এই
পর্বে যা যা থাকছে
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
আহমদ ছফা
আবদুল্লাহ আল মামুন
শহীদ কাদরী
হাসান আজিজুল হক
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭)
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী আখতারুজ্জামান ইলিয়াস মূলত নিরীক্ষাপ্রবণ শিল্পী। তাঁর গল্পগুলোতে পুরান ঢাকার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রচিত। অনাহার, অভাব, দারিদ্র্য ও শোষণের শিকার হয়ে যারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে, সেসব অবহেলিত মানুষের জীবনাচরণ তাঁর গল্প ও উপন্যাসে উজ্জ্বলভাবে অঙ্কিত ।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৩ সালে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার গোটিয়া গ্রামে (মাতুলালয়) জন্মগ্রহণ করেন । পৈতৃক নিবাস চেলোপাড়া, বগুড়া। ডাকনাম- মঞ্জু। |
পেশা |
তিনি ১৯৬৫ সালে জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ঢাকা কলেজে আমৃত্যু অধ্যাপনা করেন । |
পুরস্কার |
তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২), একুশে পদক (মরণোত্তর)- ১৯৯৯ পান । |
উপন্যাস |
তাঁর উপন্যাস দুটি যথা: |
গল্পগ্রন্থ |
‘অন্যঘরে অন্যস্বর' (১৯৭৬): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৫ সালে রচিত নিরুদ্দেশ যাত্রা, উৎসব, প্রতিশোধ, যোগাযোগ, ফেরারী, অন্যঘরে অন্যস্বর ইত্যাদি গল্প নিয়ে তিনি এ গল্পগ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এ গল্পগ্রন্থে প্রথমবারের মতো পুরনো ঢাকার জনজীবন বিশেষত্ব পেয়েছে। |
গল্প |
‘রেইনকোট’ (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক), |
প্রবন্ধগ্রন্থ |
তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থটির নাম ‘সংস্কৃতির ভাঙ্গা সেতু' (১৯৯৮): এতে ২২টি প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত আছে। |
মৃত্যু |
তিনি ৪ জানুয়ারি, ১৯৯৭ সালে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। |
‘চিলেকোঠার সেপাই' উপন্যাসের পরিচয়
উনসত্তরের গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মহাকাব্যিক উপন্যাস ‘চিলেকোঠার সেপাই' (১৯৮৭)। উপন্যাসের নায়ক ওসমান দেশবিভাগের কারণে উদ্বাস্তু হয়ে ঢাকায় এসেছে। সে এতোটাই বিচ্ছিন্ন এবং ছিন্নমূল যে চিলেকোঠায় বাস করাই ছিল যেন তার নিয়তি। অথচ বামপন্থী ছাত্রনেতা, ছাত্রলীগ নেতা, শ্রমিক ও রিক্সাওয়ালা এমন কি বাড়িওয়ালার মেয়ের সাথে তার বিচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ হয়েছে। ওসমান যেন ছোট ছোট কাহিনির সূত্রধর। কোনো বাড়ির চিলেকোঠায় বাস করেও স্বাধীনতার লক্ষ্যে গড়ে উঠা বৃহত্তর আন্দোলনের জোয়ারে সেদিন মিলিত হয়েছিল ওসমান। ওসমানের মাধ্যমে ইতিবাচক রাজনীতির উপস্থাপনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্ববর্তী রূপটি ঔপন্যাসিক সার্থকভাবে তুলে এনেছেন। এ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে
আহমদ ছফা
আহমদ ছফা (১৯৪৩-২০০১)
বিশিষ্ট লেখক, চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিক আহমদ ছফার রচনায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতিসত্তার পরিচয়। জীবদ্দশায় তিনি তাঁর প্রথাবিরোধী, নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য বুদ্ধিজীবী মহলে বিশেষ পরিচিত ছিলেন।
আহমদ ছফার সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
আহমদ ছফা ৩০ জুন, ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
বিশেষ অবদান |
তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাকে স্বাধীন করার প্রত্যয়ে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির' গঠন করেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা ‘ প্রতিরোধ' প্রকাশ করেন । |
সম্পাদনা |
তিনি ‘উত্থানপর্ব’ , ‘দাবানল' (এটি তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে কলকাতা থেকে প্রকাশ করেন) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। |
সম্মাননা |
তিনি একুশে পদক (মরণোত্তর) পান। |
উপন্যাস |
তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ: |
প্রবন্ধ |
তাঁর প্রবন্ধগুলো: |
অন্যান্য রচনাবলি |
তাঁর অন্যান্য রচনাবলি: |
মৃত্যু |
তিনি ২৮ জুলাই, ২০০১ সালে মারা যান । |
আবদুল্লাহ আল মামুন
আবদুল্লাহ আল মামুন (১৯৪২-২০০৮)
আবদুল্লাহ আল মামুন ছিলেন একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা ও প্রখ্যাত নাট্যকার। তিনি সাম্রাজ্যবাদী নাটক রচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন । বাংলাদেশের সমসাময়িক পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিপক্ষে তিনি জীবনভর নাট্য রচনা অব্যাহত রাখেন ।
আবদুল্লাহ আল মামুনের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
আবদুল্লাহ আল মামুন ১৩ জুলাই, ১৯৪২ সালে জামালপুর সদরের আমড়া পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। |
নাট্যসংগঠন |
তিনি নাট্যসংগঠন ‘ থিয়েটার ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। |
মহাপরিচালক |
তিনি জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (১৯৯১-২০০১) এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (২০০১) ছিলেন । |
পুরস্কার |
তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৪), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান । |
প্রথম নাটক |
তাঁর প্রথম প্রকাশিত নাটক ‘ শপথ ’ (১৯৬৪)। |
নাটকসমূহ |
তাঁর রচিত নাটকসমূহ: |
উপন্যাস |
তাঁর রচিত উপন্যাসসমূহ: |
মৃত্যু |
তিনি ২১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার), ২০০৮ সালে মারা যান। |
শহীদ কাদরী
শহীদ কাদরী (১৯৪২-২০১৬)
স্বাধীন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আধুনিক কবি শহীদ কাদরী। বাংলা কবিতার পঞ্চাশ দশকের সর্বোচ্চ সম্ভাবনা ও সাফল্য দেখা যায় তাঁর কাব্যগ্রন্থসমূহে। ১৯৪৭ পরবর্তী বাঙালি কবিদের তিনি নাগরিক জীবন সম্পর্কিত শব্দ চয়নের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেছিলেন।
শহীদ কাদরীর সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
শহীদ কাদরী ১৪ আগস্ট, ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার পার্কস্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন । |
সময় |
শহীদ কাদরী মূলত ষাটের দশকের কবি ছিলেন । |
প্রথম কবিতা |
তাঁর প্রথম কবিতা ‘এই শীতে’ বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং সেদিনই তাঁর মা মৃত্যুবরণ করেন। |
পুরস্কার |
তিনি ১৯৭৩ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' এবং ২০১১ সালে ‘একুশে পদক' লাভ করেন। |
গ্রন্থসমূহ |
শহীদ কাদরী রচিত গ্রন্থসমূহ: |
বিখ্যাত পক্তি |
“ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো, যাতে সেনাবাহিনী গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে... |
মৃত্যু |
তিনি ২৮ আগস্ট, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এবং তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী ঢাকায় সমাহিত করা হয় । |
হাসান আজিজুল হক
হাসান আজিজুল হক (১৯৩৯-২০২১)
বাংলাদেশের ছোটগল্পের ধারায় অত্যন্ত শক্তিমান লেখকরূপে স্বীকৃত হাসান আজিজুল হক। বস্তুবাদী চিন্তা-চেতনার আলোকে তিনি সমাজ জীবনের অবক্ষয়, সাম্প্রদায়িকতা, নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবনের প্রকৃত রূপ, হতাশা ও দারিদ্র্যের নিখুঁত চিত্র নির্লিপ্ত শিল্পীর মত অঙ্কন করেছেন।
হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান |
সাহিত্যিক তথ্য |
জন্ম |
হাসান আজিজুল হক ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। |
প্রথম লেখা |
রাজশাহী কলেজে পড়াকালীন ভাঁজপত্র ‘চারপাতা’য় আমের মাহাত্ম্যবিষয়ক তাঁর প্রথম লেখা ছাপা হয়। |
সম্পাদনা |
তিনি ' অসীমান্তিক ' (১৯৯৮) নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। |
পুরস্কার |
তিনি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৭০), ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৬৭), ‘একুশে পদক’ (১৯৯৯), ‘আনন্দ পুরস্কার' (২০০৭) পান । |
অধ্যাপনা |
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন এবং ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদের জন্য মনোনীত হন। |
গল্পগ্রন্থ |
তাঁর প্রকাশিত গল্পগ্রন্থগুলো: |
উপন্যাস |
তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসগুলো: |
অন্যান্য রচনাবলি |
তাঁর অন্যান্য রচনাবলি: |
মৃত্যু |
দীর্ঘদিন বিভিন্ন অসুস্থতায় ভোগার পর, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর, হাসান আজিজুল হক তার রাজশাহীর বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাধিস্থ করা হয়। |