ধ্বনিতত্ত্ব ( Phonology), মৌলিক স্বরধ্বনি :,ব্যঞ্জনধ্বনি,অঘোষ ধ্বনি ,ঘোষ ধ্বনি, বাংলা বর্ণমাল্‌

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা ২য় প্ত্র

ধ্বনিতত্ত্ব ( Phonology)

 

ধ্বনি: ভাষার ক্ষুদ্রতম একক মানুষ যা বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারণ করে থাকে, তারে ধ্বনি বলে।

 

যেমন- , , , , ইত্যাদি।

 

বর্ণ: ধ্বনির লিখিত রূপ বা সাংকেতিক চিহ্নকে বর্ণ বলে।

 

যেমন- , , , ইত্যাদি।

 

অক্ষর: প্রশ্বাসের ক্ষুদ্রতম প্রয়াসে উচ্চারিত ধ্বনিকে অক্ষর বলে। অর্থাৎ এক ধাক্কার

 

উচ্চারিত ধ্বনিই অক্ষর।

 

যেমন- , , , , বক, জল, ফল, কাল ইত্যাদি।

 

শব্দ: অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা বর্ণসমষ্টিকেই শব্দ বলে। অর্থাৎ, একাধিক ধ্বনি বা বর্ণ একরে মিলিত হয়ে কোন নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করলে ধ্বনি বা বর্ণসমষ্টিকে শব্দ বলে। যেমনবই, খাতা, মানুষ, নদী, পৃথিবী ইত্যাদি

 

পদ: বাক্যে ব্যবহৃত অর্থপূর্ণ এবং বিভক্তিযুক্ত প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলে। অর্থাৎ, শব্দ যখন বিভক্তি সহযোগে বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে পদ বলে।

 

যেমনঅন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে প্রাণ

 

বাগ্যন্ত্র:

 

মানবদেহের যেসব প্রত্যঙ্গ ধ্বনির উচ্চারণের সঙ্গে যুক্ত সেগুলোকে বাগযন্ত্র বা বাক্প্রত্যক্ষ (speech organ / vocal organ) বলে। শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া আর খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি এগুলোর সাহায্যে মানুষ কথাবার্তা বলার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করে। বাগ্যন্ত্র বলতে শরীরের উপরিভাগে অবস্থিত মধ্যচ্ছদা থেকে ঠোঁট পর্যন্ত শ্বাসবাহী বিশেষ প্রত্যঙ্গগুলোকে বুঝায়। কিন্তু বাস্তবে এর পরিধি আরো ব্যাপক। কেন্দ্রীয় প্রান্তিক স্নায়ুতন্ত্রও বাগ্ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে।  

 

 

ধ্বনি, বর্ণ বাগযন্ত্র

 

ভাষার মুল উপাদান হচ্ছে ধ্বনি মানুষের বাক -প্রত্যঙ্গ অর্থাৎ কণ্ঠনালী, মুখবিরর, জিহ্বা ,আল- জিহ্বা, কোমল তালু, দাঁত মাড়ি, চোয়াল, ঠোঁট, নাক,ফুস্ফুস ইত্যাদির সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলা হয়।

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশ কোনটি

ধ্বনি

রূপ

বর্ণ

কোনটিই নয়

 

ধ্বনি

কোনো ভাষার বাক্ প্রবাহকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতগুলো মৌলিক ধ্বনি (Sound) পাই। বাংলা ভাষাতেও কতগুলো মৌলিক ধ্বনি আছে। বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনিগুলোকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয় : . স্বরধ্বনি . ব্যঞ্জনধ্বনি।

 

. স্বরধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel sound) যেমন, , , ইত্যাদি।

 

. ব্যঞ্জনধ্বনি : যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant sound) যেমন- , , , , ইত্যাদি।

 

বর্ণ : ধ্বনি নির্দেশক চিহ্নকে বলা হয় বর্ণ (Letter) |

 

স্বরবর্ণ : স্বরধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় স্বরবর্ণ। যেমন- , , , , , ইত্যাদি।

 

ব্যঞ্জনবর্ণ : ব্যঞ্জনধ্বনি দ্যোতক লিখিত সাংকেতিক চিহ্নকে বলা হয় ব্যঞ্জনবর্ণ। যেমন- ইত্যাদি। বর্ণমালা : যে কোনো ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা (Alphabet) বলা হয়।

 

বিশেষ জ্ঞাতব্য : উচ্চারণের সুবিধার জন্য বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি '' স্বরধ্বনিটি যোগ করে উচ্চারণ করা হয়ে থাকে। যেমন - ক্ + = , ইত্যাদি। স্বরধ্বনি সংযুক্ত না হলে অর্থাৎ উচ্চারিত ব্যঞ্জনের নিচেহস্' বা 'হল' চিহ্ন (.) দিয়ে লিখিত হয়।

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.মহাপ্রাণ ধ্বনি কোনটি?

 

#.'শরীর > শরীল এটি কোন ধরণের ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ?

 

ব্যঞ্জনচুত্য

সম্প্রকর্ষ

সমীকরণ

বিষমীভবন

 

#.মৌলিক স্বরধ্বনি কোনটি?

 

#.'সত্য > সইত্য' কোন ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ?

 

অপিনিহিতি

বিপ্রকর্ষ

সম্প্রকর্ষ

আসমীকরণ

 

#.বাংলা স্বরধ্বনিতে দীর্ঘস্বর কয়টি?

 

৭টি

৫টি

টি

টি

 

স্বরধ্বনিযে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel sound) স্বরবর্ণ : (১১টি)

 

 

 হৃস্ব স্বরধ্বনি:

 

যে স্বরকে উচ্চারণ করতে কম সময় কম শ্বাসবায়ু লাগে, তাকে হ্রস্বস্বর বলে।

 

 হৃস্বস্বর কোনগুলি?

 

 , ,, - বাংলা বর্ণমালার এই চারটি স্বর হ্রস্বস্বর।

 

 

 

দীর্ঘ স্বরধ্বনি

 

 যে স্বরকে উচ্চারণ করতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় বেশি শ্বাসবায়ু লাগে তাকে দীর্ঘস্বর বলে।

 

 দীর্ঘস্বর কোনগুলি?

 

 বাংলা বর্ণমালার , ,, , এইগুলি দীর্ঘস্বর।

 

সুতরাং বোঝা গেল বাংলা বর্ণমালায় যে ১১টি স্বর আছে, তার মধ্যে ৫টি দীর্ঘস্বর, ৪টি হ্রস্বস্বর ২টি যৌগিক স্বর। তবে মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষায় দীর্ঘ স্বরের প্রকৃত উচ্চারণ হয় না, সব স্বরই সাধারণ উচ্চারণে হ্রস্বস্বর হিসেবেই উচ্চারিত হয়।

 

 

 

মৌলিক স্বরধ্বনি :

একটিমাত্র মূল স্বরধ্বনিকে মৌলিক স্বরধ্বনি বলে। মৌলিক স্বরধ্বনি মোট সাতটি। যেমন : , , , , , এ্যা, ও। এগুলোকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাগ করা যায় না। বাংলা ভাষায়এ্যাধ্বনিটি থাকলেও তার জন্য কোনো বর্ণ নেই।

 

 

 

যৌগিক স্বরধ্বনি

 

যৌগিক স্বরধ্বনি

যদি পাশাপাশি দুটি স্বরধ্বনি দ্রুত উচ্চারণের ফলে একটি যুক্তধ্বনিতে রূপ নেয়, তবে তাকে যৌগিক স্বরধ্বনি বলে। যেমন : + = , + = ঔ। এসব ধ্বনিকে দ্বিস্বর, সন্ধিস্বর বা যৌগিক স্বরও বলা হয়। বাংলা বর্ণমালায় শুধু এবং - দুটি যৌগিক বর্ণকে মৌলিক বর্ণের মতো স্থান দেওয়া হয়েছে। বাংলা ভাষায় যৌগিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ২৫টি। + = অই (বই)

 

+ = অয় (হয়, সয়)

 

+ = আই (খাই, নাই, ভাই)

 

+ = আয় (গায়, যায়)

 

সম্মুখস্থ বা প্রসারিত স্বরধ্বনি

 

সম্মুখ

এক্ষেত্রে জিহ্বার সামনের দিকটা তালুর দিকে উত্থিত হবে। এই জাতীয় মৌলিক স্বরবর্ণগুলো হলো- , এবং এ্যা

 

 

পশ্চাৎভাগস্থ স্বরধ্বনি কাকে বলে :-

 

 যে সব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা পিছনের দিকে পিছিয়ে যায়, তাকে পশ্চাৎ ভাগস্থ স্বরধ্বনি বলে। যেমন- , , অ৷

 

 

কুঞ্চিত স্বরধ্বনি

 

কুঞ্চিত স্বরধ্বনি কাকে বলে :-

 

 যে সব স্বর ধ্বনিগুলো উচ্চারণের সময় ঠোঁট দুটি গোলাকার কুঞ্চিত হয়, তাকে কুঞ্চিত স্বরধ্বনি বলা হয়। যেমন- , , ও।

 

 

সংবৃত স্বরধ্বনি

 

সংবৃত (Close) :

 

 জিহ্বা তালুর কাছাকাছি এনে বায়ু চলাচলের জন্য একটি সঙ্কীর্ণ পথ তৈরি করা হয়। এই অবস্থায় উচ্চারিত ধ্বনিগুলোকে সংবৃত বলা হয়। তালু সংলগ্ন ধ্বনি হিসাবে এদেরকে তালব্য বর্ণ বলা হয়। এক্ষেত্রে ঠোঁট প্রসারিত থাকে। পাশের চিত্রে সংবৃত উচ্চারণে জিহ্বার অবস্থান দেখানো হলো। লক্ষ্য করুন, এখানে ধ্বনিটির জন্য জিহ্বার সম্মুখভাগ প্রায় তালু সংলগ্ন হয়েছে এবং ধ্বনিটির জন্য জিহ্বার পশ্চাত্ভাগ প্রায় পশ্চাৎ তালুর সংলগ্ন হয়েছে।

 

 

বিকৃত স্বরধ্বনি

 

বিবৃত (Open) :

 

এই জাতীয় ধ্বনি উচ্চারণে জিহ্বা তালুর ভিতর সব চেয়ে বেশি ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। মুখ প্রসারিত করে এই ফাঁকা জায়গার পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাংলাতে এই জাতীয় স্বরবর্ণটি হলো আ। এক্ষেত্রে জিহ্বা স্বাভাবিকভাবে নিম্ন চোয়াল বরাবর শায়িত থাকবে। দীর্ঘ বা হ্রস্ব হিসাবে এর কোন পরিবর্তন ঘটবে না। আরবি ভাষার গলকক্ষ থেকে উচ্চারিত ধ্বনিটির ক্ষেত্রেও একই রীতি অনুসৃত হবে। কখনো কখনো জিহ্বার পশ্চাৎ অংশ ভিতরের দিকে সংকুচিত করে ধ্বনিটি উচ্চারণ করা হয়। এই ধ্বনিটিও বাংলাতে নেই। পাশের চিত্রে বিবৃত অবস্থায় ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অবস্থান দেখানো হল।

 

কণ্ঠ্যধ্বনি কি :-

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠনালির উপরিভাগ বা জিহ্বামূল, তাদের কণ্ঠ্যধ্বনি বলে। যেমন- আ।

 

 

 

তালব্যধ্বনি কি :-

 

 যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান তালু, তাদের তালব্য ধ্বনি বলে। যেমন- , , তালব্যধ্বনি।

 

 

 

ওষ্ঠ্যধ্বনি:-

 

 যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান ওষ্ঠ, তাদের ওষ্ঠ্যধ্বনি বলে। যেমন:-

 

 , ,

 

 

কণ্ঠ্যতালব্যধ্বনি

 

কণ্ঠ্যতালব্যধ্বনি :-

 

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠ এবং তালু উভয়ই, তাদের কণ্ঠ্যতালব্য ধ্বনি বলে। যেমন- কণ্ঠ্যতালব্য ধ্বনি।

 

 

 

 

কণ্ঠৌষ্ঠ্যধ্বনি :-

 

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান কণ্ঠ ওষ্ঠ, তাদের কণ্ঠৌষ্ঠ্য ধ্বনি বলে। যেমন- , কণ্ঠৌষ্ঠ্য ধ্বনি।

 

 

মূর্ধন্য ধ্বনি :-

 

যে সমস্ত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান মূর্ধা বা তালুর অর্থভাগ, তাদের মূর্ধন্য ধ্বনি বলে। যেমন-

 

 

ব্যঞ্জনধ্বনি যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant sound) যেমন- , , , , ইত্যাদি

 

 

স্পর্শ ধ্বনি বা স্পর্শ বর্ণ

 

থেকে পর্যন্ত পাঁচটি বর্গে মোট পঁচিশটি ধ্বনি। এসব ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার সঙ্গে অন্য বাগযন্ত্রের কোনো কোনো অংশের কিংবা ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে; অর্থাৎ এদের উচ্চারণে বাপ্রত্যঙ্গের কোথাও না কোথাও ফুসফুসতাড়িত বাতাস বাধা পেয়ে বেরিয়ে যায়। বাধা পেয়ে স্পষ্ট হয় বলে এগুলোকে বলে স্পর্শ ধ্বনি।

 

 

বর্গীয় ধ্বনি

 

-বর্গীয় ধ্বনি : পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ জিহ্বার গোড়ার দিকে নরম তালুর পশ্চাৎ ভাগ স্পর্শ করে। এগুলো জিহ্বামূলীয় বা কণ্ঠ্য স্পর্শধ্বনি।

 

 

বর্গীয় ধ্বনি

 

-বর্গীয় ধ্বনি : পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগ চ্যাপটাভাবে তালুর সম্মুখ ভাগের সঙ্গে ঘর্ষণ করে। এদের বলা হয় তালব্য স্পর্শধ্বনি।

 

 

বর্গীয় ধ্বনি

 

-বর্গীয় ধ্বনি : - পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগ কিঞ্চিৎ উল্টিয়ে ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশকে স্পর্শ করে। এগুলোর উচ্চারণে জিহ্বা উল্টা হয় বলে এদের নাম দন্তমূলীয় প্রতিবেষ্টিত ধ্বনি। আবার এগুলো ওপরের মাড়ির গোড়ার শক্ত অংশ অর্থাৎ মূর্ধায় স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় বলে এদের বলা হয় মূর্ধন্য ধ্বনি।

 

 

বর্গীয় ধ্বনি

 

-বর্গীয় ধ্বনি : পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে জিহ্বা সম্মুখে প্রসারিত হয় এবং অগ্রভাগ ওপরের দাঁতের পাটির গোড়ার দিকে স্পর্শ করে। এদের বলা হয় দন্ত্য ধ্বনি

 

 

বর্গীয় ধ্বনি

 

-বর্গীয় ধ্বনি : পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে ওষ্ঠের সঙ্গে অধরের স্পর্শ ঘটে। এদের ওষ্ঠ্যধ্বনি বলে।

 

 

অঘোষ ধ্বনি

 

অঘোষ ধ্বনিকোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না। তখন ধ্বনিটির উচ্চারণ গাম্ভীর্যহীন মৃদু হয়। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় অঘোষ ধ্বনি (Unvoiced) যেমন, ইত্যাদি। ঘোষ ধ্বনি ইত্যাদি। 

 

 

ঘোষ ধ্বনি

 

ঘোষ: ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হলে ঘোষ ধ্বনি (Voiced) হয়। যেমন,

 

 

অল্পপ্রাণ ধ্বনি

 

অল্পপ্রাণ ধ্বনিকোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয় না। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় অল্পপ্রাণ ধ্বনি (Unaspirated) যেমন, ইত্যাদি

 

 

মহাপ্রাণ ধ্বনি

 

মহাপ্রাণ ধ্বনি : কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয়। এরূপ ধ্বনিকে বলা হয় মহাপ্রাণ ধ্বনি (Aspirated) যেমন, ইত্যাদি।

 

 

আনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ

 

পাঁচটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণে নাক মুখ দিয়ে কিংবা কেবল নাক দিয়ে ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বের হয় বলে এদের বলা হয় নাসিক্য ধ্বনি এবং প্রতীকী বর্ণগুলোকে বলা হয় নাসিক্য বর্ণ

 

 

উষ্ম ধ্বনি বা উষ্ম বর্ণ

 

উষ্মধ্বনি : যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে বাতাস মুখবিবরে কোথাও বাধা না পেয়ে কেবল ঘর্ষণপ্রাপ্ত হয় এবং শিশধ্বনির সৃষ্টি করে, সেটি উষ্মধ্বনি। যেমনআশীষ, শিশি, শিশু ইত্যাদি। শিশ দেয়ার সঙ্গে এর সাদৃশ্য রয়েছে বলে একে শিশধ্বনিও বলা হয়।

, , তিনটি উষ্ম বর্ণ। -বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান পশ্চাৎ দন্তমূল। -বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির - উচ্চারণ স্থান মূর্ধা এবং -বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনির উচ্চারণ স্থান দত্ত।

 

 

অন্তঃস্থ ধ্বনি বা অন্তঃস্থ বর্ণ

 

অন্তঃস্থ ধ্বনি : স্পর্শ বা উষ্ম ধ্বনির অন্তরে অর্থাৎ মাঝে আছে বলে - ধ্বনিগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয় আর বর্ণগুলোকে বলা হয় অন্তঃস্থ বর্ণ।

-বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি সাধারণত সম্মুখ তালু স্পর্শ করে উচ্চারিত হয়। এজন্য ধ্বনিটিকে বলা হয় তালব্য ধ্বনি। শব্দের আদিতে ব্যবহৃত হলে বাংলায় এর উচ্চারণ'-এর মতো। যেমন - যখন, যাবেন, যুদ্ধ, যম ইত্যাদি। শব্দের মধ্যে বা অন্তে (সংস্কৃত নিয়মানুযায়ী) ব্যবহৃত হলেয়উচ্চারিত হয়। যেমন – 1 বি + যোগ = বিয়োগ

 : -বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি জিহ্বার অগ্রভাগকে কম্পিত করে এবং তদ্বারা দন্তমূলকে একাধিকবার দ্রুত আঘাত করে উচ্চারিত হয়। জিহ্বাগ্রকে কম্পিত করা হয় বলে ধ্বনিকে কম্পনজাত ধ্বনি বলা হয়। উদাহরণ রাহাত, আরাম, বাজার ইত্যাদি।

 : -বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি উচ্চারণে জিহ্বার অগ্রভাগকে মুখের মাঝামাঝি দত্তমূলে ঠেকিয়ে রেখে জিহ্বার দুই পাশ দিয়ে মুখবিবর থেকে বায়ু বের করে দেয়া হয়। দুই পাশ দিয়ে বায়ু নিঃসৃত হয় বলে একে পার্শ্বিক ধ্বনি বলা হয়। যেমনলাল, লতা, কলরব, ফল, ফসল।

 : বাংলা বর্ণমালায় বর্গীয়- এবং অন্তঃস্থ--এর আকৃতিতে কোনো পার্থক্য নেই। আগে বর্গীয় অন্তঃস্থ- দুই রকমের -এর লেখার আকৃতিও পৃথক ছিল, উচ্চারণও আলাদা ছিল। এখন আকৃতি উচ্চারণ অভিন বলে অন্তঃস্থ- কে বর্ণমালা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। প্রকৃত প্রস্তাবে অন্তস্থ অন্তঃস্থ’- দুটো অবস্বর (Semivowel) প্রথমটি অয় বা ইয় (y) এবং দ্বিতীয়টি অব বা অও (w)- মতো। যেমন নেওয়া, হওয়া ইত্যাদি

 

 

 

তালব্যধ্বনি :-

 

যেসব ধ্বনির উচ্চারণস্থান তালু, তাদের তালব্যধ্বনি বলে। , , , , , য়, ভালব্যধ্বনি।

 

 

 

তাড়নজাত ব্যঞ্জন ধ্বনি –  

 

ড় এবং ঢ় কে তাড়নজাত ব্যঞ্জন ধ্বনি বলে। কারণ ধ্বনি দুটি উচ্চারণকালে জিডের অগ্রভাগ উলটে দিয়ে দন্তমূলে আঘাত করে। তাই এদের বলা হয় তাড়নজাত বঞ্জন ধ্বনি।

 

 

 

পার্শ্বিক ব্যঞ্জন ধ্বনি – 

 

' কে পার্শ্বিক ব্যঞ্জন ধ্বনি বলে।

 

 

 

কম্পনজাত ধ্বনি – 

 

, , , কে কম্পনজাত ধ্বনি বলে।

 

 

 

অনুনাসিক ধ্বনি

 

নাসিক্য ধ্বনি

 

 , ধ্বনি গুলি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায় নাসিকার ভিতর দিয়ে নির্গত হয় বলে এদের নাসিকা ধ্বনি বা অনুনাসিক ধ্বনি বলে

 

 

বর্ণমালা

 

বর্ণ হচ্ছে ধ্বনি নির্দেশক প্রতীক, অর্থাৎ ধ্বনি নির্দেশক চিহৃকে বলা হয় বর্ণ একটি ধ্বনিতে একটি প্রতীক বা বর্ণ থাকে "ধ্বনি দিয়ে আঁট বাধা শব্দেরই ভাষার ইট এখানে ইট বা কোষ হচ্ছেবর্ণ

 

 বাংলা বর্ণমালা

বাংলা বর্ণমালায় মোট পঞ্চাশ (৫০)টি বর্ণ রয়েছে। তার মধ্যে স্বরবর্ণ এগার (১১)টি এবং ব্যঞ্জনবর্ণ ঊনচল্লিশটি (৩৯)টি।

. স্বরবর্ণ : (১১টি)

. ব্যঞ্জনবর্ণ : (৫টি)

                       (৫টি)

 

                        (৫টি)

                        (৫টি)

 

                      (৫টি)

                               (৩টি)

                           (৪টি)

                        ড় ঢ় য়    (৪টি)

 

                             মোট ৫০টি

বিশেষ জ্ঞাতব্য : , - দুটি দ্বিস্বর বা যৌগিক স্বরধ্বনির চিহ্ন। যেমন – . + = , + =

 

 

Mark as Completed

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

#.কোন বর্ণগুচ্ছকে উচ্চবর্ণ বলে।

 

কচটতপ

ঠথ

ড়

 

#.দুটি সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে কি বলে?

 

সমীভবন

বিষমীভবন

অসমীভবন

পরাগত

 

#.যুক্তবর্ণষ্ণএর জন্য কোনটি ঠিক?

 

ষ্+

ষ্+

+

+

 

#.' থেকে ' পর্যন্ত বর্ণ কয়টি?

 

২৩টি

২৪টি

২৫টি

২৬টি

 

#.বাংলা ভাষায় স্বরবর্ণসহ মোট বর্ণ কতটি?

 

৪৮টি

৪৯টি

৫১টি

৫০ টি

যুক্তবর্ণ

 

কতিপয় সংযুক্ত ব্যঞ্জন বর্ণ

দুই বর্ণের যুক্ত :

ক্ক =ক্‌+ক। যেমনপাক্কা, ছক্কা, চক্কর।

ক্ত = ক্+ত। যেমন- রক্ত, শক্ত, ভক্ত।

ক্ষ= ক্+ষ। (উচ্চারণ ক্ +-এর মতো) যেমনশিক্ষা, বক্ষ, রক্ষা।

ক্স= ক্‌+স। বাক্স

= +ক। যেমন- অঙ্ক, কঙ্কাল, লঙ্কা।

= +খ। যেমনশৃঙ্খলা, শঙ্খ

ঙ্গ= +গ। যেমন- অঙ্গ, মঙ্গল, সঙ্গীত।

ঙ্ঘ = +ঘ। যেমনসঙ্ঘ, লঙ্ঘন।

চ্চ= চ্ +চ। যেমন- উচ্চ, উচ্চারণ, উচ্চকিত।

চ্ছ= চ্+ছ। যেমনউচ্ছল, উচ্ছৃঙ্খল, উচ্ছেদ

জ্জ= জ্+জ। যেমনউজ্জীবন, উজ্জীবিত

জ্ঝ= জ্+ঝ। যেমন- কুঞ্ঝটিকা।

জ্ঞ= জ্ +ঞ। যেমন- উচ্চারণগ্য’— এর মতো) যেমন- জ্ঞান, সংজ্ঞা, বিজ্ঞান

ঞ্চ ঞ্চ = + যেমন- অঞ্চল, সঞ্চয়, পঞ্চম।

ঞ্ছ= +ছ। যেমন-বাঞ্ছিত, বাঞ্ছনীয়, বাঞ্ছা

ঞ্জ= ঞ্+জ। যেমন- গঞ্জ, রঞ্জন,

 

ঞ্ঝ= +ঝ। যেমন- ঝঞ্ঝা, ঝঞ্ঝাট।

[ বি. দ্র. উপর্যুক্ত চারটি সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণহলে লেখার সময় কখনো ন্ (অন্চল), ন্ (বান্ছা), ন্ (গন্জ), নঝ (ঝন্ঝা) রূপে লেখা ঠিক নয়।

 

ট্ট= ট্ +ট। যেমন- অট্টালিকা, চট্টোপাধ্যায়, চট্টগ্রাম = ড্‌ +ড। যেমন- গড্ডালিকা, উড্ডীন, উড্ডয়ন।

ণ্ট= ণ্+ট। যেমনঘণ্টা, বণ্টন।

ত্ত= ত্ +ত। যেমনউত্তম, বিত্ত, চিত্ত।

= ত্+থ। যেমনউত্থান, উত্থিত, অভ্যুত্থান।

দ্দ= দ্ +দ। যেমনউদ্দাম, উদ্দীপক, উদ্দেশ্য।

দ্ধ= দ্ +ধ। যেমনউদ্ধত, উদ্ধৃত, পদ্ধতি

 

দ্ভ= দ্ +ভ। যেমনউদ্ভব, উদ্ভট, উদ্ভিদ

ন্ত= ন্+ত। যেমন- অন্ত, দন্ত, কান্ত

ন্দ= ন্+দ। যেমন- আনন্দ, সন্দেশ, বন্দী

ন্ধ= ন্+ধ। যেমন- বন্ধন, রন্ধন, সন্ধান

ন্ন= ন্ +ন। যেমনঅন্ন, ছিন্ন, ভিন্ন।

ন্ম= ন্ +ম। যেমন- জন্ম, আজন্ম।

প্ত= প্ +ত। যেমন- রপ্ত, ব্যাপ্ত, লিপ্ত।

স্প= প্ +প। যেমন- পাপ্পা, পাম্পু, ধাপ্পা।

প্স= প্ +স। যেমন- লিপ্সা, অভীপ্সা।

জব্দ, ব্দ= ব্ +দ। যেমনঅব্দ, শব্দ।

স্ক= ল্ +ক। যেমন- উল্কা, বঙ্কল।

ল্প= ল্ +গ। যেমন- ফাল্গুন।

ল্ট= ল্ +ট। যেমন- উল্টা।

ষ্ক= ষ্ +ক। যেমনশুষ্ক, পরিষ্কার, বহিষ্কার।

স্ক= স্ +ক। যেমন- স্কুল, স্কন্ধ

স্থ= স্ +খ। যেমন- স্খলন

স্ট= +ট। যেমন- আগস্ট, স্টেশন।

স্ত= স্ +ত। যেমন- অস্ত, সস্তা, স্তব্ধ

স্প= স্ +প। যেমন-স্পষ্ট, স্পন্দন, স্পর্ধা।

= স্ +ফ। যেমন- স্ফটিক, প্রস্ফুটিত

হ্ম= হ্ +ম। যেমন- ব্ৰহ্ম, ব্রাহ্মণ।

এছাড়া বাংলা ভাষায় দুইয়ের অধিক বর্ণ সংযোগেও কিছু সংযুক্ত বর্ণ গঠিত হয়। সূক্ষ্ম শব্দে ক্ষ্ম বর্ণ= ক্

++- ফলা ; স্বাতন্ত্র্য শব্দের ন্ত্র্য=++-ফলা () +-ফলা (্য) ইত্যাদি।

 

 

Mark as Completed

ধ্বনি পরিবর্তন

 1.2k

 

একটি শব্দ উচ্চারণের ফলে যে পরিবর্তন আসে তাকে ধ্বনি পরিবর্তন বলে।

 

 

অপিনিহিতি

 

অপিনিহিতি শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ হল – ( অপি-নি-√ধা-তি) অর্থাৎ শব্দের আগে বসা বা আগে স্থাপন শব্দ মধ্যস্থ কোনো ব্যঞ্জন ধ্বনির পর যদি -কার বা -কার থাকে তবে সেই '' বা '' যদি ব্যঞ্জন ধ্বনির আগে উচ্চারিত হয়ে যে ধ্বনি পরিবর্তন ঘটায় সেটাই হল অপিনিহিতি।

 

যেমন: আজি>আইজ; সাধু>সাউধ; বাক্য>বাইক্য

 

 

অভিশ্রুতি

 

অভিশ্রুতি (Umlaut) : বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদনুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে বলে অভিশ্রুতি। যেমন - করিয়া থেকে অপিনিহিতির ফলেকইরিয়াকিংবা বিপর্যয়ের ফলেকইরাথেকে অভিশ্রুতিজাতকরে এরূপশুনিয়া > শুনে, বলিয়া > বলে, হাটুয়া > হাউটা > হেটো, মাছুয়া > মেছো ইত্যাদি  

 

 

স্বরসঙ্গতি

 

স্বরসঙ্গতি (Vowel harmony) : একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমনদেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি, মুলা > মুলো ইত্যাদি

 

প্রগত (Progressive) : আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমনমুলা > মুলো, শিকা > শিকে, তুলা > তুলো।

পরাগত (Regressive) : অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- আখো > আখুয়া > এখো, দেশি > দিশি

 

প্রগত স্বরসঙ্গতি

 

স্বরসঙ্গতি (Vowel harmony) : একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমনদেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি, মুলা > মুলো ইত্যাদি

 

প্রগত (Progressive) : আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমনমুলা > মুলো, শিকা > শিকে, তুলা > তুলো।

পরাগত (Regressive) : অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- আখো > আখুয়া > এখো, দেশি > দিশি

 

পরাগত স্বরসঙ্গতি

 

স্বরসঙ্গতি (Vowel harmony) : একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলে। যেমনদেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি, মুলা > মুলো ইত্যাদি

 

প্রগত (Progressive) : আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমনমুলা > মুলো, শিকা > শিকে, তুলা > তুলো।

পরাগত (Regressive) : অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- আখো > আখুয়া > এখো, দেশি > দিশি

 

স্বরাগম

 

যত প্রকারের ধ্বনি পরিবর্তন বাংলা ভাষায় দেখা যায়, তার মধ্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারা হলো স্বরের আগম বা স্বরাগম। স্বরাগম বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারে এবং স্বরাগম তিন প্রকার হতে পারে। : আদি স্বরাগম, : মধ্য স্বরাগম : অন্ত্য স্বরাগম।

 

স্বরাগমের সংজ্ঞা

 

শব্দের আদিতে, মধ্যে বা অন্তে একটি অতিরিক্ত

 

স্বরধ্বনির আগমন ঘটলে তাকে স্বরাগম বা স্বরের

 

আগম বলা হয়

 

 

 

আদি স্বরাগম

 

আদি স্বরাগম (Prothesis) : উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের আদিতে স্বরধ্বনি এলে তাকে বলে আদি স্বরাগম (Prothesis) যেমনস্কুল > ইস্কুল, স্টেশন > ইস্টিশন। এরূপ - আস্তাবল, আস্পর্ধা

 

 

মধ্য স্বরাগম (স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ )

 

মধ্য স্বরাগম, বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি (Anaptyxis) : সময় সময় উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জন- ধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে। একে বলা হয় মধ্য স্বরাগম বা বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তি। যেমন-

 

রত্ন > রতন, ধর্ম > ধরম, স্বপ্ন > স্বপন, হর্ষ > হরষ ইত্যাদি।

প্রীতি > পিরীতি, ক্লিপ > কিলিপ, ফিল্ম > ফিলিম ইত্যাদি। 

মুক্তা > মুকুতা, তুর্ক > তুরুক, ভ্র্ , ভুরু ইত্যাদি

- গ্রাম > গেরাম, প্রেক > পেরেক, স্রেফ > সেরেফ ইত্যাদি।

শ্লোক > শোলোক, মুরগ > মুরোগ > মোরগ ইত্যাদি।

 

অন্ত্য স্বরাগম

 

অন্ত্যস্বরাগম (Apothesis) : কোনো কোনো সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসে। এরূপ স্বরাগমকে বলা হয় অন্ত্যস্বরাগম। যেমনদিশ্ > দিশা, পোখত্ > পোক্ত, বেঞ্চ, বেঞ্চি, সত্য > সত্যি ইত্যাদি

 

 

স্বরলোপ

 

সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ। যেমনবসতি > বতি, জানালা > জান্লা ইত্যাদি।

 

আদিস্বরলোপ (Aphesis) : যেমনঅলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার

মধ্যস্বর লোপ (Syncope) : অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।

অন্ত্যস্বর লোপ (Apocope) : আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ। (স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া।)

 

আদি স্বরলোপ

 

সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ। যেমনবসতি > বতি, জানালা > জান্লা ইত্যাদি।

 

আদিস্বরলোপ (Aphesis) : যেমনঅলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার

মধ্যস্বর লোপ (Syncope) : অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।

অন্ত্যস্বর লোপ (Apocope) : আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ। (স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া।)

 

মধ্য স্বরলোপ

 

সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ। যেমনবসতি > বতি, জানালা > জান্লা ইত্যাদি।

 

আদিস্বরলোপ (Aphesis) : যেমনঅলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার

মধ্যস্বর লোপ (Syncope) : অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।

অন্ত্যস্বর লোপ (Apocope) : আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ। (স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া।)

 

অন্ত্য স্বরলোপ

 

সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে বলা হয় সম্প্রকর্ষ। যেমনবসতি > বতি, জানালা > জান্লা ইত্যাদি।

 

আদিস্বরলোপ (Aphesis) : যেমনঅলাবু > লাবু > লাউ, উদ্ধার > উধার > ধার

মধ্যস্বর লোপ (Syncope) : অগুরু > অগ্রু, সুবর্ণ > স্বর্ণ।

অন্ত্যস্বর লোপ (Apocope) : আশা > আশ, আজি > আজ, চারি > চার (বাংলা), সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ। (স্বরলোপ বস্তুত স্বরাগমের বিপরীত প্রক্রিয়া।)

 

নাসিক্যীভবন

 

নাসিক্যীভবন:

 

কোন নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনি ক্ষীণ হতে হতে ক্রমশঃ লোপ পায় এবং তার রেশ স্বরূপ পূর্ববর্তী স্বরধ্বনিতে একটা অনুনাসিক অনুরণন যোগ হয় তবে সেই প্রক্রিয়াকে নাসিক্যীভবন বলে। যেমনবন্ধ>বাঁধ,হংস>হাঁস,দ্ন্ত>দাঁত ইত্যাদি।

 

 

ব্যঞ্জনাগম

 

 ব্যঞ্জনাগম :- শব্দ মধ্যে যখন ব্যঞ্জনধ্বনির আগমন ঘটে তখন সেই প্রক্রিয়াকে বলে ব্যঞ্জনাগম ব্যঞ্জনাগম তিন প্রকার — (1) আদি, (2) মধ্য (3) অন্ত ব্যঞ্জনাগম

 

 (1) আদি ব্যঞ্জনাগম :- উজু > রুজু , ওঝা > রোজা , এখানে শব্দের আদিতে '' এর আগমন ঘটেছে  

 

(2) মধ্য ব্যঞ্জনাগম :- অম্ল > অম্বল, বানর > বান্দর, পোড়ামুখী > পোড়ারমুখী প্রভৃতি এখানে , , ব্যঞ্জনধ্বনিগুলি শব্দের মধ্যে এসেছে

 

(3) অন্ত ব্যঞ্জনাগম :-  সীমা > সীমানা , ধনু > ধনুক, নানা > নানান - শব্দের শেষে 'না', '', '' বর্ণের আগমন ঘটে শব্দগুলিকে সরলীকরণ করা হয়েছে

 

 

 

 

 

ব্যঞ্জনলোপ

 

ব্যঞ্জনলোপউচ্চারণকালে শব্দের শুরুতে, মাঝে বা শেষে কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে ধ্বনি পরিবর্তনের এই নিয়মকে বলা হয় ব্যঞ্জনলোপ। আদি-ব্যঞ্জনলোপ- শব্দের আদিতে থাকা ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে আদি-ব্যঞ্জনলোপ বলা হয়। যেমন- স্ফটিক> ফটিক, স্ফূর্তি> ফুর্তি, স্থান> থান , শ্রাবণ> শাবন (শাওন) ইত্যাদি।

 

আদি ব্যঞ্জনলোপ:

শব্দের আদিতে অবস্থিত ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে আদি ব্যঞ্জনলোপ বলে। যেমন-স্থান>থান, শ্মশান>মশান, ট্রেন>টেন ইত্যাদি।

 

 

 

মধ্য ব্যঞ্জনলোপ:

 

শব্দের মাঝখানে অবস্থিত ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে মধ্য ব্যঞ্জনলোপ বলা হয়।যেমন-শৃগাল>শিআল>শিয়াল, রাধিকা>রাহিআ>রাহি>যাই।

 

 

 

অন্ত্য ব্যঞ্জনলোপ

 

শব্দের অন্তে অবস্থিত ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে অন্ত্যব্যঞ্জনলোপ বলে। যেমন-বধূ>বহু>,সখী>,আম্র>আম ইত্যাদি।

 

 ‘ধ্বনি লোপ

 

-কার লোপ

 

আধুনিক চলিত ভাষায় অনেক সময় দুই স্বরের মাঝামাঝি -কারের লোপ হয়। যেমনপুরোহিত > পুরুত, গাহিল > গাইল, চাহে > চায়, সাধু > সাহু > সাউ, আরবি আল্লাহ্ > বাংলা আল্লা,ফারসি শাহ্> বাংলা শা ইত্যাদি।

 

 

 ‘ধ্বনি লোপ

 

-কার লোপ

 

আধুনিক চলিত বাংলায় অনেক ক্ষেত্রে -কার লোপ পায় এবং পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হয়। যেমনতর্ক > তক্ক, করতে > কত্তে, মারল > মাল্ল, করলাম > কল্লাম

 

 

সমাক্ষরলোপ

 

কোন শব্দের মধ্যে পাশাপাশি অথবা কাছাকাছি দুই বা ততোধিক সমধ্বনি থাকলে কখনো কখনো এদের এক বা একাধিক ধ্বনি লোপ পেতে দেখা যায় একে বলা হয় সমাক্ষরলোপ।যেমন-বড়দাদা>বড়দা,মেজদিদি>মেজদি ইত্যাদি।

 

 

সমীভবন

 

সমীভবন (Assimilation) : শব্দমধ্যস্থ দুটি ভিন্ন ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে অল্প-বিস্তর সমতা লাভ করে। ব্যাপারকে বলা হয় সমীভবন। যেমনজন্ম > জন্ম, কাঁদনা > কান্না ইত্যাদি। . প্রগত (Progressive) সমীভবন : পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ পরবর্তী ধ্বনি পূর্ববর্তী ধ্বনির মতো হয়, একে বলে প্রগত সমীভবন। যেমনচক্র > চক্ক, পৰ্ব্ব > পক্ক, পদ্ম > পদ্দ, লগ্ন > লগ্ ইত্যাদি . পরাগত (Regressive) সমীভবন : পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হয়, একে বলে পরাগত সমীভবন। যেমনতৎ + জন্য > তজ্জন্য, তৎ + হিত > তদ্ধিত, উৎ + মুখ > উন্মুখ ইত্যাদি

 

 

বিষমীভবন

 

বিষমীভবন (Dissimilation) : দুটো সমবর্ণের একটির পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে। যেমনশরীর > শরীল, লাল > নাল ইত্যাদি।

 

ধ্বনি বিপর্যয়

 

ধ্বনি বিপর্যয় : শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে। যেমনইংরেজি বাক্স > বাংলা বাস্ক, জাপানি রিক্সা > বাংলা রিস্কা ইত্যাদি। অনুরূপপিশাচ > পিচাশ, লাফ, ফাল।

 

বর্ণের উচ্চারণ

 

বর্ণের উচ্চারণ : বাংলা ভাষায় ৩৭টি মূল ধ্বনিকে প্রকাশ করার জন্য রয়েছে ৫০টি মূল বর্ণ। এর মধ্যে অধিকাংশ বর্ণের উচ্চারণ মূল ধ্বনির অনুরূপ। কয়েকটি বর্ণের একাধিক উচ্চারণ রয়েছে। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে একাধিক বর্ণের উচ্চারণ অভিন্ন। ধ্বনিগুলাে দিয়ে শব্দ তৈরি হওয়ার সময়ে পাশের ধ্বনির প্রভাবে বর্ণের উচ্চারণ অনেক সময়ে বদলে যায়। এখানে বাংলা বর্ণের উচ্চারণ সম্পর্কে আলােচনা করা হলাে।

 

স্বরবর্ণ

 

বর্ণের উচ্চারণ দুই রকম: [] এবং [] সাধারণ উচ্চারণ [], কিন্তু পাশের ধ্বনির প্রভাবে [] কখনাে কখনাে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়। বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ: অনেক অনে, কথা কথা], অনাথ [অনাহ্] বর্ণের [] উচ্চারণ: অতি [ওতি), অণু ওনু], পক্ষ [পােকখাে], অদ্য [ওদো ], মন মােন্]

 

 

বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ []: আকাশ (আকাশী, রাত রাতৃ, আলাে আলাে] [] জ্ঞ-এর সঙ্গে থাকলে (অ্যা]-এর মতাে উচ্চারিত হয়। যেমনজ্ঞান [গ্যাঁন], জ্ঞাত [গ্যাঁতাে], জ্ঞাপন [গ্যাঁপোন]

 

,

 

[] ধ্বনির হ্রস্বতা দীর্ঘতা বােঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছে: এবং ঈ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকম: দিন [দিন], দীন (দিনো], বিনা [বিনা], বীণা (বিনা), হীন [হিনাে]

 

,

 

[] ধ্বনির হ্রস্বতা দীর্ঘতা বােঝাতে দুটি বর্ণ রয়েছে: এবং উ। কিন্তু বাংলা ভাষায় উভয় বর্ণের উচ্চারণ একই রকম: উচিত [উচিত্] উষা [উশা], উনিশ [উনিশ], ঊনবিংশ [উনােবিংঙশাে]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ রি-এর মতাে: ঋতু [রিতু], ঋণ [রিন্], কৃষক [ক্রিশক], দৃশ্য [দ্ৰিশশাে]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ দুই রকম: [] এবং [অ্যা] সাধারণ উচ্চারণ [], কিন্তু পাশের ধ্বনির প্রভাবে কখনাে কখনাে [অ্যা] উচ্চারিত হয়। বর্ণের স্বাভাবিক উচ্চারণ: একটি [একটি], দেশ [দেশ], এলাে [এলাে] বর্ণের [অ্যা] উচ্চারণ: একটা [অ্যাক্টা ], বেলা [ব্যালা], খেলা [খ্যালা]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ ওই: ঐকিক [ওইকি, তৈল তােইলাে]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ []: ওল [ওল], বােধ [বােধ]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ [ওউ): ঔষধ [ওউশধ], মৌমাছি [মােমাছি]

 

ব্যঞ্জনবর্ণ

ব্যঞ্জনবর্ণগুলাে সাধারণত নিজ নিজ ধ্বনি অনুযায়ী উচ্চারিত হয়। যেমনকলা, খর, বল, নাচ শব্দের , , , ইত্যাদি বর্ণের উচ্চারণ যথাক্রমে [], [], [], [] ইত্যাদি। তবে কয়েকটি ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ নিজ নিজ ধ্বনি থেকে আলাদা। ধরনের কয়েকটি বর্ণের উচ্চারণ নিয়ে আলােচনা করা হলাে।

 

 

বর্ণের নিজস্ব কোনাে ধ্বনি নেই। স্বতন্ত্র ব্যবহারে আঁ-এর মতাে আর সংযুক্ত ব্যঞ্জনে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়: মিঞা [মিয়া], চঞ্চল [চনচল], গঞ্জ [গনজো]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ : কণা [কনা], বাণী [বানি], হরিণ [হােরিন]

 

 

বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [] তবে ফলা হিসেবে এই বর্ণের উচ্চারণে স্বাতন্ত্র্য আছে। শব্দের আদিতে -ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমনত্বক [], শ্বশুর [শাে] , স্বাধীন [শাধিন] শব্দের মধ্যে বা শেষে -ফলা যুক্ত হলে সেই ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়: অশ্ব (অশশাে], বিশ্বাস [বিশশাশ], পক্ব [পককো]

 

 

বর্ণের সাধারণ উচ্চারণ [] শব্দের প্রথম বর্ণে -ফলা থাকলে সেই বর্ণ উচ্চারণের সময়ে -এর উচ্চারণ আঁ-এর মতাে হয়, যেমনশ্মশান [শঁশান], স্মরণ [শঁরােন্‌] শব্দের মধ্যে -ফলা থাকলে সেই বর্ণ উচ্চারণে দ্বিত্ব হয় এবং সামান্য অনুনাসিক হয়, যেমনআত্মীয় [আততিও], পদ্ম (পদদোঁ] কিছু ক্ষেত্রে -ফলায়এর উচ্চারণ বজায় থাকে, যেমনযুগ্ম [জুগমাে], জন্ম [জনমো], গুল্ম [গুলমাে]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ [জ্]: যদি [জোদি], যিনি [জিনি], সূর্য [শুরূজো] তবে -ফলা থাকলে স্বরের উচ্চারণে পরিবর্তন হয়, যেমনযেমনব্যতীত বেতিতাে], ব্যথা ব্যাথা] শব্দের মাঝখানে বা শেষে -ফলা বর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকলে বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়, যেমনউদ্যম [উদ্দ, গদ্য গােদো] কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে থাকা -এর কোনাে উচ্চারণ হয় না, যেমনসন্ধ্যা [শােধা], স্বাস্থ্য শািসূথাে], অর্ঘ্য [অরুঘাে]

 

 

বর্ণের উচ্চারণ [] তবে -ফলা হিসেবে এর উচ্চারণে বৈচিত্র্য আছে। শব্দের মধ্যে বা শেষে কোনাে ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে -ফলা থাকলে দ্বিত্বসহ -ফলা উচ্চারিত হয়, যেমনমাত্র মিত্রো ], বিদ্রোহ [বিদ্রোহাে], যাত্রী জোত্রি] কিন্তু শব্দের মধ্যে বা শেষে যুক্তব্যঞ্জনের সঙ্গে -ফলা যুক্ত হলে দ্বিত্ব উচ্চারণ হয় না, যেমনকেন্দ্র [কেনৃদ্রো], শাস্ত্র শািসত্রো], বস্ত্র বিসূত্রো]

 

, ,

 

কখনাে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়, কখনাে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়। কখনাে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়, আবার কখনাে []-এর মতাে উচ্চারিত হয়। বর্ণের উচ্চারণ সব সময়ে []

 

বর্ণের [] উচ্চারণ: শত [শতো], শসা [শশা]

বর্ণের [] উচ্চারণ: শ্রমিক [স্রোমিক], শ্রদ্ধা [স্রোধা]

বর্ণের [] উচ্চারণ: ভাষা [ভাশা], ষােলাে [শােলাে]

বর্ণের [) উচ্চারণ: সাধারণ [শাধারােন], সামান্য [শামান্নাে]

বর্ণের [] উচ্চারণ: আস্তে [আসতে], সালাম [সালাম্‌]

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.' এর উচ্চারণ স্থান হলো?

দন্ত

তালব্য

কণ্ঠ্য

নাসিক্য

 

# আহ্বানএর প্রকৃত উচ্চারণ কী?

আহ্বান

আবহান

আওভান

আহ্বান

 

#.কোনটিতে -ফলার উচ্চারণ বহাল রয়েছে?

 

বিধ্বস্ত

উদ্বর্তন

স্বত্ব

দ্বন্দ্ব

 

#.কোনটিতে -ফলার উচ্চারণ বহাল রয়েছে ?

 

বিধ্বস্ত

উদ্বেগ

স্বত্ব

দ্বন্দ্ব

 

#.'' এর উচ্চারণ স্থান কোনটি?

অগ্রতালু

দন্ত

জিহ্বামূল

ওষ্ঠ

 

-ত্ব বিধান এবং -ত্ব বিধান

 

ণত্ব বিধান

বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য- ধ্বনির ব্যবহার নেই। সেজন্য বাংলা (দেশি), তদ্ভব বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য বর্ণ () লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য- এবং দন্ত্য- -এর ব্যবহার আছে। তা বাংলায় অবিকৃতভাবে রক্ষিত হয়। তৎসম শব্দের বানানে -এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান।

ব্যবহারের নিয়ম

. -বর্গীয় ধ্বনির আগে তৎসম শব্দে সব সময় মূর্ধন্য '' যুক্ত হয়। যেমনঘণ্টা, লণ্ঠন, কাণ্ড ইত্যাদি।

. , , এর পরে মূর্ধন্য '' হয়। যেমনঋণ, তৃণ, বর্ণ, বর্ণনা, কারণ, মরণ, ব্যাকরণ, ভীষণ, ভাষণ, উষ্ণ ইত্যাদি। , , -এর পরে স্বরধ্বনি, য় এবং -বর্গীয় -বর্গীয় ধ্বনি থাকলে তার পরবর্তী মূর্ধন্যহয়। যেমনকৃপণ (-কারের পরে প্, তার পরে ), হরিণ (-এর পরে , তার পরে ,) অর্পণ (র্ + প্ + +), লক্ষণ (ক্ + ষ্ + + ) এরূপরুক্মিণী, ব্রাহ্মণ ইত্যাদি

 

কতকগুলো শব্দে স্বভাবতই হয়

 

চাণক্য মাণিক্য গণ

বাণিজ্য লবণ মণ

বেণু বীণা কঙ্কণ কণিকা

কল্যাণ শোণিত মণি

স্থাণু গুণ পুণ্য বেণী

ফণী অণু বিপণি গণিকা

আপণ লাবণ্য বাণী

নিপুণ ভণিতা পাণি

গৌণ কোণ ভাণ পণ শাণ

চিক্কণ নিক্কণ তূণ

কফণি (কনুই) বণিক গুণ

গণনা পিণাক পণ্য বাণ

 

 

সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত -ত্ব বিধান খাটে না। এরূপ ক্ষেত্রে হয়। যেমনত্রিনয়ন, সর্বনাম, দুর্নীতি, দুর্নাম, দুর্নিবার, পরনিন্দা, অগ্রনায়ক। -বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে যুক্ত কখনো হয় না, হয়। যেমনঅন্ত,গ্রন্থ, ক্রন্দন।

 

-ত্ব বিধান

বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য- ধ্বনির ব্যবহার নেই। তাই দেশি, তদ্ভব বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য- লেখার প্রয়োজন হয় না। কেবল কিছু তৎসম শব্দে -এর প্রয়োগ রয়েছে। যে-সব তৎসম শব্দেরয়েছে তা বাংলায় অবিকৃত আছে। তৎসম শব্দের বানানে মূর্ধন্য’–এর ব্যবহারের নিয়মকে ষত্ব বিধান বলে।

ব্যবহারের নিয়ম

. , ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি এবং -এর পরে প্রত্যয়ের হয়। যেমনভবিষ্যৎ (ত্ + + ব্ + + ) এখানে -এর পরে -এর ব্যবধান), মুমূর্ষু, চক্ষুষ্মান, চিকীর্ষা ইত্যাদি।

. -কারান্ত এবং -কারান্ত উপসর্গের পর কতগুলো ধাতুতেহয়। যেমনঅভিসেক > অভিষেক, সুসুপ্ত > সুষুপ্ত, অনুসঙ্গ > অনুষঙ্গ, প্রতিসেধক > প্রতিষেধক, প্রতিস্থান অনুষ্ঠান, বিসম > বিষম, সুসমা > সুষমা ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠান, অনুস্থান >

.‘এবং কারের পরহয়। যেমন- ঋষি, কৃষক, উৎকৃষ্ট, দৃষ্টি, সৃষ্টি ইত্যাদি।

. তৎসম শব্দে’-এর পরহয়। যেমন- বর্ষা, ঘর্ষণ, বৰ্ষণ

. - ধ্বনির পরে যদি , ভিন্ন অন্য স্বরধ্বনি থাকে তবে তার পরে '' হয়। যথা : পরিষ্কার। কিন্তু , স্বরধ্বনি থাকলে হয়। যথা পুরস্কার।

. -বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে '' যুক্ত হয়। যথা : কষ্ট, স্পষ্ট, নষ্ট, কাষ্ঠ, ওষ্ঠ ইত্যাদি।

কতগুলো শব্দে স্বভাবতইহয়। যেমন-ষড়ঋতু, রোষ, কোষ, আষাঢ়, ভাষণ, ভাষা, ঊষা, পৌষ, কলুষ, পাষাণ, মানুষ, ঔষধ, ষড়যন্ত্র, ভূষণ, দ্বেষ ইত্যাদি

জ্ঞাতব্য

. আরবি, ফারসি, ইংরেজি ইত্যাদি বিদেশি ভাষা থেকে আগত শব্দে হয় না। সম্বন্ধে সতর্ক হতে হবে। যেমনজিনিস, পোশাক, মাস্টার, পোস্ট ইত্যাদি।

. সংস্কৃতসাৎপ্রত্যয়যুক্ত পদেও হয় না। যেমন- অগ্নিসাৎ, ধূলিসাৎ, ভূমিসাৎ ইত্যাদি।

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.ণত্ব ষত্ব - বিধান কোন শ্রেনীর শব্দের অনুসৃত হয়?

 

দেশি

বিদেশি

খাঁটি বাংলা

তৎসম

 

#.কোন বানানটিতে -ত্ব বিধানের প্রয়োগ ঘটেছে?

 

কটক

দুরন্ত

গণিত

পণ্য

 

#.‘দুর্নীতি’, ‘দুর্নাম' দুর্নিবারশব্দগুলোতে -ত্ব বিধান প্রযোজ্য নয় কেন?

 

তৎসম শব্দ বলে

দেশি শব্দ বলে

বিদেশি শব্দ বলে

সমাসবদ্ধ শব্দ বলে

 

#.‘দুর্নীতি’, ‘দুর্নামদুর্নিবারশব্দগুলোতে -ত্ব বিধান প্রযোজ্য নয় কেন?

 

দেশি শব্দ

তৎসম শব্দ

বিদেশি শব্দ

সমাসবদ্ধ শব্দ

 

#.'দুর্নীতি' শব্দটিতে ''-ত্ববিধানের নিয়ম প্রযুক্ত হয় না কেন?

 

সমাসবদ্ধ শব্দ বলে

পূর্বে '' ধ্বনি থাকায়

তদ্ভব শব্দ হওয়ায়

পরে '' ধ্বনি থাকায়