DAILY SCIENCE (LEC 9)

বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতি (BCS) Preliminary Preparation 200 Marks দৈনন্দিন বিজ্ঞান

 

স্নেহ পদার্থ | Fat

 

স্নেহ বা চর্বিকে শক্তি উৎপাদনকারী উপাদান বলা হয়। স্নেহ পদার্থে কার্বন, হাইড্রোজেন অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি থাকে। কার্বনের দহন ক্ষমতা বেশি থাকায় স্নেহ পদার্থের অণু থেকে বেশি তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। স্নেহ পদার্থ ফ্যাটি এসিড গ্লিসারণের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌগ। স্নেহ পদার্থ পরিপাক হয়ে ফ্যাটি এসিড গ্লিসারলে পরিণত হয়। ফ্যাটি এসিড গ্লিসারল ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিলাইয়ের ভিতরে অবস্থিত লসিকা নালির মাধ্যমে শোষিত হয়। লিপিড বা স্নেহ পদার্থ পানিতে অদ্রবনীয় কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমনঃ ইথার, ক্লোরোকরম, বেনজিন ইত্যাদিতে দ্রবনীয়।


Table of Content 

 

·          চর্বি জাতীয় এসিড

·          অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড

·          উৎস

·          স্নেহ পদার্থ এর কাজ

·          অভাবজনিত রোগ প্রতিকার

·          কোলেস্টেরল

·          জাঙ্ক ফুড

·          তথ্য কণিকা

চর্বি জাতীয় এসিড

দেহে যকৃতের মধ্যে চর্বি জাতীয় এসিড তৈরি হয়। তবে যকৃতের চর্বি জাতীয় এসিড তৈরির ক্ষমতা অত্যন্ত কম। অন্যদিকে কিছু কিছু চর্বি জাতীয় এসিড আছে যা দেহের জন্য অত্যাবশ্যক। এগুলো প্রধানত উদ্ভিজ্জ তেলে পাওয়া যায়। খাদ্যে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ দ্বারা এর উপকারিতা যাচাই করা যায় না। যে স্নেহ জাতীয় খাদ্যে অসম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড বেশি থাকে তা বেশি উপকারী। যেমন- সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, তিলের তেল, ভুট্টার তেল ইত্যাদি। এসব তেল দিয়ে তৈরি খাবার উৎকৃষ্টতর স্নেহ জাতীয় খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- মেয়নিজ, সালাদ ড্রেসিং, কাসুন্দি, তেলের আচার ইত্যাদি উৎকৃষ্টতর স্নেহ জাতীয় খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত। যেসব খাদ্যে সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড বেশি থাকে সে সকল খাদ্যগুলোকে স্নেহবহ্বল খাদ্য বলা হয়। যেমন- মাংস, মাখন, পনির, ডালডা , চকলেট, বাদাম ইত্যাদি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে দৈনিক মোট শক্তির ২০%-৩০% শক্তি স্নেহ থেকে পাওয়া যায়। দৈনিক আহার্যে এমন স্নেহযুক্ত খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা অত্যাবশ্যকীয় চর্বি জাতীয় এসিড যোগাতে পারে এবং ভিটামিন দ্রবণে সক্ষম হয়।

স্নেহ পদার্থে ২০ প্রকার চর্বি জাতীয় এসিড পাওয়া যায়। চর্বি জাতীয় এসিড দুই প্রকার। যথা- . অসম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড . সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড।

অসম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড: যে চর্বি জাতীয় এসিড বা ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন দ্বিবন্ধন থাকে তাকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বা অসম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড বলে। যেমন: অলিক এসিড, লিনোলিক এসিড ইত্যাদি।

সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড : যে চর্বি জাতীয় এসিড বা ফ্যাটি এসিডে কার্বন-কার্বন একবন্ধন বিদ্যমান, তাকে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বা সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড বলে। যেমনঃ পামিটিক এসিড, স্টিয়ারিক এসিড ইত্যাদি।

 

অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড

যেসব ফ্যাটি এসিড আমাদের দেহে তৈরি হতে পারে না, অথচ দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাদের অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড বলে। এসব ফ্যাটি এসিডকে খাদ্যের মাধ্যমে দেহে সরবরাহ করতে হয়। অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড ৩টি। যথা-

নাম

উৎস

. লিনোলিক এসিড

ডিমের কুসুম, বাদাম, সয়াবিন তেল ইত্যাদি

. লিনোলেনিক এসিড

মাছের তেল, যকৃত ইত্যাদি

. অ্যারাকিডোনিক এসিড

যকৃতের তেল

 

উৎস

উৎস অনুযায়ী স্নেহপদার্থ দুই ধরনের, উদ্ভিজ্জ স্নেহপদার্থ এবং প্রাণিজ স্নেহপদার্থ

উদ্ভিজ্জ স্নেহপদার্থ: সয়াবিন, সরিষা, তিল, বাদাম, সূর্যমুখী এবং ভুট্টার তেল ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভোজ্যতেলের মধ্যে সয়াবিন তেল উৎকৃষ্টতম।

প্রাণিজ স্নেহপদার্থ: চর্বি, ঘি, ডালডা ইত্যাদি প্রাণিজ স্নেহপদার্থ। ডিমের কুসুমে স্নেহপদার্থ আছে, কিন্তু সাদা অংশে স্নেহপদার্থ থাকে না। স্নেহপদার্থ পানিতে অদ্রবণীয়। পানির চেয়ে হালকা বলে পানির উপর ভাসে। একজন সুস্থ সবল পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দিনে 50-60 গ্রাম চর্বির প্রয়োজন হয়।

 

স্নেহ পদার্থ এর কাজ

·         খাদ্যবস্তুর মধ্যে স্নেহ পদার্থ সবচেয়ে বেশি তাপ শক্তি উৎপন্ন করে।

·         দেহের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য স্নেহ পদার্থ অতি আবশ্যক।

·         স্নেহপদার্থ দেহ থেকে তাপের অপচয় বন্ধ করে এবং ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করে।

·         ত্বকের মসৃণতা সজীবতা বজায় রাখে এবং চর্মরোগ প্রতিরোধ করে।

·         যেসব ভিটামিন (, ডি, এবং কে) স্নেহ জাতীয় পদার্থে দ্রবণীয়, সেগুলো শোষণে সাহায্য করে।

 

অভাবজনিত রোগ প্রতিকার

খাদ্যে স্নেহ পদার্থের অভাব ঘটলে দেহের চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের অভাব পরিলক্ষিত হয় ফলে ভিটামিনের অভাবজনিত রোগ দেখা দেয়। যেমন-

·         স্নেহ পদার্থের অভাবে চর্মরোগ, একজিমা ইত্যাদি দেখা দেয়। ত্বক শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

·         দীর্ঘদিন স্নেহ পদার্থের অভাব হলে শরীরে সঞ্চিত প্রোটিন ক্ষয় হয় এবং দেহের ওজন কমে যায়।

·         শরীরের অতিরিক্ত স্নেহ পদার্থ জমা হলে দেহের রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে এবং কারণে মেদবহুল দেহে রোগ আক্রমণ করে।

 

কোলেস্টেরল

এক ধরনের স্নেহ জাতীয় পদার্থ। গরুর মাংস, খাসির মাংস, ডিমের কুসুম, কলিজা, মগজ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের প্রাণিজ স্টেরল। স্টেরল হলো উদ্ভিজ্জ তেল প্রাণিজ চর্বি। এগুলো দানাদার যৌগ এবং কাঠামোতে একটি হাইড্রোক্সিল গ্রুপ আছে। স্টেরলগুলোকে কঠিন বা অসম্পৃক্ত অ্যালকোহল বলা হয়। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে কোলেস্টেরল ধমনী গাত্রের অভ্যন্তরে জমা হতে থাকে একে Atherosclerosis বলে। এতে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হার্ট এটাক, হার্ট ফেইলর প্রভৃতি রোগের আংশকা বেড়ে যায়। রক্তকে পাতলা করে কোলেস্টেরল কমায় ওমেগা- ফ্যাটি এসিড। মানবদেহে HDL LDL- দু'ধরনের কোলেস্টরল পাওয়া যায়। এদের মধ্যে HDL (High Density Lipid) মানব দেহের জন্য ভালো। অপরদিকে LDL (Law Density Lipid) উচ্চ বক্তচাপের জন্য দায়ী। ধমনি গাত্রে বা প্রাচীরে ফাটলের জন্যও এটি দায়ী। প্রাণিদেহের প্রধান অসম্পৃক্ত অ্যালকোহল (Steriod alcohol) হলো কোলেস্টেরল। দুই ধরনের প্রধান কোলেস্টরল হলো HDL LDL VLDL-নামে অপর একটি কোলেস্টেরলে লিপিডের Density খুব কম (Very Low Density Lipid)

জাঙ্ক ফুড

জাঙ্ক ফুড হচ্ছে এমন এক ধরনের খাবার, যা এর স্বাস্থ্যগত মূল্যের চেয়ে বরং মুখরোচকতার জন্য উৎপাদন করা হয়। এটা খাওয়া খুব মজাদার এবং আবেদনময় কিন্তু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে এমন অতিরিক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা কে সুস্বাদু করে তোলে কিন্তু এগুলো অস্বাস্থ্যকর। এতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে প্রাণিজ চর্বি চিনি থাকে। বার্গার, পিৎজা, ক্রিসপস (মচমচে ভাজা খাবার), পিঠা বিস্কুটে প্রাণিজ চর্বি উচ্চমাত্রায় থাকে। মিষ্টি, কোলা লেমনের এর মত গ্যাসীয় বুদবুদযুক্ত পানীয় চিনির দিক দিয়ে উচ্চমাত্রার। আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার খাই, তখন আমাদের দেহ এগুলোকে রূপান্তরিত করে এবং অধিক পরিমাণ চিনি আমাদের দাঁত ত্বককে নষ্ট করে দিতে পারে।

তথ্য কণিকা

·         ফ্যাটি এসিড গ্লিসারিনের সমন্বয়ে স্নেহ পদার্থ গঠিত হয়।

·         আমাদের খাবারে প্রায় ২০ ধরণের ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়।

·         কঠিন স্নেহ পদার্থগুলোকে চর্বি বলে। চর্বি হল সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন অবস্থায় থাকে। যেমন: মাছ বা মাংসের চর্বি।

·         যেসব স্নেহ পদার্থ তরল, সেগুলোকে তেল বলে। তেল হল অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। সাধারণ তাপমাত্রায় এগুলো তরল থাকে। যেমন- সয়াবিন তেল, সরিষার তেল ইত্যাদি।

·         চর্বি জাতীয় খাদ্য পাকস্থলীতে অনেকক্ষণ থাকে, তাই তখন ক্ষুধা পায় না।

·         দেহের ত্বকের নিচে চর্বি জমা থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গ যেমন- যকৃৎ, মস্তিষ্ক, মাংসপেশিতে চর্বি জমা থাকে। দেহের এই সঞ্চিত চর্বি উপবাসের সময় কাজে লাগে।

·         শর্করা আমিষের তুলনায় চর্বিতে প্রায় দ্বিগুন পরিমান ক্যালরি থাকে। (ক্যালরি হল প্রাণীদেহে শক্তি মাপার একটি একক)

·         দেহাভ্যন্তরে ক্ষুদ্রান্তের যে খাদ্য বেশি শোষিত হয়------ স্নেহ জাতীয়।

 

আমিষ বা প্রোটিন | Protein

 

অনেকগুলো অ্যামাইনো এসিড পেপটাইড বন্ড দ্বারা যুক্ত হয়ে পলিপেপটাইড গঠন করে। এক বা একাধিক পলিপেপটাইড সম্বলিত বৃহদাকার সক্রিয় জৈব রাসায়নিক পদার্থকে প্রোটিন/ আমিষ বলে। আমিষ আমাদের দেহের গঠন উপাদান। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন সালফারের সমন্বয়ে আমিষ গঠিত। আমিষে ১৬% নাইট্রোজেন থাকে। নাইট্রোজেন এবং শেষোক্ত উপাদানগুলোর উপস্থিতির কারণে আমিষের গুরুত্ব শর্করা স্নেহ পদার্থ থেকে আলাদা। শুধু আমিষজাতীয় খাদ্যই শরীরে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে বলে পুষ্টিবিজ্ঞানে আমিষকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমিষ হলো অ্যামাইনো এসিডের একটি জটিল যৌগ। পরিপাক প্রক্রিয়া দ্বারা এটি দেহে শোষণ উপযোগী অ্যামাইনো এসিডে পরিণত হয়। পর্যন্ত প্রকৃতিজাত দ্রব্যে ২২ প্রকার অ্যামাইনো এসিডের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমরা বাংলা বা ইংরেজি বর্ণমালাগুলো সাজিয়ে যেমন অসংখ্য শব্দ গঠন করতে পারি, তেমনি ২২টি অ্যামাইনো এসিড বিভিন্ন সংখ্যায়, বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন আঙ্গিকে মিলিত হয়ে আমিষের উৎপত্তি ঘটায়। কারণে মাছ, দুধ, মাংস ইত্যাদি খাবারের স্বাদ, গন্ধ বর্ণের তারতম্য দেখা যায়।


 Table of Content

 

·          অ্যামাইনো এসিড

·          আমিষের উৎস

·          দেহে শোষণ

·          আমিষের অভাবজনিত রোগ

·          তথ্য কণিকা

অ্যামাইনো এসিড

অ্যামাইনো এসিড (Amino acid) হলো প্রোটিনের মূল গাঠনিক একক। প্রোটিন মূলত অ্যামাইনো এসিডের পলিমার জৈব এসিডের এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু অ্যামিনো মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়ার ফলে উৎপন্ন জৈব এসিডকে অ্যামিনো এসিড বলে। অর্থাৎ প্রোটিন বা আমিষকে ভাঙলে বা বিশ্লেষণ করলে যেসব উপাদান পাওয়া যায় তাদের অ্যামিনো এসিড বলে। প্রতিটি অ্যামাইনো অ্যাসিডে উপস্থিত মৌলগুলি হলো কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O), এবং নাইট্রোজেন (N) পর্যন্ত ২৮টি অ্যামাইনো এসিড আবিষ্কৃত হয়েছে প্রোটিন তৈরীতে ২০টি অ্যামাইনো এসিড অংশ গ্রহণ করে পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির শরীরে Amino Acid-এর সংখ্যা ২০টি। নন-প্রোটিন অ্যামাইনো এসিডের উদাহরণ- অরনিথিন, সাইট্রলিন, হেমোসেরিন ইত্যাদি।

দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ নাইট্রোজেনের সমতা রক্ষার জন্য অ্যামাইনো এসিড অত্যন্ত প্রয়োজন। কিছু কিছু অ্যামাইনো এসিডকে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড বলে। অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড দেহে তৈরি হয় না। খাদ্য থেকে অ্যামাইনো এসিডগুলো সংগ্রহ করতে হয়। অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড টি। যথাঃ লাইসিন, লিউসিন, আইসোলিউসিন, ভ্যালিন, মিথিওনিন, থ্রিওনিন, ট্রিপটোফ্যান, ফিনাইল অ্যালানিন, হিস্টিডিন। প্রাণীজ প্রোটিনে এই অপরিহার্য অ্যামাইনো এসিডগুলো থাকে বলে এর পুষ্টিমূল্য বেশি। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে এরা থাকেনা বলে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পুষ্টিমূল্য কম। অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিডের অভাব ঘটলে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন- বমি বমি ভাব, মূত্রে জৈব এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় না থাকা ইত্যাদি।

আমিষের উৎস

মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, শিমের বীচি, শুঁটকি মাছ, চিনাবাদাম ইত্যাদি থেকে আমরা আমিষ পাই। উৎস অনুযায়ী আমিষ দুই ধরনের: প্রাণিজ আমিষ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ।

প্রাণিজ আমিষ: যে আমিষগুলো প্রাণিজগৎ থেকে পাওয়া যায় তাদেরকে প্রাণিজ আমিষ বলে। যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, পনির, ছানা, কলিজা বা যকৃৎ ইত্যাদি প্রাণিজ আমিষ। এসব খাদ্যে দেহের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায়।

উদ্ভিজ্জ আমিষ: উদ্ভিদ জগৎ থেকে প্রাপ্ত আমিষকে উদ্ভিজ্জ আমিষ বলে। যেমন- ডাল, চিনাবাদাম, শিমের বীচি , সয়াবিন ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ আমিষ। একসময় ধারণা করা হতো এগুলো প্রাণিজ আমিষের তুলনায় কম পুষ্টিকর, কারণ উদ্ভিজ্জ আমিষে প্রয়োজনীয় সব কয়টি অ্যামাইনো এসিড থাকে না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উদ্ভিজ আমিষ প্রাণিজ আমিষের মতোই সকল অ্যামাইনো এসিড পর্যাপ্ত পরিমাণে ধারণ করে।

অনেক সময়, দুই বা ততোধিক উদ্ভিজ্জ আমিষ একত্রে রান্না করা যায়। কিন্তু এতে অ্যামাইনো এসিডের অনুপাতের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয় না।

দেহে শোষণ

খাদ্যের হজম প্রক্রিয়াকে পরিপাক বলে। খাদ্য গ্রহণের পর খাদ্য উপাদানের বৃহৎ জটিল অণুগুলো ক্ষুদ্র সরল অনুপাতে রূপান্তরিত হয়ে দেহে শোষিত হয়ে রক্তস্রোতে মিশে যায় এবং শরীরে পুষ্টি সাধন করে। ট্রিপসিন আমিষ জাতীয় খাদ্য হজমে সাহায্য করে। আংশিক পরিপাককৃত আমিষ ক্ষুদ্রান্ত্রে ট্রিপসিনের সাহায্যে ভেঙ্গে অ্যামাইনো এসিড সরল পেপটাইডে পণিত হয়।

সব আমিষ দেহে সমান পরিমাণে শোষিত হয় না। আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করার পর এর শতকরা যত ভাগ অন্ত্র থেকে দেহে শোষিত হয় তত ভাগকে সেই আমিষের সহজপাচ্যতার গুণক ধরা হয়। সহজপাচ্যতার উপর আমিষের পুষ্টিমান নির্ভর করে। যে আমিষ শতকরা ১০০ ভাগই দেহে শোষিত হয় এবং দেহের বৃদ্ধি ক্ষয়পূরণে কাজ করে তার সহজপাচ্যতার গুণক ১। এক্ষেত্রে আমিষ গ্রহণ এবং দেহের ধারণের পরিমাণ সমান। সহজ অর্থে বলতে গেলে যতটুকু আমিষ গ্রহণ করা হয় তার সম্পূর্ণটাই দেহের বৃদ্ধি ক্ষয়পূরণে কাজ করে। আর তা না হলে সহজপাচ্যতার গুণক হতে কম হয়। মায়ের দুধ ডিমের আমিষের সহজপাচ্যতার গুণক ১। অন্যান্য সব আমিষেরই সহজপাচ্যতার গুণক হতে কম।

আমিষের অভাবজনিত রোগ

খাদ্যে পরিমিত প্রয়োজনীয় জৈব আমিষ বা মিশ্র আমিষ না থাকলে শিশুর দেহে আমিষের অভাবজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগলে দেহের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। শিশুদের কোয়াশিয়রকর মেরাসমাস রোগ দেখা দেয়।

কোয়াশিয়রকর রোগের লক্ষণ

·         শিশুদের খাওয়ায় অরুচি হয়।

·         পেশি শীর্ণ দুর্বল হতে থাকে, চামড়া এবং চুলের মসৃণতা রং নষ্ট হয়ে যায়।

·         ডায়রিয়া রোগ হয়, শরীরে পানি আসে।

·         পেট বড় হয়।

উপযুক্ত চিকিৎসার দ্বারা রোগ নিরাময় হলেও দেহে মানসিক স্থবিরতা আসে। কোয়াশিয়রকর রোগ মারাত্মক হলে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

মেরাসমাস রোগের লক্ষণ

·         আমিষ ক্যালরি উভয়েরই অভাব ঘটে, ফলে দেহের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।

·         শরীর ক্ষীণ হয়ে অস্থিচর্মসার হয়।

·         চামড়া বা ত্বক খসখসে হয়ে ঝুলে পড়ে।

·         শরীরের ওজন হ্রাস পায়।

শিশুদের জন্য এরূপ অবস্থা বিপজ্জনক। এছাড়া প্রোটিনের অভাবে বয়স্কদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

তথ্য কণিকা

·         কোলাজেন: এক ধরনের প্রোটিন।

·         প্রোটিনের প্রধান কাজঃ দেহের বৃদ্ধি সাধন ক্ষয়পূরণ করে।

·         Natural Protein-এর কোড নাম: Protein P-49

·         দীর্ঘদিন একটানা খেসারি ডাল খেলে কোন রোগ হতে পারে: খেসারি ডালে BOAA নামক এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা ' ল্যাথারাইজম' রোগের জন্য দায়ী।

·         কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন চারটি মৌলের সমন্বয়ে আমিষ তৈরি হয়।

·         প্রাণী দেহের গঠন প্রোটিন অপরিহার্য। দেহকোষের বেশিরভাগই প্রোটিন দিয়ে তৈরি।

·         দেহের হাড়, পেশি, লোম, পাখির পালক, নখ, পশুর সিং এগুলো সবই প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়।

·         প্রাণীদেহের ওজনের প্রায় ৫০% হচ্ছে প্রোটিন।

·         ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন পাওয়া যায়।

·         অ্যান্টিবডি উপাদানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে- আমিষ।

·         হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে- আমিষ।

·         মাতৃদুগ্ধ তৈরি করে- আমিষ।

 

শর্করা বা শ্বেতসার | Sugar

 

আমরা নাস্তায় রুটি, মুড়ি, চিড়া, পাঁউরুটি ইত্যাদি খাই। এগুলো শর্করা জাতীয় খাদ্য। শর্করা শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যের বিভিন্ন উপাদানগুলোর মধ্যে শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। শর্করা সহজপাচ্য। সব শর্করাই কার্বন, হাইড্রোজেন অক্সিজেন এই তিনটি মৌলিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। শর্করা দেহের কর্মক্ষমতা বোপায়। গ্লুকোজ এক ধরনের সরল শর্করা। শর্করা, স্নেহ আমিষের মধ্যে শর্করা সর্বাপেক্ষা সহজপাচ্য। দেহে শোষিত হওয়ার পর শর্করা খুব কম সময়ে তাপ উৎপন্ন করে দেহে শক্তি যোগায়। গ্রাম শর্করা কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে। মানবদেহে প্রায় ৩০০-৪০০ গ্রাম শর্করা জমা থাকতে পারে। পরিমাণ শর্করা ১২০০-১৬০০ কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে দেহের শক্তি যোগায়। বয়স, দেহের ওজন, উচ্চতা, পরিশ্রমের মাত্রার উপর শর্করার চাহিদা নির্ভর করে। একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের দৈনিক শর্করার চাহিদা তার দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের . গ্রাম হয়ে থাকে। একজন ৬০ কেজি ওজনের পুরুষ মানুষের গড়ে দৈনিক শর্করার চাহিদা = (৬০×.) গ্রাম বা ২৭৬ গ্রাম। আমাদের মোট প্রয়োজনীয় ক্যালরির শতকরা ৬০-৭০ ভাগ শর্করা হতে গ্রহণ করা দরকার।


 

শর্করার শ্রেণিবিভাগ

রাসায়নিক গঠনপদ্ধতি অনুসারে সব শর্করাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। একটি মাত্র শর্করা অণু দিয়ে গঠিত হয় মনোস্যাকারাইড। একে সরল শর্করাও বলে। দ্বি-শর্করা বহু শর্করা পরিপাকের মাধ্যমে সরল শর্করায় পরিণত হয়ে দেহের শোষণযোগ্য হয়। মানবদেহ পরিপুষ্টির জন্য সরল শর্করা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানবদেহ শুধুমাত্র সরল শর্করা গ্রহণ করতে পারে। গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, গ্যালাকটোজ তিনটি শর্করার মধ্যে গ্লুকোজ রক্তের মাধ্যমে সারা দেহে পরিবাহিত হয়।

সকল কার্বোহাইড্রেট কার্বন, অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত একপ্রকার জৈব যৌগ যার মধ্যে কার্বনের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে শর্করা তিন প্রকার, যথা-

. মনোস্যাকারাইড: শর্করা জগতে এরা সবচেয়ে ক্ষুদ্র একক। যাদের আর্দ্র বিশ্লেষণ বা পানি বিয়োজন করলে অন্য কোন শর্করা পাওয়া যায় না, তাকে মনোস্যাকারাইড বলে। এটি এক মনোমার বিশিষ্ট শর্করা যেমনঃ গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, গ্যালাকটোজ।

. ডাইস্যাকারাইডঃ যে শর্করাকে আর্দ্র বিশ্লেষণ বা পানি বিয়োজন করলে ২টি মনোস্যাকরাইড পাওয়া যায়, তাকে ডাইস্যাকারাইড বলে। এটি দুই মনোমার বিশিষ্ট শর্করা যেমন: সুক্রোজ, ল্যাক্টোজ, ম্যালটোজ ইত্যাদি।

·         অণু সুক্রোজ = অণু গ্লুকোজ + অণু ফ্রুক্টোজ।

·         অণু ম্যালটোজ = অণু গ্লুকোজ

·         অণু ল্যাকটোজ = অণু গ্লুকোজ + অণু গ্যালাকটোজ

. ওলিগোস্যাকারাইডঃ যে শর্করাকে আর্দ্র বিশ্লেষণ বা পানি বিয়োজন করলে থেকে ১০টি মনোস্যাকারাইড পাওয়া যায় তাকে ওলিগোস্যাকারাইড বলে। যেমনঃ ম্যালটোট্রায়োজ, ্যাবিনোজ ইত্যাদি।

. পলিস্যাকারাইডঃ যে শর্করাকে আর্দ্র বিশ্লেষণ বা পানি বিয়োজন করলে করলে ১০টির অধিক মনোস্যাকারাইড পাওয়া যায়, তাকে পলিস্যাকারাইড বলে। এটি বহু মনোমার বিশিষ্ট শর্করা যেমন: গ্লাইকোজেন, স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি। মূলত ওলিগোস্যাকারাইড এবং পলিস্যাকারাইড একই কারণ উভয়ই দুইয়ের অধিক মনোমার বিশিষ্ট শর্করা

স্বাদের ভিত্তিতে শর্করা দুই প্রকার, যথা- সুগার এবং ননসুগার সকল মনোস্যাকারাইড এবং অলিগোস্যাকারাইড শর্করা হলো সুগার শর্করা যেমনঃ গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, গ্যালাক্টোজ, সুক্রোজ ইত্যাদি। আবার সকল প্রকার ননসুগার শর্করা হলো পলিস্যাকারাইড শর্করা যেমনঃ স্টার্চ, সেলুলোজ ইত্যাদি।

বিজারণ ক্ষমতার ভিত্তিতে সকল শর্করা প্রকার যথা- বিজারক শর্করা এবং অবিজারক শর্করা

শর্করার অভাবজনিত রোগ

আহারে কম বা বেশি শর্করা গ্রহণ উভয়ই দেহের জন্য ক্ষতিকর। শর্করার অভাবে অপুষ্টি দেখা দেয়। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে দেহে বিপাক ক্রিয়ার সমস্যা সৃষ্টি হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে হাইপোগ্লাইমিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন- ক্ষুধা অনুভব করা, বমি বমি ভাব, অতিরিক্ত ঘামানো, হৃৎকম্পন বেড়ে বা কমে যাওয়া।

শর্করার উৎস

·         শ্বেতসার বা স্টার্চ: চাল, গম, ভুট্টা অন্যান্য দানা শস্য স্টার্চের প্রধান উৎস। ছাড়াও আলু, রাঙা আলু কচু,আখ ইত্যাদি এর প্রধান উৎস।

·         গ্লুকোজ: এটি চিনির তুলনায়, মিষ্টি কম। এই শর্করাটি আঙুর, আপেল, গাজর, খেজুর ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।

·         ফ্রুকটোজ: আম, পেঁপে, কলা, কমলালেবু প্রভৃতি মিষ্টি ফলে ফুলের মধুতে থাকে।

·         সুক্রোজ: আখের রস, চিনি, গুড়, মিসরি এর উৎস।

·         সেলুলোজ: বেল, আম, কলা, তরমুজ, বাদাম, শুকনা ফল এবং সব ধরনের শাক সবজিতে থাকে।

·         ল্যাকটোজ বা দুধ শর্করা : গরু, ছাগল অন্যান্য প্রাণীর দুধে থাকে।

·         গ্লাইকোজেন : পশু পাখি জাতীয় মুরগি ,কবুতর যকৃৎ মাংসে থাকে।

তথ্য কণিকা

·         গ্লুকোজের রাসায়নিক সংকেত: C6H12O6

·         গ্লুকোজের স্থুলসংকেত: CH2O

·         ইক্ষুচিনি বা বিটাচিনির রাসায়নিক নাম: সুক্রোজ।

·         অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য উদ্ভিদ দেহে কি হিসাবে জমা থাকে: স্টার্চ।

·         অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাদ্য প্রাণীদেহে কি হিসাবে জমা থাকে: গ্লাইকোজেন।

·         গ্লাইকোজেন কোথায় জমা থাকে: যকৃতে (Liver)

·         শর্করা জাতীয় খাদ্যের উৎস: চাল, আটা, আলু, ভুট্টা, চিনি, গুড়, মধু, সবজি ইত্যাদি।

·         সিদ্ধ চালে কি পরিমাণ শ্বেতসার থাকে: চাল একটি শ্বেতসার জাতীয় পদার্থ। সিদ্ধ চাল সহজপাচ্য একটি শর্করা/শ্বেতসার উৎস। সিদ্ধাচালের ৭৯% শ্বেতসার পদার্থ থাকে।

·         দুধের শ্বেতসার অংশকে ল্যাকটোজ বলে 

·         দুধকে জমাট বাঁধায়: রেনিন।

·         দুধ ফেটে যায় কেন: সদ্য দোহন করা দুধের অম্লের পরিমাণ কম থাকে। অবস্থায় বেশিক্ষণ রাখলে দুধের ল্যাকটোজ উপাদানটি ল্যাকটিক এসিডে পরিণত হয়। ফলে দুধের অম্লের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং দুধ ফেটে যায়।

·         বাংলাদেশের গুঁড়া দুধের জন্য তেজস্ক্রিয়তার গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা: বাংলাদেশে গুঁড়া দুধের জন্য তেজস্ক্রিয়তার সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা হচ্ছে ৩০০ বিকিউ। মাত্রা দ্বারা বোঝা যায় এক কিলোগ্রাম গুঁড়া দুধে প্রতি সেকেন্ডে ৩০০টি করে পরমাণু ভাঙতে থাকে।

·         পাস্তুরায়ন: কোনো পদার্থ বিশেষ করে দুধকে জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়াকে পাস্তুরায়ন বলে। পাস্তুরায়ন অর্থ আংশিক নির্জীব। দুধকে ৩০ মিনিট ধরে 145° থেকে 150° ফারেনহাইট তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে হঠাৎ 50° ফারেনহাইট তাপমাত্রায় নামিয়ে আনলে দুধ জীবাণুমুক্ত হয়। বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন বলে এর নাম পাস্তুরায়ন।

·         মানবদেহে সেলুলোজ পরিপাক হয়না কেন: মানবদেহের অন্ত্রে সেলুলোজ পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক নেই।

·         সেলুলোজ জাতীয় খাবার গ্রহণের গুরুত্ব: কোষ্টকাঠিন্য দূর হয়।

·         ফ্রুক্টোজ সুগারের জন্য পাকা আম মিষ্টি হয়। আর পাকা যেকোন ফলেই এই কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এর স্বাদ হলো মিষ্টি। কিন্তু, কাঁচা আমে বিভিন্ন জৈব এসিড থাকে যেমনঃ সাক্সিনিক এসিড, ম্যালিক এসিড ইত্যাদির উপস্থিতি থাকে যার ফলে কাঁচা আম খেতে টক লাগে।

·         মায়ের দুধে গরুর দুধের চাইতে কার্বোহাইড্রেট উপাদান বেশি থাকে। মায়ের দুধ গরুর দুধে কার্বোহাইড্রেট (ল্যাকটোজ) এর পরিমাণ যথাক্রমে .% .% অন্যদিকে মায়ের দুধ গরুর দুধে ফ্যাট প্রোটিনের পরিমাণ যথাক্রমে .% .% এবং .২৫% .%

·         খাদ্যের হজম প্রক্রিয়াকে পরিপাক বলে। যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্যের জটিল পুষ্টি উপাদান যেমন- শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, আমিষ বা প্রোটিন এবং চর্বি বা ফ্যাট জাতীয় খাদ্যগুলো ভেঙে সরল দ্রবণীয় হয়ে দেহে শোষিত হয় তাকে পরিপাক ক্রিয়া বলে। প্রোটিন চর্বি জাতীয় খাদ্যের পরিপাক শুরু হয় পাকস্থলী থেকে। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যের পরিপাক শুরু হয় মুখবিবর থেকে