অদ্বৈত মল্লবর্মণ,সুফিয়া কামাল,বিষ্ণু দে,মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় LEC 11

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি (BCS) Preliminary Preparation 200 Marks বাংলা সাহিত্য

 

এই পর্বে যা যা থাকছে

অদ্বৈত মল্লবর্মণ

সুফিয়া কামাল

বিষ্ণু দে

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

 

অদ্বৈত মল্লবর্মণ

অদ্বৈত মল্লবর্মণ (১৯১৪-১৯৫১)

মালো বংশের সন্তান অদ্বৈত মল্লবর্মণ ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সাংবাদিক। ব্যক্তিগত জীবনের প্রগাঢ় অভিজ্ঞতা, সুগভীর অন্তদৃষ্টি প্রভাববলে সমাজের নিচু শ্রেণির মানুষের চালচিত্র সার্থকভাবে উপস্থাপন করেছেন তাঁর রচিত সাহিত্যকর্মে। তিনি শৈশবে পিতৃ-মাতৃহীন হন এবং গ্রামের মালোদের চাঁদার টাকায় পড়ালেখা করেন।

অদ্বৈত মল্লবর্মণের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান

সাহিত্যিক তথ্য

জন্ম

অদ্বৈত মল্লবর্মণ জানুয়ারি, ১৯১৪ সালে গোকর্ণ গ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দরিদ্র ধীবর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন

সম্পাদনা

তিনি মাসিক ত্রিপুরা' পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৩৬ সালে নরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রতিষ্ঠিত এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের সম্পাদনায় প্রকাশিতনবশক্তি' পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালেসাপ্তাহিক দেশ' পত্রিকায় সম্পাদকের সহকারী হিসেবে যোগ দেন এবং আমৃত্যু পদে বহাল ছিলেন। সহকারী সম্পাদক: নবযুগ, কৃষক, যুগান্তর, মাসিক মোহাম্মদী।

জীবদ্দশায় প্রকাশনা

তাঁর জীবদ্দশায়দলবেঁধে’, ‘ভারতের চিঠি : পার্ল বাককে, ‘এক পয়সার একটি' (১৯৪৪) প্রকাশিত হয়।

উপন্যাস

তাঁর রচিত উপন্যাসগুলো:

তিতাস একটি নদীর নাম(১৯৫৬): এটি ১৯৪৫ সালে প্রথমেমাসিক মোহাম্মদী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কয়েকটি অধ্যায় মুদ্রিত হওয়ার পর গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি হারিয়ে যায়। পরে বন্ধুবান্ধব পাঠকদের আগ্রহের কারণে পুনরায় কাহিনিটি লেখেন। লেখকের মৃত্যুর পর ১৯৫৬ সালে এটি খণ্ডে গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত তিতাস নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের দরিদ্র, শ্রমজীবীমালোসম্প্রদায়ের আশা-নিরাশা, আনন্দ-বেদনা, শ্রম-বিশ্রাম, সংকীর্ণতা ঔদার্যকে লেখক উপন্যাসে শিল্পরূপ দিয়েছেন। জীবিকার জন্য তারা দিনরাত পরিশ্রম করলেও প্রাচুর্যের আলো কখনোই তাদের জীবনে প্রবেশ করে না। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র রক্তমাংসময় কোনো ব্যক্তি নয়, তিতাস নদী। কিশোর, কিশোরের স্ত্রী, সুবল, বাসন্তী প্রভৃতি চরিত্রগুলো তিতাসকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। ১৯৬৩ সালে উৎপল দত্ত উপন্যাসটির নাট্যরূপ দেন। ঋত্বিক ঘটক ১৯৭৩ সালে উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

সাদা হাওয়া’ (১৯৯৬),
রাঙ্গামাটি’ (১৯৯৭),
জীবনতৃষা’ (অনূদিত),
নয়াবসত’ 

মৃত্যু

তিনি মাত্র ৩৭ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৬ এপ্রিল, ১৯৫১ সালে কলকাতার নারকেলডাঙ্গার ষষ্ঠীপাড় নিজ বাড়িতে মারা যান।

 

সুফিয়া কামাল

 

সুফিয়া কামাল (১৯১১-১৯৯৯)

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি, লেখিকা, সমাজসেবক, নারীবাদী নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ সুফিয়া কামাল। তাঁর কবিতার বিষয় প্রেম, প্রকৃতি, ব্যক্তিগত অনুভূতি, বেদনাময় স্মৃতি, জাতীয় উৎসবাদি, স্বদেশানুরাগ, ধর্মানুভূতি এবং মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষা বাঙালি সংস্কৃতির ওপর দমননীতির অংশ হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান

সুফিয়া কামালের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান

সাহিত্যিক তথ্য

জন্ম

সুফিয়া কামাল ২০ জুন, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বরিশালের শায়েস্তাবাদের রাহাত মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস- কুমিল্লা

প্রতিষ্ঠাতা

তিনি মহিলা পরিষদ(১৯৭০) এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বর্তমানে এর নাম বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তিনি শিশুদের সংগঠনকচিকাঁচার মেলা' (১৯৫৬) প্রতিষ্ঠা করেন।

সম্পাদনা

তিনি বেগম’ (১৯৪৭) পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন।

উপাধি

বাংলাদেশের প্রথম আধুনিক মহিলা কবি সুফিয়া কামাল। তিনি জননী সাহসিকানামে পরিচিত।

বিশেষত্ব

তিনি ছিলেন রবীন্দ্র কাব্যধারার গীতিকবিতা রচয়িতা।

পুরস্কার সম্মাননা

তিনিবাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৬২), ‘একুশে পদক' (১৯৭৬), ‘বেগম রোকেয়া পদক' (১৯৯২), ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ (১৯৯৭) পান

হলের নামকরণ

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম ছাত্রী হলের নামকরণ করা হয়েছে তাঁর নামেবেগম সুফিয়া কামাল হল'
সুফিয়া কামাল ১৯১৮ সালে কলকাতায় রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েররোকেয়া হল' এর নামকরণ করা হয়।

বিবাহ

মাত্র বার বছর বয়সে মামাতো ভাই সৈয়দ নেহাল হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। তখন নাম হয় সুফিয়া এন হোসেন ১৯৩২ সালে নেহাল হোসেন যক্ষ্মা রোগে মারা গেলে ১৯৩৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের লেখক কামালউদ্দিন আহমদকে বিয়ে করেন। তখন থেকে সুফিয়া কামাল নাম ব্যবহার করেন। এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল তাঁর মেয়ে

প্রথম সাহিত্যকর্ম

সুফিয়া কামাল রচিত প্রথম সাহিত্যকর্মের নাম:

সৈনিক বধূ(১৯২৩): এটি তাঁর প্রথম গল্প যা বরিশালেরতরুণ' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়
বাসন্তী' (১৯২৬): এটি তাঁর প্রথম কবিতা যাসওগাতপত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

কাব্যগ্রন্থ

তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো:

সাঁঝের মায়া’ (১৯৩৮): এটি তাঁর রচিত প্রথম কাব্য। এর মুখবন্ধ লিখে দেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯৮৪ সালে এটি রুশ ভাষায় সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে প্রকাশিত হয়

মোর জাদুদের সমাধি পরে(১৯৭২) : কাব্যের কবিতাগুলো মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে লেখা

মায়া কাজল’ (১৯৫১),
মন জীবন(১৯৫৭),
শান্তি প্রার্থনা(১৯৫৮),
উদাত্ত পৃথিবী(১৯৬৪),
দিওয়ান’ (১৯৬৬),
 
অভিযাত্রিক ' (১৯৬৯),
মৃত্তিকার ঘ্রাণ(১৯৭০)

অন্যান্য রচনাবলি

তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য রচনাবলি:

গল্পকেয়ার কাঁটা’ (১৯৩৭)

শিশুতোষ গ্রন্থইতল বিতল’ (১৯৬৫), ‘নওল কিশোরের দরবারে' (১৯৮২)

ভ্রমণকাহিনিসোভিয়েতের দিনগুলো' (১৯৬৮)

আত্মজীবনীএকালে আমাদের কাল' (১৯৮৮)

স্মৃতিকথাএকাত্তরের ডায়েরি' (১৯৮৯)

কবিতা: 'তাহারেই পড়ে মনে' (সাঁঝের মায়া), ‘রূপসী বাংলা’ (সাঁঝের মায়া)

মৃত্যু

তিনি ২০ নভেম্বর, ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম নারী যাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।

 

বিষ্ণু দে

 

বিষ্ণু দে (১৯০৯-১৯৮২)

প্রখ্যাত কবি, প্রাবন্ধিক চিত্রসমালোচক বিষ্ণু দে ছিলেন কল্লোল সাহিত্য গোষ্ঠীর অন্যতম লেখক। তিনি প্রাচ্য পাশ্চাত্য মিথের সাথে মার্কসীয় তত্ত্বকে সাহিত্যে উপস্থাপন করেছেন বলে তাকে মার্কসিস্ট' কবি বলা হয়। তিরিশের কাব্যধারায় বিষ্ণুদের মধ্যেই প্রথম রাবিন্দ্রিক কাব্যবলয় অতিক্রমের সার্থক প্রয়াস লক্ষ করা যায়। তিনি মার্কসীয় তত্ত্বকে জীবনাবেগ শিল্পসম্মত করে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেন।

বিষ্ণু দের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান

সাহিত্যিক তথ্য

জন্ম

বিষ্ণু দে ১৮ জুলাই, ১৯০৯ সালে কলকাতার পটলডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন।

সম্পাদনা

তিনি সুধীন্দ্রনাথ দত্তের পরিচয়’ (১৯৩১) পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন। তিনি চঞ্চলকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় সাহিত্যপত্র’ (১৯৪৮) নামে পত্রিকা প্রকাশ করেন। এছাড়াও নিরুক্তানামেও একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন।

পুরস্কার' সম্মাননা

তিনিসাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার' (১৯৫৫) এবংস্মৃতিসত্তা ভবিষ্যৎ' কাব্যগ্রন্থের জন্যজ্ঞানপীঠ’ (১৯৭২) পুরস্কার পান।

কাব্যগ্রন্থ

বিষ্ণু দে' কাব্যগ্রন্থগুলো:

উর্বশী আর্টেমিস(১৯৩৩): সনাতন রোমান্টিকতার বিরোধী বিষ্ণু দে' প্রথম কাব্যগ্রন্থ এটি। তিনি ঐতিহ্য সচেতন ছিলেন বলে দেশি বিদেশি মিথের প্রয়োগের মাধ্যমে আর্টেমিসের চিত্রকল্পের সাথে উর্বশীর চিত্রকল্পের পাশাপাশি স্থান দিয়েছেন।

 
চোরাবালি ’ (১৯৩৭),
সাতভাই চম্পা(১৯৪৪),
সন্দ্বীপের চর(১৯৪৭),
নাম রেখেছি কোমল গান্ধার(১৯৫০),
তুমি শুধু পঁচিশে বৈশাখ(১৯৫৮),
স্মৃতিসত্তা ভবিষ্যৎ(১৯৬৩),
সেই অন্ধকার চাই(১৯৬৭),
রবিকরোজ্জ্বল নিজদেশে” (১৯৭৩),
দিবানিশি” (১৯৭৬),
চিত্ররূপমত্ত পৃথিবীর’ (১৯৭৬),
উত্তরে থাকো মৌন’ (১৯৭৭),
আমার হৃদয়ে বাঁচো(১৯৮২)

অন্যান্য সাহিত্যকর্ম

বিষ্ণু দে' অন্যান্য সাহিত্যকর্ম:

প্রবন্ধ:

রুচি প্রগতি' (১৯৪৬),
সাহিত্যের ভবিষ্যৎ (১৯৫২),
এলোমেলো জীবন শিল্প সাহিত্য' (১৯৬৮),
সাধারণের রুচি’ (১৯৭৫)

অনুবাদএলিয়টের কবিতা' (১৯৫০)

স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থএই জীবন

মৃত্যু

তিনি ডিসেম্বর, ১৯৮২ সালে মৃত্যুবরণ করেন

 

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

 

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮-১৯৫৬)

তিরিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি অবিস্মরণীয় নাম। তাঁর গল্প উপন্যাসগুলোতে স্বতন্ত্র স্বকীয় বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল। বিজ্ঞানমনস্ক লেখক মানুষের মনোজগৎ তথা অন্তর্জীবনের রূপকার হিসেবে সার্থকতা দেখিয়েছেন। শরৎচন্দ্র কল্লোল গোষ্ঠীর লেখকদের পর বাংলা সাহিত্যে বস্তুতান্ত্রিকতা মনোবিশ্লেষণে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় অগ্রগণ্য।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান

সাহিত্যিক তথ্য

জন্ম

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯ মে, ১৯০৮ সালে বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস- মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের মালবদিয়া গ্রাম

প্রকৃত নাম

তাঁর পিতৃপ্রদত্ত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক নাম মানিক। জন্মপঞ্জিকায় নাম অধরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

সাহিত্যিক আদর্শ

তিনি প্রথমদিকে ফ্রয়েডীয়, পরবর্তীতে মার্কসিজম মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। মার্কসবাদী ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

রাজনীতি

তিনি ১৯৪৪ সালে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করে সদস্যপদ লাভ করেন।

সম্পাদনা

তিনি ' নাবারুণ' পত্রিকার সম্পাদক 'বঙ্গশ্রী' পত্রিকার সহসম্পাদক ছিলেন।

পেশা

লেখালেখিই ছিল তার প্রধান পেশা নেশা। জন্য তাকে 'কলম পেশা মজুরবলা হয়।

প্রথম গল্প

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত প্রথম প্রকাশিত গল্প অতসী মামী’ (বাংলা-১৩৩৫): এটি ডিসেম্বর, ১৯২৮ এবং জানুয়ারি, ১৯২৯ সালে পৌষ সংখ্যা 'বিচিত্রা' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গল্পেই তিনি মানিক নামটি প্রথম ব্যবহার করেছেন। ফলে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাউনিতে প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নামটি ঢাকা পড়ে যায়।

উপন্যাস

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসসমূহ:

 
জননী ' (১৯৩৫): এটি তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস। এটি নারীর জননী-জীবনের নানা স্তর এবং সন্তানের সঙ্গে জননীর সম্পর্কের সূক্ষ্ম মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণমূলক উপন্যাস। চরিত্র: শ্যামা।

পদ্মানদীর মাঝি(১৯৩৬): জেলেদের দৈনন্দিন জীবনের চালচিত্র এর উপজীব্য। চরিত্র: কুবের, কপিলা, মালা, হোসেন মিয়া। উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের চিত্রনাট্যে ১৯৫৮ সালে .জে কারদার পরিচালিত উর্দু ছবিজাগো হুয়া সাবেরা' নামে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এটি নিয়ে গৌতম ঘোষ ১৯৯২ সালে 'পদ্মা নদীর মাঝি' নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন

পুতুলনাচের ইতিকথা(১৯৩৬): কলকাতার এক সাধারণ গ্রাম গাওদিয়া আর তার সাধারণ মানুষ নিয়ে উপন্যাসের পটভূমি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্তের অন্তর্গত টানাপোড়েন অস্তিত্ব সংকট শশী চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত। লোকায়ত ভাষায় প্রেম নিবেদন করে কুসুম, কিন্তু শশীর কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ায় তার আত্মিক মৃত্যু ঘটে। উপন্যাসে বিভিন্ন চরিত্র ক্রিয়াশীল থাকলেও তারা চারিত্রিক দৃঢ়তা নিয়ে দাঁড়াতে পারেনি, পুতুলের মতো অন্যের অল্প ধাক্কাতেই চালিত হয়েছে। এটি মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণমূলক উপন্যাস। চরিত্র: শশী, কুসুম।

'
অমৃতস্য পুত্রা(১৯৩৮): এটি পারিবারিক দাম্পত্য সমস্যামূলক উপন্যাস।

 
শহরতলী ' (১৯৪০): নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রমিকশ্রেণির মানুষের জীবনের কাহিনি সেইসাথে প্রবৃত্তির নিরাবরণ প্রকাশ, মানুষের আচরণের বলিষ্ঠতা কপটতা, ঈর্ষার রূপায়ণ উপন্যাসের মূল সুর।

 
অহিংসা ' (১৯৪১): মানুষ যে অজ্ঞাতসারে অনেক অহিংস কাজ করে অথবা হিংসার সাথে অহিংসা যে মানুষের মধ্যে জড়িত থাকতে পারে, এটি নিয়েই উপন্যাসের কাহিনি বিস্তৃত

 
আরোগ্য' (১৯৫৩) : 'সামাজিক কারনেই মানুষ মানসিক 'ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়' তত্ত্বকে ধারণ করেই তিনি রচনা করেন উপন্যাসটি।

দিবারাত্রির কাব্য(১৯৩৫),
'
শহরবাসের ইতিকথা(১৯৪৬),
' 
চিহ্ন ' (১৯৪৭),
' 
চতুষ্কোণ' (১৯৪৮),
 
জীয়ন্ত’ (১৯৫০),
সোনার চেয়ে দামী(১৯৫১),
স্বাধীনতার স্বাদ’ (১৯৫১),
ইতিকথার পরের কথা(১৯৫২),
আরোগ্য (১৯৫৩)
'
হরফ ' (১৯৫৪),
'
হলুদ নদী সবুজ বন' (১৯৫৬),
মাশুল' (১৯৫৬)

গল্পগ্রন্থ

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত গল্পগ্রন্থসমূহ:

অতসী মামী অন্যান্য গল্প' (বাংলা-১৩৩৫),
প্রাগৈতিহাসিক ’ (১৯৩৭),
মিহি মোটা কাহিনী(১৯৩৮),
 
সরীসৃপ ’ (১৯৩৯),
সমুদ্রের স্বাদ(১৯৪৩),
 
বৌ ’ (১৯৪৩),
 
ভেজাল ' (১৯৪৪),
হলুদ পোড়া’ (১৯৪৫),
আজকাল পরশুর গল্প(১৯৪৬),
ছোট বকুলপুরের যাত্রী(১৯৪৯),
 
ফেরিওয়ালা' (১৯৫৩)

অন্যান্য রচনাবলি

মানিকের অন্যান্য রচনাবলি:

গল্পপ্রাগৈতিহাসিক’(চরিত্র: ভিখু,পাঁচি), ‘আত্মহত্যার অধিকার'
প্রবন্ধলেখকের কথা' (১৯৫৭)
নাটকভিটেমাটি' (১৯৪৬)

মৃত্যু

তিনি ডিসেম্বর, ১৯৫৬ সালে মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।