এই
পর্বে যা যা থাকছে
সেলিম আল দীন
হুমায়ূন আহমেদ
সেলিম আল দীন (১৯৪৯-২০০৮)
স্বাধীনতা-উত্তরকালের প্রখ্যাত নাট্যকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । তিনি লোকজ উপাদানের সাথে মিথ বা পুরাণকেও অসাধারণভাবে ব্যবহার করে নাটকে কবিতা, গান, গল্প ও নাট্যের সমন্বয় ঘটিয়েছেন চমৎকারভাবে। তিনি নাটকের ফর্ম ও ভাষা নিয়ে নিরীক্ষাধর্মী গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলা নাটককে সমৃদ্ধ করেছেন ।
সেলিম আল দীনের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
সেলিম আল দীন ১৮ আগষ্ট, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ফেনীর সোনাগাজীর সেনেরখিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । |
প্রকৃত নাম |
তাঁর প্রকৃত নাম মঈনুদ্দিন আহমেদ । |
কর্মজীবন |
তিনি প্রথমে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘বিটপী'তে কপিরাইটার হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন এবং ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হন এবং আমৃত্যু এ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। |
বিশেষত্ব |
তিনি বাংলা নাট্য সাহিত্যে এথনিক থিয়েটারের উদ্ভাবনকারী এবং ‘নাট্যাচার্য' হিসেবে খ্যাত। তাঁর শিল্পচিন্তার নাম ছিল ‘কথানাট্য'। |
সংগঠন |
বাংলাদেশে ‘গ্রাম থিয়েটার' এর প্রবর্তক সেলিম আল দীন । তিনি ১৯৮১-৮২ সালে নাট্য-নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফকে সাথে নিয়ে সারাদেশে ‘গ্রাম থিয়েটার' গড়ে তোলেন। তিনি ‘ঢাকা থিয়েটার' এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। |
পুরস্কার |
তিনি ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার' (১৯৮৪), ‘একুশে পদক’ (২০০৭), ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' (১৯৯৩, ৯৬) পান ৷ |
নাটক |
তাঁর নাটকগুলোর নাম: |
রেডিও টেলিভিশনে প্রচারিত নাটক |
রেডিও টেলিভিশনে প্রচারিত নাটক: |
অন্যান্য রচনাবলি |
সেলিম আল দীনের অন্যান্য রচনাবলি: |
মৃত্যু |
তিনি ১৪ জানুয়ারি, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় মারা যান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। |
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ (১৯৪৮-২০১২)
বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমধিক খ্যাত। আধুনিক ঔপন্যাসিকদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক জনপ্রিয়। তার সংলাপপ্রধান গল্প ও উপন্যাসে খুব অল্প বাক্যে তিনি একটি চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারতেন এবং অতিবাস্তব বিষয়গুলি এমনভাবে অনায়াসে বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থাপন করতেন যেন মনে হয় যাদু বাস্তবতা। যথেষ্ট সমাজসচেতন হয়েও তাঁর রচনায় কোনো রাজনৈতিক প্রণোদনা নেই ।
হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
হুমায়ূন আহমেদ ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কৃষ্ণপক্ষের শনিবার রাত ১০.৩০মিনিটে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস নেত্রকোনার কুতুবপুর । |
পিতৃপ্রদত্ত নাম |
তাঁর ডাক নাম কাজল । পিতৃপ্রদত্ত নাম শামসুর রহমান । |
বিশেষ পরিচিতি |
কথা সাহিত্যিক জাফর ইকবাল ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব তাঁর ভাই । |
পিএইচডি ডিগ্রি |
তিনি পলিমার কেমিস্ট্রি বিষয়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। |
কর্মজীবন |
তিনি ১৯৭৩ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভৌতরসায়নের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে যোগ দেন। |
প্রথম বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্য |
বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের পথিকৃৎ হুমায়ূন আহমেদ। ‘তোমাদের জন্য ভালোবাসা' (১৯৭৩) প্রথম বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্য। |
সৃষ্ট চরিত্র |
হুমায়ুন আহমেদ এর সৃষ্ট লজিক ও অ্যান্টি লজিক নিয়ে কাজ করা দুটি অমর চরিত্র মিসির আলী ও হিমু। মিসির আলী বাস্তববাদী, যুক্তিনির্ভর ও রহস্যময় চরিত্র। মিসির আলী চরিত্রের প্রথম উপন্যাস 'দেবী' (১৯৮৫)। হিমুর আসল নাম হিমালয়। পকেটবিহীন হলুদ পাঞ্জাবী তার পোশাক। নব্বইয়ের দশকে ‘ময়ূরাক্ষী' (১৯৯০) উপন্যাসের মধ্য দিয়ে হিমুর আত্মপ্রকাশ । |
বাগানবাড়ি |
গাজীপুরের ‘নুহাশ পল্লী' তাঁর নির্মিত বাগানবাড়ি। |
পুরস্কার |
তিনি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৮১), ‘একুশে পদক' (১৯৯৪) লাভ করেন । |
উপন্যাস |
তাঁর উপন্যাসসমূহ: |
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস |
তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসসমূহ: |
উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র নির্মিত হওয়ার সময়কাল |
তাঁর যে সকল উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র চিত্রায়িত হয় তা নিচে দেওয়া হল: |
উপন্যাস নিয়ে নাটক |
তাঁর যে সকল উপন্যাস অবলম্বনে নাটক চিত্রায়িত হয়: |
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ |
তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থসমূহ: |
গল্পগ্রন্থ |
তাঁর গল্পগ্রন্থসমূহ: |
মৃত্যু |
তিনি ১৯ জুলাই, ২০১২ খ্রিস্টাব্দে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে মৃত্যুবরণ করেন। নুহাশ পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়। |
'দেয়াল' উপন্যাসের পরিচয়
জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ এর মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভিত্তিক উপন্যাস 'দেয়াল' (২০১২)। এটি তাঁর রচিত সর্বশেষ উপন্যাস যা লেখকের মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশের পূর্বেই এটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় এবং তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে এর কিছু অংশ পরিমার্জন করে প্রকাশ করা হয়। এ উপন্যাসে লেখক মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক চরিত্র ও ঘটনাবলি নিজ ভাষা ও কল্পনাপ্রসূত ঢঙে চিত্রায়িত করেছেন। এখানে লেখক বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে সমসাময়িকভাবে নিজেকেও উপস্থাপন করেছেন। উল্লেখযোগ্য চরিত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, খালেদ মোশাররফ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহের, অবন্তি, চা বিক্রেতা কাদের বাঙ্গালি ।