শব্দ ,মৌলিক শব্দ,যৌগিক শব্দ,রূঢ়ি শব্দ,যোগরূঢ় শব্দ,তৎসম শব্দ,অর্ধ-তৎসম শব্দ :,দেশি শব্দ

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি বাংলা ২য় প্ত্র

শব্দ :

অর্থ হলো শব্দের প্রাণ। এক বা তার অধিক ধ্বনির সমন্বয়ে যদি কোনো নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ পায় তবে তাকে শব্দ বলে।

 

শব্দের উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়: ক্++++ম্ = ধ্বনি। ধ্বনি পাঁচটির মিলিত রূপ হলো 'কলম' 'কলম' এমন একটি বস্তুকে বোঝাচ্ছে, যা দিয়ে লেখা যায়। 'কলম'- '', '', '' ধ্বনিসমষ্টির মিলিত রূপ, যা অর্থপূর্ণ। সুতরাং 'কলম' একটি শব্দ।

 

রকম : আমি, বাজার, যাই ইত্যাদিও শব্দ। এগুলোর আলাদা আলাদা অর্থ আছে। কিন্তু রকম আলাদা আলাদা শব্দ মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ করতে পারে না। তাই অর্থপূর্ণ শব্দ জুড়ে জুড়ে মানুষ তার মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করে থাকে।

 

যেমন - "আমি বাজারে যাই।" এটি একটি বাক্য। এখানে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পেয়েছে

 

অন্য একটি উদাহরণ হিসেবে বললে বাক্যের মধ্যে কতকগুলি শব্দ থাকে। যেমন - 'গাছে অনেক ফুল ফুটেছে'; এখানে- গাছে , অনেক, ফুল ফুটেছে , এখানে এই চারটি শব্দ।

 

বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শব্দের শ্রেণিবিভাগ হতে পারে।

 

. গঠনমূলক শ্রেণিবিভাগ : () মৌলিক () সাধিত

 

. অর্থমূলক শ্রেণিবিভাগ : () যৌগিক, () রূঢ়ি এবং () যোগরূঢ়

 

. উৎসমূলক শ্রেণিবিভাগ : () তৎসম, () অর্ধ-তৎসম () তদ্ভব () দেশি () বিদেশি

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.নিচের কোনটি যৌগিক শব্দ?

 

প্রবীণ

জেঠামি

সরোজ

মিতালি

 

#.‘তাম্বুলিকশব্দের সমার্থক নয় কোনটি?

পান-ব্যবসায়ী

পর্ণকার

তামসিক

বারুই

 

বাংলা বিপরীত শব্দ প্রতিশব্দ শব্দার্থ শব্দ

#.‘জলশব্দের সমার্থক শব্দ কোনটি?

ওদন

উদক

বারিদ

অনিল

 

#.মানানসই শব্দের 'সই' কোন ধরনের প্রত্যয়

 

বিদেশি প্রত্যয়

বাংলা কৃৎপ্রত্যয়

বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয়

সংস্কৃতি তদ্ধিত প্রত্যয়

 

#.'আলপিন, বালতি' কোন জাতীয় শব্দ?

দেশি শব্দ

তৎসম শব্দ

পারিভাষিক শব্দ

তদ্ভব শব্দ

 

মৌলিক শব্দ

মৌলিক শব্দ : যেসব শব্দ বিশ্লেষণ করা যায় না বা ভেঙে আলাদা করা যায় না, সেগুলোকে মৌলিক শব্দ বলে। যেমনগোলাপ, নাক, লাল, তিন

 

 

সাধিত শব্দ

সাধিত শব্দ : যেসব শব্দকে বিশ্লেষণ করা হলে আলাদা অর্থবোধক শব্দ পাওয়া যায়, সেগুলোকে সাধিত শব্দ বলে। সাধারণত একাধিক শব্দের সমাস হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গ যোগ হয়ে সাধিত শব্দ গঠিত হয়ে থাকে। উদাহরণ : চাঁদমুখ (চাঁদের মতো মুখ), নীলাকাশ (নীল যে আকাশ), ডুবুরি (ডুর্+উরি), চলন্ত (চল্ + অন্ত), প্রশাসন (প্র+শাসন), গরমিল (গর+মিল) ইত্যাদি

 

 

যৌগিক শব্দ

যৌগিক শব্দ : যে সকল শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ব্যবহারিক অর্থ একই রকম, সেগুলোকে যৌগিক শব্দ বলে। যেমন- গায়ক = গৈ + ণক (অক) – অর্থ : গান করে যে - কর্তব্য = কৃ + তব্যঅর্থ : যা করা উচিত বাবুয়ানা = বাবু + আনাঅর্থ : বাবুর ভাব। মধুর = মধু + -অর্থ : মধুর মতো মিষ্টি গুণযুক্ত দৌহিত্র = দুহিতা+ষ্ণ্যঅর্থ : কন্যার পুত্র, নাতি চিকামারা = চিকা+মারাঅর্থ : দেওয়ালের লিখন

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

#.নিচের কোনটি যৌগিক শব্দ?

 

প্রবীণ

 

জেঠামি

 

সরোজ

 

মিতালি

 

রূঢ়ি শব্দ

রূঢ়ি শব্দ : যে শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অর্থের অনুগামী না হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে। যেমনহস্তী=হস্ত + ইন, অর্থ-হস্ত আছে যার; কিন্তু হস্তী বলতে একটি পশুকে বোঝায়। গবেষণা (গো+এষণা) অর্থগরু খোঁজা। বর্তমান অর্থ ব্যাপক অধ্যয়ন পর্যালোচনা।

 

রকম-

 

বাঁশি বাঁশ দিয়ে তৈরি যে কোনো বস্তু নয়, শব্দটি সুরের বিশেষ বাদ্যযন্ত্র, বিশেষ অর্থে প্রযুক্ত হয়

 

তৈল শুধু তিলজাত স্নেহ পদার্থ নয়, শব্দটি যে কোনো উদ্ভিজ্জ পদার্থজাত স্নেহ পদার্থকে বোঝায়। যেমন- বাদাম-তেল।

 

প্রবীণ শব্দটির অর্থ হওয়া উচিত ছিল প্রকৃষ্ট রূপে বীণা বাজাতে পারেন যিনি। কিন্তু শব্দটিঅভিজ্ঞতাসম্পন্ন -বয়স্ক ব্যক্তি' অর্থে ব্যবহৃত হয়

 

সন্দেশশব্দ প্রত্যয়গত অর্থেসংবাদ কিন্তু রূঢ়ি অর্থেমিষ্টান্ন বিশেষ'

 

যোগরূঢ় শব্দ

যোগরুঢ় শব্দ : সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরুঢ় শব্দ বলে। যেমন-

 

পকজ পঙ্কে জন্মে যা (উপপদ তৎপুরুষ সমাস) শৈবাল, শালুক, পদ্মফুল প্রভৃতি নানাবিধ উদ্ভিদ পঙ্কে জন্মে থাকে। কিন্তুপঙ্কজ' শব্দটি একমাত্রপদ্মফুলঅর্থেই ব্যবহৃত হয়। তাই পঙ্কজ একটি যোগরুঢ় শব্দ রাজপুত – ‘রাজার পুত্র' অর্থ পরিত্যাগ করে যোগরূঢ় শব্দ হিসেবে অর্থ হয়েছেজাতিবিশেষ

 

মহাযাত্রামহাসমারোহে যাত্রা অর্থ পরিত্যাগ করে যোগরূঢ় শব্দরূপে অর্থমৃত্যু

 

জলধি – ‘জল ধারণ করে এমন' অর্থ পরিত্যাগ করে একমাত্রসমুদ্রঅর্থেই ব্যবহৃত হয়।

 

 

তৎসম শব্দ

তৎসম শব্দ : যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সোজাসুজি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ অপরিবর্তিত রয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তৎসম শব্দ। তৎসম একটি পারিভাষিক শব্দ। এর অর্থ [তত্ (তার)+ সম (সমান)]=তার সমান অর্থাৎ সংস্কৃত। উদাহরণ : চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, ভবন, ধর্ম, পাত্র, মনুষ্য ইত্যাদি।

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.নীচের কোনটি তৎসম শব্দ ?

হাত

চামার

পাত্র

দুধ

 

তদ্ভব শব্দ

তদ্ভব শব্দ : যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ। তদ্ভব একটি পারিভাষিক শব্দ। এর অর্থ, ‘তৎ’ (তার) থেকেভব' (উৎপন্ন) যেমন – · সংস্কৃত-হস্ত, প্রাকৃত-, তদ্ভবহাত। সংস্কৃত-চর্মকার, প্রাকৃত-চম্মআর, তদ্ভব-চামার ইত্যাদি। এই তদ্ভব শব্দগুলোকে খাঁটি বাংলা শব্দও বলা হয়

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.কোনটি তদ্ভব শব্দের উদারহণ?

সূর্য

পেন্নাম

হাত

ডিঙি

 

#.নিচের কোন শব্দটি তদ্ভব নয় ?

বউ

মা

কানু

খোকা

 

#.নিচের কোনটি তদ্ভব শব্দ?

হাত

পাদুকা

রূপালি

জেলে

 

#.কোনটি তদ্ভব শব্দ?

নিষ্কাম

নিগূঢ়

নিখুঁত

নিক্ষেপ

 

#.নিচের কোন শব্দটি তদ্ভব নয়?

বউ

মা

কানু

খোকা

 

অর্ধ-তৎসম শব্দ :

 বাংলা ভাষায় কিছু সংস্কৃত শব্দ কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয়। এগুলোকে বলে অর্ধ-তৎসম শব্দ। তৎসম মানে সংস্কৃত। আর অর্ধ তৎসম মানে আধা সংস্কৃত। উদাহরণ : জ্যোছনা, ছেরাদ্দ, গিন্নী, বোষ্টম, কুচ্ছিত শব্দগুলো যথাক্রমে সংস্কৃত জ্যোৎস্না, শ্রাদ্ধ, গৃহিণী, বৈষ্ণব, কুৎসিত শব্দ থেকে আগত

 

 

দেশি শব্দ

দেশি শব্দ : বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীদের (যেমন : কোল, মুণ্ডা প্রভৃতি) ভাষা সংস্কৃতির কিছু কিছু উপাদান বাংলায় রক্ষিত রয়েছে। এসব শব্দকে দেশি শব্দ নামে অভিহিত করা হয়। অনেক সময় এসব শব্দের মূল নির্ধারণ করা যায় না; কিন্তু কোন ভাষা থেকে এসেছে তার হদিস মেলে। যেমন-কুড়ি (বিশ) – কোলভাষা, পেট (উদর)—তামিল ভাষা, চুলা (উনুন)—মুণ্ডারী ভাষা। এরূপ-কুলা, গঞ্জ, চোঙ্গা, টোপর, ডাব, ডাগর, ঢেঁকি ইত্যাদি আরও বহু দেশি শব্দ বাংলায় ব্যবহৃত হয়।

 

 

বিদেশি শব্দ

 

বিদেশি শব্দ : রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সংস্কৃতিগত বাণিজ্যিক কারণে বাংলাদেশে আগত বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের বহু শব্দ বাংলায় এসে স্থান করে নিয়েছে। এসব শব্দকে বলা হয় বিদেশি শব্দ। এসব বিদেশি শব্দের মধ্যে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি শব্দই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সে কালের সমাজ জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণরূপে বিদেশি শব্দ দেশের ভাষায় গৃহীত হয়েছে। এছাড়া পর্তুগিজ, ফরাসি, ওলন্দাজ, , তুর্কি এসব ভাষারও কিছু শব্দ একইভাবে বাংলা ভাষায় এসে গেছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত, মায়ানমার (বার্মা), মালয়, চীন, জাপান প্রভৃতি দেশেরও কিছু শব্দ আমাদের ভাষায় প্রচলিত রয়েছে।

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.'কলম' শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?

ফারসি

ইংরেজি

আরবি

হিন্দি

 

#.গ্রিক শব্দ কোনটি

 

চিনি

দাম

রিকশা

আলমিরা

 

#.'কলম' শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে ?

আরবি

ফরাসি

তুর্কি

ফারসি

 

#.আরবি 'কলম' শব্দটি 'কলমোস' শব্দ থেকে এসেছে। 'কলমোস' কোন ভাষার শব্দ?

পাঞ্জাবি

ফরাসি

গ্রিক

স্পেনিশ

 

মিশ্র শব্দ

মিশ্র শব্দ : কোনো কোনো সময় দেশি বিদেশি শব্দের মিলনে শব্দদ্বৈত সৃষ্টি হয়ে থাকে। যেমন রাজা- বাদশা (তৎসম+ফারসি), হাট-বাজার (বাংলা+ফারসি), হেড-মৌলভি (ইংরেজি+ফারসি), হেড-পণ্ডিত (ইংরেজি+তৎসম) খ্রিষ্টাব্দ (ইংরেজি+তৎসম), ডাক্তার-খানা (ইংরেজি+ফারসি), পকেট-মার (ইংরেজি+বাংলা), চৌ-হদ্দি (ফারসি+আরবি) ইত্যাদি। -

 

 

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

 

#.Phonology শব্দের অর্থ কী?

বাক্যতত্ত্ব

ধ্বনিতত্ত্ব

রূপতত্ত্ব

অর্থতত্ত্ব

 

#.‘গড্ডলিকা প্রবাহ' বাগ্ধারায় 'গল' শব্দের অর্থ কী?

ভেড়া

স্রোত

প্রবাহ

ভাসা

 

#.'জিজীবিষা' শব্দের অর্থ কী?

 

জীবনকে জানার ইচ্ছা।

জীবন-জীবিকার ইচ্ছা

জীবন নাশের ইচ্ছা

বেঁচে থাকার ইচ্ছা

 

#.মনীষা' শব্দের অর্থ

 

প্রজ্ঞা

স্থিরতা

নির্বুদ্ধিতা

মনস্বিতা

 

#.'অর্বাচীন' শব্দের অর্থ কী?

হাসিখুশি

অপরিপক্ক

অচেনা

স্বাধীন