বাংলাদেশের খনিজ সম্পদ
প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২৮টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ২টি (সাঙ্গু ও কুতুবদিয়া) উপকূলের অদূরে বঙ্গোপসাগরে এবং অবশিষ্ট গ্যাসক্ষেত্রগুলি দেশের পূর্ব ভূ-ভাগে অবস্থিত। তাছাড়া অন্যান্য খনিজ সম্পদ ও এদেশে রয়েছে যেমন- খনিজ তেল , কয়লা , কঠিন শিলা , চুনাপাথর , চীনা মাটি , সিলিকা বালি , তেজষ্ক্রিয় বালু , নুড়িপাথর , গন্ধক , তামা , ইউরেনিয়াম , খনিজ বালি , লৌহ ইত্যাদি ।
·
প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ।
·
প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জ্বালানী ব্যবহারের ৭১% পূরণ করে।
·
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২১ মতে, এ যাবৎ আবিষ্কৃত মোট গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা ২৭টি। এর মধ্যে উৎপাদনে যায়নি ২টি কুতুবদিয়া ও ভোলা নর্থ এবং উৎপাদন স্থগিত ৫টি সাঙ্গু, ছাতক, কামতা, ফেনী ও রূপগঞ্জ। মোট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৩৯.৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং উত্তোলনযোগ্য সম্ভাব্য ও প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে ২০টি গ্যাসক্ষেত্রের ১১০টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে সর্বাধিক ২৬টি কূপ আছে। তবে সম্প্রতি বাপেক্স সিলেটের জকিগঞ্জে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে (২৮তম)।
·
প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান মিথেন।
·
বাংলাদেশে প্রথম গ্যাসফিল্ড আবিষ্কৃত হয় ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে। সর্বপ্রথম উত্তোলন শুরু ১৯৫৭ সালে।
·
কানাডার নাইকো কোম্পানি গ্যাস উত্তোলনে জড়িত থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে অগ্নিকান্ড ঘটে।
·
মজুদ গ্যাসের দিক থেকে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্যাসক্ষেত্র হল তিতাস গ্যাসক্ষেত্র।
·
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২১ মতে, দৈনিক সবচেয়ে বেশি গ্যাস উত্তোলন করা হয় বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র হতে।
·
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ২টি গ্যাসক্ষেত্র আছে। যথা- সাঙ্গু ও কুতুবদিয়া।
·
সমুদ্রে বাংলাদেশের প্রথম গ্যাসক্ষেত্র সাঙ্গু।
·
ঢাকা শহরে গ্যাস সরবরাহ করা হয় তিতাস গ্যাস ক্ষেত্র হাতে।
·
শিল্পখাতে প্রথম গ্যাস সংযোগ দেয়া হয় ১৯৫৯ সালে (ছাতক গ্যাসক্ষেত্র হতে)
·
প্রাকৃতিক গ্যাসের উপাদান : আমাদের দেশে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাসের মিথেনের পরিমাণ (৯৫-৯৯%) , ইখেন ১৩%, প্রোপেন ৩%। এছাড়া বিউটেন, ইথিলিন ও নাইট্রোজেন কিছু পরিমাণ থাকে। এ উপাদানগুলোর মধ্যে প্রধান হলো মিথেন ।
·
বাংলাদেশে মোট গ্যাস ব্লক আছে ৪৮টি। (স্থলভাগে ২২ ও জলভাগে ২৬টি)
·
জলভাগের ২৬টি গ্যাস ব্লকের মধ্যে ১১টি অগভীর সমুদ্রে ও ১৫টি গভীর সমুদ্রে।
১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রে অগ্নিকাণ্ড হয়। এটি বাংলাদেশের কোন গ্যাসক্ষেত্রে প্রথম অগ্নিকাণ্ড। অগ্নিকাণ্ডের সময় এ গ্যাসক্ষেত্রের দায়িত্বে ছিল অক্সিডেন্টাল (যুক্তরাষ্ট্র)।
·
প্রতিষ্ঠাকাল : ২৬ মার্চ, ১৯৭২
·
পেট্রোবাংলার অধিনস্ত কোম্পানি : ১১ টি। যথা: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি লিমিটেড (Bapex), বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড, সিলেট গ্যাসফিল্ড কোম্পানি লিমিটেড, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড, পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যাস কোম্পানি মধ্যপাড়া হার্ডরক মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লি.।
এছাড়া কুমিল্লার ময়নামতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরিশালের হিজলা, মুলাছি, নোয়াখালির বেগমগঞ্জ, নাটোরের নিমগাও এ তেল পাবার সম্ভাবনা আছে।
·
প্রাকৃতিক গ্যাস সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রায় গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে। শীতলীকরণ (রেফ্রিজারেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে মাইনাস ১৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনলে তা তরলে পরিণত হয়। এ তরল প্রাকৃতিক গ্যাসকেই বলা হয় এলএনজি।
·
কৈলাসটিলায় স্থাপিত এল.পি.জি. প্লান্টের মাধ্যমে কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের এলএনজি হতে বার্ষিক ৫ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি উৎপাদিত হচ্ছে।
·
দুইটি এল,এন,জি, টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে (২০১৮ ও ২০১৯ এ)।
·
সরকার কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দৈনিক ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট রি-গ্যাসিফিকেশন ক্ষমতার একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
·
বাংলাদেশ ৪২তম দেশ হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) ক্লাবে প্রবেশ করে।
·
আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, এলএনজিতে মিথেনের পরিমাণ ৮৯.৬৩%। এছাড়া ইথেন ৬.৩২%, প্রপেন ২.১৬% ও বিউটেন ১.১২%।
·
বি-বাড়িয়া তিতাস নদীর তীরবর্তী গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত গ্যাসই তিতাস গ্যাস। ১৯৬২ সালে আবিষ্কৃত হয়। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড কার্যক্রম শুরু করে ১২ নভেম্বর, ১৯৬৪ সালে। মোট মজুদের দিক থেকে এটি বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র।
·
ঢাকা সরবরাহকৃত গ্যাস আসে তিতাস গ্যাসক্ষেত্র থেকে। তিতাস ঢাকা গ্যাস লাইনের দৈর্ঘ্য ৯০ কিলোমিটার। এর মুখ্য উপাদান মিথেন।
কয়লা (Coal) :
বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি:
·
অবস্থান : দিনাজপুর থেকে ৫২ কিলোমিটার দক্ষিণে পার্বতীপুর থানার হামিদপুর ইউনিয়ন।
·
গুণগত মান: এ খনির কয়লায় বিটুমিনাস সালফারের পরিমাণ নগণ্য। এতে সালফারের পরিমাণ ০.৯৫ ভাগ।
·
কয়লার স্তরের পুরুত্ব: ৩৭ মিটার
·
কাজ শুরু: ১৯৯৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর
·
নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান: চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন।
·
উত্তোলিত কয়লা ৮৩% ব্যবহৃত হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য।
·
পিট কয়লা ব্যবহৃত হয় গৃহস্থালী এবং শিল্প কারখানার কাজে।
·
রানীপুকুর কয়লা ক্ষেত্র রংপুর জেলায় অবস্থিত।
·
ময়মনসিংহ প্রভৃতি স্থানে পীট কয়লা পাওয়া গেছে।
·
দেশের সর্ববৃহৎ কয়লা খনি দিনাজপুরের নওয়াবগঞ্জ উপজেলার দীঘিপাড়ায়।
·
জয়পুরহাটে জামালগঞ্জে কয়লা পাওয়া যায়।
খনিজ তেল (Mineral Oil) :
·
সিলেট জেলার হরিপুরে প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র, রশীদপুর ও তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার বরমচালে একটি তেলক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
·
বাংলাদেশে ১৯৮৬ সালে সিলেট জেলার হরিপুরে সর্বপ্রথম তেল পাওয়া যায়। হরিপুর তেলক্ষেত্র থেকে ১৯৮৭ সালে তেল উত্তোলন শুরু হয় এবং ১৯৯৪ সালে তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।
·
বাংলাদেশের একমাত্র তেল পরিশোধন কেন্দ্র - ইস্টার্ণ রিফাইনারি লিমিটেড।
·
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম আইন কার্যকর হয় - ১৯৭৪ সালে।
·
কঠিন শিলা (Hard Rock) : দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় ১৯৭৩ সালে কঠিন শিলা আবিষ্কৃত হয়। এই খনির বিস্তৃতি ১.৪৪ বর্গ কিলোমিটার। এই খনিতে ফ্লারারিড পানির আভাস পাওয়া গেছে যা মহাকাশযানের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বংপুর জেলায় বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, সিলেটের ভোলাগঞ্জ, লুবা, জিয়াইনল্যান্ডে, রংপুরের পাঠানে: পঞ্চগড়ে শক্ত পাথরের মজুদ আছে। কঠিন শিলা রাস্তা তৈরি এবং রেলওয়ে ব্যাসল্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
·
চুনাপাথর (Lime Stone) : টাকেরহাট, লালঘাট, জাফলং, ভাঙ্গারহাট, জকিগঞ্জ, জয়পুরহাট, জামালগঞ্জ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও সীতাকুন্ডে চুনাপাথর পাওয়া যায়। নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার তাজপুর গ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ চুনাপাথর খনির সন্ধান মিলেছে।
·
চীনা মাটি (China Clay) বা শ্বেতমৃত্তিকা (White Clay) : নেত্রকোনার বিজয়পুর, নওগাঁর পত্নীতলা, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে চীনামাটি পাওয়া যায়।
·
সিলিকা বালি (Solica Sand) বা কাচ বালি : হবিগঞ্জের নয়াপাড়া, ছাতিয়ান, শাহবাজার, সুনামগঞ্জের টাকেরহাট, চট্টগ্রামের দোহাজারী, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, শেরপুরের বালিজুরি, জামালপুরের গারো পাহাড়ে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সিলিকা বালি পাওয়া যায়।
·
তেজস্ক্রিয় বালু : কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে পাওয়া যায়। এদের 'কালো সোনা'ও বলা হয়। এগুলোর মধ্যে জিরকন, ইলমেনাইট, মোনাজাইট ও জাহেরাইট উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভূবিজ্ঞানী এম এ জাহের আবিষ্কৃত পদার্থটিকে তাঁর নাম অনুসারে জাহেরাইট রাখা হয়েছে।
·
নুড়িপাথর (Pebbles) : সিলেট, পঞ্চগড় এবং শালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামে নুড়িপাথর পাওয়া যায়।
·
গন্ধক (Sulphur) : চট্টগ্রামের কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র গন্ধক খনি অবস্থিত।
·
তামা (Copper) : রংপুর জেলার রানীপুকুর, পীরগঞ্জ এবং দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় তামার সন্ধান পাওয়া গেছে।
·
ইউরেনিয়াম (Uraniuum) : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পাহাড়ে ইউরেনিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে।
·
খনিজ বালি (Mineral Sand) : কুতুবদিয়া ও টেকনাফে প্রচুর পরিমাণে খনিজ বালি পাওয়া যায়।
·
লৌহ/লোহার খনি : বাংলাদেশের প্রথম লৌহখনি আবিষ্কৃত হয় - ২০১৩ সালে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার মুসিদপুর গ্রামে।
বাংলাদেশের শক্তি সম্পদ বলতে সাধারণত বিদ্যুৎকেই বোঝানো হয়ে থাকে । বিদ্যুৎ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যতম প্রধান খাত হলেও আমাদের দেশে তা ছিল অবহেলিত। এ খাত সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ছে তার প্রধান নজির হলো বিদ্যুতের দাবিতে ২০০৬ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় সংঘটিত কানসাট আন্দোলন। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০২১ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ১৬ কি.মি. দীর্ঘ সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে এটিই দেশের প্রথম বিদ্যুৎ সংযোগ।
·
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ শক্তির উৎস : প্রাকৃতিক গ্যাস (৫৫.৮৯%), ফার্নেস ওয়েল (২৭.১৮%), ডিজেল (৬.৯৮), বিদ্যুৎ আমদানি (৫.৯১%), কয়লা (২.৬৭%), পানি (১.১৭%) এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি (০.১৯%)।
·
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে : মোট জনসংখ্যার ৯৯.৮% [ সূত্র : বিদ্যুৎ বিভাগ ]
·
বর্তমানে দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ : ৬০২ কিলোওয়াট-ঘন্টা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) [ সূত্র : বিদ্যুৎ বিভাগ ]
·
বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা : ২৩,৪৮২ মেগাওয়াট [ সূত্র : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩ ]
·
বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা (নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ক্যাপটিভ সহ) : ২৬,৭০০ মেগাওয়াট [ সূত্র : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩ ]
·
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র : ১৫৩টি
·
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে : এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট (১৬ এপ্রিল ২০২২) । [ সূত্র : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩ ]
·
২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদ্যুতের বিতরণ লস / সিস্টেম লস : ৯.৩০ শতাংশ । [ সূত্র : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩ ]
·
বাংলাদেশে বৃহত্তম বিদ্যুৎ কেন্দ্র : নারায়ণগঞ্জ জেলার হরিপুরে
·
বাংলাদেশে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র : ১০টি
·
বাংলাদেশের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র : ভেড়ামাড়া (কুষ্টিয়া)
·
বাংলাদেশের প্রথম গ্যাসচলিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র : সিলেটের হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র
·
বাংলাদেশের প্রথম কয়লাচলিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া
·
বাংলাদেশের প্রথম বার্জমাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র : খুলনার বার্জমাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র
·
বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র : খুলনার বার্জমাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র
·
বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র : দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া
·
বাংলাদেশে পানিবিদুৎ কেন্দ্র : ১টি। যথা- কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র
·
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে : কর্ণফুলী নদীতে
·
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় : ১৯৬২ সালে
·
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু করে : ১৯৬৫ সালে
·
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা : ২৩০ মেগাওয়াট
·
বাংলাদেশের একমাত্র কৃত্রিম হ্রদ তৈরি করা হয়েছে : কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে
·
কাপ্তাই ড্যাম অবস্থিত : কাপ্তাই বাঁধ, রাঙামাটি
·
বাংলাদেশে আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প
·
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অবস্থিত : পাবনা জেলায়
·
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণকারী : RSNEC
·
সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে অবস্থিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নাম : বিজয়ের আলো
·
বাংলাদেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হয় : নরসিংদী জেলার করিমপুর ও নজরপুরে
·
বাংলাদেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র : ময়মনসিংহ সদর (৫০ মেগাওয়াট)
·
বাংলাদেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হয় : ফেনীর সোনাগাজীতে
·
বিদ্যুৎ বিতরণের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান :
* Dhaka Electric Supply Company Ltd (DESCO),
* Dhaka Power Distribution Company Ltd (DPDC)
* Rural Electrification Board বা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (REB)
·
গ্রাম বাংলায় বিদ্যুতায়নের দায়িত্বে সরাসরিভাবে নিয়োজিত : পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (REB)
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র : এটি বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশের একক বৃহত্তম প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প। এটি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে নির্মীয়মাণ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি বসানোর কাজ উদ্বোধন করা হয় ৩০ নভেম্বর ২০১৭। ২০২৩ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে। এর উৎপাদন ক্ষমতা ৩ ধাপে ২৪০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। এ প্রকল্পের নির্মাণে সহায়তা করছে রাশিয়া। এছাড়া ভারতও এ প্রকল্প নির্মাণে সহায়তাকারী দেশ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হয়। বাংলাদেশ এ ক্লাবের ৩২তম দেশ। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক ৩ + প্রজন্মের (থ্রি প্লাস জেনারেশন) 'ভিভিইআর ১২০০' প্রযুক্তির পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট স্থাপন করা হবে। আগামী ২০২৩ সালে এর প্রথম ইউনিট এবং পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হওয়ার কথা। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে টানা ৬০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: ২০ এপ্রিল ২০১৩ বাগেরহাটে রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সুন্দরবন থেকে ১৪ কিমি, দুরে পশুর নদীর তীর ঘেঁষে এই প্রকল্পে ১৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ হবে।
দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল পাড়াতলীতে দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়েছে। ২৯ অক্টোবর ২০১৫ সৌরবাংলা ১৪১ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ ছোট গ্রিড (মিনিগ্রিড) কেন্দ্রটির উদ্ভোধন করা হয়। ছোট গ্রিড (মিনিগ্রিড) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র বস্তুত বৈদ্যুতিক জেনারেটরের একটি সেট, যা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর গ্রাহক চাহিদা মিটিয়ে নির্দিষ্ট নেটওয়ার্কের মধ্যে তা সরবরাহ করা হয়।
দেশের প্রথম সরকারি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ উদ্বোধন করা হয় কাপ্তাই ৭.৪ মেগাওয়াট সোলার পিডি গ্রিড কানেকটেড বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটা সরকারি উদ্যোগে নির্মিত দেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে বাঁধের পাশে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান।
দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র: নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সুতিয়াখালীতে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের কাজ কাজ শুরু হয়। গত ২০১৭ সালে (প্রশাসনিকভাবে প্রকল্পের স্থানটি গৌরিপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়ন)। এটি দেশের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের সর্ববৃহৎ প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের যৌথ প্রতিষ্ঠান HDFC Sinpower Ltd. উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কক্সবাজার জেলায় টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২৮ মেগাওয়াট।
পটুয়াখালীর পায়রায় সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র : ৫ নভেম্বর ২০১৭ পটুয়াখালীর পায়রায় ৩৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জার্মানির সিমেন্স এজির সাথে চুক্তি করেছে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী লিমিটেড (NWPGCL)। আমদানি করা তরল্যায়িত প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর (LNG) এ প্রকল্পই হবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসবে ২০২০ সালের জুনে। কক্সবাজার জেলায় ২৮ টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে।
প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প: চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই এবং ফেনী জেলার সোনাগাজীর মুহুরীর সেচ প্রকল্প এলাকায় বাংলাদেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত।
মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প : জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ির এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রকল্প। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় মাতারবাড়িতে গড়ে তোলা হবে। ৬০০ মেগাওয়াটের মোট দুটি ইউনিট গড়া হবে। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১,২০০ মেগাওয়াট। মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র শুষ্ক বন্দর ঘোষণা করা হয় ২৮ আগস্ট ২০১৭।
প্রথম বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র : বাংলাদেশের প্রথম বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে ৩-৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
·
দেশের প্রথম হাইব্রিড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হবে - সোনাগাজী, ফেনীতে।
·
বিদ্যুতের প্রথম স্মার্ট প্রিপেইড মিটার কারখানা - খুলনায় স্থাপন করা হচ্ছে।
·
দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হবে- বাগেরহাটের মোংলা পৌরসভায়।
·
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (BREB) আওতাধীন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি - ৮০টি।
বন বা অরণ্য থেকে মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় যে সম্পদ পাওয়া যায়, যা মূলত মানুষের দৈনন্দির ব্যবহারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলিকে বনজ সম্পদ বলে। যেমন- কাঠ, ভেষজ ওষুধ, মশলা, পাতা, আঠা ,মধু, মোম , গাছের তেল, জ্বালানি ও আসবাবপত্র, যানবাহন তৈরির মূল্যবান কাঠ , প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি । বাস্তুসংস্থানিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বনভূমি নিম্নোক্ত শ্রেণিতে বিভক্ত। যথা-
1.
ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বৃক্ষের বনভূমি বা পাহাড়ি বন
2.
ক্রান্তীয় পতনশীল বৃক্ষের বনভূমি বা শালবন
3.
প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন বা স্রোতজ বন
4.
সৃজিত উপকূলীয় বন
5.
জলাভূমির বন
এ বন মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সিলেট- মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। অতিবৃষ্টির জন্য এ বনভূমি সৃষ্টি হয়েছে। এ বনভূমির পরিমাণ ১৩,৭৭,০০০ হেক্টর যা দেশের আয়তনের ৯.৩৩%। গর্জন, ময়না, তেলসুর, চাপালিশ, গামার, জারুল, কড়ই, সেগুন, চম্পা প্রভৃতি বৃক্ষ এ বনে পাওয়া যায়। এ বনাঞ্চলে প্রচুর বাঁশ ও বেত জন্মে। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হাজারীখিল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলে বিরল প্রজাতির বৈলাম বৃক্ষ দেখা যায়। বৈলাম বৃক্ষের উচ্চতা ১০০ মিটার যা বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু বৃক্ষ নামে পরিচিত। গর্জন ও জারুল গাছ রেলের স্লিপার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গামার ও চাপালিশ গাছ সাম্পান ও নৌকা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। চন্দ্রঘোনা কাগজকলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাঁশ ব্যবহৃত হয়। এ বনের উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণী হচ্ছে হাতি, চিতাবাঘ, হরিণ (সাম্বার হরিণ ও মায়া হরিণ), বন্য শুকর, হনুমান, বানর, উল্লুক, সজারু, বনরুই, ধনেশ, মথুরা, শকুন, অজগর, টিয়া, ময়না প্রভৃতি।
এ বন মূলত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল অঞ্চলের মধুপুর গড়, গাজীপুর জেলার ভাওয়ালের গড়, কুমিল্লার লালমাই এবং রংপুর-দিনাজপুরের বরেন্দ্রভূমি (আয়তন ৪৫০ বর্গমাইল) এলাকায় অবস্থিত। এ বনের মূল প্রজাতি শাল যা অনেকে গজারি নামে চেনে। শুষ্ক মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) শাল গাছের পাতা ঝরে যায় বলে একে পত্রঝরা বনও বলে। যে সকল গাছের পাতা বছরে একবার সম্পূর্ণ ঝরে যায়, তাদের পাতাঝরা উদ্ভিদ বলে। এছাড়া হরিতকি, ছাতিম, কুর্চি, কড়ই, বহেরা, কাঁঠাল, কুস্তি, হিজল, শিমুল, অর্জুন প্রভৃতি প্রজাতির বৃক্ষও এ বনে পাওয়া যায়। শাল বৃক্ষ বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ছাতিম টেক্সটাইল মিলে, কুর্চি ছাতার বাট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মেছোবাঘ, বনরুই (এক ধরনের পিপীলিকাভুক চতুষ্পদ প্রাণি), বানর, শিয়াল ইত্যাদি এ বনের উল্লেখযোগ্য প্রাণী।
যে বন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় আবার ভাটার সময় শুকিয়ে যায়, তাকে জোয়ার-ভাটার বন (Tidal Forest) বা ম্যানগ্রোভ বন (Mangrove Forest) বলে। বেশির ভাগই সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। মাত্র ৯৫ বর্গকিলোমিটার পটুয়াখালী ও বরগুনায় অবস্থিত। ম্যানগ্রোভ বন জোয়ার-ভাটায় বিধৌত লবণাক্ত সমতলভূমি। পৃথিবীর বৃহত্তম জোয়ারধৌত বনভূমি সুন্দরবন। সুন্দরী, গরান, গেওয়া, পশুর, ধুন্দল, কেওড়া, বায়েন বৃক্ষ প্রচুর জন্মে। এ সকল উদ্ভিদের শ্বাসমূল থাকে। এছাড়া ছন ও গোলপাতা সুন্দরবন হতে সংগ্রহ করা হয়। সুন্দরী বড় বড় খুঁটি তৈরিতে, গেওয়া নিউজপ্রিন্ট ও দিয়াশলাই কারখানায়, ধুন্দল পেনসিল তৈরিতে, গরান বৃক্ষের বাকল চামড়া পাকা করার কাজে, গোলপাতা ঘরের ছাউনিতে ব্যবহৃত হয়। এ বন থেকে প্রচুর মধু ও মোম আহরণ করা হয়। চকোরিয়া সুন্দরবন কক্সবাজার জেলার মাতামুহুরী নদীর মোহনায় অবস্থিত একটি ব-দ্বীপীয় ম্যানগ্রোভ বন।
উপকূলীয় জেলাগুলোতে বনায়নের মাধ্যমে সৃজিত উপকূলীয় বন গড়ে তোলা হয়েছে। উপকূল বরাবর বনায়ন এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করার মাধ্যমে উপকূবর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করার লক্ষ্যে গৃহীত একটি কার্যকর ব্যবস্থা হল উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী বা সৃজিত উপকূলীয় বন । উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী রয়েছে ১০টি জেলায় । সবুজবেষ্টনী রচনার দুটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো: (১) ভেড়িবাঁধের সম্মুখ ঢালকে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা করা, এবং (২) উপকূলীয় এলাকায় জান-মাল ও কৃষিজমিকে রক্ষা করা। এ ছাড়াও বনায়নের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওড় ও বিল জুড়ে এ বন বিস্তৃত। বানর, মেছোবাঘ, ভোদর, কাঠবিড়ালী প্রভৃতি প্রাণী এ বনে দেখা যায়। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত 'রাতারগুল' দেশের একটি দৃষ্টিনন্দন জলাভূমির বন। এ বনে বিরল প্রজাতির বন্য গোলাপ দেখতে পাওয়া যায়।
নিচে বাংলাদেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলের পরিচয় তুলে ধরা হল :
বাংলাদেশ এবং ভারতে বিস্তৃত সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০০০০ বর্গ কিমি.। সুন্দরবনের মোট আয়তনের ৬২% বাংলাদেশে অবস্থিত। সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় সুন্দরবনের বেশির ভাগ এলাকা অবস্থিত। মাত্র ৯৫ বর্গকিলোমিটার পটুয়াখালী ও বরগুনায় অবস্থিত। সংযুক্ত প্রায় ৪০০ নদী-নালা, খালসহ প্রায় ২০০টি ছোট বড় দ্বীপ ছড়িয়ে আছে সুন্দরবনে। সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত প্রধান প্রধান নদীগুলো হলো পশুর, শিবসা, রায়মঙ্গল, বলেশ্বর প্রভৃতি। সুন্দরবনের পূর্বে বলেশ্বর এবং পশ্চিমে রায়মঙ্গল। সুন্দরবন অংশে বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভক্তকারী নদী হাড়িয়াভাঙ্গা। সুন্দরবনের অন্য নাম বাদাবন।
কাটকা, হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, টাইগার পয়েন্ট (কচিখালী) এ প্রতিবছর পর্যটকদের প্রচুর সমাগম ঘটে। হিরণ পয়েন্ট, কটকা প্রভৃতি সুন্দরবনের অভয়ারণ্য। প্রমত্তা কুঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত হিরণ পয়েন্ট সাধারণভাবে নীল কমল নামে পরিচিত। দুবলার চর একটি ছোট দ্বীপ, এর সমুদ্র সৈকত অতি মনোরম। মৎস্য আহরণ, শুটকি উৎপাদন এবং উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীর জন্য এটি বিখ্যাত। দুবলার চর থেকে ১০ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত একটি দ্বীপের নামকরণ করা হয়েছে 'বঙ্গবন্ধু দ্বীপ'। সুন্দরবনকে 'বাংলাদেশের ফুসফুস' বলা হয়। সুন্দরী, গরান, গেওয়া, পশুর, ধুন্দুল, কেওড়া, বাইন, ওড়া, হেন্দাল, কাকড়া প্রভৃতি এ এলাকার প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি। সুন্দরী বৃক্ষ 'লুকিং গ্লাস ট্রি' নামেও পরিচিত। 'সুন্দরী' বৃক্ষের প্রাচুর্যের জন্য এই বনের নামকরণ করা হয়েছে 'সুন্দরবন'। সুন্দরবনে প্রায় সব খালের পাড়েই ঘনভাবে জন্মে নিপা পাম বা গোলপাতা। স্থানীয়ভাবে পরিচিত 'বাউয়াল'দের পেশা গোলপাতা সংগ্রহ করা। সুন্দরী বড় বড় খুঁটি তৈরিতে, গেওয়া নিউজপ্রিন্ট ও দিয়াশলাই কারখানায়, ধুন্দুল পেন্সিল তৈরিতে, গরান বৃক্ষের ছালের কষ রং তৈরি, জাল রং করা ও চামড়া পাকা করার কাজে, গোলপাতা ঘরের ছাউনিতে ব্যবহৃত হয়। সুন্দরবনের বনসম্পদকে কেন্দ্র করে কয়েকটি শিল্প কারখানা গড়ে উঠে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য খুলনার নিউজপ্রিন্ট মিল এবং হার্ডবোর্ড মিলস। প্রথমটির কাঁচামাল গেওয়া এবং দ্বিতীয়টির সুন্দরী বৃক্ষ।
সুন্দরবনে ব্যাপক প্রাণিবৈচিত্র্য বিদ্যমান। সুন্দরবন সুদর্শন 'রয়েল বেঙ্গল টাইগার' এর আবাসস্থল। সুন্দরবনে দুই ধরনের হরিণ পাওয়া যায়। যথা- মায়া হরিণ (Barking Deer) এবং চিত্রা হরিণ (Spotted Deer) । এ বনে তিন প্রজাতির কচ্ছপ (কেটো কাছিম, সুন্দি কাছিম, ধুম তরুণাস্থি কাছিম) দেখা যায়। অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে গিরগিটি, রেসাস বানর, বনবিড়াল, লিওপার্ড, সজারু, উদ, বন্য শুকর, মোহনা কুমির, গুই সাপ, অজগর, হরিয়াল, বালিহাস, গাঙচিল, ডলফিন, ঈগল, চিল, মাছরাঙা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সরকারিভাবে পরিচালিত দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্র খুলনার করমজলে (সুন্দরবনে) অবস্থিত। এখানকার অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি মৌমাছি। স্থানীয়ভাবে পরিচিত 'মৌয়াল'দের পেশা মধু সংগ্রহ করা। সুন্দরবনে বাঘের পায়ের ছাপ (পাগমার্ক) গণনা করে বাঘশুমারি করা হতো। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো 'ক্যামেরা ট্র্যাপ' (ক্যামেরা ফাঁদ) পদ্ধতিতে বাঘ গণণা করে বন অধিদপ্তর। সুন্দরবন অঞ্চলের কিংবদন্তী শিকারি পচাব্দী গাজী। তিনি ৫৭টি বাঘ শিকার করেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা (আয়তন প্রায় ১৭৯৫ হেক্টর)। সুন্দরবনের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক এ বন ঢাকা থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাহাড়-টিলা। পাহাড়গুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৭ মিটার। রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রমে আছে তিনটি ট্রেইল বা পথ, যেখানে দাঁড়িয়ে বনের ভিতরের দূর-দূরান্তের দৃশ্যাবলি দেখা যায়। এ বনের ভিতরেই আছে চারটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস- ত্রিপুরা, সাঁওতাল, তেলেগু ও উড়ং ।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার মাঝখানে অবস্থিত লাউয়াছড়া। এটি মিশ্র চিরহরিৎ বন। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া বনে রয়েছে বিশ্বের মাত্র ৪টি দেশে দেখতে পাওয়া বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক। লাউয়াছড়া উদ্যানের ভিতর খাসিয়া নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর দুটি গ্রাম রয়েছে লাউয়াছড়াপুঞ্জ ও মাগুরাছড়াপুঞ্জ। আর বনের দুপাশে রয়েছে ত্রিপুরা ও মণিপুরী নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আরো দুটি আদিবাসী পল্লী। এ বনে আরো রয়েছে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রেলপথ। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে বিখ্যাত Around the World চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের কিছু অংশ এখানে হয়েছিল।
বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন (Swamp Forest) রাতারগুল। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে অবস্থিত এ জলাবন বছরের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সময় কোমর পানিতে ডুবে থাকে । সিলেট শহর থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দূরে পানিতে অর্ধেক পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এ বনের গাছগুলোর ফাঁকে ফাঁকে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। সিলেটের শীতল পাটি তৈরির মূল উপাদান মুর্তার বড় একটা অংশ এ বন থেকেই আসে।
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার এবং টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন মধুপুরের শালবন। এ বনের প্রধান বৃক্ষ শালগাছের মোলা বা শিকড় থেকে গজানো চারায় গাছ হয় বলে স্থানীয়রা একে 'গজারি বন' বলে থাকে।
বনবিভাগ ১৯৬০ দশকের শুরুর দিকে বন সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে সর্বপ্রথম বনায়ন কর্মসূচি বনাঞ্চলের বাহিরে জনগণের কাছে নিয়ে যায়। বৃক্ষরোপণ উৎসাহিত করার জন্য ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার' প্রবর্তন করা হয়। ১৯৯৪ সালে বৃক্ষমেলা চালু হয়।
জাতীয় উদ্যান: উল্লেখযোগ্য জাতীয় উদ্যানগুলো নিম্নরূপ-
·
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, গাজীপুর: ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
·
রামসাগর জাতীয় উদ্যান, দিনাজপুর: উদ্যানটির প্রধান আকর্ষণ হলো রামসাগর দিঘি। রামসাগরকে দেশের বৃহত্তম মানবসৃষ্ট দিঘি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পলাশী যুদ্ধের প্রাক্কালে (১৭৫০ - ১৭৫৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে) রাজা রামনাথ দিঘিটি খনন করেছিলেন, তাঁর নামানুসারে দিঘিটির নামকরণ করা হয়েছে।
·
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মৌলভীবাজার: এটি ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও ক্রান্তীয় আধা চিরহরিৎ বনভূমির অন্তর্গত। উদ্যানটি বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য বিখ্যাত।
·
সাতছরি জাতীয় উদ্যান, হবিগঞ্জ
উদ্ভিদ উদ্যান :
·
জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান (National Botanic Garden), মিরপুর, ঢাকা।
·
বলধা গার্ডেন ঢাকার ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত। ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বলধা গার্ডেনের সূচনা করেন।
বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য (Wildlife Sanctuary) :
·
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, চট্টগ্রাম
·
চর কুকরি-মুকরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ভোলা
·
সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড মেরিন প্রটেক্টটেড এরিয়া
·
নিঝুমদ্বীপ সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা
ইকোপার্ক: Ecopark (Ecological Park) প্রাকৃতিক পরিবেশে সৃষ্ট বিনোদন উদ্যান যা জীববৈচিত্র্যের উপর কোনোরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে না। বনাঞ্চলের একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে ইকোপার্ক হিসেবে চিহ্নিত করে একটি নিবিড় ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হয়। উল্লেখযোগ্য ইকোপার্কগুলো হলো-
·
সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং ইকো পার্ক, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের প্রথম ইকোপার্ক।
·
টিলাগড় ইকোপার্ক, সিলেট
·
মুরাইছড়া ইকোপার্ক, বড়লেখা, মৌলভীবাজার
সাফারি পার্ক: পার্ক তৈরি হবে বন্যপ্রাণীদের প্রকৃত বাসস্থানের আদলে তাদের মনে হবে যেন তারা জঙ্গলেই আছে। নিজেদের অভয়ারণ্যেই আছে। মানুষ থাকবে সুরক্ষিত খাঁচা বা যানবাহনের মধ্যে- চিড়িয়াখানার বিপরীত অবস্থা।
·
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক: কক্সবাজার জেলার ডুলাহাজরায় অবস্থিত। পূর্বনাম ছিল 'ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক'। 'ডুলাহাজরা' শব্দের অর্থ 'হাজার পালকি'।
·
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, শ্রীপুর, গাজীপুর
অ্যাভিয়ারি পার্ক : শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকোপার্ক-এর বন্যপ্রাণী ও গাছ-গাছড়া, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম
·
বাংলাদেশের বিভাগ অনুযায়ী বনভূমির বিন্যাস: ঢাকা ৭% , চট্টগ্রাম ৪৩% , রাজশাহী ২% , খুলনা ৩৯% , বরিশাল ৩% , সিলেট ৬% , ময়মনসিংহ ৩%
·
বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার চালু হয় : ১৯৯৬ সালে
·
বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় বননীতি গৃহীত হয় : ১৯৭২ সালে
·
বাংলাদেশে সামাজিক বনায়নের কাজ শুরু হয় : ১৯৮১ সালে (চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়
·
জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু হয় : ১৯৭২ সালে
·
জাতীয় বৃক্ষমেলা প্রবর্তন করা হয় : ১৯৯৪ সালে
·
বাংলাদেশে পরিবেশ নীতি ঘোষণা করা হয় : ১৯৯২ সালে
·
সুন্দরবনকে রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয় : ১৯৯২ সালে
·
বৃক্ষরোপণে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের নাম : প্রধানমন্ত্রির পুরস্কার (১৯৯৩)
·
সুন্দরবন দিবস পালিত হয় : ১৪ ফেব্রুয়ারি
·
সুন্দরবন ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তিনটি অভয়ারণ্য হল : কটকা, দক্ষিণ নীলকমল, পশ্চিম মাদারবাড়ি
·
বিভাগ অনুসারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বনভূমি : চট্টগ্রাম বিভাগে (৪৩%)
·
বিভাগ অনুসারে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বনভূমি : রাজশাহী বিভাগে (২%)
·
হিমালয়ের চূড়ায় বৈঠক করে : নেপাল
·
জেলা অনুসারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বনভূমি আছে : বাগেরহাট জেলায়
·
বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় বনভূমি নেই : ২৮ টি জেলায়
·
উপকূলীয় সবুজবেষ্টনী প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে : ১০টি জেলায়
·
বাংলাদেশের উচ্চতম বৃক্ষ : বৈলাম (বান্দরবানে পাওয়া যায়)
·
বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ : আম
·
'লুকিং গ্লাস ট্রি' নামে পরিচিত : সুন্দরী বৃক্ষ
·
সূর্যকন্যা বলা হয় : তুলা গাছকে
·
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছ : ইউক্লিপটাস
·
পঁচাব্দী গাজী বিখ্যাত : বাঘ শিকারের জন্য
·
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট অবস্থিত অবস্থিত : চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায়
·
জাতিসংঘের ২০১৫ অধিবেশনে পরিবেশ বিষয়ক চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ পুরস্কার লাভ করেন : শেখ হাসিনা
·
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বনভূমি আছে : ৭ টি জেলায়। যথা- বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার।
·
বনাঞ্চল থেকে সংগৃহীত কাঠ ও লাকড়ি : দেশের মোট জ্বালানির ৬০% পূরণ করে