম

গঠিত হয়েছিল

পুনর্গঠন হয়

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এপ্রিল ১৯৭১

(১৯ জানুয়ারি ২০১৭)
. জননিরাপত্তা বিভাগ (Public Security Division)
. সুরক্ষা সেবা বিভাগ (Security Services Division)

শিক্ষা মন্ত্রণালয়

১৯৭২ সালে

৩০ নভেম্বর ২০১৬
. মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
. কারিগরি মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ

স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়

-

(১৬ মার্চ ২০১৭)
. স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ (Health Services Division)
. স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিবার কল্যাণ বিভাগ (Medical Education and Family Welfare Division)

বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়

১৯৮৬ সালে

. একটি বিমানের সাথে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো পরিচালনা করবে।
. আর অন্য বিভাগটি পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কাজ করবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়

-

. স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং
. পল্লী উন্নয়ন সমবায় বিভাগ। কাজের পরিধি বাড়ায় এখন স্থানীয় সরকার বিভাগকেও আবার দুই ভাগ করা হচ্ছে- একটি বিভাগ করা হবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি করার জন্য। আর অন্য বিভাগটি এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর পরিচালনায় থাকবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়

বিভাগ ৪টি।
. অর্থ বিভাগ
. অভ্যন্তরীণ সম্পদ
. অর্থনৈতিক সম্পর্ক
. আর্থিক প্রতিষ্ঠান

মন্ত্রণালয়ের পুনর্গঠন

বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার

গণঅভ্যুত্থানে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর স্বৈরাচারী সরকার লে. জেনারেল হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান। সাংবিধানিকভাবে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয় ৩০ মার্চ, ১৯৯৬। সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। ১১//২০০৭ সামরিক সমর্থনপুষ্ট . ফকরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নীরব সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে যা 'ওয়ান ইলেভেন' নামে পরিচিত। ৩০ জুন ২০১১ (রাষ্ট্রপতি অনুমোদন জুলাই'১১) পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটি বিলুপ্ত করা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাদের তালিকা :

·        বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ (০৬.১২.৯০-০৯.১০.৯১ )

·        বিচারপতি হাবিবুর রহমান (৩০.০৩.৯৬-২৩.০৬.৯৬)

·        বিচারপতি লতিফুর রহমান (১৫.০৭.০১-১০.১০.০১)

·        . ইয়াজউদ্দিন আহমদ (২৯.১০.০৬-১১.০১.০৭ )

·        . ফকরুদ্দিন আহমদ (১১.০১.০৭-০৬.০১.০৯)

বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন

·        জনগণের প্রত্যক্ষ/সরাসরি ভোটে প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন জুন, ১৯৭৮

·        প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এপ্রিল, ১৯৭৩

·        প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এপ্রিল, ১৯৭৩

·        প্রথম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ৩০ জানুয়ারী, ১৯৯৪

·        প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১৬-২০মে, ১৯৮৫

·        প্রথম পৌরসভা নির্বাচন ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৭৩

·        প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ১১-৩০ডিসেম্বর, ১৯৭৩

বাংলাদেশের গণভোট :

·        প্রথম গণভোট : ৩০ মে, ১৯৭৭ প্রশাসনিক লক্ষ্য প্রেসিডেন্ট জিয়ার নিজ শাসন বৈধকরণ

·        দ্বিতীয় গণভোট : মার্চ, ১৯৮৫ প্রশাসনিক জেনারেল এরশাদের সমর্থন যাচাই

·        তৃতীয় গণভোট : ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯১ সাংবিধানিক সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর আইন প্রস্তাব

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিগণের তালিকা

নাম

পদ গ্রহণ

পদ পরিত্যাগ

মেয়াদকাল

শেখ মুজিবুর রহমান

১৭ এপ্রিল ১৯৭১

১২ জানুয়ারি ১৯৭২

২৭০ দিন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত)

১৭ এপ্রিল ১৯৭১

১২ জানুয়ারি ১৯৭২

২৭০ দিন

আবু সাঈদ চৌধুরী

১২ জানুয়ারি ১৯৭২

২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩

বছর, ৩৪৬ দিন

মোহাম্মদউল্লাহ

২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩

২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪

বছর, ৩২ দিন

২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪

২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫

শেখ মুজিবুর রহমান

২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫

১৫ আগস্ট ১৯৭৫

২০২ দিন

খন্দকার মোশতাক আহমেদ

১৫ আগস্ট ১৯৭৫

নভেম্বর ১৯৭৫

৮৩ দিন

আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম

নভেম্বর ১৯৭৫

২১ এপ্রিল ১৯৭৭

বছর, ১৬৬ দিন

জিয়াউর রহমান

২১ এপ্রিল ১৯৭৭

৩০ মে ১৯৮১

বছর, ৩৯ দিন

আবদুস সাত্তার

৩০ মে ১৯৮১

২০ নভেম্বর ১৯৮১

২৯৮ দিন

২০ নভেম্বর ১৯৮১

২৪ মার্চ ১৯৮২

আহসানউদ্দিন চৌধুরী

২৭ মার্চ ১৯৮২

১০ ডিসেম্বর ১৯৮৩

বছর, ২৫৮ দিন

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ

১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩

ডিসেম্বর ১৯৯০

বছর, ৩৬০ দিন

শাহাবুদ্দিন আহমেদ

ডিসেম্বর ১৯৯০

১০ অক্টোবর ১৯৯১

৩০৮ দিন

আবদুর রহমান বিশ্বাস

১০ অক্টোবর ১৯৯১

অক্টোবর ১৯৯৬

বছর, ৩৬৫ দিন

শাহাবুদ্দিন আহমেদ

অক্টোবর ১৯৯৬

১৪ নভেম্বর ২০০১

বছর, ৩৬ দিন

একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী

১৪ নভেম্বর ২০০১

২১ জুন ২০০২

২১৯ দিন

জমির উদ্দিন সরকার

২১ জুন ২০০২

সেপ্টেম্বর ২০০২

৭৭ দিন

ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ

সেপ্টেম্বর ২০০২

১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

বছর, ১৫৯ দিন

জিল্লুর রহমান

১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

২০ মার্চ ২০১৩

বছর, ৩৬ দিন

আবদুল হামিদ (২১তম)

২৪ এপ্রিল ২০১৩

২৪ এপ্রিল ২০১৮

১০ বছর, ৪১ দিন

২৪ এপ্রিল ২০১৩

২৪ এপ্রিল ২০১৮

২৪ এপ্রিল ২০১৮

২৪ এপ্রিল ২০২৩

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন (২২তম)

২৪ এপ্রিল ২০২৩

বর্তমান

-

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীগণের তালিকা

নাম

দায়িত্ব গ্রহণ

দায়িত্ব হস্তান্তর

তাজউদ্দীন আহমেদ

১১ এপ্রিল ১৯৭১

১২ জানুয়ারি ১৯৭২

শেখ মুজিবুর রহমান

১২ জানুয়ারি ১৯৭২

২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫

মোঃ মনসুর আলী

২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫

১৫ আগস্ট ১৯৭৫

শাহ আজিজুর রহমান

১৫ এপ্রিল ১৯৭৯

২৪ মার্চ ১৯৮২

আতাউর রহমান খান

৩০ মার্চ ১৯৮৪

জুলাই ১৯৮৬

মিজানুর রহমান চৌধুরী

জুলাই ১৯৮৬

২৭ মার্চ ১৯৮৮

মওদুদ আহমেদ

২৭ মার্চ ১৯৮৮

১২ আগস্ট ১৯৮৯

কাজী জাফর আহমেদ

১২ আগস্ট ১৯৮৯

ডিসেম্বর ১৯৯০

খালেদা জিয়া

২০ মার্চ ১৯৯১

৩০ মার্চ ১৯৯৬

শেখ হাসিনা

২৩ জুন ১৯৯৬

১৫ জুলাই ২০০১

খালেদা জিয়া

১০ অক্টোবর ২০০১

২৯ অক্টোবর ২০০৬

শেখ হাসিনা

জানুয়ারি ২০০৯

বর্তমান

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীগণের তালিকা

বাংলাদেশের স্পিকারগণ :

·        গণপরিষদের প্রথম স্পীকারশাহ আব্দুল হামিদ

·        জাতীয় সংসদের প্রথম স্পীকারমোহাম্মদ উল্ল্যাহ

·        জাতীয় সংসদের স্পিকার পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হনমোহাম্মদ উল্ল্যাহ

·        জাতীয় সংসদের স্পিকার দায়িত্ব পালনকালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হনআব্দুর রহমান বিশ্বাস

·        জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব মৃত্যুবরণ করেনহুমায়ুন রশীদ চৌধুরী

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের বর্তমান পুরাতন নাম

বর্তমান নাম

পুরাতন নাম

বাংলাদেশ

পূর্ব পাকিস্তান

মহাস্থানগড়

পুণ্ড্রবর্ধন

ময়নামতি

রোহিতগিরি

সোনারগাঁও

সুবর্ণ গ্রাম

মুজিবনগর

বৈদ্যনাথ তলা

প্রধানমন্ত্রী ভবন

গণভবন (করতোয়া)

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

পুরাতন সংসদ ভবন

সুপ্রীম কোর্ট ভবন

গভর্নরের বাসভবন

বঙ্গভবন

গভর্নর হাউজ

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন-মেঘনা

হানিফ আদমজীর বাসভবন

জিরো পয়েন্ট

নূর হোসেন স্কোয়ার

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রমনা হাউজ

সিরডাপ কার্যালয়

চামেলি হাউজ

রাজউক

ডি. আই. টি

শেরে বাংলা নগর

আইয়ুব নগর

আসাদ গেইট

আইয়ুব গেইট

বাহাদুর শাহ পার্ক

ভিক্টোরিয়া পার্ক

লালবাগ দুর্গ

আওরঙ্গবাদ কেল্লা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

পি.জি হাসপাতাল

নাটক সরণি

বেইল রোড

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন-পদ্মা

গুল মোহাম্মদ আসমজীর বাসভবন

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের বর্তমান পুরাতন নাম

 

-

বর্তমান নাম

আদি-প্রাচীন-পূর্বনাম

বরিশাল বিভাগ

ভোলা

শাহবাজপুর

বরিশাল

চন্দ্রদ্বীপ, বাঙাল, বাংলাবাদ, বাকলা ইসমাইলপুর।

পিরোজপুর

ফিরোজপুর

চট্টগ্রাম বিভাগ

নোয়াখালী

কলিন্দা, ভুলুয়া সুধারাম

চট্টগ্রাম

চাতগাঁও, চৈত্যগ্রাম, চট্টল, চট্টলা, শ্যাগাঙ্গ, চিৎ- তৌৎ-গৌং, চাটিগ্রাম, চাটিগাঁ, চতকাও, চার্টিগান, সপ্তগ্রাম, শ্রীচট্টল, চিতাগঞ্জ ইসলামাবাদ

কুমিল্লা

ত্রিপুরা, কমলাঙ্ক

ফেনী

শমসের নগর

কক্সবাজার

প্যানোয়া, পালংকি বাকুলিয়া

খাগড়াছড়ি

তারক রামগড়

রাঙামাটি

কার্পাস মহাল

বান্দরবান

বোমাং থং

ঢাকা বিভাগ

ঢাকা

ঢাক্কা, ডবাকই জাহাঙ্গীরনগর

মাদারীপুর

ইদিলপুর

মুন্সিগঞ্জ

ইদ্রাকপুর বিক্রমপুর

কিশোরগঞ্জ

কাটখালী

গাজীপুর

জয়দেবপুর

শরীয়তপুর

পালং

ফরিদপুর

ফাতেহাবাদ

খুলনা বিভাগ

সাতক্ষীরা

সাতঘরিয়া বুড়ন দ্বীপ

বাগেরহাট

খলিফাবাদ

যশোর

খলিফাতাবাদ

কুষ্টিয়া

নদীয়া কাকদ্বীপ

খুলনা

জাহানাবাদ

ময়মনসিংহ বিভাগ

ময়মনসিংহ

মোমেনশাহী, নসরতশাহী নাসিরাবাদ

জামালপুর

সিংহজানী

নেত্রকোণা

নাটেরকোণা

শেরপুর

দশকাহনিয়া

রাজশাহী বিভাগ

রাজশাহী

মহাস্থানগড়, রামপুর বোয়ালিয়া

চাপাইনবাবগঞ্জ

নবাবগঞ্জ

বগুড়া

বরেন্দ্রভূমি পুণ্ড্রবর্ধন

সিলেট বিভাগ

সিলেট

শ্রীহট্ট, জালালাবাদ

সুনামগঞ্জ

ষোলশহর

রংপুর বিভাগ

গাইবান্ধা

ভবানীগঞ্জ

রংপুর

রঙ্গপুর জঙ্গপুর

দিনাজপুর

গন্ডোয়ানাল্যান্ড

রাজবাড়ী

গোয়ালন্দ

ঠাকুরগাঁও

নিশ্চিন্তপুর

বর্তমান জেলাসমূহের আদি-প্রাচীন-পূর্বনাম

 

জেলা

ইংরেজি নাম

পূর্ব

বর্তমান

চট্টগ্রাম

Chittagong

Chattogram

বগুড়া

Bogra

Bogura

বরিশাল

Barisal

Barishal

কুমিল্লা

Comilla

Cumilla

যশোর

Jessore

Jashore

পাঁচ জেলার নতুন ইংরেজি বানান

জেলা-শহরের নাম-বানান পরিবর্তন এর সময়কাল :

·        কুমিল্লা১৯৬০ সালে ত্রিপুরা জেলার নামকরণ করা হয় কুমিল্লা।

·        Dhaka :  অক্টোবর ১৯৮২ রাজধানী ঢাকার ইংরেজি বানান Dacca পরিবর্তন করে করা হয় Dhaka

·        চাপাইনবাবগঞ্জ আগস্ট ২০০১ নবাবগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় চাপাইনবাবগঞ্জ।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক উপনাম

নাম

উপনাম

বাংলাদেশ

নদীমাতৃক দেশ

বাংলাদেশ

ভাটির দেশ

বাংলাদেশ

সোনালী আঁশের দেশ

ঢাকা

মসজিদের শহর

ঢাকা

রিক্সার নগরী

সিলেট

৩৬০ আউলিয়ার দেশ

চট্টগ্রাম

বারো আউলিয়ার দেশ

চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী

ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী

চট্টগ্রাম বন্দর

বাংলাদেশের প্রবেশ দ্বার

বগুড়া

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার

চাকতাই খাল

চট্টগ্রামের দুঃখ

টেকেরঘাট, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ

বাংলাদেশের সুইজারল্যান্ড

ডাকাতিয়া বিল

পশ্চিমাবাহিনীর নদী

বরিশাল

বাংলার শস্য ভান্ডার

বরিশাল

বাংলার ভেনিস

পঞ্চগড়

হিমালয়ের কন্যা

কুয়াকাটা, পটুয়াখালি

সাগর কন্যা

ভোলা

সাগর দ্বীপ

গোমতী

কুমিল্লার দুঃখ

কক্সবাজার

বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী

সেন্টমার্টিন

নারকেল জিঞ্জিরা

নারায়ণগঞ্জ

প্রাচ্যের ডান্ডি

খুলনা অঞ্চল (চিংড়ি চাষের জন্য)

বাংলাদেশের 'কুয়েত সিটি'

ভবদহ বিল

যশোরের দুঃখ

যশোর

ডিজিটাল জেলা

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের ভৌগোলিক উপনাম