শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব ( Morphology),পদ

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা ২য় প্ত্র

শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব ( Morphology)

 

বাংলা ব্যাকরণের শব্দ বা পদের আলোচনাকে শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব বলে। এক বা একাধিক ধ্বনির অর্থবোধক সম্মিলনে শব্দ তৈরি হয়, শব্দের ক্ষুদ্রাংশকে বলা হয় রূপ। রূপ গঠন করে শব্দ। তাই শব্দতত্ত্বকে রূপতত্ত্ব বলা হয়। শব্দ, শব্দের শ্রেণিবিভাগ, পুরুষ স্ত্রীবাচক শব্দ, দ্বিরুক্ত শব্দ, বচন, পুরুষ বা পক্ষ, প্রত্যয়, উপসর্গ, অনুসর্গ, পদ পদের প্রকারভেদ, সমাস, কারক ইত্যাদি শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।

 

পদ এর সজ্ঞা:- বাক্যের মধ্যে ব্যাবহৃত প্রত্যেকটা শব্দকে পদ বলে। বালকেরা বল খেলছে। উপরের বাক্যে দেখা যায় যে, বালক শব্দের সাথে রা এবং খেল ধাতু বা ক্রিয়ামূলের সাথে ছে যুক্ত হয়েছে। শব্দের সাথে যুক্ত রা ছে এই অতিরিক্ত চিণ্হ গুলোর নাম বিভক্তি। বল শব্দের সাথে ব্যাবহৃত কোন চিণহ না থাকলেও 0 শূন্য বা প্রথমা বিভক্তি যুক্ত আছে বলে ধরা হয়। সুতরাং বিভক্তিযুক্ত শব্দ বা ধাতু মানেই পদ।পদকে দু ভাগে ভাগ করা যায়।

 

 

পদ প্রকরণ

 পদ প্রধানত দুই প্রকার নামপদ ক্রিয়াপদ। 

 

নামপদ আবার চার প্রকার যেমনবিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম অব্যয়। তাহলে পদ হল মোট পাঁচ প্রকার।

 

 # বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.কী' বিশেষণ হিসেবে কোন বাক্যে ব্যবহৃত হয়েছে ?

 

a) এই যে আসুন, তারপর কী খবর?

b) খবর কী, কেমন আছেন?

c) নিজেই চমকে উঠি, কী নিস্পৃহ, কেমন শীতল।

d) কী সহজেই বলা হয়ে গেল

 

#.বিপদের মুখে আঠারো বছর বয়স থাকে-

a) দুর্বার

b) ভয়ঙ্কর

c) অসহায়

d) অগ্রনী

 

#.চর্যাপদের আদি কবির নাম কী?

a)কাহ্নপা

b)ভুসুকুপা

c)চেণ্ডনপা

d)লুইপা

 

#.প্রত্যয় বিভক্তিহীন নামপদকে কী বলে?

a)কৃদন্ত

b)ধাতু

c)প্রাতিপদিক

d)প্রদন্ত

 

#.'চর্যাপদ' কোন ছন্দে লেখা?

a)অক্ষরবৃত্ত

b)মাত্রাবৃত্ত

c)স্বরবৃত্ত

d)অমিত্রাক্ষর ছন্দ

 

 

বলক, লগ্নক, পদাশ্রিত নির্দেশক

কয়েকটি অব্যয় বা প্রত্যয় কোনো না কোনো পদের আশ্রয়ে বা পরে সংযুক্ত হয়ে নির্দিষ্টতা জ্ঞাপন করে , এগুলোকে পদাশ্রিত অব্যয় বা পদাশ্রিত নির্দেশক বলে বচন ভেদে পদাশ্রিত নির্দেশকেও বিভিন্নতা প্রযুক্ত হয় ।যেমন-

 

একবচনেঃ টা,টি খানা খানি,গাছি ইত্যাদি নির্দেশক হয় যেমন-টাকাটা,বাড়িটা,কাপড়খানা,বইখানি ইত্যাদি।

 

বহুবচনেঃ গুলি,গুলো গুলা প্রভৃতি নির্দেশক প্রত্যয় সংযুক্ত হয়। যেমন-মানুষগুলি ,লোকগুলো ইত্যাদি

 

পদাশ্রিত নির্দেশকের ব্যবহার

 

) এক' শব্দের সঙ্গে টা টি টু যুক্ত হলে অনির্দিষ্টতা বোঝায় যেমন- একটি দেশ ,সে যেমনই হোক দেখতে ;এক যে ছিল রাজা।কিন্তু অন্য সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে টা,টি যুক্ত নির্দিষ্টতা বোঝায় ।যেমন- তিনটি বছর ,দশটি বছর ইত্যাদি

 

) নিরর্থক ভাবেও নির্দেশক টা টি এর ব্যবহার লক্ষণীয় ।যেমন- সারাটি সকাল তোমার আশায় বসে আছি

 

) নির্দেশক সর্বনামের পরে টা টি যুক্ত হলে তা সুনিরররদিষ্ট হয়ে যায় যেমন - ওটি যেন কার তৈরি ?

 

 

 

বলক-

 অনেক সময় আমরা আমাদের বক্তব্যের গুরুত্বকে বাড়ানোর জন্য - অথবা বক্তব্যকে জোরালো করার জন্য কিছু বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ (শব্দাংশ) পদের সঙ্গে যুক্ত করি এই বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছকে বলক বলে।

 

 যেমনআমি বইটি এখন পড়ব। আবার আমি বইটি এখনই পড়ব। দ্বিতীয় বাক্যেএখনই' পদের

 

 মাধ্যমে বক্তব্য জোরালো হয়েছে। তাই 'এখনই' পদের শেষাংশের '' হলো বলকের উদাহরণ।

 

 

লগ্নক

 লগ্নক - শব্দ পদে পরিণত হওয়ার পর আরও অতিরিক্ত যে বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ যুক্ত হয় তাদের লগ্নক বলে।

 

লগ্নক দুই প্রকার) সলগ্নক ) অলগ্নক

 

সলগ্নক

 বাক্যে যেসব পদে লগ্নক থাকে সেগুলোকে সলগ্নক পদ

অলগ্নক

 যেসব পদে লগ্নক থাকে না সেগুলোকে অলগ্নক পদ বলে।

 

 

নির্দেশক

কয়েকটি অব্যয় বা প্রত্যয় কোনো না কোনো পদের আশ্রয়ে বা পরে সংযুক্ত হয়ে নির্দিষ্টতা জ্ঞাপন করে, এগুলোকে পদাশ্রিত অব্যয় বা পদাশ্রিত নির্দেশক বলে। বাংলায় নির্দিষ্টতা জ্ঞাপক প্রত্যয় ইংরেজি Definite Article The'-এর স্থানীয়। বচনভেদে পদাশ্রিত নির্দেশকেরও বিভিন্নতা প্ৰযুক্ত হয়

 

পদাশ্রিত নির্দেশকের ব্যবহার

 

.() ‘একশব্দের সঙ্গে টা, টি, যুক্ত হলে অনির্দিষ্টতা বোঝায়। যেমন- একটি দেশ, সে যেমনই হোক দেখতে। কিন্তু অন্য সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে টা, টি যুক্ত হলে নির্দিষ্টতা বোঝায়। যেমন- তিনটি টাকা, দশটি বছর।

 

() নিরর্থকভাবেও নির্দেশক টা, টি- ব্যবহার লক্ষণীয়। যেমন- সারাটি সকাল তোমার আশায় বসে আছি। ন্যাকামিটা এখন রাখ

 

() নির্দেশক সর্বনামের পরে টা, টি যুক্ত হলে তা সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। যেমনওটি যেন কার তৈরি? এটা নয় ওটা আন সেইটেই ছিল আমার প্রিয় কলম

 

. ‘গোটাবচনবাচক শব্দটির আগে বসে এবং খানা, খানি পরে বসে। এগুলো নির্দেশক অনির্দেশক দুই অর্থেই প্রযোজ্য।গোটাশব্দ আগে বসে এবং সংশ্লিষ্ট পদটি নির্দিষ্টতা না বুঝিয়ে অনির্দিষ্টতা বোঝায়। যেমন- গোটা দেশই ছারখার হয়ে গেছে। গোটাদুই কমলালেবু আছে (অনির্দিষ্ট) দুখানা কম্বল চেয়েছিলাম (নির্দিষ্ট) গোটাসাতেক আম এনো। একখানা বই কিনে নিও (অনির্দিষ্ট)

 

কিন্তু কবিতায় বিশেষ অর্থেখানিনির্দিষ্টার্থে ব্যবহৃত হয়। যথা—‘আমি অভাগা এনেছি বহিয়া নয়ন জলে ব্যর্থ সাধনখানি

 

.টাক, টুক, টুকু, টো ইত্যাদি পদাশ্রিত নির্দেশক নির্দিষ্টতা অনির্দিষ্টতা উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়। যেমনপোয়াটাক দুধ দাও (অনির্দিষ্টতা) সবটুকু ওষুধই খেয়ে ফেলো (নির্দিষ্টতা)

 

.বিশেষ অর্থে, নির্দিষ্টতা জ্ঞাপনে কয়েকটি শব্দ : তা, পাটি ইত্যাদি। যেমন-

 

তা : দশ তা কাগজ দাও

 

পার্টি : আমার একপাটি জুতো ছিঁড়ে গেছে।

 

একবচনাত্মক নির্দেশক

 একবচনাত্মকটা, টি, খানা, খানি, গাছা, গাছি ইত্যাদি নির্দেশক ব্যবহৃত হয়। যেমন- টাকাটা, বাড়িটা, - কাপড়খানা, বইখানি, লাঠিগাছা, চুড়িগাছি ইত্যাদি।

 

 

বহুবচনাত্মক নির্দেশক

  গুলি, গুলা, গুলো, গুলিন প্রভৃতি নিদের্শক প্রত্যয় সংযুক্ত হয়। যেমনমানুষগুলি,লোকগুলো, আমগুলো, পটলগুলিন ইত্যাদি।

 

 

বিশেষ্য পদ

 

কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে।

 

বাক্যমধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি,বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাদের বিশেষ্য পদ বলে

 

 

নামবাচক / সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য

সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য : যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান বা সংজ্ঞা এবং গ্রন্থ বিশেষের নাম বিজ্ঞাপিত হয়, তাকে সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য বলে। যথা-

 

() ব্যক্তির নাম : নজরুল, ওমর, আনিস, মাইকেল

 

() ভৌগোলিক স্থানের : ঢাকা, দিল্লি, লন্ডন, মক্কা

 

() ভৌগোলিক সংজ্ঞা (নদী, পর্বত, সমুদ্র ইত্যাদি) মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর

 

() গ্রন্থের নাম :‘গীতাঞ্জলি’, ‘অগ্নিবীণা’, ‘দেশে বিদেশে’, ‘বিশ্বনবি

 

শ্রেণিবাচক / জাতিবাচক বিশেষ্য

জাতিবাচক বিশেষ্য : যে পদ দ্বারা কোনো একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমনমানুষ, গরু, পাখি, গাছ, পর্বত, নদী, ইংরেজ।

 

বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য

বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য : যে পদে কোনো উপাদানবাচক পদার্থের নাম বোঝায়, তাকে বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এই জাতীয় বস্তুর সংখ্যা পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। যথাবই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবণ, পানি।

 

সমষ্টিবাচক বিশেষ্য :

যে পদে বেশকিছু সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি বোঝায়, তা সমষ্টিবাচক বিশেষ্য। যথাসভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝাঁক, বহর, দল।ভাববাচক (ক্রিয়াবাচক) বিশেষ্য

ভাববাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যথাগমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দর্শন (দেখার কাজ), ভোজন (খাওয়ার কাজ), শয়ন (শোয়ার কাজ), দেখা, শোনা।

 

 

গুণবাচক বিশেষ্য

 

যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায়, তা গুণবাচক বিশেষ্য যথামধুর মিষ্টত্বের গুণমধুরতা, তরল দ্রব্যের গুণতারল্য, তিক্ত দ্রব্যের দোষ বা গুণতিক্ততা, তরুণের গুণতারুণ্য ইত্যাদি। তদ্রুপ : সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন, সুখ, দুঃখ।

 

বিশেষণ : যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে।

 

চলন্ত গাড়ি : বিশেষ্যের বিশেষণ

 

করুণাময় তুমি: সর্বনামের বিশেষণ

 

দ্রুত চল :ক্রিয়া বিশেষণ

 

 

 

বিশেষণ দুই ভাগে বিভক্ত। যথা. নাম বিশেষণ . ভাব বিশেষণ।

 

নাম-বিশেষণ

 

নাম বিশেষণ : যে বিশেষণ পদ কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে, তাকে নাম বিশেষণ বলে। যথা-

 

বিশেষ্যের বিশেষণ : সুস্থ সবল দেহকে কে না ভালোবাসে ?

 

সর্বনামের বিশেষণ : সে রূপবান গুণবানরূপবাচক ; নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, কালো মেঘ

 

গুণবাচক বিশেষণ

গুণবাচক: চৌকস লোক, দক্ষ কারিগর, ঠাণ্ডা হাওয়া।

 

অবস্থাবাচক বিশেষণ

অবস্থাবাচক : তাজা মাছ, রোগা ছেলে, খোঁড়া পা।

 

 

সংখ্যাবাচক বিশেষণ

সংখ্যাবাচক : হাজার লোক, দশ দশা, টাকা।

 

পূরণবাচক বা ক্রমবাচক বিশেষণ

ক্রমবাচক : দশম শ্রেণি, সত্তর পৃষ্ঠা, প্ৰথমা কন্যা

 

পরিমাণবাচক বিশেষণ

পরিমাণবাচক : বিঘাটেক জমি, পাঁচ শতাংশ ভূমি, হাজার টনী জাহাজ, এক কেজি চাল

 

দু কিলোমিটার রাস্তা।

 

সংজ্ঞাবাচক বিশেষণ

অংশবাচক : অর্ধেক সম্পত্তি, ষোল আনা দখল, সিকি পথ

 

উপাদানবাচক বিশেষণ

 উপাদানবাচক: বেলে মাটি, মেটে কলসি, পাথুরে মূর্তি।

 

 

বহুপদী বিশেষণ / বাক্যাংশ বিশেষণ

দুই বা তার বেশি সমাসবদ্ধ পদ বিশেষ্য পদের পূর্বে বসে বিশেষণের কাজ করলে তাকে বহুপদী বিশেষণ বলে। উদাহরণ: পিছনে-ফেলে-আসা দিন। মায়ে-তাড়ানো বাপে-খেদানো ছেলে।

 

 

ধ্বন্যাত্মক বিশেষণ

 

ধ্বন্যাত্মক বিশেষণ.সর্বনামীয় বিশেষণ

সর্বনাম জাত : কবেকার কথা, কোথাকার কে, স্বীয় সম্পত্তি।

 

 

ভাব বিশেষণ

 ভাব বিশেষণযে পদ বিশেষ্য সর্বনাম ভিন্ন অন্য পদকে বিশেষিত করে তা- ভাব বিশেষণ ভাব বিশেষণ চার প্রকার : . ক্রিয়া বিশেষণ . বিশেষণের বিশেষণ বা বিশেষণীয় বিশেষণ . অব্যয়ের বিশেষণ . বাক্যের বিশেষণ।

 

ক্রিয়া বিশেষণ

 

 

ক্রিয়া বিশেষণ : যে পদ ক্রিয়া সংঘটনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে।

 

ক্রিয়া সংগঠনের ভাব : ধীরে ধীরে বায়ু বয়

 

ক্রিয়া সংগঠনের কাল : পরে একবার এসো।

 

 

বিশেষণের বিশেষণ

বিশেষণীয় বিশেষণ : যে পদ নাম বিশেষণ অথবা ক্রিয়া বিশেষণকে বিশেষিত করে, তাকে বিশেষণীয় বিশেষণ বলে। যথা-

 

. নাম বিশেষণের বিশেষণ : সামান্য একটু দুধ দাও। ব্যাপারে সে অতিশয় দুঃখিত

 

. ক্রিয়া-বিশেষণের বিশেষণ : রকেট অতি দ্রুত চলে।

 

 

অব্যয়ের বিশেষণ

 

অব্যয়ের বিশেষণ : যে ভাব-বিশেষণ অব্যয় পদ অথবা অব্যয় পদের অর্থকে বিশেষিত করে, তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে। যথাধিক্ তারে, শত ধিক্ নির্লজ্জ যে জন।

 

 

বাক্যের বিশেষণ

বাক্যের বিশেষণ : কখনো কখনো কোনো বিশেষণ পদ একটি সম্পূর্ণ বাক্যকে বিশেষিত করতে পারে, তখন তাকে বাক্যের বিশেষণ বলা হয়। যেমন-

 

দুর্ভাগ্যক্রমে দেশ আবার নানা সমস্যাজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বাস্তবিকই আজ আমাদের কঠিন পরিশ্রমের প্রয়োজন

 

 

এক পদময় বিশেষণ

একপদময় বিশেষণ পদে একটীর অধিক শব্দ থাকে না; যথা- 'বড়, ভাল, ছোট, মন্দ, সুন্দর, মুক্ত, অলৌকিক, চতি, এক, পাঁচ, , এই, , সেইত্যাদি (সমাসে ক্বচিৎ বিশেষণের অর্থ বদলায় যথা--- বড়-মানুষ, ভাল মানুষ, মুক্ত-পুরুষ 1 )

 

বহুপদী বিশেষণ

বহুপদময় বা বাক্যময় বিশেষণ- যার-পর-নাই পী বৎপরোনাস্তি পরিশ্রম সব-পেরেছি- দেশ সাত-রাজার-বন নাকি কুরিয় পাওয়া ছেলে; জো হুকুম; আপ-কাওয়াস্তে পড়ে-পাওয়া পাঁচ-ক্রোশের তিরিশ-দিনের দিন যাচ্ছেতাই (=অপকৃষ্ট, নিকৃষ্ট < যাহা-ইচ্ছা-তাই); আলানে'-পর-ভালানে' ছেলে ; আপন কাজে-আপনিই ব্যস্ত মানুষ "; ইত্যাদি।

 

সর্বনাম পদ

বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে।

সর্বনাম সাধারণত ইতোপূর্বে ব্যবহৃত বিশেষ্যের প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দ। যেমনহস্তী প্রাণিজগতের সর্ববৃহৎ প্রাণী। তার শরীরটি যেন বিরাট এক মাংসের স্তূপ।

 

দ্বিতীয় বাক্যেতার' শব্দটি প্রথম বাক্যের 'হস্তী' বিশেষ্য পদটির প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই, ‘তার' শব্দটি সর্বনাম পদ। বিশেষ্য পদ অনুক্ত থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ্য পদের পরিবর্তে সর্বনাম পদ ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন

 

. যারা দেশের ডাকে সাড়া দিতে পারে, তারাই তো সত্যিকারের দেশপ্রেমিক

 

. ধান ভানতে যারা শিবের গীত গায়, তারা স্থির লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না।

ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক সর্বনাম ( Personal Pronoun )

ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক : আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তাহারা, তিনি, তাঁরা, , এরা, , ওরা ইত্যাদি।

 

আত্মবাচক সর্বনাম (Reflexive Pronoun )

 আত্মবাচক : স্বয়ং, নিজে, খোদ, আপনি

 

নির্দেশক সর্বনাম

যেসব pronoun কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুর পরিবর্তে বসে সেই ব্যক্তি ববা বস্তুকে নির্দেশ করে তাদেরকে নির্দেশক সর্বনাম (Demonstrative Pronoun) বলে। যেমন- এটা, ওটা, এগুলো ইত্যাদি। 

 

 

 

সামীপ্যবাচক (Near Demonstrative Pronoun)

 

সামীপ্যবাচক : , এই, এরা, ইহারা, ইনি ইত্যাদি।

 

সাকুল্যবাচক সর্বনাম (Inclusive Pronoun)

 

সাকুল্যবাচক : সব, সকল, সমুদয়, ' তাবৎ।

 

প্রশ্নবাচক সর্বনাম (Interrogative Pronoun)

প্রশ্নবাচক : কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার, কিসে ?

অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক সর্বনাম (Indefinite Pronoun)

 

অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক : কোন, কেহ, কেউ, কিছু

 

সাপেক্ষ সর্বনাম (Relative Pronoun)

 

যে সকল সর্বনাম দ্বারা একটি বাক্যের সাপেক্ষে অন্য বাক্যকে যুক্ত করা হয়, তাদেরকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলা হয়।

 

 

অন্যাদিবাচক সর্বনাম (Denoting other or others)

 

অন্যাদিবাচক : অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।

 

 

অনিশ্চয়বাচক যৌগিক সর্বনাম ( Indefinite Compound Pronoun)

 

অনিশ্চয়বাচক যৌগিক সর্বনাম ( Indefinite Compound Pronoun)

 

যখন একাধিক শব্দ একত্রিত হয়ে একটি সর্বনাম তৈরি করে, তখন তাকে যৌগিক সর্বনাম বলে। যেমন- অন্য-কিছু, অন্য-কেউ, আর-কিছু, আর-কেউ, কেউ-না-কেউ, কেউ-বা, যা-কিছু, যা-তা, যে-কেউ, যে-কোন, যে-সে।

 

 

ক্রিয়াপদ 

 

পদের দ্বারা কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বলে। অথবা ধাতুর প্রয়োগগত রূপ হলো ক্রিয়া।ক্রিয়াপদের আরেকটি নাম হলো আখ্যাত বা আখ্যাতিক পদ।

 

[ক্রিয়ামূল তথা ধাতুর সঙ্গে পুরুষ অনুযায়ী কালসূচক ক্রিয়াবিভক্তি যোগ করে ক্রিয়াপদ গঠন করতে হয়। []সংক্ষেপে ধাতু+বিভক্তি = ক্রিয়াপদ

 

যেমন: √পড়্+=পড়ে

 

সমাপিকা ক্রিয়া

সমাপিকা ক্রিয়া সম্পাদনা যে ক্রিয়াপদ বাক্যকে পরিপূর্ণ করে এবং বাক্যের অর্থকে সুস্পষ্ট করে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। আমি বাড়ি যাব। আমরা সন্ধ্যায় পড়তে বসব।

 

 

 

অসমাপিকা ক্রিয়া

 

সম্পাদনা

 

যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না, বক্তার কথা অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।

 

আমরা হাত-মুখ ধুয়ে

 

প্রভাতে সূর্য উঠলে

 

অসমাপিকা ক্রিয়া প্রকার .ভূত অসমাপিকা ক্রিয়া .ভাবী অসমাপিকা ক্রিয়া .শর্ত অসমাপিকা ক্রিয়া

 

 

অকর্মক ক্রিয়া

 

অকর্মক

 

সম্পাদনা

 

যে বাক্যে একটিও কর্ম থাকে না তাকে অকর্মক বলে। যেমন:

 

সে হাসছে

 

রমা নাচছে

 

এখানে 'হাসছে' 'নাচছে' ক্রিয়ার কর্ম নেই , আবার এদের ক্রিয়া ধারণের ক্ষমতাও নেই ,তাই এরা অকর্মক ক্রিয়া।

 

সকর্মক ক্রিয়া

 

সকর্মক সম্পাদনা

 

যে বাক্যে একটি কর্ম থাকে তাকে সকর্মক বলে।যেমন:

 

আমি ভাত খাচ্ছি।

 

সে বই পড়ছে।

 

এখানে কী খাচ্ছি আর কী পড়ছে' তা বলা রয়েছে। কাজেই বাক্য দুটিতে খাচ্ছি এবং পড়ছে সকর্মক ক্রিয়া।

 

 

 

দ্বিকর্মক

 

সম্পাদনা

 

যে বাক্যে দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্মক বলা হয়।

 

এক্ষেত্রে, ববস্তুবাচক কর্মপদটি মুখ্যকর্ম, আর ব্যক্তিবাচক কর্মপদটি গৌণ কর্ম।

 

শিক্ষক ছাত্রদের(গৌণ কর্ম) বাংলা(মুখ্যকর্ম) পড়াচ্ছেন।

 

বাবা আমাকে(গৌণ কর্ম) একটি কলম(মুখ্যকর্ম) কিনে দিয়েছেন

 

প্রযোজক ক্রিয়া

 

সম্পাদনা

 

যে ক্রিয়া অন্যের দ্বারা চালিত হয় তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।যেমন

 

মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।

 

সাপুড়ে সাপ খেলাচ্ছে।

 

এখানে "মা" এবং "সাপুড়ে" প্রযোজক কর্তা, "শিশু" "সাপ" প্রযোজ্য কর্তা। "চাঁদ দেখাচ্ছেন" "খেলাচ্ছে" প্রযোজক ক্রিয়া।

 

 

একক ক্রিয়া

 

 

যুক্ত ক্রিয়া

 

যুক্ত ক্রিয়া - বিশেষ্য ,বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের পরে কর্‌,দি,হ্‌,পা,কাট্‌,মার্‌,ফেল্ইত্যাদি মৌলিকধাতু নিষ্পন্ন সমাপিকা ক্রিয়া যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়া গঠন করে তাকে যুক্ত ক্রিয়া বলে যেমন- উত্তর দিল , সাঁতার কাটে

 

যৌগিক ক্রিয়া

যৌগিক ক্রিয়া - একটি অসমাপিকা ক্রিয়া সমাপিকা ক্রিয়া নিয়ে গঠিত ক্রিয়াকে যৌগিক ক্রিয়া বলে যেমন- সে বসিয়া পড়িল

 

 

 

মিশ্র ক্রিয়া

 

 বিশেষ্য, বিশেষণ ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে কর্, হ্, দে, পা, যা কাট্, গা, ছাড়, ধর্, মার্, প্রভৃতি ধাতু যোগ হয়ে ক্রিয়াপদ গঠন করে কোন বিশেষ অর্থ প্রকাশ করলে তাকে মিশ্র ক্রিয়া বলে।

 

 যেমন-

 

 বিশেষ্যের পরে : আমরা তাজমহল দর্শন করলাম। গোল্লায় যাও। বিশেষেণের পরে : তোমাকে দেখে বিশেষ প্রীত হলাম। ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের পরে করে বৃষ্টি পড়ছে। : মাথা ঝিম ঝিম করছে। ঝম ঝম

 

ক্রিয়া বিশেষণ

যে শব্দ ক্রিয়াকে বিশেষিত করে, তাকে ক্রিয়া বিশেষণ বলে। নিচের বাক্য তিনটির নিম্নরেখ শব্দগুলাে ক্রিয়া বিশেষণের উদাহরণ:

 

ছেলেটি দ্রুত দৌড়ায়।

 

লোকটি ধীরে হাঁটে।

 

মেয়েটি গুনগুনিয়ে গান করছে।

 

অনেক সময়ে বিশেষ্য বিশেষণ শব্দের সঙ্গে’, ‘তেইত্যাদি বিভক্তি এবংভাবে’, ‘বশত’, ‘মতাে ইত্যাদি শব্দাংশ যুক্ত হয়ে ক্রিয়াবিশেষণ তৈরি হয়। যেমনততক্ষণে, দ্রুতগতিতে, শান্তভাবে, ভ্রান্তিবশত, আচ্ছামতাে ইত্যাদি।

 

 

ধরণবাচক ক্রিয়াবিশেষণ

ধরনবাচক ক্রিয়াবিশেষণ: কোনাে ক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয়, ধরনবাচক ক্রিয়াবিশেষণ তা নির্দেশ করে। যেমন

 

টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে।

 

ঠিকভাবে চললে কেউ কিছু বলবে না।

 

 

 

কালবাচক ক্রিয়াবিশেষণ

কালবাচক ক্রিয়াবিশেষণ: এই ধরনের ক্রিয়াবিশেষণ ক্রিয়া সম্পাদনের কাল নির্দেশ করে। যেমন

 

আজকাল ফলের চেয়ে ফুলের দাম বেশি।

 

যথাসময়ে সে হাজির হয়।

 

 

স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ

স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ: ক্রিয়ার স্থান নির্দেশ করে স্থানবাচক ক্রিয়াবিশেষণ। যেমন

 

মিছিলটি সামনে এগিয়ে যায়।

 

তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

 

 

নেতিবাচক ক্রিয়াবিশেষণ

নেতিবাচক ক্রিয়াবিশেষণ: না, নি ইত্যাদি দিয়ে ক্রিয়ার নেতিবাচক অবস্থা বােঝায়। এগুলাে সাধারণত ক্রিয়ার পরে বসে। যেমন

 

 

 

সে এখন যাবে না।

 

তিনি বেড়াতে যাননি।

 

এমন কথা আমার জানা নেই।

 

 

পদাণু ক্রিয়াবিশেষণ

পদাণু ক্রিয়াবিশেষণ: বাক্যের মধ্যে বিশেষ কোনাে ভূমিকা পালন না করলেওকি’, ‘যে’, বা’,না’, ‘তােপ্রভৃতি পদাণু ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে কাজ করে। যেমন

 

কি: আমি কি যাব?

 

যে : খুব যে বলেছিলেন আসিবেন!

 

বা: কখনাে বা দেখা হবে।

 

না: একটু ঘুরে আসুন না, ভালাে লাগবে।

 

তাে: মরি তাে মরব।

 

গঠন বিবেচেনায় ক্রিয়াবিশেষণকে একপদী বহুপদীএই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

 

 

একপদী ক্রিয়াবিশেষণ

একপদী ক্রিয়াবিশেষণ: আপ্তে, জোরে, চেঁচিয়ে, সহজে, ভালােভাবে ইত্যাদি।

 

 

বহুপদী ক্রিয়াবিশেষণ

বহুপদী ক্রিয়াবিশেষণ ভয়ে ভয়ে, চুপি চুপি ইত্যাদি।