যা যা থাকছে এই পর্বে
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার
নোবেল পুরস্কার
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার | Various international
awards
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসব পুরস্কার বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি, ক্রীড়া, চলচ্চিত্র, সংগীতসহ নানান ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা নিজেদের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার পাশাপাশি বিশ্ববাসীর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন। নোবেল পুরস্কার, অস্কার, গ্র্যামি, পুলিৎজার, ব্যালন ডি’অর ইত্যাদি পুরস্কার আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক স্বীকৃত এবং সম্মানজনক। এই নিবন্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব।
নোবেল পুরস্কার
নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারগুলোর মধ্যে একটি। এটি ১৯০১ সাল থেকে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য প্রদান করা হচ্ছে।
·
প্রবর্তক : আলফ্রেড নোবেল (সুইডিশ বিজ্ঞানী ও আবিষ্কারক)
·
প্রদানকারী সংস্থা : সুইডিশ একাডেমি এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি
·
পুরস্কারের ধরন : পদক, সার্টিফিকেট ও নগদ অর্থ
·
বিশেষত্ব : শান্তি পুরস্কার ব্যতীত অন্যান্য পুরস্কার সুইডেনে প্রদান করা হয়, আর শান্তি পুরস্কার নরওয়েতে দেওয়া হয়।
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার
এই পুরস্কারটি প্রবর্তন করা হয় ফিলিপাইনের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রামোন ম্যাগসেসেকে স্মরণ করে। এ পুরস্কার এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত। প্রতিবছর ৬টি শ্রেণিতে এশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংগঠনকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। যথা-
১) সাংবাদিকতা, সাহিত্য ও যোগাযোগে উদ্ভাবনী কলা
২) শান্তি ও আন্তর্জাতিক সমঝোতা
৩) সরকারি সেবা
৪) জনসেবা
৫) সামাজিক নেতৃত্ব এবং
৬) নতুন নেতৃত্ব।
ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম বাংলাদেশী তাহরুন্নেছা আবদুল্লাহ (সামাজিক নেতৃত্ব, ১৯৭৮)। ম্যাগসেসে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যান্য বাংলাদেশীর মধ্যে ফজলে হাসান আবেদ (সামাজিক নেতৃত্ব, ১৯৮০), ড. মুহাম্মদ ইউনূস (সামাজিক নেতৃত্ব, ১৯৮৪), ড. এঞ্জেলা গমেজ (সামাজিক উন্নয়ন, ১৯৯৯), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (২০১২ খ্রি.), ফেরদৌসী কাদরী (২০২১ খ্রি.), করভি রাখসানন্দ (২০২৩ খ্রি.) এর নাম উল্লেখযোগ্য।
শাখারভ পুরস্কার
মানবাধিকার এবং মুক্ত চিন্তায় মৌলিক বিকাশে অবদানের জন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ১৯৮৮ সালে শাখারভ প্রাইজ ফর ফ্রীডম অব থট বা মুক্ত চিন্তায় 'শাখারভ পুরস্কার' প্রদান করে। রাশিয়ার বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী আন্দ্রে শাখারভের নামানুসারে এ পুরস্কারের নামকরণ করা হয়।
নাইটিঙ্গেল পুরস্কার
আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি নার্সিং সেবায় অসাধারণ অবদানের জন্য 'নাইটিঙ্গেল মেডেল' প্রদান করে। আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত 'ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল' এর স্মরণে এই পদকটি প্রদান করা হয়। ক্রিমিয়ার যুদ্ধ (১৮৫৩-৫৬ খ্রি.) এ যুদ্ধাহতদের সেবায় ফ্লোরেন্স আত্মনিবেদন করে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। হ্যারিকেন নিয়ে রাতের আঁধারে তিনি ছুটে যেতেন আহতদের দ্বারে দ্বারে। এজন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান 'The lady with the lamp'
নামে। নাইটিঙ্গেলের জন্ম হয় ১৮২০ সালের ১২ই মে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে।
·
আরবের নাইটেঙ্গেল :উম্মে কুলসুম
·
ভারতের নাইটেঙ্গেল : সরোজিনী নাইডু
বুকার পুরস্কার
বুকার পুরস্কার (পূর্ব নাম ম্যান বুকার পুরস্কার) একটি মর্যাদাপূর্ণ ব্রিটিশ সাহিত্য পুরস্কার। এটি ইংরেজি সাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার। প্রতিবছর বিগত ১ বছরে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ ইংরেজি পূর্ণদৈর্ঘ্য উপন্যাসের জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। সর্বকনিষ্ঠ বুকার পুরস্কার বিজয়ী ঔপন্যাসিক হলেন এলিনর ক্যাটন।
বুকার পুরস্কার প্রাপ্ত বিখ্যাত গ্রন্থ |
সাল |
লেখক ও দেশ |
শিরোনাম |
১৯৯৭ |
অরুন্ধতী রায় (ভারত) |
The God of Small
Things (উপন্যাস) |
২০০৬ |
কিরন দশাই (ভারত) |
The Inheritance of
Loss (উপন্যাস) |
২০০৮ |
অরবিন্দ আদিগাও (ভারত) |
The White Tiger (উপন্যাস) |
২০১৫ |
মারলন জেমস (জ্যামাইকা) |
A Brief History of
Seven killings (গবেষণাধর্মী উপন্যাস) |
২০২১ |
ড্যামন গালগুট (দক্ষিণ আফ্রিকা) |
The Promise (উপন্যাস) |
একাডেমি পুরস্কার
একাডেমি পুরস্কার বা অস্কার (Oscar) বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। ১৯২৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হলিউডের Academy of Motion
Picture Arts and Sciences এই পুরস্কারটি প্রবর্তন করে। রূপালি জগতের বিশেষ অবদানের জন্য প্রতি বছর পরিচালক, অভিনেতা এবং লেখকদের ২৪ টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়।
·
এখন পর্যন্ত মাত্র দু'জন অভিনেতা মরণোত্তর অস্কার জয় করেন। তাঁরা হলেন Peter Finch (১৯৭৬) ও Heath Ledger (২০০৮)।
·
প্রথম অস্কারজয়ী বাংলাদেশি নাফিস বিন জাফর। বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রকৌশলী নাফিস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে দুইবার অস্কার পুরস্কার জয় করেন। যথা- (১) 'পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ডস এন্ড' চলচ্চিত্রে ডিজিটাল তরল প্রভাব (Digital fluid effects) সংযোজনের জন্য ২০০৮ সালে পুরস্কার পান। (২) '২০১২' চলচ্চিত্রে ড্রপ ডেসস্ট্রাকশন টুলকিটটি প্রথম ব্যবহারের জন্য ২০১৫ সালে পুরস্কার পান।
·
প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে দুইবার অস্কার জিতেছেন রুথ ই. কার্টার (যুক্তরাষ্ট্র)। পেশায় তিনি একজন কস্টিউম ডিজাইনার।
পুলিৎজার পুরস্কার
১৯১৭ সালে পুলিৎজার পুরস্কার চালু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিৎজার পুরস্কার প্রদান করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক জোসেফ পুলিৎজারের নামানুসারে পুরস্কারের নামকরণ করা হয়। পুলিৎজার পুরস্কার সাংবাদিকতার 'নোবেল' হিসেবে খ্যাত। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত, নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য এ পুরস্কার দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রশাসন বিজ্ঞানী L.D. White মরণোত্তর পুলিৎজার পুরস্কার (১৯৫৯) লাভ করেন।
আগা খান পুরস্কার
বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক স্থাপত্য পুরস্কার হলো আগা খান পুরস্কার ফর আর্কিটেকচার (Aga Khan Award for
Architecture - AKAA)। এটি মূলত ইসলামি সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের উৎকর্ষতা এবং আধুনিক স্থাপত্যের সঙ্গে ঐতিহ্যের সমন্বয়ের জন্য প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারটি স্থাপত্যবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী, নির্মাতা এবং প্রকল্পের মালিকদের দেওয়া হয়, যারা সৃজনশীল ও মানবিক স্থাপত্যের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রাখেন।
নোবেল পুরস্কার বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার। এটি ১৮৯৫ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের উইল অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয়। আলফ্রেড নোবেল ছিলেন ডিনামাইটের আবিষ্কারক এবং এক বিশাল সম্পত্তির মালিক। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর সম্পত্তির একটি বড় অংশ নোবেল পুরস্কারের জন্য রেখে যান। প্রথম নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় ১৯০১ সালে।
·
নোবেল পুরস্কার ইতিহাস
·
নোবেল পুরস্কার মনোনয়ন পদ্ধতি
·
সর্বপ্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী
·
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নোবেলজয়ী প্রথম নারী
·
উপমহাদেশের নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্ব
·
শান্তিতে নোবেলজয়ী জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন
·
শান্তিতে নোবেলজয়ী অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠন
·
একাধিকবার নোবেলজয়ী সংগঠন ও ব্যক্তি
সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে সফল এবং অনন্য সাধারণ গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং মানবকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়। নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তক আলফ্রেড নোবেল ১৮৩৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে রসায়নবিদ, প্রকৌশলী এবং উদ্ভাবক। ডাইনামাইট (উন্নত মানের বিস্ফোরক) আবিষ্কার করে তিনি বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়ে যান। কিন্তু শেষ জীবনে নিজের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ডিনামাইটের ধ্বংসাত্মক ব্যবহার দেখে খুবই অনুতপ্ত হন। এ কারণে মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাঁর সম্পত্তির ৯৪% উইল করে যান। উইল মোতাবেক, ১৯০১ সালে প্রবর্তিত হয় 'নোবেল পুরস্কার'। ১৯০১ সাল থেকে পাঁচটি বিষয়ে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হতো। বর্তমানে মোট ৬টি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। যথা-পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি এবং অর্থনীতি। অর্থনীতি ছাড়া অন্য বিষয়গুলোতে ১৯০১ সাল থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। অর্থনীতির জন্য আলফ্রেড নোবেল তাঁর উইলে কোনো অর্থ অনুমোদন করে যাননি। পরবর্তীতে, সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক
'Sveriges Riksbank' এর অর্থায়নে ১৯৬৯ সাল থেকে নোবেলের স্মরণে অর্থনীতিতেও এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যু দিবস ১০ ডিসেম্বরে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে শান্তি পুরস্কার এবং সুইডেনের স্টকহোমে বাকি পুরস্কারগুলো তুলে দেওয়া হয় বিজয়ীদের হাতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪০ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত পুরস্কার প্রদান বন্ধ ছিল।
·
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে নোবেল কমিটি বিশ্বব্যাপী যোগ্য মনোনয়নকারীদের কাছে গোপনে মনোনয়ন ফর্ম প্রেরণ করে ।
·
মনোনয়ন জমার শেষ সময় সাধারণত ৩১ জানুয়ারি (পরের বছর)।
·
ফেব্রুয়ারি-মার্চে কমিটি জমা পড়া নামগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করে। প্রতি বিভাগে গড়ে ২০০-৩০০ জন মনোনীত হন ।
·
মার্চ-আগস্টে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের (নোবেল কমিটির সদস্য, বাইরের বিশেষজ্ঞ) মাধ্যমে মনোনীতদের কাজের গভীর মূল্যায়ন করা হয়। চিকিৎসা বা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষণার প্রভাব, সৃষ্টির মৌলিকত্ব, মানবকল্যাণে অবদান ইত্যাদি যাচাই করা হয় ।
·
সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে কমিটি আলোচনা ও গোপন ভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয়ী নির্ধারণ করে। ভোটের ফলাফল অবিলম্বে ঘোষণা করা হয় (অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ) ।
·
পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর ১০ ডিসেম্বর (আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী) সুইডেন ও নরওয়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার দেওয়া হয় ।
·
মার্কিনিদের মধ্যে অর্থনীতিতে প্রথম নোবেল পুরস্কার (১৯৭০ খ্রি.) লাভ করেন পল অ্যান্থনি স্যামুয়েলসন।
মাদার তেরেসা (Mother
Teresa) ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্যে (বর্তমান স্কোপেজ, রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়ার অন্তর্ভুক্ত) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতিতে ছিলেন আলবেনীয়। তিনি ১৯৪৮ সালে ভারতের নাগরিকত্ব লাভ করেন। দুঃস্থ মানবতার সেবার জন্য তিনি ১৯৫০ সালে ভারতের কলকাতায়
Missionaries of Charity (মিশনারিজ অফ চ্যারিটি) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫২ সালে তিনি কলকাতার কালীঘাটে পুরানো পরিত্যক্ত হিন্দু মন্দিরে নিঃস্ব ও মুমূর্ষু ব্যক্তিদের বিনামূল্যের সেবাসদন 'নির্মল হৃদয়' প্রতিষ্ঠা করেন। মানব সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৮০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক 'ভারতরত্ন' লাভ করেন। তিনি ছিলেন এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী নারী। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মানুষ বলা হয়। মাদার তেরেসাকে 'Living Saint' নামে ডাকা হয়। ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় ইহলোক ত্যাগ করেন।
মালালা ইউসুফজাই (Malala
Yousafzai) ১২ জুলাই, ১৯৯৭ পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যাকার মিনগোরায় জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তানে নারীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে প্রচারাভিযানে কাজ করায় ২০১২ সালে তালেবানরা তাঁকে গুলিতে আহত করে। ২০১৪ সালে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসাবে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। শিশুর শিক্ষার অধিকারের পক্ষে তাঁর সাহসী আন্দোলনের স্বীকৃতি হিসাবে তাঁকে ওই পুরস্কার দেয়। মালালা ইউসুফজাই জাতীয় যুবশান্তি পুরস্কার (২০১১), শাখারভ পুরস্কার (২০১৩), ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেন অ্যাওয়ার্ডস (২০১৩), আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার (২০১৩) সহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৭ সালে তাঁকে কানাডার সম্মানসূচক নাগরিকত্ব সনদ প্রদান করা হয়। 'I Am
Malala: How One Girl Stood Up for Education and was Shot by the Taliban' তাঁর আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ।
নোবেলজয়ী বাঙালি মনীষী ৪ জন। তাঁরা হলেন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অভিজিত ব্যানারর্জী।
অমর্ত্য সেন (Amartya
Sen) ১৯৩৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলায়। তাঁর বাবা আশুতোষ সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। অমর্ত্য সেন জনকল্যাণ অর্থনীতি, দুর্ভিক্ষ ও দারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কারণ নিয়ে গবেষণা করেন। সামাজিক চয়ন তত্ত্ব বা কল্যাণ অর্থনীতিতে অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ট্রিনিটি কলেজ (ক্যামব্রিজ), অক্সফোর্ড এবং হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি ভারতের বর্তমান নালন্দা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম আচার্য ছিলেন। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির দিক থেকে তিনি দ্বিতীয় বাঙালি, অর্থনীতিতে এশিয়ার প্রথম, উপমহাদেশে সপ্তম। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ
'Poverty and Famine', 'The Idea of Justice', 'Identity and Violence: The
illusion of destiny', Home in the World: A Memoir প্রভৃতি।
ক) স্বেচ্ছায়: এ পর্যন্ত দুইজন নোবেলজয়ী স্বেচ্ছায় নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। যথা-
1.
জ্যঁ পল সার্ত্র | ফ্রান্স | সাহিত্য | ১৯৬৪
2.
লি ডাক থো | ভিয়েতনাম | শান্তি | ১৯৭৩
খ) সরকারের চাপে :
1.
কার্ল ভন অসিসকাই | জার্মানি | শান্তি | ১৯৩৫
2.
রিচার্ড কুহান | জার্মানি | রসায়ন | ১৯৩৮
3.
এডলফ বুটেনঅ্যান্ড | জার্মানি | রসায়ন | ১৯৩৯
4.
জারহর্দ ডোমাগক | জার্মানি | চিকিৎসা | ১৯৩৯
5.
বরিস পেরেসত্রোনক | রাশিয়া | সাহিত্য | ১৯৫৮
6.
লিউ জিয়াবো | চীন | শান্তি | ২০১০
ফ্যাক্টস অব নোবেল প্রাইজ :
·
রাজনীতিবিদ কিন্তু সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন - ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টোন চার্চিল (১৯৫৩ খ্রি)
·
বিজ্ঞানী কিন্তু শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন - লিনাস পাউলিং (১৯৬২ খ্রি.)
·
মনোবিজ্ঞানী কিন্তু অর্থনীতিতে নোবেল জয় করেন -ড্যানিয়েল ক্যানেম্যান (২০০২ খ্রি.)